পুলিশের কারেন্ট জাল বাণিজ্য by মোজাম্মেল হোসেন সজল
মুন্সীগঞ্জে
ডিবি পুলিশের কারেন্ট জাল বাণিজ্য নিয়ে তোলপাড় চলছে। সম্প্রতি কারেন্ট জাল
জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ। আর সিজার লিস্টে জব্দকৃত কারেন্ট জালের চেয়ে
অনেক কম দেখানো হয়েছে। বাকি কারেন্ট জাল নরসিংদীতে বিক্রি করে হাতিয়ে
নিয়েছে কোটি টাকা। আবার কারেন্ট জালের সঙ্গে মুক্তারপুরের এক শিল্পপতিকে
গ্রেপ্তার করে তার কাছে অস্ত্র রয়েছে বলে উদ্ধারের নামে এক দিনের রিমান্ডে
নেয়া হয়। কিন্তু কোন অস্ত্র উদ্ধার না হলেও রিমান্ডের অজুহাতে ডিবি পুলিশ
হাতিয়ে নেয় বিপুল পরিমাণ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, কারেন্ট জাল বিক্রির
মধ্যস্থতায় ছিলেন ডিএসবির এসআই সিদ্ধার্থ সাহা। গত জুন মাসে
পঞ্চসার-মুক্তারপুরসহ আশপাশের এলাকায় র্যাব ও পুলিশের ব্যাপক অভিযানে
কারেন্ট জালের মিলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় র্যাব ১০-১২টি কারেন্ট জাল
তৈরির মিল সিলগালা, জরিমানা ও সাড়ে ২৪ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে।
উদ্ধারকৃত কারেন্ট জালগুলো র্যাব তাৎক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট ও মৎস্য
কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ফেলেন।
এদিকে ঈদের এক সপ্তাহ আগে সিলগালাকৃত মিলগুলো আদালতের আদেশে খুলে দেয়া হয়েছে। এই সুযোগে সেখানকার প্রায় ছোট-বড় ৫০০ শতাধিক মিলে অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদন পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদান চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার ছোট ব্যবসায়ীদের হুমকি ধামকি দিয়ে স্থানীয় মৎস্য অফিসের মাঠকর্মী ও পুলিশ চাঁদা আদায় করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক বস্তায় কমপক্ষে ১০০-১২৫ পাউন্ড কারেন্ট জাল থাকে। আর প্রতি পাউন্ড কারেন্ট জালের দাম ছোট সাইজের ৩৫০-৪০০ টাকা ও বড় সাইজের ৬০০-৬৫০ টাকা। সদর উপজেলার মুক্তারপুর, জোড়পুকুরপাড়, নয়াগাঁও, ফিরিঙ্গি বাজার, মিরেশ্বরাই, হাতিমারাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ছোট-বড় ৫ শতাধিক জাল তৈরির কারখানা রয়েছে। মনো ফিলামেন্ট জাল উৎপাদনে খরচ কম এবং বিক্রি বেশি হয়। তাই অবৈধ মনো ফিলামেন্ট জাল বা কারেন্ট জাল উৎপাদনে ব্যবসায়ীরা বেশি আগ্রহী। এই অবৈধ মনো ফিলামেন্ট কারেন্ট জাল উৎপাদন, বিক্রি নিষিদ্ধ করে আইন হয় ২০০২ সালে। উচ্চ আদালতে রিট করে দীর্ঘদিন এই কারেন্ট জাল উৎপাদন ও বিক্রির সুযোগ পায় কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারীরা। কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারীরা চলতি বছর মামলায় হেরে গেলে প্রশাসন মাঠে নামে কারেন্ট জাল জব্দ, জরিমানা ও মিল সিলগালা করতে।
র্যাবের ব্যাপক অভিযানে কারেন্ট জাল তৈরির মিলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত ২১শে জুন কারেন্ট জাল ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা মুক্তারপুর সেতু এলাকায় মানববন্ধন করে এবং মানববন্ধন শেষে একইদিন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। এরপর মুন্সীগঞ্জ সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের গোসাইবাগের সাওবান ফাইবার ফ্যাক্টরির গুদাম ঘর থেকে গত ২৩শে জুন রাতে ডিবির এসআই মাসুদ খান গোলাম মোস্তফাকে কারেন্ট জালসহ গ্রেপ্তার করে। পরদিন গত ২৪শে জুন এই বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। মামলা নম্বার হচ্ছে ৬৮। এই সময় সাওবান ফাইবার থেকে ৭৩ বস্তা কারেন্ট জাল জব্দ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৪০ বস্তা কারেন্ট জাল। বাকি ৩৩ বস্তা কারেন্ট জাল আলাদা করে রাখা হয় বলে বাজারে গুঞ্জন উঠেছে। এই ৩৩ বস্তা কারেন্ট জালসহ বিপুল পরিমাণ জাল ট্রাকে করে নরসিংদীতে বিক্রি করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩৩ বস্তা কারেন্ট জালের বাজার মূল্য হচ্ছে আনুমানিক ৩৫ লাখ টাকা। এই টাকা ডিবি পুলিশ হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২০শে জুন পঞ্চসারের মালির পাথর এলাকা থেকে মো. আনিস মণ্ডল ও দুলাল বেপারী গংয়ের ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয় ১০৩ বস্তা কারেন্ট জাল জব্দ ও জাল তৈরির ৩৭ বস্তা রিল জব্দ দেখানো হয়। এখানেও অভিযোগ রয়েছে, ওইদিন সেখানে আরও বেশি কারেন্ট জাল জব্দ করে নিয়ে আসা হয়।
এদিকে, র্যাবের সাঁড়াশি অভিযানে কারেন্টজাল তৈরির কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে পড়লে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের পর জেলা মৎস্য উপকরণ মালিক সমবায় সমিতি নামে কারেন্ট জাল তৈরির সংগঠনের কর্মকর্তারা প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে মাঠে নামেন। এরপর ঈদের পর থেকে পঞ্চসার শিল্পাঞ্চল এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিক ফ্যাক্টরিতে অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদন শুরু হয় পুরোদমে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে কারেন্ট জাল জব্দ করে নিয়ে যায়। কিন্তু ম্যানেজ হয়ে সে মামলা আর দেখানো হয়নি।
তারা আরও জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর মৎস্য অফিসের মাঠকর্মী শঙ্কর, আলাউদ্দিন, এক মেয়েসহ ৪ জন মাঠকর্মী ক্যামেরা নিয়ে কারেন্ট জাল তৈরির কারখানাতে প্রবেশ করে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সদর থানা, ডিএসবি ও ডিবির কতিপয় পুলিশ প্রায় প্রতিদিনই ছুটছেন কারখানাগুলোতে চাঁদাবাজি করতে।
ডিএসবির এসআই সিদ্ধার্থ সাহা জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তার কাজ হচ্ছে তথ্য প্রদান করা এবং তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করা।
ডিবির ওসি আবুল কালাম জানান, এই অভিযোগ সত্য নয়। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই কারেন্ট জালের সিজার লিস্ট, জব্দসহ ফ্যাক্টরি সিলগালা করা হয়েছে।
এদিকে ঈদের এক সপ্তাহ আগে সিলগালাকৃত মিলগুলো আদালতের আদেশে খুলে দেয়া হয়েছে। এই সুযোগে সেখানকার প্রায় ছোট-বড় ৫০০ শতাধিক মিলে অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদন পুরোদমে শুরু হয়ে যায়। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদান চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার ছোট ব্যবসায়ীদের হুমকি ধামকি দিয়ে স্থানীয় মৎস্য অফিসের মাঠকর্মী ও পুলিশ চাঁদা আদায় করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক বস্তায় কমপক্ষে ১০০-১২৫ পাউন্ড কারেন্ট জাল থাকে। আর প্রতি পাউন্ড কারেন্ট জালের দাম ছোট সাইজের ৩৫০-৪০০ টাকা ও বড় সাইজের ৬০০-৬৫০ টাকা। সদর উপজেলার মুক্তারপুর, জোড়পুকুরপাড়, নয়াগাঁও, ফিরিঙ্গি বাজার, মিরেশ্বরাই, হাতিমারাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ছোট-বড় ৫ শতাধিক জাল তৈরির কারখানা রয়েছে। মনো ফিলামেন্ট জাল উৎপাদনে খরচ কম এবং বিক্রি বেশি হয়। তাই অবৈধ মনো ফিলামেন্ট জাল বা কারেন্ট জাল উৎপাদনে ব্যবসায়ীরা বেশি আগ্রহী। এই অবৈধ মনো ফিলামেন্ট কারেন্ট জাল উৎপাদন, বিক্রি নিষিদ্ধ করে আইন হয় ২০০২ সালে। উচ্চ আদালতে রিট করে দীর্ঘদিন এই কারেন্ট জাল উৎপাদন ও বিক্রির সুযোগ পায় কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারীরা। কারেন্ট জাল প্রস্তুতকারীরা চলতি বছর মামলায় হেরে গেলে প্রশাসন মাঠে নামে কারেন্ট জাল জব্দ, জরিমানা ও মিল সিলগালা করতে।
র্যাবের ব্যাপক অভিযানে কারেন্ট জাল তৈরির মিলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত ২১শে জুন কারেন্ট জাল ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা মুক্তারপুর সেতু এলাকায় মানববন্ধন করে এবং মানববন্ধন শেষে একইদিন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। এরপর মুন্সীগঞ্জ সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের গোসাইবাগের সাওবান ফাইবার ফ্যাক্টরির গুদাম ঘর থেকে গত ২৩শে জুন রাতে ডিবির এসআই মাসুদ খান গোলাম মোস্তফাকে কারেন্ট জালসহ গ্রেপ্তার করে। পরদিন গত ২৪শে জুন এই বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। মামলা নম্বার হচ্ছে ৬৮। এই সময় সাওবান ফাইবার থেকে ৭৩ বস্তা কারেন্ট জাল জব্দ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৪০ বস্তা কারেন্ট জাল। বাকি ৩৩ বস্তা কারেন্ট জাল আলাদা করে রাখা হয় বলে বাজারে গুঞ্জন উঠেছে। এই ৩৩ বস্তা কারেন্ট জালসহ বিপুল পরিমাণ জাল ট্রাকে করে নরসিংদীতে বিক্রি করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩৩ বস্তা কারেন্ট জালের বাজার মূল্য হচ্ছে আনুমানিক ৩৫ লাখ টাকা। এই টাকা ডিবি পুলিশ হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২০শে জুন পঞ্চসারের মালির পাথর এলাকা থেকে মো. আনিস মণ্ডল ও দুলাল বেপারী গংয়ের ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয় ১০৩ বস্তা কারেন্ট জাল জব্দ ও জাল তৈরির ৩৭ বস্তা রিল জব্দ দেখানো হয়। এখানেও অভিযোগ রয়েছে, ওইদিন সেখানে আরও বেশি কারেন্ট জাল জব্দ করে নিয়ে আসা হয়।
এদিকে, র্যাবের সাঁড়াশি অভিযানে কারেন্টজাল তৈরির কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে পড়লে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের পর জেলা মৎস্য উপকরণ মালিক সমবায় সমিতি নামে কারেন্ট জাল তৈরির সংগঠনের কর্মকর্তারা প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে মাঠে নামেন। এরপর ঈদের পর থেকে পঞ্চসার শিল্পাঞ্চল এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিক ফ্যাক্টরিতে অবৈধ কারেন্ট জাল উৎপাদন শুরু হয় পুরোদমে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে কারেন্ট জাল জব্দ করে নিয়ে যায়। কিন্তু ম্যানেজ হয়ে সে মামলা আর দেখানো হয়নি।
তারা আরও জানান, মুন্সীগঞ্জ সদর মৎস্য অফিসের মাঠকর্মী শঙ্কর, আলাউদ্দিন, এক মেয়েসহ ৪ জন মাঠকর্মী ক্যামেরা নিয়ে কারেন্ট জাল তৈরির কারখানাতে প্রবেশ করে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সদর থানা, ডিএসবি ও ডিবির কতিপয় পুলিশ প্রায় প্রতিদিনই ছুটছেন কারখানাগুলোতে চাঁদাবাজি করতে।
ডিএসবির এসআই সিদ্ধার্থ সাহা জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তার কাজ হচ্ছে তথ্য প্রদান করা এবং তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করা।
ডিবির ওসি আবুল কালাম জানান, এই অভিযোগ সত্য নয়। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই কারেন্ট জালের সিজার লিস্ট, জব্দসহ ফ্যাক্টরি সিলগালা করা হয়েছে।
No comments