সমঝোতার সুযোগ আর রইল না
জাতীয় সংসদে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নে’ চলে গেছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কিংবা তার নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের দাবি অনুযায়ী আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোর আর সুযোগ রইল না। নবম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন গতকালই সমাপ্ত হয়েছে। তার মানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই প্রধান দল বা জোটের মধ্যে সংসদে কোনো আলোচনার আর সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর ভাষণে বলেছেন, তিনি রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছেন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিতে। আর রাষ্ট্রপতি তাঁকে অনুরোধ করেছেন নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করার জন্য। ইতিমধ্যে তিনি নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের জন্য কয়েকজন নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপদেষ্টা নিয়োগ, আগের মন্ত্রিসভার সদস্যদের পদত্যাগপত্র নিয়ে রাখা প্রভৃতি প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে রেখেছেন।
যতদূর শোনা গেছে, তাতে বৃহস্পতিবারই নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার গেজেট প্রকাশিত হবে এবং বৃহস্পতিবার থেকেই সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে কাজ শুরু করবে। কয়েক দিনের মধ্যেই হয়তো নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করবে। দেশের সব কার্যক্রম হয়ে পড়বে নির্বাচনমুখী। এর মধ্যে বিএনপি সর্বশেষ চেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে যে দাবিগুলো গত মঙ্গলবার উত্থাপন করেছে, সেগুলো আর পরিস্থিতির কেন্দ্রবিন্দুতে নেই। এমনিতেই দেশের সংবিধান অনুযায়ী, বিএনপির দাবি পূরণে রাষ্ট্রপতির বিশেষ কিছু করার ক্ষমতাই নেই। তবে তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অভিভাবক। সে হিসেবে নৈতিক ক্ষমতা অবশ্যই আছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো কিছু করার সময় আর নেই। তার আগেই সবকিছু নির্ধারিত হয়ে গেছে। বিএনপির সামনে এখন দুটি পথ খোলা আছে। এক. যা কিছু হয়েছে তার সব মেনে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। দুই. আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিত করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে সরকারকে বাধ্য করা, যা তারা প্রায়শ বলেও থাকে। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক: বিশিষ্ট আইনজীবী।
No comments