মিয়ানমারের ছয় জেনারেলের বিচার চায় জাতিসংঘ
মিয়ানমারে
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী
অপরাধের জন্য দেশটির সেনাপ্রধানসহ ৬ ঊর্র্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত
করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। সোমবার
জেনেভায় অভিযুক্তদের বিচার দাবি করে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনার সঙ্গে জড়িত। একই সঙ্গে
সেখানে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী রাখাইনে পরিকল্পিতভাবে এ গণহত্যা পরিচালনা
করেছে। এ খবর প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন
পোস্টে। এতে সাংবাদিক শিবানি মাহতানি লিখেছেন, জাতিগত ও ধর্মীয়
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধারে
দায়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ সামরিক কর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে
বিচার করতে হবে। গত আগস্ট থেকে তারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর যে নৃশংসতা
চালায় তার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় ওঠে।
এক বছরের বেশি সময় ধরে সাক্ষাৎকার, গবেষণা, জাতিসংঘের অনুমোদিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বিশ্লেষণের প্রেক্ষিতে ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্য ও অন্যান্য স্থানে কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে সে বিষয়টিতে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন শুধু রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানেই সীমাব্ধ থাকেনি। তারা ২০১১ সাল থেকে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এতে দেখা গেছে রাখাইন, কাচিন ও শান রাজ্যে ভয়াবহভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ন্যক্কারজনক অপরাধ। বাছবিচারহীনভাবে হত্যা, গণধর্ষণ, শিশুদের ওপর নির্যাতন, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার বিষয়কে কখনো সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা দিয়ে সাফাই গাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে যে নিরাপত্তা হুমকি দেখা দিয়েছিল তার প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী যে কৌশল নিয়েছিল তা ভয়াবহভাবে অযৌক্তিক।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেলদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করার জন্য যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মন্তব্য নিতে চাইলে তাদের পাওয়া যায়নি। এই রিপোর্টে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের সময় রাখাইনে কি জঘন্য মানবাধিকার বিষয়ক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই সরকার নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা উল্টো এ বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছে। তদন্তে দেখা গেছে রাখাইনে ধ্বংসলীলা চালানোর প্রমাণ রয়েছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তকারীদের সেখানে যেতে দেয়া হয়নি। মিয়ানমারে জাতিসংঘের কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক কর্মকর্তা রিচার্ড হোরসে বলেন, এই রিপোর্টটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। কারণ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়টি তদন্ত করেছে জাতিসংঘের অনুমোদিত তদন্তকারী ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। তারা শান ও কাচিন রাজ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের বিষয়েও আলোকপাত করেছে। এই রিপোর্টে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিচার করার জন্য পর্যাপ্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে।
ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কোনো ধরণের সমালোচনা মেনে নেয় না। তারা দেশটির মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন আইনে গ্রেপ্তার করছে ও কারাদণ্ড দিচ্ছে। এ সময় তারা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রয়টার্সের দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই সাংবাদিকরা দেশটির রাখাইন রাজ্যের ইন দিন অঞ্চলে রোহিঙ্গা গণহত্যার খবর প্রকাশ করেছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে তারা কারাগারে আটক রয়েছেন। তাদের জামিন নিয়েও নানা টালবাহানার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মিন্ট কাও বলেছেন, এই মামলায় খুব সম্ভবত সরকারের হস্তক্ষেপ রয়েছে। আমরা বলতে পারি না, মিয়ানমারের বিচার ব্যবস্থা একেবারেই স্বাধীন।
সোমবার সকালে জেনেভায় প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বেশ কয়েকজনের নামের তালিকা দেয়া হয়েছে। এতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের অপরাধের তদন্ত ও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। তালিকার একদম প্রথমেই রয়েছে সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লাইং। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। এছাড়া আরো ৫ জন সেনা কমান্ডারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলো, সো উইন, অং কাও যাও, মং মং সু, অং অং ও থান ও। এরমধ্যে মং মং সু ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে। জুন মাসে তাকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী থেকেও বরখাস্ত করা হয়।
জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃক মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের উপরে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্যও সুপারিশ করা হয়। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছে, এ অঞ্চলের পরাশক্তি চীন রোহিঙ্গা সংকটের প্রথম থেকেই মিয়ানমারকে রক্ষা করে আসছে। এছাড়া মিন অং হ্লাইং সমপ্রতি রাশিয়া সফর করেছেন। রাশিয়াও এ সংকটে মিয়ানমারের পক্ষে তার অবস্থান সপষ্ট করেছে। তাই মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করা সহজ হবে না। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক টুইট বার্তায় বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গা গণহত্যায় যুক্ত সকলকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করবে। এ সময় তিনি এ গণহত্যাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে অভিহিত করেন। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ১৮ই সেপ্টেম্বর সংস্থাটির মানবাধিকার পরিষদে এ বিষয়ে একটি পূর্ণ প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে।
এক বছরের বেশি সময় ধরে সাক্ষাৎকার, গবেষণা, জাতিসংঘের অনুমোদিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বিশ্লেষণের প্রেক্ষিতে ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। রাখাইন রাজ্য ও অন্যান্য স্থানে কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে সে বিষয়টিতে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন শুধু রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানেই সীমাব্ধ থাকেনি। তারা ২০১১ সাল থেকে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এতে দেখা গেছে রাখাইন, কাচিন ও শান রাজ্যে ভয়াবহভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ন্যক্কারজনক অপরাধ। বাছবিচারহীনভাবে হত্যা, গণধর্ষণ, শিশুদের ওপর নির্যাতন, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার বিষয়কে কখনো সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা দিয়ে সাফাই গাওয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে যে নিরাপত্তা হুমকি দেখা দিয়েছিল তার প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী যে কৌশল নিয়েছিল তা ভয়াবহভাবে অযৌক্তিক।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলেছে, মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেলদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করার জন্য যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মন্তব্য নিতে চাইলে তাদের পাওয়া যায়নি। এই রিপোর্টে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের সময় রাখাইনে কি জঘন্য মানবাধিকার বিষয়ক সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই সরকার নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা উল্টো এ বিষয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছে। তদন্তে দেখা গেছে রাখাইনে ধ্বংসলীলা চালানোর প্রমাণ রয়েছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তকারীদের সেখানে যেতে দেয়া হয়নি। মিয়ানমারে জাতিসংঘের কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক কর্মকর্তা রিচার্ড হোরসে বলেন, এই রিপোর্টটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। কারণ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বিষয়টি তদন্ত করেছে জাতিসংঘের অনুমোদিত তদন্তকারী ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। তারা শান ও কাচিন রাজ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের বিষয়েও আলোকপাত করেছে। এই রিপোর্টে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিচার করার জন্য পর্যাপ্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে।
ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কোনো ধরণের সমালোচনা মেনে নেয় না। তারা দেশটির মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন আইনে গ্রেপ্তার করছে ও কারাদণ্ড দিচ্ছে। এ সময় তারা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রয়টার্সের দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই সাংবাদিকরা দেশটির রাখাইন রাজ্যের ইন দিন অঞ্চলে রোহিঙ্গা গণহত্যার খবর প্রকাশ করেছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে তারা কারাগারে আটক রয়েছেন। তাদের জামিন নিয়েও নানা টালবাহানার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মিন্ট কাও বলেছেন, এই মামলায় খুব সম্ভবত সরকারের হস্তক্ষেপ রয়েছে। আমরা বলতে পারি না, মিয়ানমারের বিচার ব্যবস্থা একেবারেই স্বাধীন।
সোমবার সকালে জেনেভায় প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বেশ কয়েকজনের নামের তালিকা দেয়া হয়েছে। এতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের অপরাধের তদন্ত ও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। তালিকার একদম প্রথমেই রয়েছে সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লাইং। এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। এছাড়া আরো ৫ জন সেনা কমান্ডারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলো, সো উইন, অং কাও যাও, মং মং সু, অং অং ও থান ও। এরমধ্যে মং মং সু ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে। জুন মাসে তাকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী থেকেও বরখাস্ত করা হয়।
জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃক মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের উপরে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্যও সুপারিশ করা হয়। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছে, এ অঞ্চলের পরাশক্তি চীন রোহিঙ্গা সংকটের প্রথম থেকেই মিয়ানমারকে রক্ষা করে আসছে। এছাড়া মিন অং হ্লাইং সমপ্রতি রাশিয়া সফর করেছেন। রাশিয়াও এ সংকটে মিয়ানমারের পক্ষে তার অবস্থান সপষ্ট করেছে। তাই মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করা সহজ হবে না। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক টুইট বার্তায় বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গা গণহত্যায় যুক্ত সকলকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করবে। এ সময় তিনি এ গণহত্যাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে অভিহিত করেন। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ১৮ই সেপ্টেম্বর সংস্থাটির মানবাধিকার পরিষদে এ বিষয়ে একটি পূর্ণ প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে।
No comments