টার্নিং পয়েন্টে জোট রাজনীতি: কী হচ্ছে, কী হবে
শেষ
পর্যন্ত কী হবে বলা মুশকিল। তবে সম্ভবত বাংলাদেশে জোট রাজনীতি এক নতুন
অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। দুই-চার দিনের মধ্যেই আরো অনেক কিছু খোলাসা
হয়ে যেতে পারে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে এক ছাতার নিচে আনতে দীর্ঘদিন ধরেই
তৎপরতা চলছে। বারবার এই প্রচেষ্টা হোঁচটও খেয়েছে। তবে এর উদ্যোক্তারা এখন
বলছেন, তারা সাফল্যের কাছাকাছি রয়েছেন। যদিও কিছু জটিলতা এখনো রয়ে গেছে।
ওদিকে, সরকার পক্ষ থেকেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা
হচ্ছে। দুই ধরনের কৌশল নিয়ে এগুচ্ছে ক্ষমতাসীন মহল। বিএনপি নির্বাচনে থাকলে
কৌশল হবে এক ধরনের আর না থাকলে ভিন্ন কৌশল অনুসরণ করা হবে। আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতিমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে
আলোচনার কথা জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে আগামী ১২০-১২৫ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় প্রতিদিনই নাটকীয় কোনো না কোনো কিছু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ চলতি বছরের শেষদিকে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো দৃশ্যত পুরোটাই সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণে। এ নিয়ন্ত্রণ সামনের দিনগুলোতে আরো শক্ত হতে পারে। কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে হয়তো হার্ডলাইনেই থাকবে সরকার।
এই যখন অবস্থা তখন ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে তৎপরতা জোরদার করেছে। এরই মধ্যে একাধিক বৈঠকও হয়েছে দলগুলোর মধ্যে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে আন্দোলন প্রশ্নে প্রায় সব দলই একমত পোষণ করেছে। জামায়াত প্রশ্নে এক ধরনের জটিলতা থাকলেও তা সমাধানের পথে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। তারা বলছেন, ২০ দলীয় জোট অক্ষুণ্ন থাকবে। সেখানে জামায়াত ও অন্যান্য যে ইসলামপন্থি দলগুলো আছে সেগুলো থাকবে। সম্মিলিত বিরোধী দলে বিএনপি যোগ দিতে পারে।
ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল তিনি মানবজমিনকে বলেন, ঐক্য প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি রয়েছে। মঙ্গলবারই এ ব্যাপারে একটি চুক্তি সই হতে পারে। কেন এই চুক্তি? কারণ এটা শুধু ক্ষমতার রদবদলের প্রশ্ন নয়। ঐক্য হতে হবে সুশাসনের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, নাগরিক অধিকারের জন্য। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতার পক্ষ থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ক্ষমতা পরিবর্তন হলে তাদের এক লাখ কর্মী নিহত হতে পারে। এমন পরিস্থিতি যেন কখনো না হয় সে ব্যাপারেও অঙ্গীকার থাকতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসে এতে কেউ আপত্তি করবে না। তিনি বলেন, আমি আশা করি সর্বদলীয় ঐক্যে বিএনপি যোগ দেবে। সেখানে জামায়াত থাকবে না। তবে ২০ দলীয় জোটে জামায়াত থাকতে পারে।
গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় এবং দেশের শুভ পরিবর্তন চায়, তাদের নিয়েই জাতীয় ঐক্য হবে। বিএনপির ব্যাপারে বলেন, দেশে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ ঐক্য প্রক্রিয়ার কথাগুলো যেসব দল মানবে, তারাই এখানে যোগ দিতে পারবে। এসব দাবির সঙ্গে সরকার একমত হলে তারাও আসতে পারে।’ সর্বদলীয় জোটের ব্যাপারে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করলেও ২০ দলীয় জোটে জামায়াতের থাকা নিয়ে বিকল্প ধারার আপত্তি রয়েছে বলে একটি সূত্রের দাবি। ওই সূত্র বলছে, বিকল্প ধারা চায় বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেই সর্বদলীয় জোটে যোগ দিক। তবে বৃহৎ জোটের সম্ভাব্য অন্য দলগুলোর এ নিয়ে তেমন কোনো আপত্তি নেই। বৃহৎ জোটের আকৃতি কী হবে তা নিয়ে সম্ভাব্য দলগুলোর মধ্যে সংশয় থাকলেও যেকোনো ফরম্যাটে কাছাকাছি আসা নিয়ে বেশিরভাগ দলই আগ্রহী। জোট না হয়ে যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাবনাও রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে নানা কর্মসূচিতে মাঠে থাকতে চায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। আটটি বামপন্থি রাজনৈতিক দলের জোটও সেপ্টেম্বর মাস ধরে নানা কর্মসূচি পালন করবে। নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচিও দিতে পারে এ জোট। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ থেকে বিএনপিও নতুন কর্মসূচি দিতে পারে। অন্যদিকে, আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ওই সমাবেশে বিরোধী দলের নেতাদের এক মঞ্চে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
জোট অথবা যুগপৎ আন্দোলন- যাই হোক না কেন, রাজনীতি এখন নতুন এক টার্নিং পয়েন্টে। সক্রিয় পর্দার আড়ালের নানা মহল। আলোচনায় রয়েছে মালয়েশীয় মডেল আর ড. কামাল হোসেনের নামও। তবে পুনরায় বলা দরকার, বিরোধীদের জন্য রাজনীতি এখন অনেক কঠিন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে আগামী ১২০-১২৫ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় প্রতিদিনই নাটকীয় কোনো না কোনো কিছু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ চলতি বছরের শেষদিকে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো দৃশ্যত পুরোটাই সরকারি দলের নিয়ন্ত্রণে। এ নিয়ন্ত্রণ সামনের দিনগুলোতে আরো শক্ত হতে পারে। কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে হয়তো হার্ডলাইনেই থাকবে সরকার।
এই যখন অবস্থা তখন ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে তৎপরতা জোরদার করেছে। এরই মধ্যে একাধিক বৈঠকও হয়েছে দলগুলোর মধ্যে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে আন্দোলন প্রশ্নে প্রায় সব দলই একমত পোষণ করেছে। জামায়াত প্রশ্নে এক ধরনের জটিলতা থাকলেও তা সমাধানের পথে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। তারা বলছেন, ২০ দলীয় জোট অক্ষুণ্ন থাকবে। সেখানে জামায়াত ও অন্যান্য যে ইসলামপন্থি দলগুলো আছে সেগুলো থাকবে। সম্মিলিত বিরোধী দলে বিএনপি যোগ দিতে পারে।
ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল তিনি মানবজমিনকে বলেন, ঐক্য প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি রয়েছে। মঙ্গলবারই এ ব্যাপারে একটি চুক্তি সই হতে পারে। কেন এই চুক্তি? কারণ এটা শুধু ক্ষমতার রদবদলের প্রশ্ন নয়। ঐক্য হতে হবে সুশাসনের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, নাগরিক অধিকারের জন্য। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতার পক্ষ থেকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ক্ষমতা পরিবর্তন হলে তাদের এক লাখ কর্মী নিহত হতে পারে। এমন পরিস্থিতি যেন কখনো না হয় সে ব্যাপারেও অঙ্গীকার থাকতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসে এতে কেউ আপত্তি করবে না। তিনি বলেন, আমি আশা করি সর্বদলীয় ঐক্যে বিএনপি যোগ দেবে। সেখানে জামায়াত থাকবে না। তবে ২০ দলীয় জোটে জামায়াত থাকতে পারে।
গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় এবং দেশের শুভ পরিবর্তন চায়, তাদের নিয়েই জাতীয় ঐক্য হবে। বিএনপির ব্যাপারে বলেন, দেশে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচনসহ ঐক্য প্রক্রিয়ার কথাগুলো যেসব দল মানবে, তারাই এখানে যোগ দিতে পারবে। এসব দাবির সঙ্গে সরকার একমত হলে তারাও আসতে পারে।’ সর্বদলীয় জোটের ব্যাপারে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করলেও ২০ দলীয় জোটে জামায়াতের থাকা নিয়ে বিকল্প ধারার আপত্তি রয়েছে বলে একটি সূত্রের দাবি। ওই সূত্র বলছে, বিকল্প ধারা চায় বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেই সর্বদলীয় জোটে যোগ দিক। তবে বৃহৎ জোটের সম্ভাব্য অন্য দলগুলোর এ নিয়ে তেমন কোনো আপত্তি নেই। বৃহৎ জোটের আকৃতি কী হবে তা নিয়ে সম্ভাব্য দলগুলোর মধ্যে সংশয় থাকলেও যেকোনো ফরম্যাটে কাছাকাছি আসা নিয়ে বেশিরভাগ দলই আগ্রহী। জোট না হয়ে যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাবনাও রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে নানা কর্মসূচিতে মাঠে থাকতে চায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। আটটি বামপন্থি রাজনৈতিক দলের জোটও সেপ্টেম্বর মাস ধরে নানা কর্মসূচি পালন করবে। নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচিও দিতে পারে এ জোট। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ থেকে বিএনপিও নতুন কর্মসূচি দিতে পারে। অন্যদিকে, আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ওই সমাবেশে বিরোধী দলের নেতাদের এক মঞ্চে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
জোট অথবা যুগপৎ আন্দোলন- যাই হোক না কেন, রাজনীতি এখন নতুন এক টার্নিং পয়েন্টে। সক্রিয় পর্দার আড়ালের নানা মহল। আলোচনায় রয়েছে মালয়েশীয় মডেল আর ড. কামাল হোসেনের নামও। তবে পুনরায় বলা দরকার, বিরোধীদের জন্য রাজনীতি এখন অনেক কঠিন।
No comments