ইংল্যান্ডের দর্প চূর্ণ
চার দিনে কার্ডিফ টেস্ট জিতে অস্ট্রেলিয়াকে তাতিয়ে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই জ্বালা এবার কুকদের ফিরিয়ে দিলেন ক্লার্করা। লর্ডস টেস্টের প্রথমদিনেই যে ইঙ্গিতটা ছিল, বাস্তবে তাই হল। অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনেই ইংল্যান্ডের নটে গাছটি মুড়িয়ে কার্ডিফ ব্যর্থতার মধুর প্রতিশোধ নিল অস্ট্রেলিয়া। ৪০৫ রানের বিশাল জয়ে দারুণভাবে সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল মাইকেল ক্লার্কের দল। নিজেদের ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে রোববার অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণের আগুনে ছাই হয়ে গেল ইংল্যান্ডের দর্প। চতুর্থ ইনিংসে ৫০৯ রানের অসম্ভব লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মিচেল জনসনের তোপের মুখে মাত্র ৩৭ ওভারে ১০৩ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। রানের দিক দিয়ে ১৩৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসের নবম বৃহত্তম জয় দিয়ে দারুণভাবেই সিরিজে ফিরল অস্ট্রেলিয়া। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এটি ইংলিশদের তৃতীয় বৃহত্তম হার। ১৯৪৮ সালে লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪০৯ রানে হেরেছিল ইংল্যান্ড। ৬৭ বছর পর আবার ফিরে এলো সেই দুঃস্মৃতি। লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি স্বাগতিকরা।
স্টিভেন স্মিথের (২১৫) ডাবল সেঞ্চুরি ও ক্রিস রজার্সের (১৭৩) শতকে আট উইকেটে ৫৬৬ রান তুলে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৩১২ রানে অলআউট হলেও ইংল্যান্ডকে ফলো-অন করায়নি অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের ৯৬ ও বেন স্টোকসের ৮৭ ছাড়া ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে বলার মতো রান নেই আর কারও। তিনটি করে উইকেট নেন জনসন ও হ্যাজলউড। দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত দুই উইকেটে ২৫৪ রান তুলে ফের ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ায় ৪৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ক্রিস রজার্স। তাকে অবশ্য হাসপাতালে যেতে হয়নি। আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ৮৩ রান করেন। দ্রুত রান তোলার লক্ষ্যে ৪৮ বলে ৫৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা স্টিভেন স্মিথ। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫০৯ রান। সেই পাহাড় টপকাতে গিয়ে চাপের মুখে শুরুতেই ভেঙে পড়ে স্বাগতিকরা। মাত্র ৬৪ রানে সাত উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে ১০০’র নিচে অলআউট হওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচান স্টুয়ার্ট ব্রড (২৫)। ইংলিশদের সর্বনাশ করেছেন ‘চেনা শত্রু’ মিচেল জনসনই। ২৭ রানে তিন উইকেট নেয়ার পাশাপাশি রানআউট করেছেন স্টোকসকে। বুধবার বার্মিংহামে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৫৬৬/৮ ডিক্লেয়ার (রজার্স ১৭৩, স্মিথ ২১৫, নেভিল ৪৫০। ব্রড ৪/৮৩, রুট ২/৫৫)। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ৩১২ (কুক ৯৬, স্টোকস ৮৭, মঈন ৩৯। জনসন ৩/৫৩, হ্যাজল উড ৩/৬৮)। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ২৫৪/২ ডিক্লেয়ার (রজার্স ৪৯, ওয়ার্নার ৮৩, স্মিথ ৫৮, ক্লার্ক ৩২*, মিচেল মার্শ ২৭*। মঈন ২/৭৮)। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ১০৩ (ব্যালান্স ১৪, রুট ১৭, ব্রড ২৫। জনসন ৩/২৩, হ্যাজলউড ২/২০, লায়ন ২/২৭)। ফল : অস্ট্রেলিয়া ৪০৫ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)। এএফপি/ওয়েবসাইট।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৫৬৬/৮ ডিক্লেয়ার (রজার্স ১৭৩, স্মিথ ২১৫, নেভিল ৪৫০। ব্রড ৪/৮৩, রুট ২/৫৫)। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ৩১২ (কুক ৯৬, স্টোকস ৮৭, মঈন ৩৯। জনসন ৩/৫৩, হ্যাজল উড ৩/৬৮)। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ২৫৪/২ ডিক্লেয়ার (রজার্স ৪৯, ওয়ার্নার ৮৩, স্মিথ ৫৮, ক্লার্ক ৩২*, মিচেল মার্শ ২৭*। মঈন ২/৭৮)। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ১০৩ (ব্যালান্স ১৪, রুট ১৭, ব্রড ২৫। জনসন ৩/২৩, হ্যাজলউড ২/২০, লায়ন ২/২৭)। ফল : অস্ট্রেলিয়া ৪০৫ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)। এএফপি/ওয়েবসাইট।
No comments