পবিত্র কোরআনের আলো-পার্থিব সুখ-সম্পদে পরকাল ভুলে যাওয়া যাবে না
৫৭. ওয়ালা আজরুল আ-খিরাতি খাইরুল
লিল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া কা-নূ য়াত্তাকূনা। ৫৮. ওয়া জা----আ ইখওয়াতু য়ূসুফা
ফাদাখালূ 'আলাইহি ফা'আরাফাহুম ওয়া হুম লাহূ মুনকিরূনা।
(সুরা ইউসুফ, আয়াত ৫৭-৫৮)
অনুবাদ : ৫৭. যারা ইমান আনে ও তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য পরকালের প্রতিদানই শ্রেয়।* ৫৮. (যখন দুর্ভিক্ষ দেখা দিল, তখন) ইউসুফের ভাইয়েরা এলো, তারা তার দরবারে উপস্থিত হলো। দেখেই ইউসুফ তাদের চিনে ফেললেন; কিন্তু তারা তাঁকে চিনল না।*
তাফসির : * হজরত ইউসুফ (আ.) দুনিয়ায় যে সম্মান ও ক্ষমতা লাভ করেছিলেন, কোরআন শরিফ তা উল্লেখ করার পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছে, পরকালে আল্লাহ তায়ালা তাঁর জন্য আরো বড় নেয়ামতের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। দুনিয়াতে যা দেওয়া হলো বা আরো দেওয়া হবে, তা পরকালের প্রতিদানের তুলনায় খুবই নগণ্য। এই বক্তব্যের মাধ্যমে মূলত আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বোঝাতে চেয়েছেন, পার্থিব সুখ-শান্তি-সম্মান ও ক্ষমতা পেয়েই তাতে হারিয়ে যাওয়া যাবে না; বরং এসব যে মহান প্রভুর দান, তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে হবে। আল্লাহর দাসত্ব প্রমাণ করার মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে সর্বাবস্থায় সচেষ্ট থাকতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে পরকালের মহাপুরস্কার হাতছাড়া হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থেকে যায়।
* এর আগে ইউসুফ (আ.) বাদশাহর দেখা স্বপ্নের যে ব্যাখ্যা বলেছিলেন, তা-ই বাস্তব হলো। মিসরে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তা একটানা সাত বছর স্থায়ী ছিল। ওই সময় মিসরের আশপাশের দেশগুলোতেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ইউসুফ (আ.) মিসরের বাদশাহকে খাদ্য মজুদ করার যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সে অনুযায়ী দুর্ভিক্ষের সময় মজুদকৃত খাদ্য সরকারি তরফে স্বল্পমূল্যে জনগণের মধ্যে বিতরণ শুরু হয়। একপর্যায়ে আশপাশের দেশগুলোর জন্যও স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিক্রির সুযোগ চালু করা হয়। তখন বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকেই এসে মিসর থেকে এই বিশেষ সুবিধার খাদ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যেত। ইউসুফ (আ.)-এর পিতা ইয়াকুব (আ.) সেই সময় ফিলিস্তিনের কিনানে অবস্থান করছিলেন। দুর্ভিক্ষপীড়িত হওয়ার পর মিসর থেকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সংগ্রহ করার সুযোগ গ্রহণ করতে ইউসুফ (আ.)-এর সৎ ভাইয়েরা মিসরে এলো। দশজনই একসঙ্গে এসেছিল। এবং এরাই তাঁকে শৈশবে কূপে ফেলে দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। বিনয়ামিন নামে তাদের এক সৎ ভাই থাকলেও তারা তাকে সঙ্গে আনেনি। পিতার কাছে রেখে এসেছিল। এদিকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিক্রির বিষয়টি পুরো তদারকি করছিলেন ইউসুফ (আ.)। সম্ভাব্য সব ধরনের অনিয়ম রোধ করার পাশাপাশি সবাই যেন প্রত্যাশিত সুবিধা পেতে পারে, সে জন্য বিশেষ সুবিধার খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা লোকদের প্রত্যেককেই সরাসরি ইউসুফ (আ.)-এর সামনে হাজির হতে হতো। এই নিয়ম চালু করায় অন্যদের পাশাপাশি তাঁর সৎ দশ ভাইকেও সামনে হাজির হতে হলো। ইউসুফ (আ.) তাদের দেখেই চিনে ফেললেন। স্মৃতিতে সব কিছু ভেসে উঠল। কিছুই বলেননি। প্রতিশোধের কল্পনাও পর্যন্ত করেননি। এমনকি আবেগের বশবর্তী হয়ে বা নিজের সৎ ভাই বিবেচনায় বিশেষ সুবিধার খাদ্য বিক্রির মধ্যে কোনো ধরনের হেরফের করে তাদের বেশিও দেওয়ার চেষ্টা করেননি। অন্যদের মতোই নিয়মমাফিক পূর্ণ মাত্রায় বরাদ্দ দিলেন।
তাফসিরে তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ৫৭. যারা ইমান আনে ও তাকওয়া অবলম্বন করে, তাদের জন্য পরকালের প্রতিদানই শ্রেয়।* ৫৮. (যখন দুর্ভিক্ষ দেখা দিল, তখন) ইউসুফের ভাইয়েরা এলো, তারা তার দরবারে উপস্থিত হলো। দেখেই ইউসুফ তাদের চিনে ফেললেন; কিন্তু তারা তাঁকে চিনল না।*
তাফসির : * হজরত ইউসুফ (আ.) দুনিয়ায় যে সম্মান ও ক্ষমতা লাভ করেছিলেন, কোরআন শরিফ তা উল্লেখ করার পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছে, পরকালে আল্লাহ তায়ালা তাঁর জন্য আরো বড় নেয়ামতের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। দুনিয়াতে যা দেওয়া হলো বা আরো দেওয়া হবে, তা পরকালের প্রতিদানের তুলনায় খুবই নগণ্য। এই বক্তব্যের মাধ্যমে মূলত আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বোঝাতে চেয়েছেন, পার্থিব সুখ-শান্তি-সম্মান ও ক্ষমতা পেয়েই তাতে হারিয়ে যাওয়া যাবে না; বরং এসব যে মহান প্রভুর দান, তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে হবে। আল্লাহর দাসত্ব প্রমাণ করার মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে সর্বাবস্থায় সচেষ্ট থাকতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে পরকালের মহাপুরস্কার হাতছাড়া হওয়ার সমূহ আশঙ্কা থেকে যায়।
* এর আগে ইউসুফ (আ.) বাদশাহর দেখা স্বপ্নের যে ব্যাখ্যা বলেছিলেন, তা-ই বাস্তব হলো। মিসরে মারাত্মক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তা একটানা সাত বছর স্থায়ী ছিল। ওই সময় মিসরের আশপাশের দেশগুলোতেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ইউসুফ (আ.) মিসরের বাদশাহকে খাদ্য মজুদ করার যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সে অনুযায়ী দুর্ভিক্ষের সময় মজুদকৃত খাদ্য সরকারি তরফে স্বল্পমূল্যে জনগণের মধ্যে বিতরণ শুরু হয়। একপর্যায়ে আশপাশের দেশগুলোর জন্যও স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিক্রির সুযোগ চালু করা হয়। তখন বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকেই এসে মিসর থেকে এই বিশেষ সুবিধার খাদ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যেত। ইউসুফ (আ.)-এর পিতা ইয়াকুব (আ.) সেই সময় ফিলিস্তিনের কিনানে অবস্থান করছিলেন। দুর্ভিক্ষপীড়িত হওয়ার পর মিসর থেকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সংগ্রহ করার সুযোগ গ্রহণ করতে ইউসুফ (আ.)-এর সৎ ভাইয়েরা মিসরে এলো। দশজনই একসঙ্গে এসেছিল। এবং এরাই তাঁকে শৈশবে কূপে ফেলে দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। বিনয়ামিন নামে তাদের এক সৎ ভাই থাকলেও তারা তাকে সঙ্গে আনেনি। পিতার কাছে রেখে এসেছিল। এদিকে স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিক্রির বিষয়টি পুরো তদারকি করছিলেন ইউসুফ (আ.)। সম্ভাব্য সব ধরনের অনিয়ম রোধ করার পাশাপাশি সবাই যেন প্রত্যাশিত সুবিধা পেতে পারে, সে জন্য বিশেষ সুবিধার খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা লোকদের প্রত্যেককেই সরাসরি ইউসুফ (আ.)-এর সামনে হাজির হতে হতো। এই নিয়ম চালু করায় অন্যদের পাশাপাশি তাঁর সৎ দশ ভাইকেও সামনে হাজির হতে হলো। ইউসুফ (আ.) তাদের দেখেই চিনে ফেললেন। স্মৃতিতে সব কিছু ভেসে উঠল। কিছুই বলেননি। প্রতিশোধের কল্পনাও পর্যন্ত করেননি। এমনকি আবেগের বশবর্তী হয়ে বা নিজের সৎ ভাই বিবেচনায় বিশেষ সুবিধার খাদ্য বিক্রির মধ্যে কোনো ধরনের হেরফের করে তাদের বেশিও দেওয়ার চেষ্টা করেননি। অন্যদের মতোই নিয়মমাফিক পূর্ণ মাত্রায় বরাদ্দ দিলেন।
তাফসিরে তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments