নির্বাচন ব্যর্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ হলে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে যায় -এম সাখাওয়াত হোসেন
আধুনিক
যুগে জনগণের প্রতিনিধি নির্ধারণের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি হচ্ছে নির্বাচন।
দেশের সাধারণ মানুষের শক্তি হচ্ছে গণতন্ত্র। জনগণের এ অধিকার সুরক্ষিত
রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্র ও নির্বাচন কমিশনের। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ
নিশ্চিতই নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য। বাংলাদেশের একাদশতম জাতীয় নির্বাচন
ঘনিয়ে আসছে। কিন্তু দেশের জনগণ ও ভোটারদের মধ্যে এ নির্বাচন নিয়ে নানা
প্রশ্ন জড়ো হচ্ছে। এর মধ্যে সব থেকে বড় প্রশ্নটি হচ্ছে এ নির্বাচন কি
বিশ্বাসযোগ্য হবে? নাকি কিছু সুপরিচিত বোদ্ধার মতে ২০১৪ সালের মতো ‘ব্যর্থ’
নির্বাচন হতে চলেছে? এছাড়াও আরো কিছু প্রশ্ন আসছে সাধারণ মানুষের মনে। এ
নির্বাচন কি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে? নির্বাচনে কি ভোটারদের ইচ্ছার
প্রতিফলন ঘটবে? ভোটাররা কি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন?
‘ইলেকটোরাল পলিটিক্স অ্যান্ড পিপলস রাইস টু ভোট’ শীর্ষক এক নিবন্ধে এসব কথা
লিখেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এম সাখাওয়াত
হোসেন পিএইচডি।
বর্তমানে তিনি সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স অব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সম্মানিত ফেলো।
এম সাখাওয়াত হোসেন ওই নিবন্ধে আরো লিখেছেন, যদি কোনো দেশের নির্বাচন ব্যর্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে সেদেশে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে যায়। যেসব দেশে গণতন্ত্র এখনো শিকড় গাড়েনি সেসব দেশে কোনো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে কিনা বুঝতে কিছু ত্রুটি পর্যবেক্ষণ করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ১. ভোটারদের হুমকি প্রদান। ২. ব্যালট বাক্স ছিনতাই। ৩. নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিজ ক্ষমতা ব্যবহার। ৪. ভোট ক্রয়। ৫. জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল। ৬. একাধিক ভোট প্রদান। ৭. আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর পক্ষপাতমূলক ব্যবহার। ৮. সংখ্যালঘু নির্যাতন। ৯. ব্যালট পেপার ফুরিয়ে যাওয়া। ১০. নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভুল গণনা ও ১২. নির্বাচনী আইন প্রয়োগে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা।
বাংলাদেশের জন্য আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর সঙ্গে গণতন্ত্র ও ইতিবাচক নির্বাচনী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী সময় ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে বলে মনে হচ্ছে। এতে নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ বাড়বে। নির্বাচন কমিশনকে একাই ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে হবে। আগামী নির্বাচনে বিরোধী দল অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। কিছু দল নিজ আদর্শ বিসর্জন দিয়ে জোট গঠন করায় নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি নতুন ও অ¯পষ্ট অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উইন্সটন চার্চিল বলেছেন, কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য অবশ্যই ভোটারদের স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকালীন একজন ভোটার যাতে তার প্রতিনিধি নির্বাচনে মুক্তভাবে ভোট দিতে পারেন সেরকম পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংজ্ঞা একেক রকম হতে পারে। নির্বাচন অবাধ হতে পারে কিন্তু তারপরেও সেখানে কারচুপির মাধ্যমে প্রভাবিত করার সুযোগ থাকে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে নির্বাচনের ফলে ভোটারদের ইচ্ছা সত্যিকার অর্থে প্রতিফলিত হবে। ভোটার, সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনটিকে কিভাবে দেখছে তার উপরে একটি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে। যদিও বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা ফলাফল মেনে নিলেও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
এম সাখাওয়াত হোসেন আরো লিখেছেন, আমরা জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ একটি সদস্য দেশ। আমরা জাতিসংঘ ও অন্যান্য কনভেনশনেরও একটি অংশ। আমাদের অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রকৃত বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে। এমন নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সরকারের দায়বদ্ধতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটারদের স্বাধীনতা একটি বড় বিষয়। ভোট দেয়ার অধিকারকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে এবং ভোটারদের পছন্দকে সত্যিকার অর্থে প্রয়োগ করতে দিতে হবে। এটা হলো সরকার ও নির্বাচনকালী প্রশাসন উভয়ের পবিত্র দায়িত্ব। ১১তম জাতীয় সংসদ সির্বাচন হতে যাচ্ছে অপ্রত্যাশিত অনেকগুলো কারণে এক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে। কারণ, সংবিধানের ১২৩ ধারা সংশোধন করা হয়েছে। তাই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে পরিপক্ব আচরণ দেখাতে হবে। জাতি একটি সুন্দর নির্বাচন চায় এবং ভোটারদের ইচ্ছার প্রকৃত প্রতিফলন দেখতে চায়। সাধারণ মানুষ আশা করে, আগামী নির্বাচন হবে বিশ্বাসযোগ্য, সবার অংশগ্রহণমুলক এবং ভোটাররা ভীতিহীন পরিবেশে তাদের নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নিতে অবাধে ভোট দিতে পারবেন। পবিত্র দায়িত্ব পালনে নির্বাচনী প্রশাসনকে হতে হবে মুক্ত। আমরা আশা করি, রাজনীতির মাঠে থাকা সব রাজনৈতিক দল অনুধাবন করবে যে, বাংলাদেশের অন্যান্য খাতের সব ইতিবাচক সূকচকের সঙ্গে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে, যদি যদি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা যায়। সর্বোপরি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন, যে কোনো দেশের টেকসই অগ্রগতির মাধ্যম হলো গণতন্ত্র। হতে পারে সে দেশটি উন্নয়নশীল বা উন্নত দেশ।
বর্তমানে তিনি সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স অব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সম্মানিত ফেলো।
এম সাখাওয়াত হোসেন ওই নিবন্ধে আরো লিখেছেন, যদি কোনো দেশের নির্বাচন ব্যর্থ ও প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে সেদেশে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে যায়। যেসব দেশে গণতন্ত্র এখনো শিকড় গাড়েনি সেসব দেশে কোনো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে কিনা বুঝতে কিছু ত্রুটি পর্যবেক্ষণ করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে, ১. ভোটারদের হুমকি প্রদান। ২. ব্যালট বাক্স ছিনতাই। ৩. নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিজ ক্ষমতা ব্যবহার। ৪. ভোট ক্রয়। ৫. জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল। ৬. একাধিক ভোট প্রদান। ৭. আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর পক্ষপাতমূলক ব্যবহার। ৮. সংখ্যালঘু নির্যাতন। ৯. ব্যালট পেপার ফুরিয়ে যাওয়া। ১০. নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভুল গণনা ও ১২. নির্বাচনী আইন প্রয়োগে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা।
বাংলাদেশের জন্য আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর সঙ্গে গণতন্ত্র ও ইতিবাচক নির্বাচনী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। নির্বাচন পূর্ববর্তী সময় ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে বলে মনে হচ্ছে। এতে নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ বাড়বে। নির্বাচন কমিশনকে একাই ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে হবে। আগামী নির্বাচনে বিরোধী দল অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। কিছু দল নিজ আদর্শ বিসর্জন দিয়ে জোট গঠন করায় নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি নতুন ও অ¯পষ্ট অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উইন্সটন চার্চিল বলেছেন, কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য অবশ্যই ভোটারদের স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকালীন একজন ভোটার যাতে তার প্রতিনিধি নির্বাচনে মুক্তভাবে ভোট দিতে পারেন সেরকম পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংজ্ঞা একেক রকম হতে পারে। নির্বাচন অবাধ হতে পারে কিন্তু তারপরেও সেখানে কারচুপির মাধ্যমে প্রভাবিত করার সুযোগ থাকে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের অর্থ হচ্ছে নির্বাচনের ফলে ভোটারদের ইচ্ছা সত্যিকার অর্থে প্রতিফলিত হবে। ভোটার, সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনটিকে কিভাবে দেখছে তার উপরে একটি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ভর করে। যদিও বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা ফলাফল মেনে নিলেও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
এম সাখাওয়াত হোসেন আরো লিখেছেন, আমরা জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ একটি সদস্য দেশ। আমরা জাতিসংঘ ও অন্যান্য কনভেনশনেরও একটি অংশ। আমাদের অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রকৃত বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে। এমন নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সরকারের দায়বদ্ধতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটারদের স্বাধীনতা একটি বড় বিষয়। ভোট দেয়ার অধিকারকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে এবং ভোটারদের পছন্দকে সত্যিকার অর্থে প্রয়োগ করতে দিতে হবে। এটা হলো সরকার ও নির্বাচনকালী প্রশাসন উভয়ের পবিত্র দায়িত্ব। ১১তম জাতীয় সংসদ সির্বাচন হতে যাচ্ছে অপ্রত্যাশিত অনেকগুলো কারণে এক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে। কারণ, সংবিধানের ১২৩ ধারা সংশোধন করা হয়েছে। তাই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে পরিপক্ব আচরণ দেখাতে হবে। জাতি একটি সুন্দর নির্বাচন চায় এবং ভোটারদের ইচ্ছার প্রকৃত প্রতিফলন দেখতে চায়। সাধারণ মানুষ আশা করে, আগামী নির্বাচন হবে বিশ্বাসযোগ্য, সবার অংশগ্রহণমুলক এবং ভোটাররা ভীতিহীন পরিবেশে তাদের নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নিতে অবাধে ভোট দিতে পারবেন। পবিত্র দায়িত্ব পালনে নির্বাচনী প্রশাসনকে হতে হবে মুক্ত। আমরা আশা করি, রাজনীতির মাঠে থাকা সব রাজনৈতিক দল অনুধাবন করবে যে, বাংলাদেশের অন্যান্য খাতের সব ইতিবাচক সূকচকের সঙ্গে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে, যদি যদি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা যায়। সর্বোপরি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন, যে কোনো দেশের টেকসই অগ্রগতির মাধ্যম হলো গণতন্ত্র। হতে পারে সে দেশটি উন্নয়নশীল বা উন্নত দেশ।
No comments