সোনালী ব্যাংকের গুলশান শাখায়ও অর্থ আত্মসাৎ- রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে কি না, তদন্তের সুপারিশ by শওকত হোসেন
সোনালী ব্যাংক কেবল হলমার্ক গ্রুপের জন্যই নয়, অখ্যাত আরও অনেক প্রতিষ্ঠানকে জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দিয়েছে। রূপসী বাংলা শাখার পর গুলশান শাখায় সবচেয়ে বেশি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সোনালী ব্যাংক গুলশান শাখার ওপরও বাইরের প্রতিষ্ঠান দিয়ে বিশেষ নিরীক্ষা করিয়েছে।
দায়দায়িত্ব নির্ধারণী এই কার্যক্রম নিরীক্ষা (ফাংশনাল অডিট) প্রতিবেদনটি সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের পর্ষদে জমা দেওয়া হয়েছে বলে সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। সাহা মজুমদার অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস প্রতিষ্ঠান নিরীক্ষাটি করে। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অনিয়মের জন্য বাইরের রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেছে কি না, তা তদন্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুলশান শাখায় ৫১টি প্রতিষ্ঠানকে অনিয়ম করে ২৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের ২৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ জালিয়াতির ওপর নিরীক্ষা চালানো হয়।
গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক হলেন আখতারুজ্জামান। কীভাবে অর্থ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে তার বিবরণ রয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে। প্রথম অনিয়মটি করা হয় রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। এই প্রতিষ্ঠান আত্মসাৎ করেছে ৯৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সব ধরনের নিয়মকানুন উপেক্ষা করে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজকে জালিয়াতির সব ধরনের সুযোগ করে দেয় গুলশান শাখা।
সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থায়ন বিভাগ (আইটিএফডি) থেকে রোজবার্গকে কেন অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। শাখা ব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামান লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালের ৩ আগস্ট এ নিয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজকে মাত্র ১০ শতাংশ মার্জিনে ঋণপত্র খুলতে এমডি নির্দেশ দেন। এর আগে রোজবার্গকে আরও দুবার একই ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর ক্ষেত্রেও অবৈধভাবে তারিখ পরিবর্তন করে অনুমোদন দেখানো হয়।
এমডি একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অনিয়মের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সুযোগই নেন শাখা ব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামান। এরপর তিনি আরও অনেক প্রতিষ্ঠানকে বারবার নানা ধরনের অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন। আর এই সুযোগে অর্থ আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে, ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদের। অথচ এমডির নির্দেশে গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক এই সুবিধা দিয়ে ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতি করেছেন।
গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামানের বদলির আদেশ হয়েছিল ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু এই আদেশ কার্যকর হয়নি। এটি বিস্ময়কর বলে সোনালী ব্যাংকের সূত্রগুলো জানায়। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বদলির আদেশ বাতিল হয়নি। অথচ শাখা ব্যবস্থাপক কাজ করে গেছেন। এ ধরনের ঘটনাই প্রমাণ করে যে সোনালী ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, বদলির আদেশ হলেও তা কার্যকর না হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। কারণ, বদলি হলেও তা কার্যকর না হওয়ার কারণে শাখা ব্যবস্থাপক অবাধে অনিয়ম করে গেছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়, শাখা ব্যবস্থাপকের ওপর ব্যাংকের ভেতরে অথবা বাইরের শক্তির জোরালো সমর্থন ছিল। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মন্তব্য করা হয়েছে, আখতারুজ্জামানের ওপর ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সমর্থন, নাকি বাইরের আমলাতান্ত্রিক বা রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যেসব প্রতিষ্ঠানকে গুলশান শাখা থেকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: স্টার এক্সেসরিজ, এলএনএস লিমিটেড, এলএনসি প্রিন্টিং, এলএনএস পলি, এক্সপার টেক নিটিং, এক্সপার টেক এমব্রয়ডারি, এলএনএস লেভেল, এলএনএস প্যাকেজিং, নুর লেদার, আলভি ট্রেডার্স, জে কে এন্টারপ্রাইজ, সারফেস ইন্টারন্যাশনাল, টেক্সচার পেপার, এটিয়ার কনসার্ন, এড ওয়ানস ইন্ডাস্ট্রিজ, টরি প্যাকেজিং, এম এস ট্রেডিং, বীথি এক্সেসরিজ, ফাল্গুনী এক্সেসরিজ, জেএসপি ইন্টারন্যাশনাল, মাগুরা ট্রেডার্স, রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ, গোল্ডসফাইন ট্রেডিং, এম অ্যান্ড এইচ জেনারেল ট্রেডিং, তামিম ট্রেডার্স, এসএস মার্ট, লী-নভ, ডিউ ফ্যাশন, আবদুল হাই, লিমরা জেনারেল ট্রেডার্স ও এভালন ইন্টারন্যাশনাল।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও গতকাল সোনালী ব্যাংকের কাউকে পাওয়া যায়নি। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বড় অংশ বরখাস্ত অবস্থায় থাকায় তাঁরাও কেউ কথা বলতে চাননি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুলশান শাখায় ৫১টি প্রতিষ্ঠানকে অনিয়ম করে ২৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের ২৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ জালিয়াতির ওপর নিরীক্ষা চালানো হয়।
গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক হলেন আখতারুজ্জামান। কীভাবে অর্থ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে তার বিবরণ রয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে। প্রথম অনিয়মটি করা হয় রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। এই প্রতিষ্ঠান আত্মসাৎ করেছে ৯৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সব ধরনের নিয়মকানুন উপেক্ষা করে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজকে জালিয়াতির সব ধরনের সুযোগ করে দেয় গুলশান শাখা।
সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থায়ন বিভাগ (আইটিএফডি) থেকে রোজবার্গকে কেন অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। শাখা ব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামান লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালের ৩ আগস্ট এ নিয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজকে মাত্র ১০ শতাংশ মার্জিনে ঋণপত্র খুলতে এমডি নির্দেশ দেন। এর আগে রোজবার্গকে আরও দুবার একই ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর ক্ষেত্রেও অবৈধভাবে তারিখ পরিবর্তন করে অনুমোদন দেখানো হয়।
এমডি একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অনিয়মের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সুযোগই নেন শাখা ব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামান। এরপর তিনি আরও অনেক প্রতিষ্ঠানকে বারবার নানা ধরনের অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন। আর এই সুযোগে অর্থ আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে, ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদের। অথচ এমডির নির্দেশে গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক এই সুবিধা দিয়ে ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতি করেছেন।
গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক আখতারুজ্জামানের বদলির আদেশ হয়েছিল ২০১১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু এই আদেশ কার্যকর হয়নি। এটি বিস্ময়কর বলে সোনালী ব্যাংকের সূত্রগুলো জানায়। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বদলির আদেশ বাতিল হয়নি। অথচ শাখা ব্যবস্থাপক কাজ করে গেছেন। এ ধরনের ঘটনাই প্রমাণ করে যে সোনালী ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, বদলির আদেশ হলেও তা কার্যকর না হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। কারণ, বদলি হলেও তা কার্যকর না হওয়ার কারণে শাখা ব্যবস্থাপক অবাধে অনিয়ম করে গেছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়, শাখা ব্যবস্থাপকের ওপর ব্যাংকের ভেতরে অথবা বাইরের শক্তির জোরালো সমর্থন ছিল। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মন্তব্য করা হয়েছে, আখতারুজ্জামানের ওপর ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সমর্থন, নাকি বাইরের আমলাতান্ত্রিক বা রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করেছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
যেসব প্রতিষ্ঠানকে গুলশান শাখা থেকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: স্টার এক্সেসরিজ, এলএনএস লিমিটেড, এলএনসি প্রিন্টিং, এলএনএস পলি, এক্সপার টেক নিটিং, এক্সপার টেক এমব্রয়ডারি, এলএনএস লেভেল, এলএনএস প্যাকেজিং, নুর লেদার, আলভি ট্রেডার্স, জে কে এন্টারপ্রাইজ, সারফেস ইন্টারন্যাশনাল, টেক্সচার পেপার, এটিয়ার কনসার্ন, এড ওয়ানস ইন্ডাস্ট্রিজ, টরি প্যাকেজিং, এম এস ট্রেডিং, বীথি এক্সেসরিজ, ফাল্গুনী এক্সেসরিজ, জেএসপি ইন্টারন্যাশনাল, মাগুরা ট্রেডার্স, রোজবার্গ ইন্ডাস্ট্রিজ, গোল্ডসফাইন ট্রেডিং, এম অ্যান্ড এইচ জেনারেল ট্রেডিং, তামিম ট্রেডার্স, এসএস মার্ট, লী-নভ, ডিউ ফ্যাশন, আবদুল হাই, লিমরা জেনারেল ট্রেডার্স ও এভালন ইন্টারন্যাশনাল।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও গতকাল সোনালী ব্যাংকের কাউকে পাওয়া যায়নি। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বড় অংশ বরখাস্ত অবস্থায় থাকায় তাঁরাও কেউ কথা বলতে চাননি।
No comments