দুই ইনিংসের ওয়ানডে নিয়ে হইচই
এক দিনের ক্রিকেটকে গতিশীল করতে ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় দুই ইনিংসের ওয়ানডের অনুমোদন দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। কিন্তু খেলবেন যাঁরা, সেই ক্রিকেটাররাই সন্তুষ্ট নন নতুন আদলের ম্যাচে। তাঁদের ধারণা, এটি ওয়ানডেকে আরও বিরক্তিকর করে তুলতে পারে। শুধু তা-ই নয়, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিএ) দাবি, অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ প্রস্তুতিকে বাধাগ্রস্ত করবে নতুন এই উদ্ভাবন, অনেক দিন ধরেই দুই ইনিংসের ওয়ানডের দাবি জানিয়ে আসা শচীন টেন্ডুলকার আবার স্বাগত জানিয়েছেন সিএর এই সিদ্ধান্তকে। আধুনিক ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকার ধারণা, খেলতে খেলতেই এই ফরম্যাটের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন ক্রিকেটাররা।
ওয়ানডের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ার পর করণীয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জরিপ করেছিল সিএ। সেই জরিপের সুপারিশ অনুযায়ী এ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪৫ ওভারের ওয়ানডে চালু করা হচ্ছে, যেখানে ২০ ও ২৫ ওভারের দুটি ইনিংস খেলবে প্রতি দল। সিএর যুক্তি, ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মাঝের ওভারগুলো বড্ড ধীরগতির হয়ে পড়ে, দর্শকের জন্য খুব বিরক্তিকর হয়ে যায়। দুই ইনিংসের ওয়ানডে হলে খেলা ঝুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
দুই ইনিংসের ওয়ানডে চালুর নীতিগত সিদ্ধান্তের পরই ক্রিকেটারদের নিয়েও জরিপ করেছিল সিএ। ৭৮ শতাংশ ক্রিকেটারই এর বিপক্ষে মত দিয়েছে। এসিএর দাবি, দুই ইনিংসের ওয়ানডের জন্য যে ফরম্যাট দিয়েছে সিএ, এতেও খেলা ঝুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে না। খেলা দুই ইনিংসের হলেও প্রতিটি দলের উইকেট ওই ১০টিই, ২০টি নয়। ফলে এখানেও শুরুতে উইকেট ধরে রেখে পরে আক্রমণের পথ বেছে নিতে পারে দলগুলো। গত বছর কাউন্টির দ্বিতীয় বিভাগেও দুই ইনিংসের ওয়ানডে চালু করেছিল ইংল্যান্ড। সেখানে দেখা গেছে প্রথম ইনিংসের শেষ দিকে আর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে অনেকটাই ঝিমিয়ে যায় ইনিংস। এসিএর প্রধান পল মার্শ ক্রিকেটারদের হয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন, ‘ক্রিকেটাররা জানে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ওয়ানডে ক্রিকেট এবং সবাই একসঙ্গে মিলেই এটার সমাধান করতে চায়। কিন্তু তারা বিশ্বাস করে দুই ইনিংসের ওয়ানডেই সেরা সমাধান নয়। এই পদ্ধতি বুঝে ওঠাই কঠিন, ক্রিকেটাররা ভীষণ হতাশ।’
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সভায় সামনাসামনিই এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং। গত বছর কাউন্টিতে যাঁরা দুই ইনিংসের ওয়ানডে খেলেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ভিক্টোরিয়া লেগ স্পিনার ব্রাইস ম্যাকগেইনের উপলব্ধি, ‘কাউন্টিতেও শুরুতে উইকেট ধরে রেখে সবাই শেষ পাঁচ-ছয় ওভারেই মারতে চাইত। আরেকটা ঝামেলা আছে, প্রথম ইনিংসের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যানকে দ্বিতীয় ইনিংসে আবার নতুন করে সেট হতে হয়। এতেও গতি নষ্ট হয়।’
নতুন ফরম্যাটে একটা প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করেছিল সিএ। সাউথ অস্ট্রেলিয়া রেডব্যাকস ও তাসমানিয়ান টাইগার্সের ওই ম্যাচে খেলা উইকেটকিপার গ্রাহাম ম্যানু ‘টুইটারে’ লিখেছেন, ‘দুই ইনিংসের ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য ও দর্শকের জন্য কতটা ভালো হবে, এটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।’ নাথান ব্রাকেন লিখেছেন, ‘মোটেও এটির ভক্ত নই, কোনো দলের সূচনা খারাপ হলেও খেলা চরম বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে।’ জুলাইয়ে যখন এসব নিয়ে পরিকল্পনা হচ্ছিল, তখনই মাইক হাসি বলেছিলেন, বিশ্বকাপের আগে আগে দুই ইনিংসের ওয়ানডে চালু করায় বিশ্বকাপ প্রস্তুতি বাধা পেতে পারে।
তবে ব্যাটিং কিংবদন্তি টেন্ডুলকারের ধারণা, এই ফরম্যাট ভবিষ্যতে সুফলই বয়ে আনবে, ‘এখন টসের পরই ৭৫ শতাংশ ম্যাচের ফলাফল বলে দেওয়া যায়। দুই ইনিংসের ওয়ানডে হলে টস আর ততটা গুরুত্বপূর্ণ থাকবে না। দিবারাত্রির ম্যাচেও কোনো দল বাড়তি সুবিধা পাবে না, কারণ দুই দলকেই রাতে ব্যাটিং করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় এটা চালু হওয়ায় আমি সত্যিই খুশি। আমার ধারণা, কিছুদিন খেলার পরই ক্রিকেটাররা এর উপযোগিতা বুঝতে পারবে।’ ওয়েবসাইট।
যে নিয়মে অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে
২০ ও ২৫ ওভারের দুটি ইনিংস খেলবে প্রতিটি দল।
একজন বোলার সর্বোচ্চ ১২ ওভার বোলিং করতে পারবেন।
প্রতিটি দলে খেলবেন ১২ জন, তবে উইকেট ১০টি-ই। ব্যাটিং করবেন ১২ জনের ১১ জন, ফিল্ডিংয়ের সময়ও নামবেন ১১ জন।
এক ওভারে দুটি বাউন্সার দেওয়া যাবে।
প্রতি ইনিংসের দুই প্রান্তে দুটি নতুন বল দিয়ে ইনিংস শুরু হবে। এরপর আর বল পরিবর্তন করা যাবে না।
কোনো পাওয়ার প্লে নেই
ফিল্ডিং সীমাবদ্ধতা: ১-৫ ওভার ও ২১-২৫ ওভার—বৃত্তের বাইরে দুজন, ৬-২০ ওভার ও ২৬-৪৫ ওভার—বাইরে ৪ জন।
ওয়ানডের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ার পর করণীয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জরিপ করেছিল সিএ। সেই জরিপের সুপারিশ অনুযায়ী এ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪৫ ওভারের ওয়ানডে চালু করা হচ্ছে, যেখানে ২০ ও ২৫ ওভারের দুটি ইনিংস খেলবে প্রতি দল। সিএর যুক্তি, ৫০ ওভারের ক্রিকেটে মাঝের ওভারগুলো বড্ড ধীরগতির হয়ে পড়ে, দর্শকের জন্য খুব বিরক্তিকর হয়ে যায়। দুই ইনিংসের ওয়ানডে হলে খেলা ঝুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
দুই ইনিংসের ওয়ানডে চালুর নীতিগত সিদ্ধান্তের পরই ক্রিকেটারদের নিয়েও জরিপ করেছিল সিএ। ৭৮ শতাংশ ক্রিকেটারই এর বিপক্ষে মত দিয়েছে। এসিএর দাবি, দুই ইনিংসের ওয়ানডের জন্য যে ফরম্যাট দিয়েছে সিএ, এতেও খেলা ঝুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে না। খেলা দুই ইনিংসের হলেও প্রতিটি দলের উইকেট ওই ১০টিই, ২০টি নয়। ফলে এখানেও শুরুতে উইকেট ধরে রেখে পরে আক্রমণের পথ বেছে নিতে পারে দলগুলো। গত বছর কাউন্টির দ্বিতীয় বিভাগেও দুই ইনিংসের ওয়ানডে চালু করেছিল ইংল্যান্ড। সেখানে দেখা গেছে প্রথম ইনিংসের শেষ দিকে আর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে অনেকটাই ঝিমিয়ে যায় ইনিংস। এসিএর প্রধান পল মার্শ ক্রিকেটারদের হয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন, ‘ক্রিকেটাররা জানে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ওয়ানডে ক্রিকেট এবং সবাই একসঙ্গে মিলেই এটার সমাধান করতে চায়। কিন্তু তারা বিশ্বাস করে দুই ইনিংসের ওয়ানডেই সেরা সমাধান নয়। এই পদ্ধতি বুঝে ওঠাই কঠিন, ক্রিকেটাররা ভীষণ হতাশ।’
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সভায় সামনাসামনিই এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং। গত বছর কাউন্টিতে যাঁরা দুই ইনিংসের ওয়ানডে খেলেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ভিক্টোরিয়া লেগ স্পিনার ব্রাইস ম্যাকগেইনের উপলব্ধি, ‘কাউন্টিতেও শুরুতে উইকেট ধরে রেখে সবাই শেষ পাঁচ-ছয় ওভারেই মারতে চাইত। আরেকটা ঝামেলা আছে, প্রথম ইনিংসের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যানকে দ্বিতীয় ইনিংসে আবার নতুন করে সেট হতে হয়। এতেও গতি নষ্ট হয়।’
নতুন ফরম্যাটে একটা প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করেছিল সিএ। সাউথ অস্ট্রেলিয়া রেডব্যাকস ও তাসমানিয়ান টাইগার্সের ওই ম্যাচে খেলা উইকেটকিপার গ্রাহাম ম্যানু ‘টুইটারে’ লিখেছেন, ‘দুই ইনিংসের ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য ও দর্শকের জন্য কতটা ভালো হবে, এটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।’ নাথান ব্রাকেন লিখেছেন, ‘মোটেও এটির ভক্ত নই, কোনো দলের সূচনা খারাপ হলেও খেলা চরম বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে।’ জুলাইয়ে যখন এসব নিয়ে পরিকল্পনা হচ্ছিল, তখনই মাইক হাসি বলেছিলেন, বিশ্বকাপের আগে আগে দুই ইনিংসের ওয়ানডে চালু করায় বিশ্বকাপ প্রস্তুতি বাধা পেতে পারে।
তবে ব্যাটিং কিংবদন্তি টেন্ডুলকারের ধারণা, এই ফরম্যাট ভবিষ্যতে সুফলই বয়ে আনবে, ‘এখন টসের পরই ৭৫ শতাংশ ম্যাচের ফলাফল বলে দেওয়া যায়। দুই ইনিংসের ওয়ানডে হলে টস আর ততটা গুরুত্বপূর্ণ থাকবে না। দিবারাত্রির ম্যাচেও কোনো দল বাড়তি সুবিধা পাবে না, কারণ দুই দলকেই রাতে ব্যাটিং করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় এটা চালু হওয়ায় আমি সত্যিই খুশি। আমার ধারণা, কিছুদিন খেলার পরই ক্রিকেটাররা এর উপযোগিতা বুঝতে পারবে।’ ওয়েবসাইট।
যে নিয়মে অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে
২০ ও ২৫ ওভারের দুটি ইনিংস খেলবে প্রতিটি দল।
একজন বোলার সর্বোচ্চ ১২ ওভার বোলিং করতে পারবেন।
প্রতিটি দলে খেলবেন ১২ জন, তবে উইকেট ১০টি-ই। ব্যাটিং করবেন ১২ জনের ১১ জন, ফিল্ডিংয়ের সময়ও নামবেন ১১ জন।
এক ওভারে দুটি বাউন্সার দেওয়া যাবে।
প্রতি ইনিংসের দুই প্রান্তে দুটি নতুন বল দিয়ে ইনিংস শুরু হবে। এরপর আর বল পরিবর্তন করা যাবে না।
কোনো পাওয়ার প্লে নেই
ফিল্ডিং সীমাবদ্ধতা: ১-৫ ওভার ও ২১-২৫ ওভার—বৃত্তের বাইরে দুজন, ৬-২০ ওভার ও ২৬-৪৫ ওভার—বাইরে ৪ জন।
No comments