প্রধানমন্ত্রী নেপাল যাচ্ছেন আজ: বিমসটেক সম্মেলনে থাকছেন না সুচি, রোহিঙ্গা ইস্যুও নেই!
বিমসটেক
শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ দিনের শুরুতে নেপাল যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের ৭ রাষ্ট্রের ওই জোটের এবারের সম্মেলনে
মিয়ানমারের কার্যকর নেতা অং সান সুচি অংশ নিচ্ছেন না। রোহিঙ্গা নিপীড়ন
প্রশ্নে বাংলাদেশ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের চাপের মুখে থাকা মিয়ানমারের
প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট। বহুমাত্রিক কারিগরি ও
অর্থনৈতিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত ওই জোটের ৪র্থ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে
আলোচনার সুযোগ খুব একটা নেই- এমনটাই বলছেন ঢাকার কর্মকর্তারা। যদিও
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্বসভা এখন সরব।
দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় উদ্যোগে পুঞ্জিভূত ওই সংকটের সমাধানই চাইছে ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। তবে ঢাকা মনে করে বিমসটেকের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মিয়ানমার রোহিঙ্গা নিপীড়ন প্রশ্নে চাপে থাকলেও জোটের কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে এটি কোনো বাধা হবে না। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মতে, ওই জোটের অত্যাসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের মূল ফোকাস হচ্ছে- সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বিমসটেক গ্রিড কানেকটিভিটি প্রতিষ্ঠা এবং ফৌজদারি ও আইনি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করা।
এ নিয়ে পৃথক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণ প্রস্তুতির বিস্তারিত জানাতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। পররাষ্ট্র ভবনের সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন- রোহিঙ্গা সংকট বিমসটেকের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে না, কারণ এই জোটের মূল লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা। আমরা আশা করছি, এই সম্মেলন থেকে আমাদের একটি বড় অর্জন হবে গ্রিড কানেকটিভিটি নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হওয়া। মিয়ানমারসহ সব সদস্য দেশ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একমত হয়েছে।
আজ থেকে কাঠমান্ডুতে দুইদিনের ওই সম্মেলন শুরু হচ্ছে। যার উদ্বোধনীতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা অংশ নেবেন। উদ্বোধনীতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত বক্তব্যের পরপরই বক্তৃতা করবেন শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গাদের বর্বর অত্যাচারের মাধ্যমে দেশত্যাগে বাধ্য করার জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতি এই প্রথম কোনো আঞ্চলিক বৈঠক হচ্ছে।
সেখানে সঙ্গতকারণেই এ বিষয়টি আসবে। কিন্তু এ নিয়ে আলোচনা কতটা গুরুত্ব পাবে? সেই জিজ্ঞাসার জবাবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে- বিমসটেক সম্মেলনের মূলপর্বে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে রিট্রিট সেশনে নেতৃবৃন্দের আলোচনায় বিষয়টি আসতে পারে। যদিও শীর্ষ সম্মেলনের আগে দু’দিন ধরে কাঠমান্ডুতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অর্থাৎ সচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আওতায় যেসব আলোচনা হয়েছে তার কোথাও রোহিঙ্গা বা বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের ঘিরে সৃষ্ট সংকট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী আর সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। তবে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক। গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মানবজমিনকে বলেন- এটি আলোচনায় আসেনি। কারণ বিমসটেক বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সুযোগ নেই। আগামীকাল একটি সমন্বিত ঘোষণার মধ্যদিয়ে (কাঠমান্ডু ঘোষণায়) বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটবে। যে ঘোষণায় নেপালের কাছ থেকে সংস্থাটির পরবর্তী সামিট চেয়ারের দায়িত্ব পাবে শ্রীলঙ্কা।
মোদির সঙ্গে হবে বৈঠক, নেপালের আতিথেয়তাও গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী: এদিকে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। আজ বিকালেই ঘনিষ্ঠ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার প্রধানদ্বয়ের মধ্যকার তাৎপর্যপূর্ণ সেই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য মতে, শীর্ষ দুই নেতার বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হবে। কাঠমান্ডু সফরের প্রথম দিনই প্রধানমন্ত্রী নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তার দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। রাতে সম্মেলনে আসা নেতাদের সম্মানে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দেয়া নৈশভোজেও যোগ দেবেন তিনি। সফর শেষে শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘ প্রতিবেদনের প্রশংসা, মিয়ানমারের বক্তব্য গুরুত্বহীন: রাখাইনে রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ হোতা হিসেবে মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের দায়ী করে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশনের প্রতিবেদনের প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বুধবার বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বাস করে ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের হামলার পর এটাই সবচেয়ে সমন্বিত, তথ্যবহুল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন।”
প্রধানমন্ত্রীর কাঠমান্ডু সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মিয়ানমার যে এটা প্রত্যাখ্যান করবে, তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এতে কিছু যায় আসে না। পুরো বিশ্ব জানে, বাংলাদেশ প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে খুব ধৈর্যের সঙ্গে এই সংকট মোকাবিলা করেছে।”
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের এক বছরের মাথায় গত ২৭শে আগস্ট জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে।
আর মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির বেসামরিক সরকার ‘বিদ্বেষমূলক প্রচারকে উস্কে’ দিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ ‘আলামত ধ্বংস’ করে এবং সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ থেকে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়কে রক্ষা না করে সেই নৃশংসতায় ‘ভূমিকা’ রেখেছে। আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে।
পরে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হাতোইকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমারের খবরে বলা হয়, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করা হয়েছিল হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে। মিয়ানমার সরকার যে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের রেজুলেশনের সঙ্গে নেই, তা সব সময়ই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। “এ কারণে আমরা ওই প্রক্রিয়ায় অংশ নেইনি।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে আমরা মিয়ানমারে ঢুকতে দেইনি। তাই হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের কোনো রেজুলেশনের সঙ্গে আমরা একমত নই, তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্যও নয়।” রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরাতে এই সংকটের তিনটি বিষয়কে বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে ব্রিফিংয়ে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এগুলো হলো- মানবিক দৃষ্টিকোণ, প্রত্যাবাসন এবং রাখাইনে অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতা।
দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় উদ্যোগে পুঞ্জিভূত ওই সংকটের সমাধানই চাইছে ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। তবে ঢাকা মনে করে বিমসটেকের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মিয়ানমার রোহিঙ্গা নিপীড়ন প্রশ্নে চাপে থাকলেও জোটের কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে এটি কোনো বাধা হবে না। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মতে, ওই জোটের অত্যাসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের মূল ফোকাস হচ্ছে- সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বিমসটেক গ্রিড কানেকটিভিটি প্রতিষ্ঠা এবং ফৌজদারি ও আইনি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করা।
এ নিয়ে পৃথক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণ প্রস্তুতির বিস্তারিত জানাতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। পররাষ্ট্র ভবনের সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন- রোহিঙ্গা সংকট বিমসটেকের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে না, কারণ এই জোটের মূল লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা। আমরা আশা করছি, এই সম্মেলন থেকে আমাদের একটি বড় অর্জন হবে গ্রিড কানেকটিভিটি নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হওয়া। মিয়ানমারসহ সব সদস্য দেশ ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একমত হয়েছে।
আজ থেকে কাঠমান্ডুতে দুইদিনের ওই সম্মেলন শুরু হচ্ছে। যার উদ্বোধনীতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা অংশ নেবেন। উদ্বোধনীতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত বক্তব্যের পরপরই বক্তৃতা করবেন শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গাদের বর্বর অত্যাচারের মাধ্যমে দেশত্যাগে বাধ্য করার জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতি এই প্রথম কোনো আঞ্চলিক বৈঠক হচ্ছে।
সেখানে সঙ্গতকারণেই এ বিষয়টি আসবে। কিন্তু এ নিয়ে আলোচনা কতটা গুরুত্ব পাবে? সেই জিজ্ঞাসার জবাবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে- বিমসটেক সম্মেলনের মূলপর্বে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে রিট্রিট সেশনে নেতৃবৃন্দের আলোচনায় বিষয়টি আসতে পারে। যদিও শীর্ষ সম্মেলনের আগে দু’দিন ধরে কাঠমান্ডুতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অর্থাৎ সচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আওতায় যেসব আলোচনা হয়েছে তার কোথাও রোহিঙ্গা বা বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের ঘিরে সৃষ্ট সংকট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী আর সচিব পর্যায়ের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। তবে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক। গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মানবজমিনকে বলেন- এটি আলোচনায় আসেনি। কারণ বিমসটেক বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সুযোগ নেই। আগামীকাল একটি সমন্বিত ঘোষণার মধ্যদিয়ে (কাঠমান্ডু ঘোষণায়) বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তি ঘটবে। যে ঘোষণায় নেপালের কাছ থেকে সংস্থাটির পরবর্তী সামিট চেয়ারের দায়িত্ব পাবে শ্রীলঙ্কা।
মোদির সঙ্গে হবে বৈঠক, নেপালের আতিথেয়তাও গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী: এদিকে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। আজ বিকালেই ঘনিষ্ঠ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সরকার প্রধানদ্বয়ের মধ্যকার তাৎপর্যপূর্ণ সেই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য মতে, শীর্ষ দুই নেতার বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হবে। কাঠমান্ডু সফরের প্রথম দিনই প্রধানমন্ত্রী নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তার দেয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। রাতে সম্মেলনে আসা নেতাদের সম্মানে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দেয়া নৈশভোজেও যোগ দেবেন তিনি। সফর শেষে শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘ প্রতিবেদনের প্রশংসা, মিয়ানমারের বক্তব্য গুরুত্বহীন: রাখাইনে রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ হোতা হিসেবে মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের দায়ী করে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশনের প্রতিবেদনের প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বুধবার বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বাস করে ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের হামলার পর এটাই সবচেয়ে সমন্বিত, তথ্যবহুল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন।”
প্রধানমন্ত্রীর কাঠমান্ডু সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মিয়ানমার যে এটা প্রত্যাখ্যান করবে, তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু এতে কিছু যায় আসে না। পুরো বিশ্ব জানে, বাংলাদেশ প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে খুব ধৈর্যের সঙ্গে এই সংকট মোকাবিলা করেছে।”
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের এক বছরের মাথায় গত ২৭শে আগস্ট জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে।
আর মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির বেসামরিক সরকার ‘বিদ্বেষমূলক প্রচারকে উস্কে’ দিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ ‘আলামত ধ্বংস’ করে এবং সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ থেকে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়কে রক্ষা না করে সেই নৃশংসতায় ‘ভূমিকা’ রেখেছে। আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে।
পরে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হাতোইকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমারের খবরে বলা হয়, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করা হয়েছিল হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে। মিয়ানমার সরকার যে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের রেজুলেশনের সঙ্গে নেই, তা সব সময়ই স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। “এ কারণে আমরা ওই প্রক্রিয়ায় অংশ নেইনি।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে আমরা মিয়ানমারে ঢুকতে দেইনি। তাই হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের কোনো রেজুলেশনের সঙ্গে আমরা একমত নই, তা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্যও নয়।” রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরাতে এই সংকটের তিনটি বিষয়কে বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে ব্রিফিংয়ে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এগুলো হলো- মানবিক দৃষ্টিকোণ, প্রত্যাবাসন এবং রাখাইনে অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতা।
No comments