সৌর বিদ্যুতে আলোকিত মনপুরা by নুরে আলম জিকু
মনপুরা।
দ্বীপ জেলা ভোলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন উপজেলা। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে
মেঘনা নদীর মোহনায় ১৪৪ বর্গ মাইল এলাকায় নিয়ে এই দ্বীপের অবস্থান। এর
চারপাশে ছোট বড় প্রায় ১০টি চরে লক্ষাধিক মানুষের বাস। এসব চরের টিনের চালা ও
কুঁড়েঘর এখানকার মানুষের একমাত্র বেঁচে থাকার অবলম্বন। একটা সময়
রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত এই উপজেলার মানুষ ছিল
অন্ধকারে। সূর্যের আলো নেভার সঙ্গে সঙ্গে এই দ্বীপটি ঢেকে যেত অন্ধকারে।
বিগত ৫ বছর আগেও আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে ছিল এই অঞ্চলের মানুষ। এইসব
চরাঞ্চলে এখন আলোকিত হয়ে উঠেছে সৌর বিদ্যুতের আলোয়। এর ফলে চর কলাতলী, চর
জহিরউদ্দিন (মাঝের চর), চর তাজাম্মুল, চরজামশেদ, চরপাতিলা, চর পিয়াল,
চরনিজাম, লালচর, বালুয়ারচর, চর গোয়ালিয়া, সাকুচিয়া দুর্গম চরাঞ্চলের
মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়েছে। এখানে সম্প্রতি সৌর বিদ্যুতের
ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকারি অফিস আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,
হাসপাতাল, দোকানপাট ও বাসগৃহে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার রয়েছে। প্রায় প্রতিটি
বাসা বাড়ির ছাদে দেখা মিলে ছোট বড় নানান ধরনের সোলার প্যানেল জেলেদের
নৌকাতেও সৌর বিদ্যুতের আলো দেখা মিলে। শুধুমাত্র কুপি ও হারিকেনের আলোতে
যেখানে একসময় অন্ধকার দূর হতো, এখন সেখানে চলে কম্পিউটার ও টেলিভিশন।
সূর্যের আলো নিভে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোকিত হচ্ছে চর কলাতলী, চর
জহিরউদ্দিন, চর গোয়ালিয়া, সাকুচিয়াসহ দুর্গম চরাঞ্চলের গ্রামের ঘরবাড়ি
গুলো। প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও বিদ্যুতের আলো না পৌঁছালেও এখন রাতের বেলা
বিদ্যুতের আলো জ্বলে। এ আলোয় এখন নতুন দিগন্তের সূচনা। পাল্টে যাচ্ছে
মনপুরা উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের জীবনযাত্রা। বাড়ছে স্কুল-কলেজগামী
ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা। উপজেলায় প্রায় ৭০% পরিবার সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে
আসছে। সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে মনপুরা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার,
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সোলার স্থাপন করা হয়েছে। এসব
সোলারের আলো স্বয়ংক্রিয় ভাবে সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে ওঠে এবং
সূর্যোদয়ের সময় লাইটের আলো বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বাজারে চুরি ডাকাতি ও অনেক
কমে গেছে।
জানা যায়, মনপুরা উপজেলায় পিডিবির একটি পাওয়ার প্লান্ট থাকলেও তার ব্যবহার শহরকেন্দ্রিক খুবই সীমিত সময়ের জন্য। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ২টার মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এরপর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নেমে আসে অন্ধকার। এই অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে সৌর বিদ্যুতের কদর বেড়েছে। এ ছাড়া সাকুচিয়ার বাণিজ্যিকভাবে সৌর বিদ্যুৎ ২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট সম্পন্ন সোলার মিনি গ্রিড থেকে ২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এবং আরেকটি ৫ মেগাওয়াট সম্পন্ন সৌর প্লান্টের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভূঁইয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা হারুন মোল্লা জানান, গত ৫ বছর ধরে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় তার কোনো জ্বালানি কিনতে হয় না। রাতে আলোর ব্যাপারে পরিবারের কোনো চিন্তা করতে হয় না। ছেলে মেয়েরা সোলারের আলোতে রাতে পড়াশোনা করে আসছেন। ঘরে সোলার থাকায় ইচ্ছেমতো লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন ও মোবাইল চার্জ দিতে পারছেন। মাসিক বিদ্যুৎ বিলের কোনে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। দিনের আলো নিভে গেলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সোলারের আলোয় আলোকিত হচ্ছে ঘর-বাড়ি। ছেলে মেয়েরা পড়ার টেবিলে বসছে। পিছিয়ে পড়া এসব গ্রাম বিভিন্ন ধরনের বিপদ-আপদ থেকেও এখন অনেকটা মুক্ত। চরফয়েজউদ্দিন ফকিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিরিনা আক্তার জানান, এলাকায় বাজারে বিদ্যুৎ থাকলেও এখানকার বাসা বাড়িতে বিদ্যুতের কোনো সংযোগ নেই। আলোর জন্য এক মাত্র সৌর বিদ্যুতের এই এলাকার একমাত্র ভরসা। আমার রাতে সৌর বিদ্যুতের আলোয় পড়াশোনা করছি। যখন তখন বিদ্যুৎ যাওয়ার ভয় নেই। নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করা যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, আগে বাজারে জেনারেটরের আলোতে দোকান চালাতাম। রাত ১০টার পরে জেনারেটর বন্ধ হয়ে যেত। এতে বেশি সময় দোকান খোলা রাখতে পারতাম না। এখন দোকানে কারেন্ট ও সোলার দুটোই আছে। ইচ্ছে মতো যখন যেটা লাগে সেটাই ব্যবহার করছি। সৌলার ব্যবহারের ফলে সরকারি বিদ্যুৎ তেমন ব্যবহার করা হয় না। এতে মাসিক বিদ্যুৎ বিল অনেক কম আসে। দোকানের পাশাপাশি বাড়িতেও ৭ বাতি জ্বালানোর মতো সোলার আছে। জাকিরের মতো উপজেলার সর্বত্র অলিগলির ছোটখাটো দোকানপাটেও সোলারের কদর রয়েছে। সূর্যের আলো থেকে সোলার প্যানেল ব্যাটারি চার্জে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। বাড়ির যেকোনো খোলা জায়গা বা উঁচু স্থানে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় সূর্যের আলো বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়ে ব্যাটারিতে সঞ্চয় হতে থাকে এবং চার্জ নিয়ন্ত্রণ দ্বারা ব্যাটারির মধ্যে বিদ্যুতের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। প্রতিটি সৌর বিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপন করতে ৮ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। রহিমা আফরোজ, গ্রামীণ শক্তি, শ্রীজনী বাংলাদেশ ও হিলফুল ফুজলসহ বিভিন্ন কোম্পানি এসব সোলার এককালীন কিছু টাকা ও পরে মাসিক কিস্তিতে বিক্রি করে থাকেন।
জানা যায়, মনপুরা উপজেলায় পিডিবির একটি পাওয়ার প্লান্ট থাকলেও তার ব্যবহার শহরকেন্দ্রিক খুবই সীমিত সময়ের জন্য। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ২টার মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এরপর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নেমে আসে অন্ধকার। এই অন্ধকার থেকে মুক্তি পেতে সৌর বিদ্যুতের কদর বেড়েছে। এ ছাড়া সাকুচিয়ার বাণিজ্যিকভাবে সৌর বিদ্যুৎ ২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট সম্পন্ন সোলার মিনি গ্রিড থেকে ২ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এবং আরেকটি ৫ মেগাওয়াট সম্পন্ন সৌর প্লান্টের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভূঁইয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা হারুন মোল্লা জানান, গত ৫ বছর ধরে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় তার কোনো জ্বালানি কিনতে হয় না। রাতে আলোর ব্যাপারে পরিবারের কোনো চিন্তা করতে হয় না। ছেলে মেয়েরা সোলারের আলোতে রাতে পড়াশোনা করে আসছেন। ঘরে সোলার থাকায় ইচ্ছেমতো লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন ও মোবাইল চার্জ দিতে পারছেন। মাসিক বিদ্যুৎ বিলের কোনে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। দিনের আলো নিভে গেলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সোলারের আলোয় আলোকিত হচ্ছে ঘর-বাড়ি। ছেলে মেয়েরা পড়ার টেবিলে বসছে। পিছিয়ে পড়া এসব গ্রাম বিভিন্ন ধরনের বিপদ-আপদ থেকেও এখন অনেকটা মুক্ত। চরফয়েজউদ্দিন ফকিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিরিনা আক্তার জানান, এলাকায় বাজারে বিদ্যুৎ থাকলেও এখানকার বাসা বাড়িতে বিদ্যুতের কোনো সংযোগ নেই। আলোর জন্য এক মাত্র সৌর বিদ্যুতের এই এলাকার একমাত্র ভরসা। আমার রাতে সৌর বিদ্যুতের আলোয় পড়াশোনা করছি। যখন তখন বিদ্যুৎ যাওয়ার ভয় নেই। নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করা যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, আগে বাজারে জেনারেটরের আলোতে দোকান চালাতাম। রাত ১০টার পরে জেনারেটর বন্ধ হয়ে যেত। এতে বেশি সময় দোকান খোলা রাখতে পারতাম না। এখন দোকানে কারেন্ট ও সোলার দুটোই আছে। ইচ্ছে মতো যখন যেটা লাগে সেটাই ব্যবহার করছি। সৌলার ব্যবহারের ফলে সরকারি বিদ্যুৎ তেমন ব্যবহার করা হয় না। এতে মাসিক বিদ্যুৎ বিল অনেক কম আসে। দোকানের পাশাপাশি বাড়িতেও ৭ বাতি জ্বালানোর মতো সোলার আছে। জাকিরের মতো উপজেলার সর্বত্র অলিগলির ছোটখাটো দোকানপাটেও সোলারের কদর রয়েছে। সূর্যের আলো থেকে সোলার প্যানেল ব্যাটারি চার্জে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। বাড়ির যেকোনো খোলা জায়গা বা উঁচু স্থানে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় সূর্যের আলো বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়ে ব্যাটারিতে সঞ্চয় হতে থাকে এবং চার্জ নিয়ন্ত্রণ দ্বারা ব্যাটারির মধ্যে বিদ্যুতের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। প্রতিটি সৌর বিদ্যুৎ ইউনিট স্থাপন করতে ৮ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। রহিমা আফরোজ, গ্রামীণ শক্তি, শ্রীজনী বাংলাদেশ ও হিলফুল ফুজলসহ বিভিন্ন কোম্পানি এসব সোলার এককালীন কিছু টাকা ও পরে মাসিক কিস্তিতে বিক্রি করে থাকেন।
No comments