আর্মেনীয় গণহত্যা -ইসরায়েল কত অস্বীকার করবে -রবার্ট ফিস্ক
সম্প্রতি ইসরায়েলিরা বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় হলোকস্টের স্মরণ অনুষ্ঠান করেছে। সেই সময় আমি বিংশ শতাব্দীর প্রথম হলোকস্টের শিকার ব্যক্তিদের ছাপা ও হাতে লেখা বিবরণী নাড়াচাড়া করছিলাম, জেরুজালেমের গুনবেনকিয়ান গ্রন্থাগারে। এক অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করছিল তখন।
১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সময়ে জার্মানদের হাতে নিহত ৬০ লাখ ইহুদির স্মরণে আয়োজিত ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে আর্মেনীয়রা অংশগ্রহণ করেনি। কারণ ১৯১৫ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে তুর্কি হলোকস্টে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনীয় বলি হয়েছে, এটা ইসরায়েল সরকারিভাবে স্বীকার করে না। গণহত্যার চেয়ে ইসরায়েলি-তুর্কি কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক তাদের কাছে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন এভাবেই চলছিল।
ইতিহাসবিদ জর্জ হিন্টলিয়ান আমার উদ্দেশে বলেন, ইসরায়েলিরা ‘তাদের গণহত্যার বাইরে আরেকটি গণহত্যা ঘটেছিল, তারা হয়তো এটা ভাবতে চায় না। কিছু বিষয় আছে যা আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি না।’ ১৯১৫ সালের হত্যাযজ্ঞে নিহত হন জর্জের পরিবারের ৭০ জন সদস্য।
কিন্তু সময় বদলাচ্ছে। বছরখানেক আগে যখন তুর্কিরা ইসরায়েলের গাজা আক্রমণে ফিলিস্তিনি হত্যা প্রসঙ্গে শোরগোল শুরু করল, তখনই ইসরায়েলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হঠাত্ করে আর্মেনীয় গণহত্যা পুনরাবিষ্কার করলেন। গণহত্যা নিয়ে তুর্কিরা কথা বলার কে? ১৯১৫ সালের কথা কি লোকে ভুলে গেছে? ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে সব মিলিয়ে ১০ হাজার আর্মেনীয় আছেন। এদের মধ্যে চার হাজার ইসরায়েলের পাসপোর্টধারী। জর্জের মতে, গাজা যুদ্ধের আগ পর্যন্ত তাদের কথা ইসরায়েলিরা ভুলে থেকেছে। তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে জেরুজালেমের হলোকস্ট সম্মেলনে আর্মেনীয়দের বাইরে রাখা হয়। তিন দশক ইসরায়েলি টেলিভিশনগুলোতে আর্মেনীয় গণহত্যার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা যেত না। কারণ তা তুর্কিদের মনোক্ষুণ্ন করবে। হঠাত্ গত বছর কয়েকজন ইসরায়েলি বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রামাণ্যচিত্রগুলো দেখানোর দাবি তোলেন। ইসরায়েলের পার্লামেন্টের ৩০ জন সদস্য আমাদের সমর্থন করেন। পিস নাউ সংগঠনের য়োসি সারিদ (Yossi Sarid) সবসময় আমাদের সমর্থন করতেন। কিন্তু এখন আমরা ডানপন্থীদের সমর্থনও পেলাম।’
মারিভ ও ইয়েদিওট আহরোনাত পত্রিকা দুটো আর্মেনীয় গণহত্যার কথা বলতে শুরু করে। ইসরায়েলি টেলিভিশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনি আয়ালন ও নেসেটের স্পিকার রুভেন রিভলিন সঙ্গে হাজির হন জর্জ হিন্টলিয়ন। তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে ডেনি তাঁর থেকে নিচুতে সোফায় বসতে বাধ্য করেছিলেন। রুভেন বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলকে আর্মেনীয় গণহত্যা প্রতিবছর স্মরণ করা উচিত।’ ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এখন আর্মেনীয় গণহত্যাকে বলা হয় ‘সোয়াহ’।এই শব্দটিই তারা ইহুদি হলোকস্টের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে। জর্জ নিখুঁতভাবে এ পরিস্থিতির বর্ণনা করেছেন, ‘আমাদের ওপরে তোলা হচ্ছে।’
এই দুর্বিনীত ভণ্ডামি সারিদের দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি জানিয়েছেন, রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান গাজা যুদ্ধের নিন্দা জানানোর কয়েক মাস পর একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসরায়েলি ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে বলেন, ‘এখন আপনাকে তুর্কিদের পাল্টা জবাব দিতে হবে। আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে তারা যে অপরাধ করেছে, তার নিন্দা জানাতে হবে। য়োসি, আপনার সে অধিকার আছে...’ যে ব্যক্তি ফোন করেছিলেন, তিনি একসময় আর্মেনীয় হলোকস্ট অস্বীকারকারীদের সামনের সারিতে ছিলেন। এখন জেরুজালেমে নতুন সুর ধ্বনিত হচ্ছে: ‘আমাদের নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার অধিকার তুির্কদের নেই।’
ইসরায়েলের অন্যতম শীর্ষ হলোকস্ট বিশেষজ্ঞ একসময় সাহসিকতার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে চালিত হত্যাযজ্ঞ সন্দেহাতীতভাবে গণহত্যা।’ তাঁর এ বক্তব্য তত্কালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমান প্রেসিডেন্ট) শিমন পেরেজকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। অবশ্য হাজার হাজার ইসরায়েলি সবসময় আর্মেনীয়দের হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা মনে করে। ২৪ এপ্রিল আর্মেনীয়দের স্মরণ অনুষ্ঠানে কয়েক শ ইসরায়েলির জমায়েত হওয়ার কথা। অধিকাংশ ইসরায়েলি আর্মেনীয় গণহত্যাকে ‘সোয়াহ’ হিসেবে উল্লেখ করে।
তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ প্রহসনটি ঘটেছে গত বছর। আর্মেনীয় ও তুর্কি সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন এবং কোনো গণহত্যা ঘটেছিল কি না, তা যাচাই করতে যৌথ অ্যাকাডেমিক অনুসন্ধান চালানোর বিষয়ে একমত হয়। ইসরায়েলি অধ্যাপক ইয়ার ওরিন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর ফলে এখন বহু দেশ আর্মেনীয় গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে দ্বিধায় পড়বে। সেসব দেশ বলবে, ‘আর্মেনীয়রা তাদের অবস্থান থেকে সরে গেলে আমরা কেন তাদের স্বীকৃতি দেব?’ ওরিন মনে করেন, ‘আর্মেনীয় গণহত্যার স্বীকৃতি প্রধানতম নৈতিক ও শিক্ষামূলক সক্রিয়তা। ইসরায়েলিরা এই স্বীকৃতি প্রদানে বাধ্য।’ আর আমেরিকান-আর্মেনীয় অধ্যাপক রিচার্ড হভানিমিয়ানের জিজ্ঞাসা, জার্মানির সঙ্গে ভালো সম্পর্কের জন্য তারা যদি দাবি করে হলোকস্টের স্মৃতি ভুলে যেতে, ইহুদি জনগণ কি তাতে রাজি হবে?
১৯৪৮ সালের আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিনে প্রায় ১৫ হাজার আর্মেনীয় বাস করত, তাদের অনেকে প্রথম হলোকস্ট থেকে বেঁচে যান। কিন্তু তাদের মধ্যে ১০ হাজার আর্মেনীয়কেও ফিলিস্তিনি আরবদের মতো পালিয়ে যেতে হয় বা তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। অধিকাংশই হাইফা ও জাফফাতে তাদের ব্যবসা হারায়। তাদের অনেকে এখন জেরুজালেমে দ্বিতীয়বারের মতো আশ্রয়প্রত্যাশী। কিছু অংশ সাইপ্রাসের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। সেখানে তারা ১৯৭০ সালে তুর্কি আক্রমণের শিকার হয়ে তৃতীয়বারের মতো জায়গা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। বিষণ্ন সুরে জর্জ বলেন, এখন ছয় হাজার আর্মেনীয়কে জেরুজালেম আর পশ্চিম তীরের আর্মেনীয়-ফিলিস্তিনি হিসেবে গণ্য করা হয়। ইসরায়েলি আমলাদের কাছে তাদের পরিচয় ফিলিস্তিনি।
আবার যদি ছক উল্টে যায়! তুরস্ক ও ইসরায়েল আবার ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। সারিদ তেমন সম্ভাবনাই দেখছেন, ‘তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলে কী ঘটবে? আমরা কি আর্মেনীয় হলোকস্ট অস্বীকার করার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকায় প্রত্যাবর্তন করব?’
দি ইনডিপেন্ডেন্ট থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক।
১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সময়ে জার্মানদের হাতে নিহত ৬০ লাখ ইহুদির স্মরণে আয়োজিত ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে আর্মেনীয়রা অংশগ্রহণ করেনি। কারণ ১৯১৫ থেকে ১৯২৩ সালের মধ্যে তুর্কি হলোকস্টে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনীয় বলি হয়েছে, এটা ইসরায়েল সরকারিভাবে স্বীকার করে না। গণহত্যার চেয়ে ইসরায়েলি-তুর্কি কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক তাদের কাছে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন এভাবেই চলছিল।
ইতিহাসবিদ জর্জ হিন্টলিয়ান আমার উদ্দেশে বলেন, ইসরায়েলিরা ‘তাদের গণহত্যার বাইরে আরেকটি গণহত্যা ঘটেছিল, তারা হয়তো এটা ভাবতে চায় না। কিছু বিষয় আছে যা আমরা ব্যাখ্যা করতে পারি না।’ ১৯১৫ সালের হত্যাযজ্ঞে নিহত হন জর্জের পরিবারের ৭০ জন সদস্য।
কিন্তু সময় বদলাচ্ছে। বছরখানেক আগে যখন তুর্কিরা ইসরায়েলের গাজা আক্রমণে ফিলিস্তিনি হত্যা প্রসঙ্গে শোরগোল শুরু করল, তখনই ইসরায়েলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হঠাত্ করে আর্মেনীয় গণহত্যা পুনরাবিষ্কার করলেন। গণহত্যা নিয়ে তুর্কিরা কথা বলার কে? ১৯১৫ সালের কথা কি লোকে ভুলে গেছে? ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে সব মিলিয়ে ১০ হাজার আর্মেনীয় আছেন। এদের মধ্যে চার হাজার ইসরায়েলের পাসপোর্টধারী। জর্জের মতে, গাজা যুদ্ধের আগ পর্যন্ত তাদের কথা ইসরায়েলিরা ভুলে থেকেছে। তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে জেরুজালেমের হলোকস্ট সম্মেলনে আর্মেনীয়দের বাইরে রাখা হয়। তিন দশক ইসরায়েলি টেলিভিশনগুলোতে আর্মেনীয় গণহত্যার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা যেত না। কারণ তা তুর্কিদের মনোক্ষুণ্ন করবে। হঠাত্ গত বছর কয়েকজন ইসরায়েলি বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রামাণ্যচিত্রগুলো দেখানোর দাবি তোলেন। ইসরায়েলের পার্লামেন্টের ৩০ জন সদস্য আমাদের সমর্থন করেন। পিস নাউ সংগঠনের য়োসি সারিদ (Yossi Sarid) সবসময় আমাদের সমর্থন করতেন। কিন্তু এখন আমরা ডানপন্থীদের সমর্থনও পেলাম।’
মারিভ ও ইয়েদিওট আহরোনাত পত্রিকা দুটো আর্মেনীয় গণহত্যার কথা বলতে শুরু করে। ইসরায়েলি টেলিভিশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনি আয়ালন ও নেসেটের স্পিকার রুভেন রিভলিন সঙ্গে হাজির হন জর্জ হিন্টলিয়ন। তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে ডেনি তাঁর থেকে নিচুতে সোফায় বসতে বাধ্য করেছিলেন। রুভেন বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলকে আর্মেনীয় গণহত্যা প্রতিবছর স্মরণ করা উচিত।’ ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এখন আর্মেনীয় গণহত্যাকে বলা হয় ‘সোয়াহ’।এই শব্দটিই তারা ইহুদি হলোকস্টের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে। জর্জ নিখুঁতভাবে এ পরিস্থিতির বর্ণনা করেছেন, ‘আমাদের ওপরে তোলা হচ্ছে।’
এই দুর্বিনীত ভণ্ডামি সারিদের দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি জানিয়েছেন, রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান গাজা যুদ্ধের নিন্দা জানানোর কয়েক মাস পর একজন গুরুত্বপূর্ণ ইসরায়েলি ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে বলেন, ‘এখন আপনাকে তুর্কিদের পাল্টা জবাব দিতে হবে। আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে তারা যে অপরাধ করেছে, তার নিন্দা জানাতে হবে। য়োসি, আপনার সে অধিকার আছে...’ যে ব্যক্তি ফোন করেছিলেন, তিনি একসময় আর্মেনীয় হলোকস্ট অস্বীকারকারীদের সামনের সারিতে ছিলেন। এখন জেরুজালেমে নতুন সুর ধ্বনিত হচ্ছে: ‘আমাদের নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার অধিকার তুির্কদের নেই।’
ইসরায়েলের অন্যতম শীর্ষ হলোকস্ট বিশেষজ্ঞ একসময় সাহসিকতার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আর্মেনীয়দের বিরুদ্ধে চালিত হত্যাযজ্ঞ সন্দেহাতীতভাবে গণহত্যা।’ তাঁর এ বক্তব্য তত্কালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমান প্রেসিডেন্ট) শিমন পেরেজকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। অবশ্য হাজার হাজার ইসরায়েলি সবসময় আর্মেনীয়দের হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা মনে করে। ২৪ এপ্রিল আর্মেনীয়দের স্মরণ অনুষ্ঠানে কয়েক শ ইসরায়েলির জমায়েত হওয়ার কথা। অধিকাংশ ইসরায়েলি আর্মেনীয় গণহত্যাকে ‘সোয়াহ’ হিসেবে উল্লেখ করে।
তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ প্রহসনটি ঘটেছে গত বছর। আর্মেনীয় ও তুর্কি সরকার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন এবং কোনো গণহত্যা ঘটেছিল কি না, তা যাচাই করতে যৌথ অ্যাকাডেমিক অনুসন্ধান চালানোর বিষয়ে একমত হয়। ইসরায়েলি অধ্যাপক ইয়ার ওরিন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর ফলে এখন বহু দেশ আর্মেনীয় গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে দ্বিধায় পড়বে। সেসব দেশ বলবে, ‘আর্মেনীয়রা তাদের অবস্থান থেকে সরে গেলে আমরা কেন তাদের স্বীকৃতি দেব?’ ওরিন মনে করেন, ‘আর্মেনীয় গণহত্যার স্বীকৃতি প্রধানতম নৈতিক ও শিক্ষামূলক সক্রিয়তা। ইসরায়েলিরা এই স্বীকৃতি প্রদানে বাধ্য।’ আর আমেরিকান-আর্মেনীয় অধ্যাপক রিচার্ড হভানিমিয়ানের জিজ্ঞাসা, জার্মানির সঙ্গে ভালো সম্পর্কের জন্য তারা যদি দাবি করে হলোকস্টের স্মৃতি ভুলে যেতে, ইহুদি জনগণ কি তাতে রাজি হবে?
১৯৪৮ সালের আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিনে প্রায় ১৫ হাজার আর্মেনীয় বাস করত, তাদের অনেকে প্রথম হলোকস্ট থেকে বেঁচে যান। কিন্তু তাদের মধ্যে ১০ হাজার আর্মেনীয়কেও ফিলিস্তিনি আরবদের মতো পালিয়ে যেতে হয় বা তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। অধিকাংশই হাইফা ও জাফফাতে তাদের ব্যবসা হারায়। তাদের অনেকে এখন জেরুজালেমে দ্বিতীয়বারের মতো আশ্রয়প্রত্যাশী। কিছু অংশ সাইপ্রাসের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। সেখানে তারা ১৯৭০ সালে তুর্কি আক্রমণের শিকার হয়ে তৃতীয়বারের মতো জায়গা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। বিষণ্ন সুরে জর্জ বলেন, এখন ছয় হাজার আর্মেনীয়কে জেরুজালেম আর পশ্চিম তীরের আর্মেনীয়-ফিলিস্তিনি হিসেবে গণ্য করা হয়। ইসরায়েলি আমলাদের কাছে তাদের পরিচয় ফিলিস্তিনি।
আবার যদি ছক উল্টে যায়! তুরস্ক ও ইসরায়েল আবার ভালো বন্ধু হয়ে ওঠে। সারিদ তেমন সম্ভাবনাই দেখছেন, ‘তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলে কী ঘটবে? আমরা কি আর্মেনীয় হলোকস্ট অস্বীকার করার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকায় প্রত্যাবর্তন করব?’
দি ইনডিপেন্ডেন্ট থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আহসান হাবীব
রবার্ট ফিস্ক: ব্রিটিশ সাংবাদিক।
No comments