ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছেঃ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করুন
রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া এবং নানা রকম পেটের অসুখ। বিশুদ্ধ পানির অভাব, বাসিপচা খাবার এবং প্রচণ্ড গরমে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। আক্রান্তদের বেশিরভাগ আসছে তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে।
মহাখালী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) কলেরা হাসপাতালে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে চিকিত্সা নিচ্ছে ৩০ জনেরও বেশি রোগী। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। রাজধানী ছাড়াও রোগীরা ভিড় করছে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। চিকিত্সকরা সতর্ক করছেন গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেড়ে যেতে পারে ডায়রিয়ার প্রকোপ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, ২৭ মার্চ পর্যন্ত ডায়রিয়া বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেনি। নড়াইল, যশোর, পাবনা ও ফেনী জেলায় নতুন করে ডায়রিয়া সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে আইসিডিডিআরবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, গত বছরের মার্চ মাসের তুলনায় এবার কলেরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ ডায়রিয়ার একটি পরিচিত মহৌষধ হচ্ছে খাবার স্যালাইন। এ ছাড়া ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধকরণ এবং বাসিপচা খাবার না খেলে সহজেই ডায়রিয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়া কঠিন কিছু নয়। কাজেই গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সচেতন হলে সংক্রমণের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
সাধারণত প্রতি বছর মার্চের শেষদিন থেকে শুরু এপ্রিল-মে’তে সবচেয়ে বেশি লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। তা ছাড়া বড় ধরনের বন্যার সময় এবং বন্যার অব্যবহিত পরে ডায়রিয়া মহামারি আকার ধারণ করে। বিশেষ করে এ সময় নিম্ন আয়ের মানুষ ও গরিব জনগোষ্ঠী ডায়রিয়ার নিরূপায় শিকারে পরিণত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি অনুসরণের সুযোগ পায় না। অনাহার-অর্ধাহারে জর্জরিত অসংখ্য মানুষের পক্ষে বাসিপচা খাবার নিয়ে বাছবিচার করার অবকাশও থাকে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করাও তাদের পক্ষে সব সময় সম্ভব নয়। মাসের পর মাস যাদের চুলায় চাল ফোটে না, তারা পানি ফুটানোর উপকরণই বা পাবে কোথায়। এসব দিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, পানি বা খাদ্যবাহিত রোগব্যাধি প্রধানত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকেই বেশি ভোগান্তিতে ফেলে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হচ্ছে সর্বজনীন প্রয়োজন মেটানোর পদক্ষেপ নেয়া। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, ঢাকাসহ দেশের শহরাঞ্চলে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা পেটের পীড়া ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। ঢাকা শহরে ওয়াসার দেয়া পানি অনেক সময়ই পানের অযোগ্য হয়ে পড়ে। দুর্গন্ধ ছাড়াও এ পানিতে কেঁচো, পোকা, গুল্ম ইত্যাদি উঠে আসে বলে অভিযোগ আছে। অর্থাত্ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় শুকনো মৌসুমে তীব্র পানির সঙ্কট এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব লেগেই থাকে। কাজেই ডায়রিয়ার জন্য স্যালাইন উত্পাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায় নিতে হবে সরকারকে। এদিকে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব নদীর পানিই পানের যোগ্যতা হারিয়েছে। ঢাকার চারপাশের ছয়টি নদীর পানি এতটাই ক্লেদযুক্ত যে ফুটালেও তা দুর্গন্ধমুক্ত হয় না। এই ফুটানো পানি পান করেও অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাসিপচা তো বটেই, স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্যপণ্যে এখন বাজার সয়লাব। বিশুদ্ধ পানির নামে যা বিক্রি হচ্ছে তা পিপাসা মেটালেও পেটের পীড়ার জন্য যথেষ্ট। তা ছাড়া ফিল্টারের পানি কেনার পয়সা আছে ক’জনের? ভেজাল নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফল না হলে এসব খাবার ও পানি থেকে সাধারণের নিস্তার নেই। এর আগে পত্রপত্রিকায় ভেজাল স্যালাইনের খবরও প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায় ডায়রিয়ার মতো অসুখ-বিসুখ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথমে দূর করতে হবে গোড়ার গলদ। অর্থাত্ খাবার আগে বিশুদ্ধ পানির উত্স বাড়াতে হবে। বন্যাসহ অন্যান্য দুর্যোগে বিশুদ্ধ পানির মজুদ নিশ্চিত করাও জরুরি। গরমের মৌসুমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে—এ কথা সবারই জানা। কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেই। কাজেই পানিজনিত রোগবালাই এখন অনেকটা নিয়তির মতো। তবে এসব ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বিষয়। এখন সমূহ প্রয়োজন হচ্ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ মারাত্মক আকার নেয়ার আগেই জনগণকে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে সচেতন করাসহ যথাসম্ভব বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার উদ্যোগ গ্রহণ এবং দেশের প্রতিটি হাসপাতালে ডায়রিয়া চিকিত্সার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেয়া।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, ২৭ মার্চ পর্যন্ত ডায়রিয়া বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেনি। নড়াইল, যশোর, পাবনা ও ফেনী জেলায় নতুন করে ডায়রিয়া সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে আইসিডিডিআরবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, গত বছরের মার্চ মাসের তুলনায় এবার কলেরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ ডায়রিয়ার একটি পরিচিত মহৌষধ হচ্ছে খাবার স্যালাইন। এ ছাড়া ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধকরণ এবং বাসিপচা খাবার না খেলে সহজেই ডায়রিয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়া কঠিন কিছু নয়। কাজেই গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সচেতন হলে সংক্রমণের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।
সাধারণত প্রতি বছর মার্চের শেষদিন থেকে শুরু এপ্রিল-মে’তে সবচেয়ে বেশি লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। তা ছাড়া বড় ধরনের বন্যার সময় এবং বন্যার অব্যবহিত পরে ডায়রিয়া মহামারি আকার ধারণ করে। বিশেষ করে এ সময় নিম্ন আয়ের মানুষ ও গরিব জনগোষ্ঠী ডায়রিয়ার নিরূপায় শিকারে পরিণত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ এবং পানি বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতি অনুসরণের সুযোগ পায় না। অনাহার-অর্ধাহারে জর্জরিত অসংখ্য মানুষের পক্ষে বাসিপচা খাবার নিয়ে বাছবিচার করার অবকাশও থাকে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করাও তাদের পক্ষে সব সময় সম্ভব নয়। মাসের পর মাস যাদের চুলায় চাল ফোটে না, তারা পানি ফুটানোর উপকরণই বা পাবে কোথায়। এসব দিক বিবেচনা করলে দেখা যায়, পানি বা খাদ্যবাহিত রোগব্যাধি প্রধানত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকেই বেশি ভোগান্তিতে ফেলে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হচ্ছে সর্বজনীন প্রয়োজন মেটানোর পদক্ষেপ নেয়া। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, ঢাকাসহ দেশের শহরাঞ্চলে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা পেটের পীড়া ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট। ঢাকা শহরে ওয়াসার দেয়া পানি অনেক সময়ই পানের অযোগ্য হয়ে পড়ে। দুর্গন্ধ ছাড়াও এ পানিতে কেঁচো, পোকা, গুল্ম ইত্যাদি উঠে আসে বলে অভিযোগ আছে। অর্থাত্ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় শুকনো মৌসুমে তীব্র পানির সঙ্কট এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব লেগেই থাকে। কাজেই ডায়রিয়ার জন্য স্যালাইন উত্পাদন বাড়ানোর পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায় নিতে হবে সরকারকে। এদিকে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব নদীর পানিই পানের যোগ্যতা হারিয়েছে। ঢাকার চারপাশের ছয়টি নদীর পানি এতটাই ক্লেদযুক্ত যে ফুটালেও তা দুর্গন্ধমুক্ত হয় না। এই ফুটানো পানি পান করেও অনেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাসিপচা তো বটেই, স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্যপণ্যে এখন বাজার সয়লাব। বিশুদ্ধ পানির নামে যা বিক্রি হচ্ছে তা পিপাসা মেটালেও পেটের পীড়ার জন্য যথেষ্ট। তা ছাড়া ফিল্টারের পানি কেনার পয়সা আছে ক’জনের? ভেজাল নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফল না হলে এসব খাবার ও পানি থেকে সাধারণের নিস্তার নেই। এর আগে পত্রপত্রিকায় ভেজাল স্যালাইনের খবরও প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায় ডায়রিয়ার মতো অসুখ-বিসুখ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথমে দূর করতে হবে গোড়ার গলদ। অর্থাত্ খাবার আগে বিশুদ্ধ পানির উত্স বাড়াতে হবে। বন্যাসহ অন্যান্য দুর্যোগে বিশুদ্ধ পানির মজুদ নিশ্চিত করাও জরুরি। গরমের মৌসুমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে—এ কথা সবারই জানা। কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনো বিশেষ উদ্যোগ নেই। কাজেই পানিজনিত রোগবালাই এখন অনেকটা নিয়তির মতো। তবে এসব ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বিষয়। এখন সমূহ প্রয়োজন হচ্ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ মারাত্মক আকার নেয়ার আগেই জনগণকে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে সচেতন করাসহ যথাসম্ভব বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার উদ্যোগ গ্রহণ এবং দেশের প্রতিটি হাসপাতালে ডায়রিয়া চিকিত্সার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেয়া।
No comments