শুধু সাকিব নয় পুরো দলকে নিয়েই হতাশ হাথুরুসিংহে
আগামীকাল কানপুরের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শুরুতে সাকিবকে নিয়েই একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে হলো তাকে। প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন সকালে জানা যায় আঙ্গুুলে অস্বস্তির কারণে পর্যাপ্ত বোলিং করতে পারছেন না সাকিব আল হাসান। এ সময় প্রশ্ন ওঠে টিম ম্যানেজমেন্ট এটা জেনেও তাকে খেলাচ্ছে কিনা। এরপর গত দুইদিনে পরের টেস্টে সাকিবকে পাওয়া নিয়েও তৈরি হয় শঙ্কা। এ বিষয়ে হাথুরু বলেন, ‘সাকিবের চোট সংক্রান্ত কোনো কিছু আনুষ্ঠানিকভাবে আমি শুনিনি। তাকে নিয়ে আপাতত কোনো সংশয় নেই (দ্বিতীয় টেস্টের জন্য)। আমি ফিজিও বা কারও কাছ থেকে তার ইঞ্জুরি সংক্রান্ত কিছু শুনিনি। সে সিলেকশনের জন্য বিবেচনায় আছে।’ তবে সাকিবের পারফর্মেন্সও অনেকদিন ধরেই সন্তোষজনক নয়। প্রথম টেস্ট হারের পর সংবাদ সম্মেলনে সাকিবকে বাদ দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়েছে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে। হাথুরু অবশ্য শুধু সাকিব নয় প্রথম টেস্টে পুরো দলকে নিয়েই হতাশ। তিনি বলেন, ‘তার (সাকিব) পারফরম্যান্সে নয়, সবার পারফরম্যান্সেই হতাশ। আমরা আরও ভালো করতে পারতাম। আমি নিশ্চিত সে নিজেও ভাবে, সে আরও ভালো করতে পারে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাট করেছে, বড় করতে পারিনি ইনিংস। এমন নয় যে চেষ্টা করেনি। প্রতিপক্ষের বোলিংয়ের মান অনেক ভালো ছিল।’ ৫১৫ রান তাড়ায় চেন্নাইয়ে দারুণ শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। কিন্তু ত্রিশোর্ধ ইনিংস খেলেই উইকেট বিলিয়ে দেন তারা। ব্যাটাররের সেট হয়েও উইকেট বিলিয়ে দেয়া নিয়ে চিন্তিত এই লঙ্কান কোচ বলেন, ‘ভালো শুরুর পর ওরা আউট হয়ে যাচ্ছে এটা নিয়ে আমরা একটু চিন্তিত। তারা ভালো করতে মুখিয়ে আছে। গত ম্যাচে আমাদের মেধা ও সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। ভালো শুরু পেলে ইনিংস বড় করতে হবে। এটাই দুশ্চিন্তার বিষয়। ক্রিকেটে কেউ ৩০ বল খেলে ফেললে উইকেটে থিতু হওয়া জরুরি। কীভাবে প্রতিরোধ গড়তে হবে ভারতের এই দল তা ভালো করেই জানে। তাই আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে ভালো ব্যাট করে যেতে হবে।
এই দলে বাংলাদেশের প্রথম ৪ জনই বাঁহাতি ব্যাটার। সবমিলিয়ে ১১ জনের ৬ জনই বাঁহাতি। যদিও এটা নিয়ে মাথাব্যথা নেই হাথুরুর, ‘আমাদের মনে হয় এটাই আমাদের সেরা কম্বিনেশন, হোক ডানহাতি বা বাঁহাতি। একাদশে পরিবর্তন নির্ভর করছে কাল উইকেট দেখার ওপর।’
নতুন বল সামলাতে ব্যাটারদের বেশিই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে এ নিয়ে ওপেনাররাই বেশি ভাবছেন বলে জানান হাথুরু। তিনি বলেন, ‘ওপেনাররা আমাদের চেয়েও বেশি ভাবছে এটা নিয়ে। তারা ভালো শেপে আছে। আশা করছি এবার আরও ভালো করবে। প্রত্যেক ব্যাটারই এসব নিয়ে কাজ করছে।’
ঘরের মাঠে ভারত ৩ পেসার খেলানোয় মোটেও অবাক হননি হাথুরু। তিনি বলেন,
‘আমি অবাক হইনি, কারণ জানি তারা কেন এমন করছে। আমরাও আমাদের দেশে খেলা হলে প্রতিপক্ষ অনুযায়ী স্পিন কন্ডিশন সাজাই। প্রতিপক্ষের শক্তি, নিজেদের শক্তি, প্রতিপক্ষের দুর্বলতা এসবের ওপর নির্ভর করে উইকেট তৈরি করা হয়। উপমহাদেশ বলে শুধু স্পিন নয়, চাইলে পেস নির্ভর উইকেটও তৈরি করা যায়।’
মাঠে নামার আগে ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণা দেয়ার বিষয়ে এই লঙ্কান কোচের ভাষ্য,
‘সবচেয়ে বড় মোটিভেশন আসে- তুমি তোমার দেশের হয়ে খেলছে। সবাই দেশের হয়ে খেলতে পারে না। সবাই চায় তুমি ভালো করো। সেটা কীভাবে করা যায়, সামর্থ্য অনুযায়ী খেলা যায়, গত ম্যাচ থেকে শিক্ষা নেয়া যায় এসব নিয়েই আমরা ভাবছি।’
No comments