ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন যেন নির্বাসনে
নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ক্রীড়াঙ্গনের নির্বাচন। বর্তমান সরকারের সময় নয় নয় করে এগারোটি ফেডারেশনে গঠন করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি। আগে থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি ছিল এক-দুটি ফেডারেশনে। সেগুলোয় এখনো নির্বাচন হয়নি। ফলে ক্রীড়াঙ্গনে আবার ‘অ্যাডহক’ সংস্কৃতির হাওয়া বইছে। এসব ফেডারেশনে নির্বাচন কবে হবে, কেউ জানে না।
২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারই ক্রীড়াঙ্গনে নতুন করে চালু করেছিল নির্বাচন-পদ্ধতি। সেই থেকে ফেডারেশনের ক্ষমতা পরিবর্তনের মাধ্যম হয়ে উঠেছিল নির্বাচন। নির্বাচনের পদ্ধতিগত নানা ত্রুটি ছিল এবং আছে। তার পরও গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচনের বিকল্প না থাকায় এর পক্ষেই জনমত।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ যেমন বলছেন, ‘নির্বাচন-প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। নির্বাচনের মাধ্যমে অনেক অনৈতিক কাজও হতে পারে, কিন্তু তার পরও নির্বাচনই হওয়া উচিত। এর পক্ষেই আমার অবস্থান।’
বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দেয়নি। মেয়াদ শেষে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হয়েছে টেনিস, দাবা, কাবাডি, উশু, ক্যারম, জিমন্যাস্টিকস, শরীর গঠন, রোইং, সাইক্লিং, হ্যান্ডবল ফেডারেশনে। কুস্তি ফেডারেশনে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি চলছে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে। এই সরকার এসেও আগের কমিটি বাতিল করে আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করেছে। এসব ফেডারেশনকে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি কবে নির্বাচন করতে হবে।
টেনিস ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়েছিল গত বছর জুলাইয়ে। ১৩ মাস পার হয়েছে, এভাবে আর কত দিন? টেনিসের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বলেছেন, ‘সরকার আমাদের এই কমিটি গঠন করে দিয়েছে। সরকার নির্বাচন দিলে নির্বাচন হবে। এখানে আমাদের কিছু করার বা বলার নেই।’
অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা নিয়ে আর সব ফেডারেশনে প্রতিবাদ না হলেও দাবা ফেডারেশন ছিল ব্যতিক্রম। শীর্ষস্থানীয় বেশ কিছু দাবাড়ু দাবা ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি মেনে নিতে পারেননি এবং তাঁদের বেশির ভাগই সেই থেকে এখন পর্যন্ত খেলা বর্জন করে চলেছেন। গত বছর সেপ্টেম্বরের দিকে দাবার ওই কমিটি করার পর বছরখানেক গড়াতে চলল। কিন্তু নির্বাচনের কোনো খবর নেই।
দাবা অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তাঁর উত্তর, ‘আমাদের তো সময়সীমা দেওয়া হয়নি।’ তাহলে নির্বাচন হবে না? এবার বললেন, ‘আমাকে এভাবে জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারব না। নির্বাচনের সঙ্গে অনেক ফ্যাক্টর জড়িত আছে।’
অতিসম্প্রতি গঠিত হ্যান্ডবল ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনূর জানালেন, তাঁদের কমিটির সামনে কোনো সময়সীমা না দিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তবে তাঁর ধারণা, ‘এ কমিটির মেয়াদ দীর্ঘায়িতই হবে মনে হচ্ছে।’ তাহলে নির্বাচন-প্রক্রিয়া থেকে সরকার বেরিয়ে আসছে? অভিজ্ঞ এই সংগঠক বলছেন, ‘নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তীকালীন দুই কমিটিতেই গলদ রয়েছে। কোনোটিকেই সমর্থন করতে পারছি না।’
ক্যারম ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হয়েছে গত ১১ জুলাই। এই কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবদুল কাদের বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘আমাদের সরকার বলে দিয়েছে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে। ফেডারেশনের বেশির ভাগ কর্মকর্তাই নির্বাচন চান। তবে নির্বাচন কবে হবে বলতে পারব না।’
বর্তমান সরকার ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন দেবে কি না, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় আছে। অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিতে সত্যিকারের ক্রীড়াসংগঠকেরা এলে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে কোথাও কোথাও ক্রীড়াঙ্গনের বাইরের লোকদের এনে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
এ ব্যাপারে বিওএর সহসভাপতি ও সাইক্লিং ফেডারেশনের সভাপতি মিজানুর রহমানের (মানু) অভিমত, ‘সরকার মনে করছে, ক্রীড়াঙ্গনে তার অবস্থান দুর্বল। তাই নির্বাচনের প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবেই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হচ্ছে বলে আমার ধারণা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন বলে শুনেছি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
কী ভাবছে সরকার? অনেক চেষ্টা করেও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী কিংবা এনএসসির সচিবের বক্তব্য জানা যায়নি।
২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারই ক্রীড়াঙ্গনে নতুন করে চালু করেছিল নির্বাচন-পদ্ধতি। সেই থেকে ফেডারেশনের ক্ষমতা পরিবর্তনের মাধ্যম হয়ে উঠেছিল নির্বাচন। নির্বাচনের পদ্ধতিগত নানা ত্রুটি ছিল এবং আছে। তার পরও গণতান্ত্রিক সমাজে নির্বাচনের বিকল্প না থাকায় এর পক্ষেই জনমত।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ যেমন বলছেন, ‘নির্বাচন-প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। নির্বাচনের মাধ্যমে অনেক অনৈতিক কাজও হতে পারে, কিন্তু তার পরও নির্বাচনই হওয়া উচিত। এর পক্ষেই আমার অবস্থান।’
বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দেয়নি। মেয়াদ শেষে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হয়েছে টেনিস, দাবা, কাবাডি, উশু, ক্যারম, জিমন্যাস্টিকস, শরীর গঠন, রোইং, সাইক্লিং, হ্যান্ডবল ফেডারেশনে। কুস্তি ফেডারেশনে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি চলছে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে। এই সরকার এসেও আগের কমিটি বাতিল করে আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করেছে। এসব ফেডারেশনকে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি কবে নির্বাচন করতে হবে।
টেনিস ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়েছিল গত বছর জুলাইয়ে। ১৩ মাস পার হয়েছে, এভাবে আর কত দিন? টেনিসের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বলেছেন, ‘সরকার আমাদের এই কমিটি গঠন করে দিয়েছে। সরকার নির্বাচন দিলে নির্বাচন হবে। এখানে আমাদের কিছু করার বা বলার নেই।’
অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা নিয়ে আর সব ফেডারেশনে প্রতিবাদ না হলেও দাবা ফেডারেশন ছিল ব্যতিক্রম। শীর্ষস্থানীয় বেশ কিছু দাবাড়ু দাবা ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি মেনে নিতে পারেননি এবং তাঁদের বেশির ভাগই সেই থেকে এখন পর্যন্ত খেলা বর্জন করে চলেছেন। গত বছর সেপ্টেম্বরের দিকে দাবার ওই কমিটি করার পর বছরখানেক গড়াতে চলল। কিন্তু নির্বাচনের কোনো খবর নেই।
দাবা অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তাঁর উত্তর, ‘আমাদের তো সময়সীমা দেওয়া হয়নি।’ তাহলে নির্বাচন হবে না? এবার বললেন, ‘আমাকে এভাবে জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারব না। নির্বাচনের সঙ্গে অনেক ফ্যাক্টর জড়িত আছে।’
অতিসম্প্রতি গঠিত হ্যান্ডবল ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনূর জানালেন, তাঁদের কমিটির সামনে কোনো সময়সীমা না দিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তবে তাঁর ধারণা, ‘এ কমিটির মেয়াদ দীর্ঘায়িতই হবে মনে হচ্ছে।’ তাহলে নির্বাচন-প্রক্রিয়া থেকে সরকার বেরিয়ে আসছে? অভিজ্ঞ এই সংগঠক বলছেন, ‘নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তীকালীন দুই কমিটিতেই গলদ রয়েছে। কোনোটিকেই সমর্থন করতে পারছি না।’
ক্যারম ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হয়েছে গত ১১ জুলাই। এই কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আবদুল কাদের বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘আমাদের সরকার বলে দিয়েছে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে। ফেডারেশনের বেশির ভাগ কর্মকর্তাই নির্বাচন চান। তবে নির্বাচন কবে হবে বলতে পারব না।’
বর্তমান সরকার ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন দেবে কি না, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় আছে। অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিতে সত্যিকারের ক্রীড়াসংগঠকেরা এলে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে কোথাও কোথাও ক্রীড়াঙ্গনের বাইরের লোকদের এনে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।
এ ব্যাপারে বিওএর সহসভাপতি ও সাইক্লিং ফেডারেশনের সভাপতি মিজানুর রহমানের (মানু) অভিমত, ‘সরকার মনে করছে, ক্রীড়াঙ্গনে তার অবস্থান দুর্বল। তাই নির্বাচনের প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবেই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করা হচ্ছে বলে আমার ধারণা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন বলে শুনেছি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
কী ভাবছে সরকার? অনেক চেষ্টা করেও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী কিংবা এনএসসির সচিবের বক্তব্য জানা যায়নি।
No comments