দিল্লির ‘অনানুষ্ঠানিক অবরোধ’ জাতিসংঘে নেপালের নালিশ
ভারতের
সঙ্গে সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্য পয়েন্টে দেশটির ‘অনানুষ্ঠানিক
অবরোধ’ আরোপ করা নিয়ে জাতিসংঘে নালিশ জানিয়েছে প্রতিবেশী নেপাল।
ইতিমধ্যে নিজেদের মতপার্থক্য এড়িয়ে ভারতবিরোধিতায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছে
নেপালের বৃহৎ তিন রাজনৈতিক দল। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। জাতিসংঘের
সদ্যসমাপ্ত সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের বাইরে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের
সঙ্গে এক বৈঠক করেছেন অধিবেশনে নেপালের প্রতিনিধিত্বকারী উপপ্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ মান সিং। ওই বৈঠকে নেপালের বিরুদ্ধে ভারতের অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য
অবরোধের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। বৈঠকে নেপালের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়,
অবরোধ আরোপের ফলে চারদিকে স্থল পরিবেষ্টিত দেশটিতে অপরিহার্য পণ্যের তীব্র
সংকট শুরু হয়েছে। বৈঠকে বান কি মুন অপরিহার্য পণ্য প্রবেশে নেপালে বাধা ও
এতে সৃষ্ট জটিলতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া সাধারণ পরিষদের
অধিবেশনের শেষ দিন গত শুক্রবার ভাষণ দানকালে প্রকাশ সিং নেপালের পণ্য
পরিবহন বা ট্রানজিট স্বাধীনতা যাতে ক্ষুণ্ন না হয় তা নিশ্চিত করতে
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। সিং বলেন, স্থল পরিবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশগুলোর (এলএলডিসি) ট্রানজিট স্বাধীনতাকে অবশ্যই ও শর্তহীনভাবে সব দেশকেই মানতে হবে। এদিকে
নেপালের সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় নয়াদিল্লির একপেশে ভূমিকা ও
‘অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য অবরোধ’ আরোপে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে নেপালি কংগ্রেস
(এনসি), কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-ইউনাইটেড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট
(সিপিএন-ইউএমএল) ও ইউনিফাইড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল-মাওইস্ট
(ইউসিপিএন-এম)। তা ছাড়া ভারতবিরোধিতায় নজিরবিহীনভাবে অভিন্ন অবস্থানও
গ্রহণ করেছে নেপালি পার্লামেন্টের বৃহৎ এ তিনটি দল। নেপালের
পার্লামেন্টে সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয় নতুন সংবিধান। দেশে ব্যাপক
মতবিরোধের সৃষ্টি করে এ সংবিধান প্রণয়ন-প্রক্রিয়া। সংবিধান নিয়ে
প্রভাবশালী প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গেও নেপালের খানিকটা তিক্ততা সৃষ্টি হয়। নেপালের
নতুন সংবিধানের বিষয়ে ভারতের মত, এটা যথেষ্ট ব্যাপকতার ভিত্তিতে হয়নি।
সংবিধানকে কেন্দ্র করে দেশটিতে বিশেষত সীমান্তের তরাই অঞ্চলে যে সহিংসতা
ছড়িয়ে পড়ছে, সেটার আঁচ লাগবে ভারতেও। তরাইয়ের বাসিন্দা জাতিগত মদেশি
ও থারু সংখ্যালঘুদের আশঙ্কা, নতুন সংবিধানের অধীন নেপাল বিভিন্ন প্রদেশে
ভাগ হয়ে গেলে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়বে, যদিও তারা নেপালের
মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। মদেশিদের সঙ্গে ভারতের কিছু জায়গার জাতিগত
ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
No comments