অভিযোগ করে অর্থ পেয়েছেন ৩,২৫৫ ভোক্তা by মহিউদ্দিন অদুল
বাজারে
নিত্যপণ্য ক্রয়ে প্রতিনিয়ত ঠকছেন গ্রাহক বা ভোক্তারা। প্রতারিত হচ্ছেন
নানাভাবে। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ব্যবসায়ীদের বেশি দাম আদায়। ওজনে কম
দেয়া। পণ্যে ভেজাল। এমন বহু কায়দায় অসহায় ভোক্তাদের পকেট হাতাচ্ছে অসাধু
ব্যবসায়ীরা। তা রোধে রয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রয়েছে
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯। এ আইনে ভোক্তা ঠকানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে
শাস্তি হিসেবে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ অর্থ তাৎক্ষণাৎ অভিযোগকারীকে
প্রদানের বিধানও রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ভোক্তাই জানেন না তাদের এ রক্ষাকবচ
সম্পর্কে। তবে হাতেগুনা স্বল্পসংখ্যক প্রতারিত সচেতন গ্রাহক ওই অধিদপ্তরের
অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ করছেন। গত প্রায় ৭ অর্থবছরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায়
এমন ৩ হাজার ২৫৫ অভিযোগকারী পেয়েছেন ৫০ লাখ টাকার বেশি অর্থ। আইনটির এই
বিধানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে আশার প্রতীক হিসেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর মানবজমিনকে বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে এখনো অধিকাংশ গ্রাহক জানেনই না। তবে ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়ছে। বাড়ছে আমাদের সক্ষমতাও। রাজধানীতে ভোক্তারা প্রতারিত হলে তাদের কেউ কেউ এখন অভিযোগ নিয়ে আসছেন। ভোক্তাকে ঠকানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ অর্থ অভিযোগকারীকে প্রদানের বিধান রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তারা সে হিসেবে নগদ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাচ্ছেন। এতে আশার সঞ্চার হয়েছে। প্রতিবছর অভিযোগের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকৃতপক্ষে দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের সবাই ভোক্তা। প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ে তাদের সিংহভাগ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। বিভিন্নভাবে ঠকছেন। নেয়া হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা। মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হচ্ছে না। অতি লাভের জন্য পণ্যে ভেজাল মেশানো হচ্ছে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। পণ্যে মোড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে না। ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। প্রতারিত করা হচ্ছে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে। প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা। নকল পণ্য উৎপাদন। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়। কিন্তু ভোক্তা অধিকারের রক্ষাকবচ আইন ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অধিকাংশ গ্রাহক না জানায় এবং বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অভিযোগ গ্রহণের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা না থাকায় প্রতারিত গ্রাহকরা অভিযোগ করতে পারছে না। তবে রাজধানীর কাওরান বাজারের টিসিবি ভবনে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ অধিদপ্তরে রয়েছে জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র। কোন গ্রাহক ঠকলে বা প্রতারিত হলেই পণ্য ক্রয়ের রশিদসহ বা অন্যান্য প্রমাণসহ নিজের বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করে নির্ধারিত ফরমে সেখানে অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণ হলেই আদায় করা হয় জরিমানা। জরিমানার ৭৫ ভাগ অর্থ জমা হয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। বাকি ২৫ ভাগ অর্থ নগদে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারীকে প্রদান করা হচ্ছে। বিগত ২০১১-১২ অর্থ বছরে এমন অভিযোগ গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রমেই তা বাড়ছে। ওই অর্থবছরে ৮ অভিযোগকারীকে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ হিসেবে প্রদান করা হয় ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ২৯ গ্রাহকের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তারা জিতে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ টাকা। পরের বছর তথা ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ১৭ গ্রাহক পায় ৫১ হাজার ৫০০। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে জরিমানার অর্থে ভাগ বসানো অভিযোগকারীর সংখ্যা কয়েকগুণে দাঁড়ায়। সে অর্থ বছরে ১০৭ অভিযোগকারী ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা পকেটে নেন। এর পরের বছর ২০১৫-১৬ এ ১৯২ ভোক্তা অভিযোগ প্রমাণ করে নেন ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৫ টাকা। সর্বশেষ দু’অর্থ বছরে প্রায় তিন হাজার অভিযোগকারী তাদের অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হন। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ হাজার ৪১৬ অভিযোগকারী ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৬৭৭ টাকা পান। আর চলতি অর্থ বছরের গত ১২ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৬ অভিযোগকারীকে দেয়া হয় ২৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫ টাকা। অর্থাৎ গত ৭ অর্থ বছরের কম সময়ে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ প্রমাণ করে ৩ হাজার ২৫৫ ভোক্তা ৫০ লাখ ৯১ হাজার ৮৭৭ টাকা পেয়েছেন। অন্যদিকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে যাত্রা ও কার্যক্রম শুরুর পর থেকে বিগত প্রায় ৯ অর্থবছরে বাজার অভিযান এবং ভোক্তাদের অভিযোগ প্রমাণ থেকে প্রতিষ্ঠানটি ২৮ কোটি ৭৬ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এর মধ্যে গত প্রায় ৭ অর্থবছরে ওই তিন সহস্রাধিক ভোক্তাকে অর্ধকোটির বেশি টাকা জরিমানার অর্থ দেওয়ার পর বাকি ২৮ কোটি ২৫ লাখ ৯২ হাজার ৪২৩ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে। দিন দিন গ্রাহকের অভিযোগ দায়ের ও প্রমাণের সংখ্যা বাড়ায় আগামি অর্থবছরগুলোতেও জরিমানা আদায় এবং ভোক্তাদের টাকা পাওয়ার অঙ্ক বাড়বে বলে মনে করছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে আইনি বিধানটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে প্রতারিত ভোক্তাদের এগিয়ে আসায় উৎসাহিত করছে বলে মনে করছেন তারা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর মানবজমিনকে বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে এখনো অধিকাংশ গ্রাহক জানেনই না। তবে ধীরে ধীরে সচেতনতা বাড়ছে। বাড়ছে আমাদের সক্ষমতাও। রাজধানীতে ভোক্তারা প্রতারিত হলে তাদের কেউ কেউ এখন অভিযোগ নিয়ে আসছেন। ভোক্তাকে ঠকানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ অর্থ অভিযোগকারীকে প্রদানের বিধান রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তারা সে হিসেবে নগদ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাচ্ছেন। এতে আশার সঞ্চার হয়েছে। প্রতিবছর অভিযোগের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকৃতপক্ষে দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের সবাই ভোক্তা। প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ে তাদের সিংহভাগ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। বিভিন্নভাবে ঠকছেন। নেয়া হচ্ছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা। মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হচ্ছে না। অতি লাভের জন্য পণ্যে ভেজাল মেশানো হচ্ছে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। পণ্যে মোড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে না। ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। প্রতারিত করা হচ্ছে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে। প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা। নকল পণ্য উৎপাদন। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়। কিন্তু ভোক্তা অধিকারের রক্ষাকবচ আইন ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অধিকাংশ গ্রাহক না জানায় এবং বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অভিযোগ গ্রহণের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা না থাকায় প্রতারিত গ্রাহকরা অভিযোগ করতে পারছে না। তবে রাজধানীর কাওরান বাজারের টিসিবি ভবনে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ অধিদপ্তরে রয়েছে জাতীয় ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্র। কোন গ্রাহক ঠকলে বা প্রতারিত হলেই পণ্য ক্রয়ের রশিদসহ বা অন্যান্য প্রমাণসহ নিজের বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করে নির্ধারিত ফরমে সেখানে অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ প্রমাণ হলেই আদায় করা হয় জরিমানা। জরিমানার ৭৫ ভাগ অর্থ জমা হয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। বাকি ২৫ ভাগ অর্থ নগদে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারীকে প্রদান করা হচ্ছে। বিগত ২০১১-১২ অর্থ বছরে এমন অভিযোগ গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রমেই তা বাড়ছে। ওই অর্থবছরে ৮ অভিযোগকারীকে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ ভাগ হিসেবে প্রদান করা হয় ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ২৯ গ্রাহকের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তারা জিতে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৫০ টাকা। পরের বছর তথা ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ১৭ গ্রাহক পায় ৫১ হাজার ৫০০। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে জরিমানার অর্থে ভাগ বসানো অভিযোগকারীর সংখ্যা কয়েকগুণে দাঁড়ায়। সে অর্থ বছরে ১০৭ অভিযোগকারী ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা পকেটে নেন। এর পরের বছর ২০১৫-১৬ এ ১৯২ ভোক্তা অভিযোগ প্রমাণ করে নেন ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৫ টাকা। সর্বশেষ দু’অর্থ বছরে প্রায় তিন হাজার অভিযোগকারী তাদের অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হন। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ হাজার ৪১৬ অভিযোগকারী ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৬৭৭ টাকা পান। আর চলতি অর্থ বছরের গত ১২ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৬ অভিযোগকারীকে দেয়া হয় ২৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫ টাকা। অর্থাৎ গত ৭ অর্থ বছরের কম সময়ে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ প্রমাণ করে ৩ হাজার ২৫৫ ভোক্তা ৫০ লাখ ৯১ হাজার ৮৭৭ টাকা পেয়েছেন। অন্যদিকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে যাত্রা ও কার্যক্রম শুরুর পর থেকে বিগত প্রায় ৯ অর্থবছরে বাজার অভিযান এবং ভোক্তাদের অভিযোগ প্রমাণ থেকে প্রতিষ্ঠানটি ২৮ কোটি ৭৬ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এর মধ্যে গত প্রায় ৭ অর্থবছরে ওই তিন সহস্রাধিক ভোক্তাকে অর্ধকোটির বেশি টাকা জরিমানার অর্থ দেওয়ার পর বাকি ২৮ কোটি ২৫ লাখ ৯২ হাজার ৪২৩ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে। দিন দিন গ্রাহকের অভিযোগ দায়ের ও প্রমাণের সংখ্যা বাড়ায় আগামি অর্থবছরগুলোতেও জরিমানা আদায় এবং ভোক্তাদের টাকা পাওয়ার অঙ্ক বাড়বে বলে মনে করছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে আইনি বিধানটি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে প্রতারিত ভোক্তাদের এগিয়ে আসায় উৎসাহিত করছে বলে মনে করছেন তারা।
No comments