‘শিক্ষিকা’ বনাম ‘শিক্ষক’
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের স্কুলশিক্ষিকা দুলালী বৈশ্যকে স্কুলে পাঠদান করতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, তিনি ‘শিক্ষক’ নন, ‘শিক্ষিকা’। রাজশাহীতে এক নারীকে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে তাঁর স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে বসে খেলা দেখতে দেওয়া হয়নি, কারণ, তিনি ‘নর’ নন, ‘নারী’। প্রশ্ন করতে হয়, নারী হওয়ায় শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় কিংবা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে কী সমস্যা সৃষ্টি হয়? সমস্যা যা, তা নারী নিজে নন, যে মানসিকতা নারীকে হেয় করে বা তাঁদের অধিকার খর্ব করে, সমস্যা সেই মানসিকতাতেই। সুতরাং শিক্ষিকা দুলালী বা খেলা দেখতে আসা মনিরা নয়, বদলাতে হবে ওই দুটি ক্ষেত্রের পুরুষ কর্তাব্যক্তিদের মানসিকতা। কেননা, এই মানসিকতা মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে শেখেনি।
এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে নারীর অবদান নেই। নারীর শ্রম ও অংশগ্রহণ ছাড়া কৃষি চলত না, নারীর শ্রম ছাড়া লাভজনক পোশাকশিল্প টিকত না, নারীর অবদান ছাড়া সরকার-প্রশাসন-রাজনীতি-শিক্ষা প্রভৃতি কেবল লোকবলের ঘাটতিতেই ভুগত না, গণতান্ত্রিকও হতে পারত না। তা সত্ত্বেও নারীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক ক্ষেত্র থেকে ‘বহিষ্কার’ করার এই প্রবণতা কেবল বিশ্বাসঘাতকতাই নয়, অযৌক্তিক ও অবাস্তব। দুই পা সমান না হলে কেউ সাবলীলভাবে হাঁটতে পারে না। নারী-পুরুষের বৈষম্য থাকলে তেমনি দেশও এগোয় না। দুঃখের বিষয় এর পরও নারীবিদ্বেষী মানসিকতা এখনো কিছু পুরুষের মধ্যে রয়ে গেছে। আর এটা চলতে পারছে প্রশাসন ও সরকারের উদাসীনতায়।
দুলালী বৈশ্য যে ছয় মাস যাবত্ ক্লাস নিতে পারছেন না, তা ময়মনসিংহের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানেন। কিন্তু প্রথম আলোর কাছে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাত-পা বাঁধা...।’ কে তাঁর হাত-পা বেঁধেছে? হাত-পা বাঁধা থাকাই কি তাঁর পেশা? এ জন্যই কি তিনি রাষ্ট্রের বেতন পান? কিংবা স্কুল কমিটির যে সভাপতি বলেন, ‘শিক্ষিকা নয়, চাই পুরুষ শিক্ষক’; এই নারীবিদ্বেষী ব্যক্তি কীভাবে একটি বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ দখল করে রাখেন, যেখানে রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধান অঙ্গীকারবদ্ধ? এই মন্তব্য করে তিনি সমগ্র নারীসমাজ তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী দুজনকেই অপমান করেছেন।
বিদ্যালয়সহ রাষ্ট্রের ও সমাজের উচ্চাসনে যিনিই থাকুন, তাঁকে সমানাধিকারের নীতিতে বিশ্বাসী হতে হবে, নারী-পুরুষ সবার প্রতিই সমান শ্রদ্ধা রাখতে হবে। যে ব্যক্তি নারীকে অবমাননা করেন, তিনি নিজের মা-বোন-স্ত্রী কিংবা নারী সহকর্মীর প্রতিও শ্রদ্ধা পোষণ করেন বলে মনে হয় না। এ ধরনের ব্যক্তির উপদ্রব থেকে দেশ যত মুক্ত হয়, ততই মঙ্গল।
এমন কোনো ক্ষেত্র নেই, যেখানে নারীর অবদান নেই। নারীর শ্রম ও অংশগ্রহণ ছাড়া কৃষি চলত না, নারীর শ্রম ছাড়া লাভজনক পোশাকশিল্প টিকত না, নারীর অবদান ছাড়া সরকার-প্রশাসন-রাজনীতি-শিক্ষা প্রভৃতি কেবল লোকবলের ঘাটতিতেই ভুগত না, গণতান্ত্রিকও হতে পারত না। তা সত্ত্বেও নারীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক ক্ষেত্র থেকে ‘বহিষ্কার’ করার এই প্রবণতা কেবল বিশ্বাসঘাতকতাই নয়, অযৌক্তিক ও অবাস্তব। দুই পা সমান না হলে কেউ সাবলীলভাবে হাঁটতে পারে না। নারী-পুরুষের বৈষম্য থাকলে তেমনি দেশও এগোয় না। দুঃখের বিষয় এর পরও নারীবিদ্বেষী মানসিকতা এখনো কিছু পুরুষের মধ্যে রয়ে গেছে। আর এটা চলতে পারছে প্রশাসন ও সরকারের উদাসীনতায়।
দুলালী বৈশ্য যে ছয় মাস যাবত্ ক্লাস নিতে পারছেন না, তা ময়মনসিংহের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানেন। কিন্তু প্রথম আলোর কাছে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাত-পা বাঁধা...।’ কে তাঁর হাত-পা বেঁধেছে? হাত-পা বাঁধা থাকাই কি তাঁর পেশা? এ জন্যই কি তিনি রাষ্ট্রের বেতন পান? কিংবা স্কুল কমিটির যে সভাপতি বলেন, ‘শিক্ষিকা নয়, চাই পুরুষ শিক্ষক’; এই নারীবিদ্বেষী ব্যক্তি কীভাবে একটি বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ দখল করে রাখেন, যেখানে রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধান অঙ্গীকারবদ্ধ? এই মন্তব্য করে তিনি সমগ্র নারীসমাজ তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী দুজনকেই অপমান করেছেন।
বিদ্যালয়সহ রাষ্ট্রের ও সমাজের উচ্চাসনে যিনিই থাকুন, তাঁকে সমানাধিকারের নীতিতে বিশ্বাসী হতে হবে, নারী-পুরুষ সবার প্রতিই সমান শ্রদ্ধা রাখতে হবে। যে ব্যক্তি নারীকে অবমাননা করেন, তিনি নিজের মা-বোন-স্ত্রী কিংবা নারী সহকর্মীর প্রতিও শ্রদ্ধা পোষণ করেন বলে মনে হয় না। এ ধরনের ব্যক্তির উপদ্রব থেকে দেশ যত মুক্ত হয়, ততই মঙ্গল।
No comments