সাঈদীর বিরুদ্ধে সমাপনী যুক্তিতর্ক আজ প্রসিকিউশনের- যুদ্ধাপরাধী বিচার
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেবে ট্রাইব্যুনাল। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে পুনরায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) আসামি পক্ষ শেষ করেছে। আজ প্রসিকিউশন পক্ষকে সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেছে ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ’৭১ সালের দুটি পত্রিকা কাটিংসহ তিনটি ডকুমেন্ট নথিভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছে প্রসিকিউশন। আজ এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এ এই আদেশগুলো প্রদান করা হয়।জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রসিকিউটর নুরজাহান বেগম মুক্তা আবেদন করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল ৫ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্র্ইাব্যুনালে অন্য দু সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
সোমবার আবেদনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন প্রসিকিউটর নুরজাহান বেগম মুক্তা। অন্যদিকে এ আবেদনটির বিরোধিতা করেন এ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান। এ বিষয়ে নুুরজাহান বেগম মুক্তা সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তের স্বার্থে তাকে সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এজন্য প্রসিকিউশন থেকে ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করলে ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে পরবর্তী তদন্তের অগ্রগতি বা পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। তারও আগে গত ১৪ অক্টোবর জামায়াতের এ নেতার বিরুদ্ধে প্রথম পর্যায়ে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২২ আগস্ট একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের আদেশে মগবাজারে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
সাঈদী ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে পুনরায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তিখ-াতে আইনী পয়েন্টে প্রসিকিউশন পক্ষ যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছে। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। আসামিপক্ষ সোমবার সপ্তম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী আসামিপক্ষের বক্তব্যের জবাবে আইনি পয়েন্টে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। মামলার কার্যক্রম আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
কামারুজ্জামান ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ’৭১ সালের দুইটি পত্রিকা কাটিংসহ তিনটি ডকুমেন্ট নথিভুক্ত করার আবেদন জানিয়েছে প্রসিকিউশন। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম এ আবেদনটি দাখিল করে। ট্রাইব্যুনালে অন্য দু সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও জেলা জজ মোঃ শাহীনুর ইসলাম। আজ আবেদনের ওপর শুনানি ও আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রসিকিউশনের নথিপত্র ট্রাইব্যুনাল আমলে নেবেন কিনা সে বিষয়ে আজ আদালত আদেশ দেবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম। প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত দৈনিক বাংলা ও দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার দুইটি কাটিংসহ এনএসআই কর্তৃক ’৭২ ও ’৭৩ সালে সংগৃহীত বাংলাদেশ সরকারের কিছু ডকুমেন্ট ট্রাইব্যুনালের নথিভুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত পত্রিকার কাটিং দুইটির একটির শিরোনাম হচ্ছে-‘দীন মোহাম্মদসহ আরও ১৫ জন রাজাকার ধরা পড়েছে।’ পত্রিকার অপর কাটিংটি হচ্ছে-’৭১ সালের ২৯ ডিসেম্বর আল-বদর হিসেবে মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের গ্রেফতার হওয়ার খবর, যা ৩১ ডিসেম্বরের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়া কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে জব্দ তালিকার সাক্ষী মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রধান ডকুমেন্ট কর্মকর্তা আমেনা বেগম সোমবার জবানবন্দী পেশ করেছেন। জবানবন্দীতে তিনি আহমেদ শরীফ, কাজী নুরুজ্জামান ও শাহারিয়ার কবীর সম্পাদিত ‘একাত্তরের ঘাতক দালালরা কে কেথায়’ বইয়ের বিভিন্ন অংশের ব্যাপারে জবানবন্দী পেশ করেন। তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মনোয়ারা বেগম মামলার তদন্তকালে এ বইটি জব্দ করেন।
No comments