স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম-দুর্নীতি: দুদকের তথ্যের পর তৎপর মন্ত্রণালয় by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
যেসব
চিকিৎসক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগ পেয়েছে
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। একইসঙ্গে
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনিটরিংয়ে আরো তৎপর হচ্ছে মন্ত্রণালয়। অভিযুক্তরা
দোষী সাব্যস্ত হলে চাকরিবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্ত্রণালয়ের
শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সম্প্রতি দুদকের অভিযানে ঢাকাসহ ৮ জেলার
হাসপাতালে অধিকাংশ চিকিৎসককে অনুপস্থিত পেয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর
হাসপাতালগুলোয় ৪০ শতাংশ এবং উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ৬২ শতাংশ চিকিৎসকের
অনুপস্থিতি দেখা গেছে। বিষয়টিকে চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনৈতিক। আর
মন্ত্রণালয় বলছে, চিকিৎসকদের এই অনুপস্থিতির বিষয়টি এবং স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের উত্থাপিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে
ব্যবস্থা নেয়া হবে। কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়ে কঠোর
ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হাসপাতালে চিকিৎসকদের অননুমোদিত অনুপস্থিত প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, চাকরির নিয়ম আছে।
স্বাভাবিক রুটিন আছে। চিকিৎসকরা যেখানে চাকরি করনে তার উপরে মহল আছে। তারপরে মন্ত্রণালয় আছে। হাসপাতালগুলোতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অভিযান তাদের নজরে এসেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে মন্ত্রণালয়ও তাদের চ্যানেলে ভেরিফাই করছে। তদন্ত চলছে। দোষী হলে চাকরির নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, অভিযোগ পওয়া গেছে। তদন্ত হবে। তদন্তে দোষী হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ২১শে জানুয়ারি বেলা দুইটা পর্যন্ত মুগদা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ফুলবাড়িয়ার কর্মচারী কল্যাণ হাসপাতাল, নাজিরা বাজারের মা ও শিশু সদন, রংপুরের পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দিনাজপুর সদর হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা সদর হাসপাতাল ও আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি দেখতে পায় সংস্থাটি। এদিকে, ২৩শে জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগে ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছে দুদক। চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অধীনস্থ বিভিন্ন কার্যালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতা অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতির শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে। যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুশাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে। দুদকে তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে, যা আমাদের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। এমন অবস্থায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতি প্রতিরোধক কল্পে বর্তমান কর্মস্থল থেকে জরুরি ভিত্তিতে বদলির ব্যবস্থা নিতেও সুপারিশ করেছে দুদক।
কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি এবং কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব মানবজমিনকে বলেন, চিকিৎসকদের দুর্বৃত্তায়ন আছে। এটা অস্বীকার করার কারণ নেই। এর সমাধান কী সেটা খুঁজে বের করতে হবে। মন্ত্রণালয় কি করছে। দুদক অভিযান চালিয়ে দুর্নীতি ধরিয়ে দিয়েছে। এটা মন্ত্রণালয়ে অদক্ষতা। মন্ত্রণালয় তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কি তদারকি করছে। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা কি কাজের জায়গা নিয়ে সন্তুষ্ট নন? কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, সেটা আগে বের করতে হবে। অনুপস্থিতির যৌক্তিক কারণ খোঁজে বের করতে হবে। ব্লেম গেম দিয়ে হবে না। পরিবেশ তৈরি করতে হবে। উপস্থিতির জন্য হাতের আঙুলের ছাপ নেয়ার জন্য ডিজিটাল মেশিন কিনে অনেক টাকা খরচ করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, হেলথ সার্ভিস সিস্টেমে কোনো সমস্যা রয়েছে কি না, তাও দেখতে হবে। কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্টার জাহিদুর রহমান বসুনিয়া মানবজমিনকে বলেন, চাকরি নিয়েছেন, দায়িত্ব পালন করবেন না। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকবেন এটা হতে পারে না। এটা অনৈতিক।
হাসপাতালে চিকিৎসকদের অননুমোদিত অনুপস্থিত প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, চাকরির নিয়ম আছে।
স্বাভাবিক রুটিন আছে। চিকিৎসকরা যেখানে চাকরি করনে তার উপরে মহল আছে। তারপরে মন্ত্রণালয় আছে। হাসপাতালগুলোতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অভিযান তাদের নজরে এসেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে মন্ত্রণালয়ও তাদের চ্যানেলে ভেরিফাই করছে। তদন্ত চলছে। দোষী হলে চাকরির নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, অভিযোগ পওয়া গেছে। তদন্ত হবে। তদন্তে দোষী হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ২১শে জানুয়ারি বেলা দুইটা পর্যন্ত মুগদা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ফুলবাড়িয়ার কর্মচারী কল্যাণ হাসপাতাল, নাজিরা বাজারের মা ও শিশু সদন, রংপুরের পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দিনাজপুর সদর হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা সদর হাসপাতাল ও আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি দেখতে পায় সংস্থাটি। এদিকে, ২৩শে জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগে ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছে দুদক। চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অধীনস্থ বিভিন্ন কার্যালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতা অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতির শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে। যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুশাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে। দুদকে তাদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে, যা আমাদের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। এমন অবস্থায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুর্নীতি প্রতিরোধক কল্পে বর্তমান কর্মস্থল থেকে জরুরি ভিত্তিতে বদলির ব্যবস্থা নিতেও সুপারিশ করেছে দুদক।
কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি এবং কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব মানবজমিনকে বলেন, চিকিৎসকদের দুর্বৃত্তায়ন আছে। এটা অস্বীকার করার কারণ নেই। এর সমাধান কী সেটা খুঁজে বের করতে হবে। মন্ত্রণালয় কি করছে। দুদক অভিযান চালিয়ে দুর্নীতি ধরিয়ে দিয়েছে। এটা মন্ত্রণালয়ে অদক্ষতা। মন্ত্রণালয় তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কি তদারকি করছে। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা কি কাজের জায়গা নিয়ে সন্তুষ্ট নন? কাজের সুযোগ সুবিধা রয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, সেটা আগে বের করতে হবে। অনুপস্থিতির যৌক্তিক কারণ খোঁজে বের করতে হবে। ব্লেম গেম দিয়ে হবে না। পরিবেশ তৈরি করতে হবে। উপস্থিতির জন্য হাতের আঙুলের ছাপ নেয়ার জন্য ডিজিটাল মেশিন কিনে অনেক টাকা খরচ করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, হেলথ সার্ভিস সিস্টেমে কোনো সমস্যা রয়েছে কি না, তাও দেখতে হবে। কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্টার জাহিদুর রহমান বসুনিয়া মানবজমিনকে বলেন, চাকরি নিয়েছেন, দায়িত্ব পালন করবেন না। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকবেন এটা হতে পারে না। এটা অনৈতিক।
No comments