জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
জিয়া
অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেয়া ১০
বছরের সাজার হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। বিচারিক আদালত এ
মামলায় ৫ বছরের সাজা দিলেও দুদকের করা রিভিশন আবেদন বিবেচনায় নিয়ে সাজা
দ্বিগুণ করেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরের পর ১৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে। রায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সঙ্গে বেঞ্চের কনিষ্ট বিচারপতি সহমত প্রকাশ করেছেন। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক উল হক, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমেদ, এ জে মোহাম্মদ আলীসহ ২৩ জনকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ আরো ছয় আইন কর্মকর্তা ও দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খানসহ ৪ জন আইনজীবীর নাম রয়েছে।
রায়ে সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় আদালত বলেছেন, বেগম জিয়া জেনে-শুনে অসততার আশ্রয় নিয়ে ট্রাস্টের তহবিল আত্মসাৎ করেছেন। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে, তার অজ্ঞাতসারে অপর আসামিদের ব্যাংক হিসেবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল।
তার এই অসৎ ইচ্ছার দায় মার্জনার কোনো উপায় নেই।
কারণ তিনি মূল ব্যক্তি, যার ব্যর্থতায় তহবিল আত্মসাৎ হয়।
আজকের দিনে আর্থিক অপরাধসহ দুর্নীতি শুধু সুশাসনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়নি বরং গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসনকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটা নিয়ে বিতর্ক নেই যে, দুর্নীতি সব অধিকারকে নস্যাৎ করে থাকে। দুর্নীতি মানবাধিকার ক্ষয় করে, উন্নয়নকে রুদ্ধ করে, ন্যায়বিচারকে অবমূল্যায়ন করে অথচ স্বাধীনতা, সাম্য, সম্প্রীতি আমাদের সংবিধানের একটি মূল বিষয়। আদালতের কর্তব্য হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী লড়াই করা। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় অভিযুক্তকে শাস্তি প্রদানে কোমল হওয়ার সুযোগ নেই।
বিচারিক আদালতের দেয়া পাঁচ বছরের সাজা থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করার যুক্তি হিসেবে আদালত বলেছেন, বেগম জিয়া হলে আসল অভিযুক্ত। অন্য আসামিরা তাকে অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছেন। তারা এক অপরের সহায়তায় ট্রাস্টের তহবিলের অপব্যবহার করেছেন। আমাদের মতামত হলো বেগম জিয়াকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় সাজা দেয়া সঠিক হয়নি। ৪০৯ ধারার পাশাপাশি জেনারেল ক্লজেজ অ্যাক্টের ২৬ ধারায়ও তার শাস্তি প্রাপ্য। অন্য আসামিরা দেয়া সাজা তাদের প্রাপ্য। বিচারিক আদালত বেগম জিয়াকে বয়স, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়েছেন, যা প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে কম হবে এ ধরনের আইনি ন্যায্য ও যুক্তি আমরা বলে খুঁজে পাইনি। এতিমদের জন্য পাওয়া অর্থের সুরক্ষা দেয়া এবং তাদের কল্যাণে ব্যয় করা বেগম জিয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু সেটা না করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হয়ে নিজের ছেলে, এক আত্মীয় এবং দলীয় ব্যক্তির মাধ্যমে অর্থের অপব্যবহার করেছেন।
সবকিছু বিবেচনায় আমরা এটাই যুক্তিযুক্ত মনে করছি যে, যথাযথ সাজা দেয়া হলে রাষ্ট্রের যেকোনো অঙ্গের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করার ক্ষেত্রে দুবার হলেও ভাবতে বাধ্য হবে।
এ কারণে আপিল খারিজ করা হলো। সাজা বাড়াতে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুকূলে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করা হলো। অন্য আসামিদের বিশেষ জজ আদালতের দেয়া সাজা বহাল রাখা হলো। বেগম জিয়াকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানার আদেশ দেয়া হলো।
২০ কার্যদিবস শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৩০শে অক্টোবর হাইকোর্ট সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিলেন। তিন মাস পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলো। ওইদিন খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বেড়ে দশ বছর করেন হাইকোর্ট। এ মামলার অপর দুই আসামি মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের দশ বছরের সাজাও বহাল থাকে। একইসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানের ১০ বছরের দণ্ডও বহাল থাকে হাইকোর্টের রায়ে। খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদক রিভিশন আবেদন করলে সেটা যথাযথ ঘোষণা করে সাজা ১০ বছরে উন্নীত করে হাইকোর্ট।
২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বকশিবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। রায়ের পর ওই দিনই তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় হয়।
রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের সত্যায়িত (সার্টিফায়েড) অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালাস চেয়ে আপিল করেন তারা। পরে ২২শে ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্ট ৭ই মার্চ অপর আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ১০ই মে শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল গ্রহণ করেন।
এছাড়া গত ২৮শে মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের করা আবেদন গ্রহণ করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ১২ই মার্চ খালেদা জিয়া এ মামলায় চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। কিন্তু জামিন পেলেও অন্য মামলা থাকায় তিনি মুক্ত হতে পারেননি।
জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই খালেদা জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে অন্যান্য মামলার সঙ্গে এ মামলায়ও খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মতিঝিল থানায় করা মামলায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এতে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অভিযোগ করে দুদক। মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কুয়েত থেকে এতিমদের জন্য আসা অর্থ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আত্মসাৎ করে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট শুধু কাগজেই ছিল, বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট এ মামলার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশিদ। মামলায় ৩২ সাক্ষীর মধ্যে ৩১ জন সাক্ষ্য দেন।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরের পর ১৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে। রায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সঙ্গে বেঞ্চের কনিষ্ট বিচারপতি সহমত প্রকাশ করেছেন। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক উল হক, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমেদ, এ জে মোহাম্মদ আলীসহ ২৩ জনকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ আরো ছয় আইন কর্মকর্তা ও দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খানসহ ৪ জন আইনজীবীর নাম রয়েছে।
রায়ে সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় আদালত বলেছেন, বেগম জিয়া জেনে-শুনে অসততার আশ্রয় নিয়ে ট্রাস্টের তহবিল আত্মসাৎ করেছেন। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয় যে, তার অজ্ঞাতসারে অপর আসামিদের ব্যাংক হিসেবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছিল।
তার এই অসৎ ইচ্ছার দায় মার্জনার কোনো উপায় নেই।
কারণ তিনি মূল ব্যক্তি, যার ব্যর্থতায় তহবিল আত্মসাৎ হয়।
আজকের দিনে আর্থিক অপরাধসহ দুর্নীতি শুধু সুশাসনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়নি বরং গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসনকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটা নিয়ে বিতর্ক নেই যে, দুর্নীতি সব অধিকারকে নস্যাৎ করে থাকে। দুর্নীতি মানবাধিকার ক্ষয় করে, উন্নয়নকে রুদ্ধ করে, ন্যায়বিচারকে অবমূল্যায়ন করে অথচ স্বাধীনতা, সাম্য, সম্প্রীতি আমাদের সংবিধানের একটি মূল বিষয়। আদালতের কর্তব্য হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তিশালী লড়াই করা। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় অভিযুক্তকে শাস্তি প্রদানে কোমল হওয়ার সুযোগ নেই।
বিচারিক আদালতের দেয়া পাঁচ বছরের সাজা থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করার যুক্তি হিসেবে আদালত বলেছেন, বেগম জিয়া হলে আসল অভিযুক্ত। অন্য আসামিরা তাকে অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছেন। তারা এক অপরের সহায়তায় ট্রাস্টের তহবিলের অপব্যবহার করেছেন। আমাদের মতামত হলো বেগম জিয়াকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় সাজা দেয়া সঠিক হয়নি। ৪০৯ ধারার পাশাপাশি জেনারেল ক্লজেজ অ্যাক্টের ২৬ ধারায়ও তার শাস্তি প্রাপ্য। অন্য আসামিরা দেয়া সাজা তাদের প্রাপ্য। বিচারিক আদালত বেগম জিয়াকে বয়স, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়েছেন, যা প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে কম হবে এ ধরনের আইনি ন্যায্য ও যুক্তি আমরা বলে খুঁজে পাইনি। এতিমদের জন্য পাওয়া অর্থের সুরক্ষা দেয়া এবং তাদের কল্যাণে ব্যয় করা বেগম জিয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু সেটা না করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হয়ে নিজের ছেলে, এক আত্মীয় এবং দলীয় ব্যক্তির মাধ্যমে অর্থের অপব্যবহার করেছেন।
সবকিছু বিবেচনায় আমরা এটাই যুক্তিযুক্ত মনে করছি যে, যথাযথ সাজা দেয়া হলে রাষ্ট্রের যেকোনো অঙ্গের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করার ক্ষেত্রে দুবার হলেও ভাবতে বাধ্য হবে।
এ কারণে আপিল খারিজ করা হলো। সাজা বাড়াতে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুকূলে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করা হলো। অন্য আসামিদের বিশেষ জজ আদালতের দেয়া সাজা বহাল রাখা হলো। বেগম জিয়াকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানার আদেশ দেয়া হলো।
২০ কার্যদিবস শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৩০শে অক্টোবর হাইকোর্ট সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিলেন। তিন মাস পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলো। ওইদিন খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বেড়ে দশ বছর করেন হাইকোর্ট। এ মামলার অপর দুই আসামি মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের দশ বছরের সাজাও বহাল থাকে। একইসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানের ১০ বছরের দণ্ডও বহাল থাকে হাইকোর্টের রায়ে। খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদক রিভিশন আবেদন করলে সেটা যথাযথ ঘোষণা করে সাজা ১০ বছরে উন্নীত করে হাইকোর্ট।
২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বকশিবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। রায়ের পর ওই দিনই তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় হয়।
রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের সত্যায়িত (সার্টিফায়েড) অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালাস চেয়ে আপিল করেন তারা। পরে ২২শে ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্ট ৭ই মার্চ অপর আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ১০ই মে শরফুদ্দিন আহমেদের আপিল গ্রহণ করেন।
এছাড়া গত ২৮শে মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের করা আবেদন গ্রহণ করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ১২ই মার্চ খালেদা জিয়া এ মামলায় চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। কিন্তু জামিন পেলেও অন্য মামলা থাকায় তিনি মুক্ত হতে পারেননি।
জরুরি অবস্থার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই খালেদা জিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে অন্যান্য মামলার সঙ্গে এ মামলায়ও খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মতিঝিল থানায় করা মামলায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এতে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অভিযোগ করে দুদক। মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কুয়েত থেকে এতিমদের জন্য আসা অর্থ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আত্মসাৎ করে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট শুধু কাগজেই ছিল, বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট এ মামলার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশিদ। মামলায় ৩২ সাক্ষীর মধ্যে ৩১ জন সাক্ষ্য দেন।
No comments