চট্টগ্রাম বন্দরে আবার আন্দোলন by মামুন আবদুল্লাহ
‘আমাদের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে আমরা ১৫ হাজার ডকশ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি’
চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা দুটিতে কমিয়ে আনার সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। বন্দরের ৩২টি শ্রমিক সংগঠনের বেশির ভাগই এখন সমবায় সমিতির নামে নতুন করে নিবন্ধন নিয়ে কথায় কথায় বন্দর বন্ধের তৎপরতা শুরু করেছে। এসব নতুন সংস্থা চট্টগ্রামের মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত মাসে তুচ্ছ ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দর অন্তত তিন দফা বন্ধ থাকে। এ ছাড়া শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশ-মানববন্ধনের কারণে আরও তিন দিন বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। আগামী মঙ্গলবার নতুন করে চার ঘণ্টার জন্য বন্দরের কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সরকারি দল-সমর্থিত চট্টগ্রাম ডক-বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন।
ফেডারেশনের আহ্বায়ক গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে আমরা ১৫ হাজার ডকশ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। ডকশ্রমিকদের সাতটি সংগঠন নিয়ে আমরা ফেডারেশন গঠন করেছি। চার ঘণ্টার কর্মবিরতিতে কাজ না হলে ফেডারেশন আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’ সরকারি দলের লোক হয়েও কেন আন্দোলন করছেন, জানতে চাইলে গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দাবি-দাওয়ার কথা বললেও কেউ তো ডাকছে না। ডেকে আলোচনা করার জন্য এ আন্দোলন।’
এই সংগঠনের মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন বন্দরের সাবেক সিবিএ নেতা মাহফুজুর রহমান। তিনি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
যোগাযোগ করা হলে বন্দরের শ্রমিক আন্দোলনের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি মেয়র।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ রাতে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন মেয়র। প্রায় ১৭ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর প্রথম তিনি প্রকাশ্যে শ্রমিক সমাবেশ করেন বন্দর এলাকার বিমান চত্বরে। এ সমাবেশে মেয়র পরবর্তী এক মাসের মধ্যে চাকরিচ্যুত ১৫ হাজার ডকশ্রমিককে চাকরি ফিরিয়ে দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন। এর পর থেকেই বন্দর পরিস্থতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। পরে আরও কয়েকটি সমাবেশে তিনি ডকশ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করে দেন।
অবশ্য চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান কমডোর আর ইউ আহমেদ মনে করেন, শ্রমিকেরা শেষ পর্যন্ত বন্দর বন্ধের কর্মসূচিতে যাবে না। শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে কীভাবে দূরে রাখা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।
বন্দর কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর বন্দরে সংস্কারকাজ শুরু হলে জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত শ্রমিক অসন্তোষজনিত কারণে এক মুহূর্তের জন্যও বন্দরের কাজ বন্ধ হয়নি। বরং ওই সময়ে বন্দরের সেবার মান আন্তর্জাতিক যেকোনো বন্দরের সমমানের প র্যায়ে চলে আসে। বন্দরের জাহাজ অবস্থানের গড় সময় (টার্ন রাউন্ড টাইম) ১৩-১৪ দিনের স্থলে দুই-আড়াই দিনে নেমে আসে। নতুন ব্যবস্থাপনায় বন্দর ব্যবহারকারীরা ২০০৭ সালের ১৬ মে কাজ শুরু করেন। সে সময় বন্দরের ৩২টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের কেউ গ্রেপ্তার ও কেউ আত্মগোপনে চলে গেলে সাধারণ শ্রমিকেরা ঠিকই কাজে যোগ দেন। ফলে বন্দরের দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে শ্রমিক নিয়োগকারী সংস্থা বার্থ অপারেটরদের প্রতিনিধি ফজলে একরাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই বছরে বন্দর পরিচালনায় দেশে-বিদেশে যে সুনাম অর্জিত হয়, তা শ্রমিক আন্দোলনের নামে ধূলিসাতের চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, যে শ্রমিকেরা তাঁদের সব ধরনের দেনা-পাওনা বুঝে নিয়ে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন, তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি অবান্তর।
বন্দর ব্যবহারকারী, শ্রমিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা ৩২টি থেকে কমিয়ে দুটিতে নামিয়ে আনার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণে বন্দর পরিস্থিতি আবারও বেসামাল হয়ে পড়েছে। একটি সংগঠনের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে আলোচনা-সমঝোতা হলে অন্য একটি সংগঠন নতুন দাবি তুলে বন্দরকে জিম্মি করতে চায়।
চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা দুটিতে কমিয়ে আনার সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। বন্দরের ৩২টি শ্রমিক সংগঠনের বেশির ভাগই এখন সমবায় সমিতির নামে নতুন করে নিবন্ধন নিয়ে কথায় কথায় বন্দর বন্ধের তৎপরতা শুরু করেছে। এসব নতুন সংস্থা চট্টগ্রামের মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত মাসে তুচ্ছ ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দর অন্তত তিন দফা বন্ধ থাকে। এ ছাড়া শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশ-মানববন্ধনের কারণে আরও তিন দিন বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। আগামী মঙ্গলবার নতুন করে চার ঘণ্টার জন্য বন্দরের কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সরকারি দল-সমর্থিত চট্টগ্রাম ডক-বন্দর শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন।
ফেডারেশনের আহ্বায়ক গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশে আমরা ১৫ হাজার ডকশ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। ডকশ্রমিকদের সাতটি সংগঠন নিয়ে আমরা ফেডারেশন গঠন করেছি। চার ঘণ্টার কর্মবিরতিতে কাজ না হলে ফেডারেশন আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’ সরকারি দলের লোক হয়েও কেন আন্দোলন করছেন, জানতে চাইলে গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দাবি-দাওয়ার কথা বললেও কেউ তো ডাকছে না। ডেকে আলোচনা করার জন্য এ আন্দোলন।’
এই সংগঠনের মহাসচিবের দায়িত্বে আছেন বন্দরের সাবেক সিবিএ নেতা মাহফুজুর রহমান। তিনি মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
যোগাযোগ করা হলে বন্দরের শ্রমিক আন্দোলনের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি মেয়র।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ রাতে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন মেয়র। প্রায় ১৭ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর প্রথম তিনি প্রকাশ্যে শ্রমিক সমাবেশ করেন বন্দর এলাকার বিমান চত্বরে। এ সমাবেশে মেয়র পরবর্তী এক মাসের মধ্যে চাকরিচ্যুত ১৫ হাজার ডকশ্রমিককে চাকরি ফিরিয়ে দিতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন। এর পর থেকেই বন্দর পরিস্থতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। পরে আরও কয়েকটি সমাবেশে তিনি ডকশ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করে দেন।
অবশ্য চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান কমডোর আর ইউ আহমেদ মনে করেন, শ্রমিকেরা শেষ পর্যন্ত বন্দর বন্ধের কর্মসূচিতে যাবে না। শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে কীভাবে দূরে রাখা যায়, সেই চেষ্টা চলছে।
বন্দর কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর বন্দরে সংস্কারকাজ শুরু হলে জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত শ্রমিক অসন্তোষজনিত কারণে এক মুহূর্তের জন্যও বন্দরের কাজ বন্ধ হয়নি। বরং ওই সময়ে বন্দরের সেবার মান আন্তর্জাতিক যেকোনো বন্দরের সমমানের প র্যায়ে চলে আসে। বন্দরের জাহাজ অবস্থানের গড় সময় (টার্ন রাউন্ড টাইম) ১৩-১৪ দিনের স্থলে দুই-আড়াই দিনে নেমে আসে। নতুন ব্যবস্থাপনায় বন্দর ব্যবহারকারীরা ২০০৭ সালের ১৬ মে কাজ শুরু করেন। সে সময় বন্দরের ৩২টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের কেউ গ্রেপ্তার ও কেউ আত্মগোপনে চলে গেলে সাধারণ শ্রমিকেরা ঠিকই কাজে যোগ দেন। ফলে বন্দরের দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে যেতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে শ্রমিক নিয়োগকারী সংস্থা বার্থ অপারেটরদের প্রতিনিধি ফজলে একরাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই বছরে বন্দর পরিচালনায় দেশে-বিদেশে যে সুনাম অর্জিত হয়, তা শ্রমিক আন্দোলনের নামে ধূলিসাতের চেষ্টা হচ্ছে। তিনি বলেন, যে শ্রমিকেরা তাঁদের সব ধরনের দেনা-পাওনা বুঝে নিয়ে স্বেচ্ছায় চলে গেছেন, তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি অবান্তর।
বন্দর ব্যবহারকারী, শ্রমিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিক সংগঠনের সংখ্যা ৩২টি থেকে কমিয়ে দুটিতে নামিয়ে আনার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণে বন্দর পরিস্থিতি আবারও বেসামাল হয়ে পড়েছে। একটি সংগঠনের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে আলোচনা-সমঝোতা হলে অন্য একটি সংগঠন নতুন দাবি তুলে বন্দরকে জিম্মি করতে চায়।
No comments