পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে নিষেধাজ্ঞা অ্যামনেস্টির উদ্বেগ
পার্বত্য
চট্টগ্রাম সফর অথবা সেখানে কর্মকাণ্ডের ওপর বাংলাদেশ সরকারের
নিষেধাজ্ঞামূলক বিধিনিষেধে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ নিয়ে একটি দীর্ঘ চিঠি
লিখেছেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া রিচার্স ডাইরেক্টর ডেভিড গ্রিফিথস। ১২ই
অক্টোবর লেখা ওই চিঠিতে তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে আমি আপনার সরকারের
আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলার যে প্রতিশ্রুতি, তা নিশ্চিত করার আহ্বান
জানাই। একই সঙ্গে ওই নির্দেশনা প্রত্যাহার করার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে
উপজাতিদের ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানবাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই।
ওই নির্দেশনা প্রথমে ইস্যু করা হয় এ বছর জানুয়ারিতে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক
পর্যায়ে এর কড়া সমালোচনা করা হয়। জবাবে সরকার কিছু বিধিনিষেধ প্রত্যাহার
করে। তবে মানবাধিকারের ওপর ওই বিধিনিষেধের মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত
রয়েছে। এ বিধিনিষেধের সংশোধিত সংস্করণে ওই এলাকায় অবাধে চলাফেরার অধিকার,
সভা-সমাবেশের অধিকার, বৈষম্য থেকে মুক্তির বিষয় প্রতিবন্ধতকার মুখে পড়ে। ওই
বাধার মুখে পড়ে বিদেশী নাগরিক ও পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি লোকদের মধ্যে
কথোপকথন। এটা বৈষম্যমূলক। এটা অন্যান্য মানবাধিকারের জন্যও হুমকি, যেমন মত
প্রকাশের স্বাধীনতা। এই প্রতিবন্ধকতা প্রয়োজনীয়তা, যৌক্তিকতা ও বৈধতা
ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ এই নির্দেশনা। ওই বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, বিদেশী
নাগরিকরা যদি ওই অঞ্চল সফরে যেতে চান, তাহলে আগেই সরকারের কাছে অনুমতি
চাইতে হবে। কোন ব্যক্তি ট্যুরিস্ট কিনা, একজন কূটনীতিক কিনা, জাতিসংঘের
কর্মচারী কিনা, পার্বত্য চট্টগ্রামে কার্যক্রম চালানো কোন কোম্পানির
কর্মচারী কিনা অথবা অন্য কোন ধরনের পর্যটক কিনা তার ওপর ভিত্তি করে এ
প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। বাংলাদেশী নাগরিকসহ ওই অঞ্চলে কোন পর্যটক যদি
কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান তাহলে তাদেরকে অবশ্যই সরকারি কর্মকর্তার কাছে
আগেভাগে অনুমতি নিতে হয়। পরিষ্কার করে বলতে হয়, কে কে মিটিংয়ে যোগ দেবে। কি
বিষয়ে আলোচনা করা হবে। মিটিংয়ের কারণ কি। তারপর কর্তৃপক্ষ যদি অনুমতি দেয়
তাহলে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। এই যে বিধিনিষেধ এটা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের কতগুলো সুরক্ষাকবচ প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করে। সেগুলো
হলো চলাফেরার স্বাধীনতা, আইনি অবস্থা, সভা-সমাবেশ করার অধিকার, মত প্রকাশের
স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও পারিবারিক জীবনের অধিকার, বাছবিচারহীনতা,
আনুপাতিক ও নায্যতা প্রতিপাদন।
ওই চিঠিতে এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পর্কে ডেভিড গ্রিফিথস বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি বলেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেয়া আইসিসিপিআর-এর ১৯ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘিত হবে, যদি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের চলাচলের স্বাধীনতায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বিশেষ করে সেসব স্থানে যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটার অভিযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও পারিবারিক জীবনের অধিকার: আইসিসিপিআর-এর ১৭তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কাউকে তার গোপনীয়তা ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে বাছবিচারহীন ও বেআইনিভাবে বাধা দেয়া যাবে না। এটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক যে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিদেশী নাগরিকদের মধ্যে যাদের পরিবার পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে, তাদেরও সেখানে যেতে আবেদন করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রেও কি ধরনের শর্ত রয়েছে সেখানে যেতে, তাও নির্দিষ্ট নয়।
বাছবিচারহীনতা: এ নির্দেশনায় কোন মানদণ্ড দেয়া হয়নি, যার ভিত্তিতে আবেদন গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করা হবে। এর ফলে বাছবিচারহীনতা ও স্বচ্ছতার অভাব সৃষ্টি হয়। এটি আইসিসিপিআর-এর ১২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
আনুপাতিকতা ও নায্যতা প্রতিপাদন: মানবাধিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে নির্দেশনায় কোন নায্যতা প্রতিপাদন করা হয়নি। কোন অনুমোদনযোগ্য উদ্দেশ্যও ব্যাখ্যা করা হয়নি।
বৈষম্য: যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামে কেবলমাত্র নৃগোষ্ঠীই বসবাস করে না, তবুও নির্দেশনার শিরোনাম ইঙ্গিত দেয় যে, এর মূল লক্ষ্য হলো, উপজাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ। সারা দেশের জনসংখ্যায় মাত্র ১.৫ শতাংশ হলেও, পার্বত্য চট্টগ্রামে নৃগোষ্ঠীদের জনসংখ্যা ৫১ শতাংশ। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে কোন নির্দেশনা জারি করা হলে, তা নৃগোষ্ঠীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। তাই অ্যামনেস্টি মনে করে, এ পদক্ষেপ নৃগোষ্ঠীদের প্রতি বৈষম্যমূলক।
এ নির্দেশনা নৃগোষ্ঠীদের অধিকারের ওপর অন্যায্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃগোষ্ঠীদের সঙ্গে মিয়ানমার ও ভারতের নৃগোষ্ঠীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সঙ্গে সাক্ষাতেও এ নির্দেশনা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এটি নৃগোষ্ঠীদের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এ বিষয়টিতে আপনার মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া হলে খুবই কৃতজ্ঞ থাকবো।
ওই চিঠিতে এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পর্কে ডেভিড গ্রিফিথস বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি বলেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেয়া আইসিসিপিআর-এর ১৯ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘিত হবে, যদি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের চলাচলের স্বাধীনতায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। বিশেষ করে সেসব স্থানে যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটার অভিযোগ রয়েছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও পারিবারিক জীবনের অধিকার: আইসিসিপিআর-এর ১৭তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কাউকে তার গোপনীয়তা ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে বাছবিচারহীন ও বেআইনিভাবে বাধা দেয়া যাবে না। এটি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক যে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিদেশী নাগরিকদের মধ্যে যাদের পরিবার পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করে, তাদেরও সেখানে যেতে আবেদন করতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রেও কি ধরনের শর্ত রয়েছে সেখানে যেতে, তাও নির্দিষ্ট নয়।
বাছবিচারহীনতা: এ নির্দেশনায় কোন মানদণ্ড দেয়া হয়নি, যার ভিত্তিতে আবেদন গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করা হবে। এর ফলে বাছবিচারহীনতা ও স্বচ্ছতার অভাব সৃষ্টি হয়। এটি আইসিসিপিআর-এর ১২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।
আনুপাতিকতা ও নায্যতা প্রতিপাদন: মানবাধিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে নির্দেশনায় কোন নায্যতা প্রতিপাদন করা হয়নি। কোন অনুমোদনযোগ্য উদ্দেশ্যও ব্যাখ্যা করা হয়নি।
বৈষম্য: যদিও পার্বত্য চট্টগ্রামে কেবলমাত্র নৃগোষ্ঠীই বসবাস করে না, তবুও নির্দেশনার শিরোনাম ইঙ্গিত দেয় যে, এর মূল লক্ষ্য হলো, উপজাতি গোষ্ঠীর সঙ্গে সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ। সারা দেশের জনসংখ্যায় মাত্র ১.৫ শতাংশ হলেও, পার্বত্য চট্টগ্রামে নৃগোষ্ঠীদের জনসংখ্যা ৫১ শতাংশ। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে কোন নির্দেশনা জারি করা হলে, তা নৃগোষ্ঠীদের ওপর প্রভাব ফেলবে। তাই অ্যামনেস্টি মনে করে, এ পদক্ষেপ নৃগোষ্ঠীদের প্রতি বৈষম্যমূলক।
এ নির্দেশনা নৃগোষ্ঠীদের অধিকারের ওপর অন্যায্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃগোষ্ঠীদের সঙ্গে মিয়ানমার ও ভারতের নৃগোষ্ঠীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সঙ্গে সাক্ষাতেও এ নির্দেশনা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এটি নৃগোষ্ঠীদের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এ বিষয়টিতে আপনার মনোযোগের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া হলে খুবই কৃতজ্ঞ থাকবো।
No comments