মূল সংবিধান সংরক্ষণে সরকারের ইউটার্ন by সিরাজ উদ্দীন আহমেদ
সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃস্থাপনে যে সাহসী ভূমিকা রেখেছে তাকে সম্মান না দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সংবিধানের পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনীর পথে চলছে। আমরা বিশ্বাস করি, মহাজোট সরকার সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট দূর, বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা, ব্যর্থ মন্ত্রীদের বাদ দিয়ে যোগ্য মন্ত্রী নিয়োগ করলে জনগণ সরকারের পক্ষে থাকবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবল্পুব্দকে সপরিবারে হত্যার পর সামরিক সরকার ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি সংবিধানকে ১৯৭২ সালে ফিরিয়ে নিতে পারেনি।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৭, ১৯৭৮ সালে সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানের প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ-৬, নাগরিকত্ব অনুচ্ছেদ-৮, জাতীয় মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা সংশোধন করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল করা হয়। সমাজতন্ত্র সংশোধন করা হয়। অনুচ্ছেদ-৯-এ বাঙালি জাতীয়তাবাদের উল্লেখ ছিল। তা বাতিল করে স্থানীয় সরকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অনুচ্ছেদ-১০-এ সমাজতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনুচ্ছেদ-১২ সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে। ১২ অনুচ্ছেদে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। হাজার বছরব্যাপী আমাদের পরিচয় ছিল আমরা বাঙালি। জেনারেল জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি ভাবধারায় ৬ অনুচ্ছেদে বাঙালির স্থলে বাংলাদেশি অন্তর্ভুক্ত করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর জনগণ তাদের পরিচয় পুনরুদ্ধার করার জন্য সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ করেছে। বিএনপির আমলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান হয়েছে। মৌলবাদী শক্তি সমাজ ঘিরে রেখেছিল। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৭, ১৯৭৮ সালে সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানের প্রস্তাবনা, অনুচ্ছেদ-৬, নাগরিকত্ব অনুচ্ছেদ-৮, জাতীয় মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতা সংশোধন করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল করা হয়। সমাজতন্ত্র সংশোধন করা হয়। অনুচ্ছেদ-৯-এ বাঙালি জাতীয়তাবাদের উল্লেখ ছিল। তা বাতিল করে স্থানীয় সরকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অনুচ্ছেদ-১০-এ সমাজতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনুচ্ছেদ-১২ সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়েছে। ১২ অনুচ্ছেদে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। হাজার বছরব্যাপী আমাদের পরিচয় ছিল আমরা বাঙালি। জেনারেল জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি ভাবধারায় ৬ অনুচ্ছেদে বাঙালির স্থলে বাংলাদেশি অন্তর্ভুক্ত করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর জনগণ তাদের পরিচয় পুনরুদ্ধার করার জন্য সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ করেছে। বিএনপির আমলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান হয়েছে। মৌলবাদী শক্তি সমাজ ঘিরে রেখেছিল। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে।
২০০৫ সালের ৩১ আগস্ট বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে নিয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বেআইনি ঘোষণা করেন। তখন বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দল ক্ষমতায়। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক দুর্জয় সাহসের অধিকারী, একুশ শতকের সাহসী সন্তান। সমগ্র জাতি তার রায় শুনে বিস্মিত। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি রায় শুনে উজ্জীবিত হলো। পরের দিন ২০০৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন। ২০১১ সালের ১৫ মে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ সপ্তম সংশোধনী বাতিল করে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক শাসন অবৈধ ঘোষণা করেন। সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীর হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্ট বহাল রেখেছেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বরের মধ্যে জারি করা ফরমান, আদেশ, সামরিক আইন ইত্যাদি বাতিল করে যুগান্তকারী রায় দেন। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক সংবিধানের পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনী বাতিল করে জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা দখল এবং সামরিক শাসন অবৈধ ঘোষণা করেন। সুপ্রিম কোর্ট বিশ্বের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। উপমহাদেশের ইতিহাসে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে সামরিক শাসন বারবার এসেছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা এতদিন সামরিক শাসন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করতে পারেনি। বিচারপতি খায়রুল হক এবং তার বেঞ্চের বিচারপতিরা হিমালয় পর্বতের মতো সুউচ্চ বাধা অতিক্রম করে সংবিধানকে উচ্চে তুলে ধরেছেন। বিচারপতিরা প্রমাণ করলেন, সবার ওপরে সংবিধান সত্য। বিচারপতি খায়রুল হক শপথ নিয়েছিলেন তিনি বাংলাদেশের সংবিধানের পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষা করবেন। তিনি তা করেছেন। সমগ্র জাতি তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের সংবিধান ১৯৭২ সালে ফিরে গেছে। তার গতি রুদ্ধ করা যাবে না। ১৯৭২-৭৫ সালে এ সংবিধানের অধীনে দেশ চলেছে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তার সময় সংবিধানে ধর্ম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। কিন্তু ইসলাম ও সংবিধান চলেছে, কোনো বিরোধ হয়নি। আজও বিরোধ হবে না।
বঙ্গবল্পুব্দ হত্যা মামলায় বিচারপতি খায়রুল হক ঐতিহাসিক রায় দেন। জেলা জজ কাজী গোলাম রসুল ১৫ খুনির ফাঁসির আদেশ দেন। ১৫ দিন শুনানির পর হাইকোর্টের দুই বিচারপতি ভিন্ন রায় দেন। বিচারপতি রুহুল আমিন পাঁচজনকে খালাস দেন; কিন্তু সময়ের সাহসী সন্তান এবিএম খায়রুল হক নিম্ন আদালতের ১৫ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। তারপর ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিচারপতির অভাবের অজুহাত দেখিয়ে বিএনপি সরকার বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বিলম্বিত করে। বেশ ক'জন বিচারপতি বঙ্গবল্পুব্দ হত্যা মামলায় বিব্রত বোধ করেন। ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বঙ্গবল্পুব্দর হত্যাকারী ১২ জনের ফাঁসির রায় বহাল রাখেন। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তাফাজ্জল ইসলাম, বিচারপতি আবদুল আজিজ, বিচারপতি এসকে সিনহা, বিচারপতি বিজন কুমার দাস বঙ্গবল্পুব্দর খুনিদের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করে বাংলার ইতিহাসকে কলঙ্কমুক্ত করেন। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঁচ খুনিকে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বিচারপতি খায়রুল হক হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালে ২০১০ সালের ২৬ আগস্ট সপ্তম সংশোধনী বাতিল করেন। বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ২০১১ সালের ৩০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। প্রধান বিচারপতির সময়কালে কয়েকটি ঐতিহাসিক রায় দেন। হাইকোর্ট ১৫ আগস্টকে ছুটি ও জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা দিয়ে জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবল্পুব্দর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন এবং তিনিই স্বাধীনতার ঘোষক। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে স্বাধীনতা ঘোষণার বিতর্কের সমাধান করেছেন। হাইকোর্ট ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে রায় দেন। হাইকোর্ট আরও বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃস্থাপিত হয়েছে। ২০১১ সালের ১৬ মে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের শেষ কার্যদিবস ছিল। তিনি ১৮ মে অবসরে যান। বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হয়েছেন। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বিদায়ের দিন ছিল আনন্দঘন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তাকে বিশ্বের ২০ জন শ্রেষ্ঠ বিচারকের অন্যতম বিচারক আখ্যা দিয়েছেন। তাকে আমেরিকার জন মার্শাল ও ভারতের ভিআর কৃষ্ণার সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিএনপিপন্থি বার সমিতি বিচারপতি খায়রুল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। জাতির জন্য এ লজ্জা। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি তাদের পক্ষে এ রূপ জঘন্য আচরণ করা সম্ভব। তারা একাত্তরের রাজাকারদের উত্তরসূরি। তারা জেনারেল জিয়ার আদর্শের অনুসারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের ফসল ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ধ্বংস করতে চায়। বিচারপতি খায়রুল হক ২০১০ সালের অষ্টম সংশোধনী বাতিল করেছেন। ১৯৮৮ সালে ৯ জুন রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ অষ্টম সংশোধনী আইন করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেন। হাইকোর্ট অষ্টম সংশোধনী বাতিল করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন।
২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্ট ত্রয়োদশ সংবিধান সংশোধন বাতিল করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, এ কারণে সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি অবৈধ ঘোষণা করেন। তবে রায়ে বলা হয়, আগামী নবম ও দশম সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। রায়ে প্রধান বিচারপতি বা বিচারপতিদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ না করার সুপারিশ করেছেন। প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০১০ সালের ১০ মে মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
২০১১ সালের ১১ মে সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম সংশোধনীর রায়ের পুনঃবিবেচনার মামলা নিষ্পত্তি করায় দেশ ১৯৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যায়। সংবিধানের একাদশ সংশোধন উপ-রাষ্ট্রপতি নিয়োগ ও দ্বাদশ সংশোধনী রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির পরিবর্তে সংসদীয় পদ্ধতি বাতিল হয়েছে। ১৫ মে সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে হাইকোর্টের সপ্তম সংশোধন আইন বাতিল বহাল রাখেন। বিচারপতি খায়রুল হক ও বেঞ্চের বিচারপতিরা খালেদা জিয়ার সেনানিবাসে বাড়ি বরাদ্দ বাতিল এবং তাকে বাড়ি থেকে উৎখাত করার আদেশ দেওয়ায় বিএনপি খুশি নয়। তারা প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে দলীয় বিচারপতি আখ্যা দিয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের ফসল ১৯৭২ সালের সংবিধানকে সমুন্নত রাখায় সুপ্রিম কোর্ট যে সাহসী রায় দিয়েছেন তা পৃথিবীতে সংবিধানের ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
সংবিধান সম্পর্কে চূড়ান্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের। সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম, সপ্তম এবং অষ্টম সংশোধনী বাতিল করে যে রায় দিয়েছেন তা মুক্তিযোদ্ধা-বুদ্ধিজীবী-সচেতন দেশবাসী গ্রহণ করেছেন। সরকার সংসদে যে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পেশ করেছে তা সংবিধানের মূলনীতিবিরোধী। যে প্রেক্ষাপটে পঞ্চম, অষ্টম ও ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধান পরিপন্থী একইভাবে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধর্মনিরপেক্ষতা, যে আদর্শের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনা করেছেন, তা কেন পরিত্যাগ করা হবে? শেখ হাসিনা বা তার দল ভাবছে, বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম না থাকলে মুসলমানরা তাকে ভোট দেবে না। মৌলবাদীরা আওয়ামী লীগকে অতীতে ভোট দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না। ভোটের আশায় আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি থেকে বিচ্যুত হতে পারে না।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃস্থাপনে যে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন তাকে সম্মান না দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সংবিধানের পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনীর পথে চলছে। আমরা বিশ্বাস করি, মহাজোট সরকার সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট দূর, বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা, ব্যর্থ মন্ত্রীদের বাদ দিয়ে যোগ্য মন্ত্রী নিয়োগ করলে জনগণ সরকারের পক্ষে থাকবে। দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা মন্ত্রী থাকবেন তাদের দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা দলনেত্রী, সংসদ নেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী। তিনি সব ক্ষমতার উৎস।
দেশবাসীর প্রত্যাশা, আগামী নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে তিনি যে পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন তা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। আগামী নির্বাচনে যদি কোনো বিপর্যয় ঘটে, যার ইঙ্গিত পৌর ও ইউনিয়ন নির্বাচনে প্রকাশ পেয়েছে, তার জন্য অনেকেই তাকে দায়ী করতে চায়। এখন তাকে অবশ্যই জনতার কাছে আসতে হবে। আর দেরি নয়। জাপার সভাপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু প্রমুখকে নিয়ে মন্ত্রিসভা শক্তিশালী করতে হবে। বাঁকা পথে না চলে মহাজোটের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। সংবিধান সংশোধন কমিটির দীর্ঘ আলোচনায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত সংবিধান সংশোধনের চরম বিরোধিতা করছে। সংবিধান সংশোধনী কমিটি বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখে সংশোধনীর সুপারিশ পেশ করেছে। মন্ত্রিপরিষদ তা পঞ্চদশ সংশোধনী বিল আকারে সংসদে প্রেরণ করেছে। জাতীয় সংসদ ২০১১ সালের ২৯ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস করেছে। এভাবে হঠাৎ বিল পাস করা ঠিক হয়নি। পঞ্চদশ সংশোধন নীতির রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ সংবিধানের মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক সে কারণে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালের সংবিধান বহাল রেখে দেশ পরিচালনা করা দেশ, জনগণ ও দলের জন্য মঙ্গলজনক।
==========================
দৈনিক সমকাল এর সৌজন্যে
লেখকঃ সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
তুরস্কে জেনারেলদের পদত্যাগ কেন? ছোট দলগুলো ফুরফুরে মেজাজে! কোচিং ব্যবসা এবং শিক্ষার বেহাল দশা গল্প- লঞ্চের আপার ক্লাসে বাচ্চা হাতি গুরুপল্লির আশ্রমে ভর্তি না হয়েই মুক্তিযুদ্ধের ১০ বই মগ্নচৈতন্যের বর্ণময় অভিঘাত গল্প- চিনেজোঁক পুস্তক প্রকাশনা ও বাংলা একাডেমীর বইমেলা শাহি মনজিলে সাহিত্য উৎসব by শাহীন আখতার বাজে জসীমউদ্দীন নান্দনিক চৈতন্য গ্রামকে শহরে এনেছি গল্প- জলঝড় একাত্তরের অপ্রকাশিত দিনপঞ্জি রশীদ করীমে'র সাক্ষাৎকার- 'মনে পড়ে বন্ধুদের' প্রাচ্যের ছহি খাবনামা গল্প- এভাবেই ভুল হয় গল্প- মাঠরঙ্গ ফয়েজ আহমেদঃ স্মৃতিতে চিঠিতে অরুন্ধতী রায়ের সাক্ষাৎকারঃ উপন্যাসের জগতের জগতের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই ইতিহাস ও জাতি দিয়ে ঘেরা গল্প- চাল ডাল লবণ ও তেল ক-য়ে ক্রিকেট খ-য়ে খেলা গল্পসল্প- ডাংগুলি হ্যারল্ড পিন্টারের শেষ সাক্ষাৎকারঃ আশৈশব ক্রিকেটের ঘোর সূচনার পিকাসো আর ভ্যান গঘ আল্লাহআকবরিজ সি সি গল্প- কবি কুদ্দুস ও কালনাগিনীর প্রেম গল্পসল্প- আমার বইমেলা বাংলাদেশ হতে পারে বহুত্ববাদের নির্মল উদাহরণ শিক্ষানীতি ২০১০, পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি এবং জাতীয় স্বার্থ চীন-ভারত সম্পর্ক এবং এ অঞ্চলে তার প্রভাব নারী লাঞ্ছনার সর্বগ্রাস একজন এস এ জালাল ও মুক্তিযুদ্ধের তথ্যভাণ্ডার গল্প- স্বপ্নের মধ্যে কারাগারে গল্পিতিহাস- কাঁথা সিলাই হইসে, নিশ্চিন্ত ‘এখন প্রাধান্য পাচ্ছে রম্যলেখা' অকথিত যোদ্ধা কানকুনের জলবায়ু সম্মেলন, বাংলাদেশের মমতাজ বেগম এবং আমার কিছু কথা নাপাম বোমা যা পারেনি, চ্যালেঞ্জার ও আব্রাম্স্ ট্যাংক কি তা পারবে? ঠাকুর ঘরে কে রে...! ষড়যন্ত্র নয়, ক্ষুধা ও বঞ্চনাই আন্দোলনের ইন্ধন বাহাত্তরের সংবিধানের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বাধা কোথায়? ড.ইউনূসের দুঃখবোধ এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা গীতাঞ্জলি ও চার্লস এন্ড্রুজ গল্প- তেঁতুল
দৈনিক সমকাল এর সৌজন্যে
লেখকঃ সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক
এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
No comments