আইএস-এর ঝোঁক এখন গেরিলা যুদ্ধে
পশ্চিমা
বিশ্ব যখন ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস-এর খেলাফতের অবসান ঘোষণা করেছে; জঙ্গি
সংগঠনটি তখন নিজেদের যুদ্ধ কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা
রয়টার্স-এর এক বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন থেকে এই আভাস পাওয়া গেছে। ওই
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাক ও সিরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর আইএস যোদ্ধারা এখন
গেরিলা যুদ্ধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এ জঙ্গি সংগঠনটির
কথিত অনলাইন সংবাদপত্র আল নাবার মাধ্যমে অনুসারীদেরকে গেরিলা কৌশল অনুসরণের
জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। কীভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে পালিয়ে যেতে হবে
তার বিস্তারিত নির্দেশনা হাজির করা হয়েছে আল নাবায়। সম্প্রতি বাংলাদেশের
নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর এমন দুইটি গেরিলা ধারার হামলার ঘটনাতে আইএস-এর দায়
স্বীকারের খবর প্রকাশিত হয়েছে। রয়টার্স-এর বিশ্লেষণে বলা হয়, ইরাক ও সিরিয়া
ছাড়া আইএস অন্য যেসব জায়গায় নিজেদের ঘাঁটি বিস্তৃত করতে চায় সেইসব স্থানে
এসব কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে।
২০১৪ সাল থেকে সিরিয়া ও ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নৃশংসতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আইএস। অতীতের যে কোনও জঙ্গি তৎপরতাকে ছাপিয়ে তারা আবির্ভূত হয় ভয়াবতার চূড়ান্ত রূপ নিয়ে। তবে ক্রমশ বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর কাছে পরাজিত হতে হতে এ বছরের মার্চে সিরিয়ায় নিজেদের সর্বশেষ ঘাঁটি বাঘুজের নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয় তাদের। এক পর্যায়ে পুরনো ধাঁচের লড়াইয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয় জঙ্গি সংগঠনটি। সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেওয়া এবং জনসমর্থন আদায় করাকে কৌশল হিসেবে নেয় তারা ।
আইএস-এর এই পুনর্জাগরণ প্রচেষ্টাকে এখন পর্যন্ত সফল মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিশ্বজুড়ে অনেকগুলো হামলা হয়েছে। অতীতে যেসব জায়গায় তারা হামলা করেনি, এবার সেগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট ইন্টেলিজেন্স-এর নির্বাহী পরিচালক রিটা কাৎজ রয়টার্সকে বলেন, ‘দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আইএস এখনও খুব বিপজ্জনক। বিশ্বজুড়ে অভিযানমূলক তৎপরতা চালানোর মতো প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও ভিত্তি রয়েছে তাদের।’
এপ্রিলে আইএস-এর আল ফুরকান নেটওয়ার্ক থেকে একটি বিরল ভিডিও প্রচার করা হয়। এতে সংগঠনের শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদিকে অনুসারীদেরকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, বাগদাদি আকস্মিক আক্রমণের মধ্য দিয়ে শত্রুদের দুর্বল করে দেওয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করছে। রয়টার্স বলছে, ২০১৪ সালে মসুলের গ্রান্ড আল নুরি মসজিদে বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওতে বাগদাদিকে যেমন দেখা গিয়েছিল, তার চেয়ে এবারের ভিডিওতে তাকে শান্ত মনে হয়েছে। নতুন ভিডিওতে দেখা গেছে বাগদাদি একটি ম্যাট্রেসে এক পা আরেক পায়ের ওপর ভাঁজ করে রেখে তিন সহযোগীর সঙ্গে কথা বলছে। তার পেছনে একটি কালাশনিকভ রাইফেল তাক করা। আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন ও বাগদাদির পূর্বসূরী আবু মুসাব আল জারকাউয়ির ভিডিওগুলোতে একইরকমের অস্ত্র দেখা যেতো। তারাও গেরিলা যুদ্ধ কৌশল অনুসরণ করতো।
রিটা কাৎজ বলেন, ‘ভিডিওতে তাকে শক্তিশালী কোনও খিলাফতের বিশেষ সম্মানিত নেতার মতো নয়, কোনও জঙ্গি সংগঠনের মুজাহিদীনদের দৃঢ়তাপূর্ণ কমান্ডারের মতোই মনে হয়েছে। তার এ ধরনের উপস্থিতি বিশ্বজুড়ে আইএস সমর্থকদের সামগ্রিক অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছে।’
ইসলাম বিষয়ক জর্ডানি বিশেষজ্ঞ হাসান আবু হানিয়েহ মনে করছেন, শুধু মিডিয়া কাভারেজ পেতে সাময়িকভাবে শহর অবরুদ্ধ করা নয়, নতুন যুদ্ধ কৌশলের অংশ হিসেবেও গেরিলা ধারার আক্রমণকে বেছে নিয়েছে আইএস। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের যুদ্ধ সংগঠনটির জন্য কৌশলে পরিণত হয়েছে। আপাতত তারা একে ছোট-ছোট ধারাবাহিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে দুর্বল করার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যেমনটা সর্বশেষ বক্তব্যে বাগদাদি বলেছেন।’
এপ্রিলে আইএস দাবি করেছিল, তারা লিবিয়ার ফুকাহা শহরে হামলা চালিয়ে শহর কাউন্সিলের প্রধানকে হত্যা করার পাশাপাশি মিউনিসিপ্যাল গার্ডের সদর দফতরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা কয়েক ঘণ্টা ধরে শহরটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পর নিরাপদে তাদের ঘাঁটিতে ফিরে যায়।
সম্প্রতি আইএস-এর কথিত সংবাদপত্র আল নাবাতে ‘টেম্পোরারি ফল অব সিটিজ অ্যাজ অ্যা ওয়ার্কিং মেথড ফর দ্য মুজাহিদীন’ শিরোনামে চার পর্বের ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। নিবন্ধে আইএস তাদের যোদ্ধাদেরকে শত্রুদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। অথচ একসময মুখোমুখি যুদ্ধকেই উৎসাহিত করা হতো।
১৮ এপ্রিল ডিআর কঙ্গোর ওপর প্রথমবারের মতো হামলা চালায় আইএস। ‘খেলাফত’ এর ‘মধ্য আফ্রিকা প্রদেশ’ গঠনের ঘোষণা দেয় তারা। তখন থেকে কঙ্গোতে আরও বেশ কযেকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে তারা। ১০ মে আইএস দাবি করেছে, তারা ভারতে একটি শাখা প্রতিষ্ঠা করেছে। একই দিনে নাইজেরিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহরে মোটরবাইক নিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও সেনাদের ওপর ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। সেই হামলার পাশাপাশি নাইজেরিয়ায় আরও বেশকিছু হামলার দায় স্বীকার করেছে সংগঠনটি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আফগানিস্তান, নাইজার, সোমালিয়া, মিসর, পাকিস্তান, চেচনিয়া, শ্রীলঙ্কা ও অন্যত্র একই ধরনের বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। কোনও কোনও হামলার পর সংগঠনটি বুলেট, রাইফেল ও অন্য অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করে। এগুলো সেনাসদস্যদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধেও ২ টি হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে আইএস।
২৯ এপ্রিল রাজধানীর মতিঝিল থানাধীন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হাতবোমা দিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে দুই ট্রাফিক পুলিশ ও এক কমিউনিটি পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলার ঘটনায় আইএস-এর দায় স্বীকারের খবর প্রকাশ করে জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক মাধ্যম সাইট ইন্টেলিজেন্স। সে সময় মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে সাইট ইন্টেলিজেন্সের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একদল পুলিশ সদস্যের ওপর বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আইএস জঙ্গিরা।
সবশেষ ২৬ মে রবিবার মালিবাগ মোড়ে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওই গাড়িতে থাকা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার ও রিকশাচালক লাল মিয়াসহ দুই পথচারী আহত হন। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে সাইট ইন্টেলিজেন্স জানায়, আইএস বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ।
অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফ্ল্যাশপয়েন্ট-এর জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও সহ প্রতিষ্ঠাতা লাইথ আলখুরি মনে করছেন, বিস্তৃত অঞ্চলে হামলা চালিয়ে আইএস প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে পুনরায় সংগঠিত হওয়া আর কৌশলে পরিবর্তন আনার বার্তা সবার সামনে হাজির করতে চাইছে তারা।
২০১৪ সাল থেকে সিরিয়া ও ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নৃশংসতার নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আইএস। অতীতের যে কোনও জঙ্গি তৎপরতাকে ছাপিয়ে তারা আবির্ভূত হয় ভয়াবতার চূড়ান্ত রূপ নিয়ে। তবে ক্রমশ বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর কাছে পরাজিত হতে হতে এ বছরের মার্চে সিরিয়ায় নিজেদের সর্বশেষ ঘাঁটি বাঘুজের নিয়ন্ত্রণ হারাতে হয় তাদের। এক পর্যায়ে পুরনো ধাঁচের লড়াইয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয় জঙ্গি সংগঠনটি। সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেওয়া এবং জনসমর্থন আদায় করাকে কৌশল হিসেবে নেয় তারা ।
আইএস-এর এই পুনর্জাগরণ প্রচেষ্টাকে এখন পর্যন্ত সফল মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিশ্বজুড়ে অনেকগুলো হামলা হয়েছে। অতীতে যেসব জায়গায় তারা হামলা করেনি, এবার সেগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট ইন্টেলিজেন্স-এর নির্বাহী পরিচালক রিটা কাৎজ রয়টার্সকে বলেন, ‘দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আইএস এখনও খুব বিপজ্জনক। বিশ্বজুড়ে অভিযানমূলক তৎপরতা চালানোর মতো প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও ভিত্তি রয়েছে তাদের।’
এপ্রিলে আইএস-এর আল ফুরকান নেটওয়ার্ক থেকে একটি বিরল ভিডিও প্রচার করা হয়। এতে সংগঠনের শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদিকে অনুসারীদেরকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, বাগদাদি আকস্মিক আক্রমণের মধ্য দিয়ে শত্রুদের দুর্বল করে দেওয়ার ব্যাপারে প্ররোচিত করছে। রয়টার্স বলছে, ২০১৪ সালে মসুলের গ্রান্ড আল নুরি মসজিদে বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওতে বাগদাদিকে যেমন দেখা গিয়েছিল, তার চেয়ে এবারের ভিডিওতে তাকে শান্ত মনে হয়েছে। নতুন ভিডিওতে দেখা গেছে বাগদাদি একটি ম্যাট্রেসে এক পা আরেক পায়ের ওপর ভাঁজ করে রেখে তিন সহযোগীর সঙ্গে কথা বলছে। তার পেছনে একটি কালাশনিকভ রাইফেল তাক করা। আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন ও বাগদাদির পূর্বসূরী আবু মুসাব আল জারকাউয়ির ভিডিওগুলোতে একইরকমের অস্ত্র দেখা যেতো। তারাও গেরিলা যুদ্ধ কৌশল অনুসরণ করতো।
রিটা কাৎজ বলেন, ‘ভিডিওতে তাকে শক্তিশালী কোনও খিলাফতের বিশেষ সম্মানিত নেতার মতো নয়, কোনও জঙ্গি সংগঠনের মুজাহিদীনদের দৃঢ়তাপূর্ণ কমান্ডারের মতোই মনে হয়েছে। তার এ ধরনের উপস্থিতি বিশ্বজুড়ে আইএস সমর্থকদের সামগ্রিক অনুপ্রেরণার উৎস হয়েছে।’
ইসলাম বিষয়ক জর্ডানি বিশেষজ্ঞ হাসান আবু হানিয়েহ মনে করছেন, শুধু মিডিয়া কাভারেজ পেতে সাময়িকভাবে শহর অবরুদ্ধ করা নয়, নতুন যুদ্ধ কৌশলের অংশ হিসেবেও গেরিলা ধারার আক্রমণকে বেছে নিয়েছে আইএস। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের যুদ্ধ সংগঠনটির জন্য কৌশলে পরিণত হয়েছে। আপাতত তারা একে ছোট-ছোট ধারাবাহিক হামলার মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষকে দুর্বল করার যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যেমনটা সর্বশেষ বক্তব্যে বাগদাদি বলেছেন।’
এপ্রিলে আইএস দাবি করেছিল, তারা লিবিয়ার ফুকাহা শহরে হামলা চালিয়ে শহর কাউন্সিলের প্রধানকে হত্যা করার পাশাপাশি মিউনিসিপ্যাল গার্ডের সদর দফতরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা কয়েক ঘণ্টা ধরে শহরটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার পর নিরাপদে তাদের ঘাঁটিতে ফিরে যায়।
সম্প্রতি আইএস-এর কথিত সংবাদপত্র আল নাবাতে ‘টেম্পোরারি ফল অব সিটিজ অ্যাজ অ্যা ওয়ার্কিং মেথড ফর দ্য মুজাহিদীন’ শিরোনামে চার পর্বের ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। নিবন্ধে আইএস তাদের যোদ্ধাদেরকে শত্রুদের সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। অথচ একসময মুখোমুখি যুদ্ধকেই উৎসাহিত করা হতো।
১৮ এপ্রিল ডিআর কঙ্গোর ওপর প্রথমবারের মতো হামলা চালায় আইএস। ‘খেলাফত’ এর ‘মধ্য আফ্রিকা প্রদেশ’ গঠনের ঘোষণা দেয় তারা। তখন থেকে কঙ্গোতে আরও বেশ কযেকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে তারা। ১০ মে আইএস দাবি করেছে, তারা ভারতে একটি শাখা প্রতিষ্ঠা করেছে। একই দিনে নাইজেরিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় একটি শহরে মোটরবাইক নিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও সেনাদের ওপর ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। সেই হামলার পাশাপাশি নাইজেরিয়ায় আরও বেশকিছু হামলার দায় স্বীকার করেছে সংগঠনটি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আফগানিস্তান, নাইজার, সোমালিয়া, মিসর, পাকিস্তান, চেচনিয়া, শ্রীলঙ্কা ও অন্যত্র একই ধরনের বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। কোনও কোনও হামলার পর সংগঠনটি বুলেট, রাইফেল ও অন্য অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করে। এগুলো সেনাসদস্যদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধেও ২ টি হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে আইএস।
২৯ এপ্রিল রাজধানীর মতিঝিল থানাধীন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হাতবোমা দিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে দুই ট্রাফিক পুলিশ ও এক কমিউনিটি পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলার ঘটনায় আইএস-এর দায় স্বীকারের খবর প্রকাশ করে জঙ্গি তৎপরতা বিষয়ক খবরের মুনাফাভিত্তিক মাধ্যম সাইট ইন্টেলিজেন্স। সে সময় মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে সাইট ইন্টেলিজেন্সের বরাত দিয়ে বলা হয়, ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে একদল পুলিশ সদস্যের ওপর বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আইএস জঙ্গিরা।
সবশেষ ২৬ মে রবিবার মালিবাগ মোড়ে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওই গাড়িতে থাকা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার ও রিকশাচালক লাল মিয়াসহ দুই পথচারী আহত হন। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে সাইট ইন্টেলিজেন্স জানায়, আইএস বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ।
অনলাইনে জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফ্ল্যাশপয়েন্ট-এর জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও সহ প্রতিষ্ঠাতা লাইথ আলখুরি মনে করছেন, বিস্তৃত অঞ্চলে হামলা চালিয়ে আইএস প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে পুনরায় সংগঠিত হওয়া আর কৌশলে পরিবর্তন আনার বার্তা সবার সামনে হাজির করতে চাইছে তারা।
No comments