২৪ ইস্যুতে জেরবার হাসিনা সরকার
এ যেন ইস্যুর খেলা। বারবার গোল পোস্টের
বদল। হাসিনা সরকারের সাড়ে চার বছর ইস্যুর পেছনেই ছুটেছে বিরোধী দল। একটার
পর একটা ইস্যু তৈরি করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
কখনও
কখনও ইস্যুর খেলায় পড়ে সরকারকেও হতে হয়েছে বিপর্যস্ত, বিব্রত। বাধ্য হতে
হয়েছে পিছু হটতে। সর্বশেষ ইস্যু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। পরিবেশবাদীদের
দাবি, রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন বিপর্যয় ডেকে আনবে সুন্দরবনের জন্য।
কিন্তু সরকার অনড়। তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটিকে নিয়ে কিছু হাসি-ঠাট্টাও করা
হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে। বিরোধী দলের অবস্থান আবার বিপরীত।
বিএনপি-জাতীয় পার্টি-জামায়াত এ ব্যাপারে একাট্টা। এসব দলের বক্তব্য,
রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা যাবে না। শেষ পর্যন্ত রামপালে বিদ্যুৎ
প্রকল্প স্থাপন হয় কিনা অথবা এরপর কোন ইস্যু আসে তার জন্য আমাদের অপেক্ষায়
থাকতে হবে।
অপেক্ষায় থাকার আগে আমরা নজর দেই আরও ২৩টি ইস্যুর দিকে। যেসব ইস্যুর পিছনে ছুটেছে রাজনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্র। কখনও কখনও বিশ্ব ব্যাংক, জাতিসংঘ, বিশ্বের বাঘা বাঘা দেশ এবং মানবাধিকার সংস্থাও নজর দিয়েছে এসব ইস্যুতে।১. শেখ হাসিনা সরকারের দায়িত্ব নেয়ার দেড় মাসের মাথায় পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে বিডিআর বিদ্রোহের মর্মন্তুদ ঘটনা। ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬শে ফেব্রুয়ারি বিডিআর সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে এ বিদ্রোহে প্রাণ হারান ৫৭ সেনা কর্মকর্তা। এ ঘটনায় বিদ্রোহ দমন পদ্ধতি নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। কোন ধরনের সামরিক অভিযান ছাড়াই আলোচনার মাধ্যমে বিদ্রোহ শেষ হয়। তবে বিরোধী দলের দাবি, সময়মতো সেনাবাহিনী সেখানে অভিযান পরিচালনা করলে এত সেনা কর্মকর্তা নিহত হতেন না। এ ঘটনায় বিদ্রোহের বিচার সামরিক আদালতে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। অন্যদিকে, হত্যাকাণ্ডসহ ফৌজদারি অপরাধের বিচার চলছে প্রচলিত আদালতে। মর্মান্তিক বিডিআর বিদ্রোহের পর ঐতিহ্যবাহী বিডিআর বাহিনী বিলুপ্ত করে দেয়া হয়। সীমান্ত রক্ষায় তৈরি হয় নতুন বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।২. আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে সম্ভবত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে নিয়ে। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল হিসেবে যে ব্যবস্থা একসময় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। একই দল এবার ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্ছেদ করে দেয়। দোহাই দেয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের। যে রায়ে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করা হলেও দুই মেয়াদে তা বহাল থাকতে পারে বলে মত দেয়া হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে রাজনীতি এখন পয়েন্ট অব নো রিটার্নে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যতের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বহুলাংশে নির্ভর করছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কটের সমাধানের ওপর।৩. ২০১০ সালের শেষ দিকে বিরোধীনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার মইনুল রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। জিয়াউর রহমান উপ-সেনা প্রধান হওয়ার পর থেকে জিয়া পরিবার এ বাড়িতে বাস করতো। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর মানবিক কারণ দেখিয়ে বাড়িটি জিয়া পরিবারকে বরাদ্দ দেয়া হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাড়িটি ছেড়ে দিতে খালেদা জিয়াকে নোটিস দেয়া হয়। এ নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট তার রিট খারিজ করে দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল দায়ের করেন। আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকাবস্থায় খালেদা জিয়াকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। স্বামীর স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন খালেদা জিয়া।৪. শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহাজোট সরকারের পুরোটা সময়ই নানাভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। তাকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণ করে সরকার। গ্রামীণ ব্যাংককে পুরো সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেয়ারও কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার।৫. ২০১২ সালের ১৯শে জানুয়ারি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সেনাবাহিনীর ভেতরে একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে কোন অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা নিয়ে এ ধরনের প্রেস ব্রিফিং-এর ঘটনা অতীতে কখনও ঘটেনি। ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে জড়িতদের কয়েকজনকে আটক করা হয়। অভিযুক্তদের কেউ কেউ এখনও পলাতক।৬. ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ হত্যাকাণ্ড সাংবাদিকসহ দেশের মানুষকে স্তম্ভিত করে দেয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিলেও ওই ঘটনা এখনও রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে। সাহারা খাতুনের বদলে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর দায়িত্ব নেয়ার পর সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দাবি করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত রহস্য যে তিমিরে ছিল, সে তিমিরেই রয়ে গেছে। বিরোধীনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকারের দুর্নীতির তথ্য থাকাতেই সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়।৭. বর্তমান সরকারের আমলে বিরোধী জোটের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী নিখোঁজ হন। অভিযোগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের আর খোঁজ মিলেনি। তবে এসব নিখোঁজের মধ্যেও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি সমালোচনার ঝড় তোলে।৮. ২০১২ সালের শুরুর দিকে শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় দেশের চেয়ে দেশের বাইরে তোলপাড় সৃষ্টি হয় বেশি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরের সময় আমিনুলের ব্যাপারে তার উদ্বেগের কথা জানান।
৯. আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার। যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের সঙ্গে প্রবাসী আইনজীবী আহমেদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপ সংলাপ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে সমলোচনার ঝড় ওঠে। এ প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেন বিচারপতি নিজামুল হক। পরে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। সর্বশেষ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগেই তা প্রকাশ হয়ে যাওয়া নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে।১০. আওয়ামী লীগের আরেকটি প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল পদ্মা সেতুর নির্মাণ। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসেরই অন্যতম বড় এক কেলেঙ্কারির জন্মদাতা এখন পদ্মা সেতু প্রকল্প। দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩০শে জুন বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা ঋণ চুক্তি বাতিল করে দেয়। একই সঙ্গে অপর দুই দাতা সংস্থা এডিবি ও জাইকা-ও তাদের ঋণ প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়। অভিযোগ ওঠে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ও পদত্যাগও করেন তিনি। বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন অবশ্য আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে কোন ধরনের প্রমাণ পায়নি। কানাডা পুলিশও এ ঘটনার তদন্ত করছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী এরই মধ্যে কানাডায় অভিযুক্ত হয়েছেন।
১১. দীর্ঘ রাজনীতির ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম মন্ত্রিত্বের স্বাদ পান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। কিন্তু কলঙ্কের বোঝা নিয়েই বিদায় নিতে হয় তাকে। তার ব্যক্তিগত সহকারী বিপুল সংখ্যক অর্থসহ ধরা পড়েন পিলখানায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড কার্যালয়ে। রেলের নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে উঠে আসে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নাম।
১২. মহাজোট জমানার অন্যতম আলোচিত ইস্যু ছিল রামুর বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা। ফেসবুকের একটি ছবিকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের রামু ও চট্টগ্রামের পটিয়ার বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা চালানো হয়। আকস্মিক এ ঘটনায় সারা দুনিয়া ব্যাপী আলোচনা তৈরি হয়।১৩. ২০১২ সালের শেষ দিকে তাজরীন গার্মেন্টে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড পুরো গার্মেন্ট শিল্পকেই হুমকির মুখে ফেলে দেয়। ঢাকার আশুলিয়ায় ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১১১ জন শ্রমিক। তাজরীন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনায় গার্মেন্ট কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দেখা দেয়।১৪. শেয়ারবাজারে প্রায় ৩৫ লাখ বিনিয়োগকারীর কপাল পুড়েছে বর্তমান সরকারের আমলেই। পুঁজি হারিয়ে এসব মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ঢাকা ও চট্টগ্রামে পুঁজি হারিয়ে দু’ জন আত্মহত্যা করেন। শেয়ারবাজার থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।১৫. গত ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় আবারও সারা দুনিয়ার দৃষ্টি পড়ে বাংলাদেশের দিকে। অসহায় মানুষের আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ। ওই ঘটনায় ১১১৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের বেশির ভাগই গার্মেন্ট শ্রমিক। উদ্ধার অভিযান শেষেও বহু মানুষকে রানা প্লাজার সামনে তাদের হারানো স্বজনদের জন্য অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।১৬. ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার অন্তর্গত চৌধুরীহাট সীমান্ত চৌকির কাছে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারাণ বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। সমপ্রতি বিএসএফ কিশোরী ফেলানী হত্যার অভিযোগ থেকে কনস্টেবল অমিয় ঘোষকে অব্যাহতি দেয়। পরে অবশ্য তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে তার পুনর্বিচারের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ।১৭. গত ১১ই আগস্ট মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তার গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা। তাকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি।১৮. ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তায় যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন ট্রাইব্যুনাল। এ রায় প্রত্যাখ্যান করে তার মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে শাহবাগে টানা অবস্থান করে তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ। আন্দোলনের তীব্রতায় এক পর্যায়ে আইনে সংশোধনী আনতে বাধ্য হয় সরকার। সংশোধিত আইনেই কাদের মোল্লার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে সরকার। এ আপিলের রায়ে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।১৯. শাহবাগ আন্দোলনের অনেকটা কাউন্টার হিসেবেই একসময় মঞ্চে আবির্ভাব ঘটে হেফাজতে ইসলামের। ১৩ দফা দাবিতে আল্লামা আহমদ শফির নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে কওমি মাদরাসা ভিত্তিক সংগঠনটি। হেফাজতের ৫ই মে’র ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে এখনও বিতর্ক চলে আসছে।২০. ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তায় জামায়াতের বহুল আলোচিত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর তার অনুসারীরা সারা দেশে সহিংস বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সহিংসতায় এক দিনেই নিহত হন ১০০-এর বেশি মানুষ।২১. ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিপুল তোলপাড় সৃষ্টি করে। সব ক’টি সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয়ে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে।২২. বর্তমান মহাজোট সরকার বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় আংশিক কার্যকর করে। মহাজোটের ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী ৫ আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়।২৩. মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা নিয়েও অনেক জল ঘোলা হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আন্দোলনের মুখে সেখানে আর বিমানবন্দর স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
No comments