পুত্রশোকে পাগলপ্রায় আয়লানের বাবা
‘আমার অবুঝ দুই সন্তান ও স্ত্রী মারা গেছে’- এ সরল বাক্যটি ছাড়া কোনো কথা মুখে ফোটে না আবদুল্লার। প্রাণপ্রিয় স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় তিনি। স্বজন হারানোর বেদনা আর বুকভরা যন্ত্রণাই তার একমাত্র সঙ্গী। বুকের ভেতর আটকে থাকা প্রবল আর্তনাদ বিস্ফোরিত হচ্ছে আবদুল্লার চোখে-মুখে। জীবনের নিরাপত্তার জন্য ইউরোপ যাওয়ার পথে স্ত্রী-সন্তান হারানো কুর্দি জনকের ব্যাকুল এ আহাজারি বুধবার এক খবরে প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা। সিরিয়ার কোবানিতে ইসলামিক স্টেটের অত্যাচার-নিপীড়ন বেড়েই চলছে। তাই জন্মভূমি ছেড়ে ইউরোপে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল আবদুল্লাহ। প্রিয়সন্তান গালিপ (৫) ও আয়লান কুর্দির (৩) সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনাই ছিল প্রধান লক্ষ্য। সঙ্গে ছিল স্ত্রী রেহান (৩৫)।
কিন্তু তার সুন্দর ও যুদ্ধের বিড়ম্বনাহীন জীবনের স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে ভূমধ্যসাগারের প্রাণনাশী ছোবলে। তুরস্কের উপকূল থেকে ছোট ডিঙ্গিতে চেপে গ্রিসের উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি। এক কথায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকাটিতে আরও ১৯ জনের সঙ্গে গাদাগাদি করে রওনা করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- গ্রিসের নিকটবর্তী কোস আইল্যান্ডের কাছে ঢেউয়ের তোড়ে উল্টে যায় নৌকাটি। কোনোমতে সাঁতরে কিনারা পেয়ে যমদূতের হাত থেকে রক্ষা পান আবদুলাহ। কিন্তু বাঁচাতে পারেননি তার কলিজার টুকরো শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে। সর্বনাশী নোনা পানিতে ডুবে মরা স্ত্রী-শিশুর লাশ সকালে ভেসে উঠেছে তুরস্কের উপকূলে। থকথকে বালুর ওপর মুখ থুবরে পড়ে থাকা আয়লানের নিথর দেহ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।
No comments