দুই জোটেই শেষ মুহূর্তের দরকষাকষি
চলছে
শেষ মুহূর্তের দরকষাকষি। কোন দল কতোটি আসন পাচ্ছে তার হিসাব কষছে সবাই।
মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসায় সম্ভাব্য প্রার্থীরাও দল ও জোটের
সিদ্ধান্ত জানতে উদগ্রীব। শেষ মুহূর্তের হিসাব মেলাচ্ছে প্রধান দুই
রাজনৈতিক জোট। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন
ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো এখন ব্যস্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে নিজেদের
প্রার্থী দেয়ার চেষ্টায়। আওয়ামী লীগের নেতারা মহাজোটের শরিক দল ও জোটের
সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করছেন আসন বণ্টন নিয়ে। শরিক দলের নেতারা আওয়ামী লীগ
সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে কথা
বলছেন। প্রাথমিকভাবে কিছু আসনে সমঝোতা হলেও শরিক দলগুলোর চূড়ান্ত প্রার্থী
তালিকা হবে আজ-কালের মধ্যে।
ক্ষমতাসীন জোটের হয়ে নির্বাচন করতে চাওয়া জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের দরকষাকষি চললেও গতকাল পর্যন্ত নেতারা কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে পারেন নি।
সূত্র জানিয়েছে, সর্বোচ্চ আসন দাবি করলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে শেষ পর্যন্ত সেটিই মেনে নেবে বর্তমান সংসদে একই সঙ্গে সরকারি ও বিরোধী অবস্থানে জাতীয় পার্টি। এদিকে ১৪ দলের বাইরে যুক্তফ্রন্টের সঙ্গেও আসন নিয়ে আলোচনা করছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল ও ২০ দলীয় জোটের অন্য শরিকদের সঙ্গে আসন নিয়ে আলোচনা করছে বিএনপি। এ পর্যন্ত কিছু কিছু আসনে সমঝোতা হলেও কিছু জটিলতা সামনে রেখে তা সুরাহার চেষ্টা করছেন নেতারা। আজ-কালের মধ্যে এ জোটের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হতে পারে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী দেখে যোগ্য প্রার্থী দেবে বিএনপি জোট: প্রার্থী চূড়ান্তকরণে নানামুখী হিসাবনিকাশ কষছে বিএনপি। প্রতিদ্বন্দ্বী দেখে যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে চায় দলটি। নিজ দলের প্রার্থী মনোনয়নের পাশাপাশি ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রেও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে নানা বিষয়। দলের মনোনয়ন প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষে এখন চলছে প্রার্থী চূড়ান্তকরণের তোড়জোড়। বিশেষ করে ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের কোন কোন আসনে সমর্থন দেয়া হবে সেটা নিয়ে সিরিজ বৈঠক করেছেন দলটির নীতিনির্ধারক ফোরাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেশকিছু আসনে জোট প্রার্থীর কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তৈরি হয়েছে জটিলতা। জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের প্রত্যাশিত আসনগুলো অধিকাংশ বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ায় ও সেখানে দলের যোগ্য প্রার্থী থাকায় দলটি পড়েছে দোটানায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী দেখে শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে চায় বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো তালিকা দিয়েছে সেটা বিশ্লেষণের জন্য ছোট্ট একটি টিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে তারা ৮০টির মতো আসনে শরিকদের দেয়া প্রার্থীর ব্যাপারে বিবেচনার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
এর মধ্যে এমন কিছু আসন রয়েছে যেখানে অত্যন্ত শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে বিএনপির। ফলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সে সংখ্যাটি নেমে এসেছে ৪০-এ। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ সংখ্যাটি কিছুটা বাড়তে পারে। বিএনপি সূত্র জানায়, জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী ৫১টি আসনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি আসনের জন্য তারা দেন-দরবার করছে। তবে বিএনপি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫টি আসন দেয়ার ব্যাপারে রাজি হয়েছে। আসন নিয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় তারা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করছেন। তবে জামায়াতের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে শেষ পর্যন্ত কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে। অন্যদিকে এলডিপির ৩৫ জনের মধ্যে ১২ জন প্রার্থীর পক্ষে দরকষাকষি করছে। তবে সবচেয়ে কম আসন চাওয়া কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, বীরপ্রতীকের আসন নিয়েও রয়েছে জটিলতা।
বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপার শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের রিটা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মণ্ডলকে একটি করে আসন দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার মনোনয়নে। এর মধ্যে ঢাকা-২ ও ৩ আসনেই রয়েছেন দলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমান। ফলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ঢাকা মহানগরের আসন থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। আবার গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও এলডিপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ, বীরবিক্রমের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রামের এই আসনে অলিকে প্রাধান্য দিয়ে সুব্রত চৌধুরীর জন্য বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে। জেএসডি প্রাথমিকভাবে ১৩২ জনের তালিকা তৈরি করলেও ১০-১২টি আসন নিয়ে দরকষাকষি করছেন। নাগরিক ঐক্য ৩৫ জনের মনোনয়নের তালিকা প্রস্তুত করলেও তাদের দেন-দরবার ৭ আসন নিয়ে। তবে দলটিকে ৩টি আসনে সমর্থন দেয়ার সম্ভাবনা জোরালো। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর প্রত্যাশিত আসনগুলো নিয়েও জটিলতা রয়েছে। তবে দুইটি আসনে তার মনোনীত প্রার্থীকে চূড়ান্ত করা হতে পারে। মনোনয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এবার একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হচ্ছে। এখানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে টিকে থাকতে হবে। ভোটের মাঠ ছেড়ে দেয়া যাবে না। তাই যারা নিজ নিজ এলাকায় বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে ভোটের মাঠে থাকতে পারবেন, ভোটারদের সঙ্গে থাকতে পারবেন, তাদেরই মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জোট এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে একটি খসড়া প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছিলেন। সেই তালিকা ধরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের আসন বণ্টনের পাশাপাশি নতুন যোগ্য প্রার্থীদের বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি ও মনোনয়ন বিষয়ে সমন্বয়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আসন বণ্টনের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আসন বণ্টনের দায়িত্ব ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির। মনোনয়নপ্রাপ্তরা নির্বাচনের সময় কারাগারে থাকলে সেখান থেকেই তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে বিকল্প প্রার্থীও হাতে রাখা হচ্ছে।
ঐক্যফ্রন্ট সূত্র জানিয়েছে, আসন নিয়ে আজ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হতে পারে। এ বৈঠকে শরিক দলগুলোর আসনের একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হতে পারে।
১৪ দলীয় জোটের শরিক ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক: আসন বণ্টন নিয়ে গতকাল আওয়ামী লীগ নেতারা ১৪ দলের শরিক ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা মানবজমিনকে জানান, শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করেন। দশম সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টির আসনগুলোসহ এবার ১০টি আসনের জোরালো দাবি ছিল দলটির।
শনিবারের বৈঠকে ৫টি আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া মেহেরপুর-২, নাটোর-১ ও যশোরের একটি আসন নিয়ে দরকষাকষি হচ্ছে। আজ রোববারের মধ্যে এ বিষয়ে সুরাহা হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন ওয়ার্কার্স পার্টির শীর্ষ নেতারা। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এবারের নির্বাচনে ১০টি আসনে প্রার্থিতার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। ৫টি আসনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। তিনি বলেন, নড়াইল-২ আসনে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ হাফিজুর রহমান সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন। কিন্তু এবার এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করতে চান ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা। তাই আগামী নির্বাচনে এই আসনটি আমাদেরকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো তিনটি আসনের বিষয়ে সুরাহার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে আবারো বসবো আমরা।
দশম সংসদে জাতীয় পার্টির (জেপি) দু’জন সদস্য রয়েছেন।
এর মধ্যে পিরোজপুর-২ আসনে দলটির চেয়ারম্যান ও পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং কুড়িগ্রাম-৪ আসনে রুহুল আমিন। জেপির শীর্ষ নেতারা জানান, এবার ওই দুটি আসনে দুজনের প্রার্থীতা বহাল রেখে আরো কিছু আসনে প্রার্থিতার দাবি রয়েছে তাদের। দলটির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ওই দু’জনের পাশাপাশি আরো কয়েকটি আসনে প্রার্থিতার দাবি রয়েছে আমাদের। এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জেতার মতো অন্তত ৩০ জন প্রার্থী আমাদের রয়েছে। তবে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে জোরালো কোনো দাবি নেই। আলোচনার মাধ্যমে আরো কয়েকজনের প্রার্থিতার বিষয়টি সুরাহা হবে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ১৪ দলীয় জোটের সকল প্রার্থীর তালিকা দেখে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও জেতার মতো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আমরা আশা করছি।
মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও এম এ আউয়ালের ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (আইডিএ) এবার দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাচ্ছে বলে জানা গেছে। যদিও তাদের প্রার্থিতার দাবি তিনটি আসনে। জোটের কো-চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র এম এ আউয়াল দশম সংসদে সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এখন এই জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের প্রার্থিতার বিষয়ে তারা চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে। এমএ আউয়াল মানবজমিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের বৈঠকের পর সবকিছু চূড়ান্ত হবে। তিনি বলেন, আমাদের জোটের দুই শীর্ষ নেতার দুটি ও মহাসচিবের প্রার্থিতার বিষয়ে আমাদের দাবি থাকবে। তবে, এ বিষয়ে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) ইচ্ছাই চূড়ান্ত। তিনি যা ভালো মনে করবেন আমরা সেটি মেনে নেব।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটে আব্দুল লতিফ নেজামীর ইসলামী ঐক্যজোটের অন্তর্ভুক্তি বা আসন সমঝোতার বিষয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন শোনা গেলেও গতকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী। একই সঙ্গে মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত না হলেও বেশকিছু আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। আসন সমঝোতা বা বণ্টন নিয়ে তাদের কাছে আমাদের কোনো দাবিও নেই। তবে, আমাদের দলের নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমরা নির্বাচনে যাব। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের ৬০ জন প্রার্থী বাছাই করেছি। এর মধ্যে ২০/২২ জনকে মনোনয়নপত্র দেয়া হয়ে গেছে। বাকিদের মধ্যে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন তাদের সবাইকে আমরা নির্বাচনের সুযোগ দেব। আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, এর আগে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করিনি। এবার যদি নির্বাচনে অংশ না নিই তাহলে আমাদের দলের নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে। তাই আমরা নির্বাচনে যাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
দশম সংসদে জাসদের (ইনু) সদস্য রয়েছেন মোট ৬ জন। এর মধ্যে একজন সংরক্ষিত আসনে। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থিতার সংখ্যা আরো বাড়াতে চেয়েছিলেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এবারো তাদের ওই আসনগুলোর প্রার্থিতা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হতে পারে। যদিও গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে ১৫ জনের একটি প্রার্থী তালিকা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের ১৫ জনের একটি প্রার্থী তালিকা তুলে ধরেছি। এখন কয়টি আসন আমাদের দেয়া হবে, এটি যখন হবে তখন দেখা যাবে।
দশম সংসদে সংরক্ষিত আসনে ১৪ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ/মোজাফফর) আমেনা আহমেদ সংসদ সদস্য রয়েছেন। দলটির নেতারা জানান, সামনের নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা তাদের নেই। যদিও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলটির পক্ষ থেকে কয়েকজন প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন জোটের হয়ে নির্বাচন করতে চাওয়া জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের দরকষাকষি চললেও গতকাল পর্যন্ত নেতারা কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে পারেন নি।
সূত্র জানিয়েছে, সর্বোচ্চ আসন দাবি করলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে শেষ পর্যন্ত সেটিই মেনে নেবে বর্তমান সংসদে একই সঙ্গে সরকারি ও বিরোধী অবস্থানে জাতীয় পার্টি। এদিকে ১৪ দলের বাইরে যুক্তফ্রন্টের সঙ্গেও আসন নিয়ে আলোচনা করছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল ও ২০ দলীয় জোটের অন্য শরিকদের সঙ্গে আসন নিয়ে আলোচনা করছে বিএনপি। এ পর্যন্ত কিছু কিছু আসনে সমঝোতা হলেও কিছু জটিলতা সামনে রেখে তা সুরাহার চেষ্টা করছেন নেতারা। আজ-কালের মধ্যে এ জোটের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হতে পারে বলে নেতারা জানিয়েছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী দেখে যোগ্য প্রার্থী দেবে বিএনপি জোট: প্রার্থী চূড়ান্তকরণে নানামুখী হিসাবনিকাশ কষছে বিএনপি। প্রতিদ্বন্দ্বী দেখে যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে চায় দলটি। নিজ দলের প্রার্থী মনোনয়নের পাশাপাশি ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রেও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে নানা বিষয়। দলের মনোনয়ন প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষে এখন চলছে প্রার্থী চূড়ান্তকরণের তোড়জোড়। বিশেষ করে ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের কোন কোন আসনে সমর্থন দেয়া হবে সেটা নিয়ে সিরিজ বৈঠক করেছেন দলটির নীতিনির্ধারক ফোরাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেশকিছু আসনে জোট প্রার্থীর কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তৈরি হয়েছে জটিলতা। জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের প্রত্যাশিত আসনগুলো অধিকাংশ বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ায় ও সেখানে দলের যোগ্য প্রার্থী থাকায় দলটি পড়েছে দোটানায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী দেখে শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে চায় বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো তালিকা দিয়েছে সেটা বিশ্লেষণের জন্য ছোট্ট একটি টিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে তারা ৮০টির মতো আসনে শরিকদের দেয়া প্রার্থীর ব্যাপারে বিবেচনার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
এর মধ্যে এমন কিছু আসন রয়েছে যেখানে অত্যন্ত শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে বিএনপির। ফলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সে সংখ্যাটি নেমে এসেছে ৪০-এ। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ সংখ্যাটি কিছুটা বাড়তে পারে। বিএনপি সূত্র জানায়, জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী ৫১টি আসনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি আসনের জন্য তারা দেন-দরবার করছে। তবে বিএনপি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫টি আসন দেয়ার ব্যাপারে রাজি হয়েছে। আসন নিয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় তারা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করছেন। তবে জামায়াতের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে শেষ পর্যন্ত কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে। অন্যদিকে এলডিপির ৩৫ জনের মধ্যে ১২ জন প্রার্থীর পক্ষে দরকষাকষি করছে। তবে সবচেয়ে কম আসন চাওয়া কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, বীরপ্রতীকের আসন নিয়েও রয়েছে জটিলতা।
বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপার শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের রিটা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মণ্ডলকে একটি করে আসন দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার মনোনয়নে। এর মধ্যে ঢাকা-২ ও ৩ আসনেই রয়েছেন দলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমান। ফলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ঢাকা মহানগরের আসন থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। আবার গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও এলডিপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ, বীরবিক্রমের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রামের এই আসনে অলিকে প্রাধান্য দিয়ে সুব্রত চৌধুরীর জন্য বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে। জেএসডি প্রাথমিকভাবে ১৩২ জনের তালিকা তৈরি করলেও ১০-১২টি আসন নিয়ে দরকষাকষি করছেন। নাগরিক ঐক্য ৩৫ জনের মনোনয়নের তালিকা প্রস্তুত করলেও তাদের দেন-দরবার ৭ আসন নিয়ে। তবে দলটিকে ৩টি আসনে সমর্থন দেয়ার সম্ভাবনা জোরালো। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর প্রত্যাশিত আসনগুলো নিয়েও জটিলতা রয়েছে। তবে দুইটি আসনে তার মনোনীত প্রার্থীকে চূড়ান্ত করা হতে পারে। মনোনয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এবার একটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হচ্ছে। এখানে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে টিকে থাকতে হবে। ভোটের মাঠ ছেড়ে দেয়া যাবে না। তাই যারা নিজ নিজ এলাকায় বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে ভোটের মাঠে থাকতে পারবেন, ভোটারদের সঙ্গে থাকতে পারবেন, তাদেরই মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জোট এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। তিনি জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে একটি খসড়া প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছিলেন। সেই তালিকা ধরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের আসন বণ্টনের পাশাপাশি নতুন যোগ্য প্রার্থীদের বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি ও মনোনয়ন বিষয়ে সমন্বয়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আসন বণ্টনের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আসন বণ্টনের দায়িত্ব ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির। মনোনয়নপ্রাপ্তরা নির্বাচনের সময় কারাগারে থাকলে সেখান থেকেই তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে বিকল্প প্রার্থীও হাতে রাখা হচ্ছে।
ঐক্যফ্রন্ট সূত্র জানিয়েছে, আসন নিয়ে আজ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হতে পারে। এ বৈঠকে শরিক দলগুলোর আসনের একটা খসড়া তালিকা তৈরি করা হতে পারে।
১৪ দলীয় জোটের শরিক ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক: আসন বণ্টন নিয়ে গতকাল আওয়ামী লীগ নেতারা ১৪ দলের শরিক ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা মানবজমিনকে জানান, শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করেন। দশম সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টির আসনগুলোসহ এবার ১০টি আসনের জোরালো দাবি ছিল দলটির।
শনিবারের বৈঠকে ৫টি আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীদের নির্বাচনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া মেহেরপুর-২, নাটোর-১ ও যশোরের একটি আসন নিয়ে দরকষাকষি হচ্ছে। আজ রোববারের মধ্যে এ বিষয়ে সুরাহা হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন ওয়ার্কার্স পার্টির শীর্ষ নেতারা। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এবারের নির্বাচনে ১০টি আসনে প্রার্থিতার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। ৫টি আসনের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। তিনি বলেন, নড়াইল-২ আসনে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতা শেখ হাফিজুর রহমান সংসদ সদস্য হিসেবে রয়েছেন। কিন্তু এবার এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করতে চান ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা। তাই আগামী নির্বাচনে এই আসনটি আমাদেরকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো তিনটি আসনের বিষয়ে সুরাহার জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে আবারো বসবো আমরা।
দশম সংসদে জাতীয় পার্টির (জেপি) দু’জন সদস্য রয়েছেন।
এর মধ্যে পিরোজপুর-২ আসনে দলটির চেয়ারম্যান ও পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং কুড়িগ্রাম-৪ আসনে রুহুল আমিন। জেপির শীর্ষ নেতারা জানান, এবার ওই দুটি আসনে দুজনের প্রার্থীতা বহাল রেখে আরো কিছু আসনে প্রার্থিতার দাবি রয়েছে তাদের। দলটির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ওই দু’জনের পাশাপাশি আরো কয়েকটি আসনে প্রার্থিতার দাবি রয়েছে আমাদের। এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জেতার মতো অন্তত ৩০ জন প্রার্থী আমাদের রয়েছে। তবে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে জোরালো কোনো দাবি নেই। আলোচনার মাধ্যমে আরো কয়েকজনের প্রার্থিতার বিষয়টি সুরাহা হবে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ১৪ দলীয় জোটের সকল প্রার্থীর তালিকা দেখে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও জেতার মতো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আমরা আশা করছি।
মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও এম এ আউয়ালের ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (আইডিএ) এবার দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাচ্ছে বলে জানা গেছে। যদিও তাদের প্রার্থিতার দাবি তিনটি আসনে। জোটের কো-চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র এম এ আউয়াল দশম সংসদে সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এখন এই জোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের প্রার্থিতার বিষয়ে তারা চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে। এমএ আউয়াল মানবজমিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের বৈঠকের পর সবকিছু চূড়ান্ত হবে। তিনি বলেন, আমাদের জোটের দুই শীর্ষ নেতার দুটি ও মহাসচিবের প্রার্থিতার বিষয়ে আমাদের দাবি থাকবে। তবে, এ বিষয়ে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) ইচ্ছাই চূড়ান্ত। তিনি যা ভালো মনে করবেন আমরা সেটি মেনে নেব।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটে আব্দুল লতিফ নেজামীর ইসলামী ঐক্যজোটের অন্তর্ভুক্তি বা আসন সমঝোতার বিষয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন শোনা গেলেও গতকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী। একই সঙ্গে মহাজোটে অন্তর্ভুক্ত না হলেও বেশকিছু আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। আসন সমঝোতা বা বণ্টন নিয়ে তাদের কাছে আমাদের কোনো দাবিও নেই। তবে, আমাদের দলের নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমরা নির্বাচনে যাব। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের ৬০ জন প্রার্থী বাছাই করেছি। এর মধ্যে ২০/২২ জনকে মনোনয়নপত্র দেয়া হয়ে গেছে। বাকিদের মধ্যে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন তাদের সবাইকে আমরা নির্বাচনের সুযোগ দেব। আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, এর আগে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করিনি। এবার যদি নির্বাচনে অংশ না নিই তাহলে আমাদের দলের নিবন্ধন ঝুঁকিতে পড়বে। তাই আমরা নির্বাচনে যাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
দশম সংসদে জাসদের (ইনু) সদস্য রয়েছেন মোট ৬ জন। এর মধ্যে একজন সংরক্ষিত আসনে। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থিতার সংখ্যা আরো বাড়াতে চেয়েছিলেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এবারো তাদের ওই আসনগুলোর প্রার্থিতা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হতে পারে। যদিও গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে ১৫ জনের একটি প্রার্থী তালিকা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের ১৫ জনের একটি প্রার্থী তালিকা তুলে ধরেছি। এখন কয়টি আসন আমাদের দেয়া হবে, এটি যখন হবে তখন দেখা যাবে।
দশম সংসদে সংরক্ষিত আসনে ১৪ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ/মোজাফফর) আমেনা আহমেদ সংসদ সদস্য রয়েছেন। দলটির নেতারা জানান, সামনের নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে খুব বেশি প্রত্যাশা তাদের নেই। যদিও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলটির পক্ষ থেকে কয়েকজন প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
No comments