বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে ভয়াবহ বিপদজনক চুক্তি -সৌদি গেজেটের সম্পাদকীয়
বাংলাদেশ
ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি আদৌও কোনো
চুক্তি নয়। এটি একটি চরম মাত্রার সন্দেহজনক চুক্তি। এই চুক্তি বাতিল করতে
অবশ্যই চাপ দেয়া উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। নভেম্বরে ঢাকার সরকার ও
মিয়ানমারে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত অং সান সুচির সরকারের মধ্যে
প্রাথমিক আলোচনার সূত্র ধরে এই চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি একটি বিপদজনক
চুক্তি। বুধবার সৌদি আরবের সরকারি পত্রিকা সৌদি গেজেটের এক সম্পাদকীয়তে এ
কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, এই চুক্তি অনুযায়ী সপ্তাহে ১৫০০
রোহিঙ্গা ফিরে যাওয়ার কথা, যাতে জাতি নিধনের শিকার সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গাকে
মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে দু’বছরের মধ্যে।
কিন্তু এ চুক্তিতে বিরাট ও চরম বিপদজনক ফাঁক (হোল) রয়ে গেছে। তাই কার্যত এই চুক্তির ফলে শরণার্থীরা কোনোই সুবিধা পাবেন না। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো চুক্তির কোথাও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয় নি। উপরন্ত তাদেরকে ‘রেসিডেন্টস’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাদেরকে মিয়ানমারের ‘সিটিজেনস’ বা নাগরিক বলা হয় নি। অথচ তারা মিয়ানমারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছেন।
উপরন্তু, ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদেরকে অন্তর্বর্তী আশ্রয়শিবিরে রাখার পরিকল্পনা করেছে অং সান সুচির সরকার। সম্ভবত প্রায় ১৮ মাস আগে তাদেরকে যেমন খামারে আটকে রাখার মতো রাখা হয়েছিল এবারও তেমনটিই যেন একটি জেলখানার মতো স্থানে রাখা হবে। এটা করা হবে তাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় বৌদ্ধরা তাদের যেসব সহায় সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে তা পুনর্নির্মাণের কোনো বিধান রাখা হয় নি চুক্তিতে। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো অং সান সুচি ও তার লোকজন দাবি করেন যে, রোহিঙ্গারা নিজেরাই তাদের নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। এমন কি এডলফ হিটলারও কিন্তু এমন দাবি করেন নি যে, নিজেদের উপাসনালয়ে জার্মান ইহুদিরা নিজেরাই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, জানালা ভাঙচুর করেছে এবং তাদের নিজেদের দোকানপাট নিজেরাই লুট করেছে।
খুবই বিস্ময়কর বিষয় হলো, বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হতাশাজনক। তারা গাদাগাদি করে আশ্রয়শিবিরগুলোতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বসবাস করতে চান। কারণ, এখানে ন্যূনতম নিরাপত্তা আছে এবং তারা এখানে মুক্ত। এখন আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে। অনাহারে থাকা ও ভীতসন্ত্রন্ত এসব শরণার্থীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য বড় প্রচেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ ও বিদেশী আত্মপ্রণোদিত মেডিকেল টিমগুলো বর্তমানে সেখানে ডিপথেরিয়া ছড়িয়ে পড়া মোকাবিলা করছে।
একবার দেশে ফিরে গেলে এসব সেবা রোহিঙ্গারা আর পাবেন না। বর্তমান অবস্থার অধীনে তারা যদি ফিরে যেতে রাজি হন তাহলেও হয়তো তারা এ সুবিধা পাবেন না। তাই তারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের ওপর আরো নির্যাতন হতে পারে।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে অত্যন্ত জটিল এক পরিস্থিতিতে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ সরকার। তারা চায়, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে রাখাইন রাজ্যে ফিরে যান। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে অং সান সুচি। এই চুক্তির শর্তগুলো সমস্যার মূল ইস্যুগুলোকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে কিছুই করে নি। এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বের বিষয়। অবাধে প্রার্থনা করার অধিকার সহ শান্তিতে বসবাসের অধিকার। পূর্ণাঙ্গ অধিকার। এসব বিষয় চুক্তিতে না থাকায় বর্তমান আশ্রয়শিবিরে তারা যে নিরাপত্তায় আছে তা ঠাসাঠাসি হলেও এই শিবির ছেড়ে যেতে গণহারে প্রত্যাখ্যান করবেন বলেই বেশি মনে হয়।
সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, যদি এমনটা হয় তাহলে এ পরিস্থিতিতে অং সান সুচি ও তার সহযোগীরা এটা বলার সক্ষমতা অর্জন করবেন যে, রোহিঙ্গাদের ওই দেশেই (বাংলাদেশে) থাকা উচিত। কারণ, তার সরকার মিথ্যা দাবি করে যে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী। তাই এভাবেই নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে হেরে যাবে বাংলাদেশ সরকার। অন্য দিকে অং সান সুচি ও বৌদ্ধরা লজ্জাজনকভাবে জাতি নিধন চর্চার ফল ভোগ করবে। তাই এই ভয়াবহ চুক্তি বাতিল করতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মহলকে চাপ দিতেই হবে।
কিন্তু এ চুক্তিতে বিরাট ও চরম বিপদজনক ফাঁক (হোল) রয়ে গেছে। তাই কার্যত এই চুক্তির ফলে শরণার্থীরা কোনোই সুবিধা পাবেন না। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো চুক্তির কোথাও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয় নি। উপরন্ত তাদেরকে ‘রেসিডেন্টস’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাদেরকে মিয়ানমারের ‘সিটিজেনস’ বা নাগরিক বলা হয় নি। অথচ তারা মিয়ানমারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছেন।
উপরন্তু, ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদেরকে অন্তর্বর্তী আশ্রয়শিবিরে রাখার পরিকল্পনা করেছে অং সান সুচির সরকার। সম্ভবত প্রায় ১৮ মাস আগে তাদেরকে যেমন খামারে আটকে রাখার মতো রাখা হয়েছিল এবারও তেমনটিই যেন একটি জেলখানার মতো স্থানে রাখা হবে। এটা করা হবে তাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় বৌদ্ধরা তাদের যেসব সহায় সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে তা পুনর্নির্মাণের কোনো বিধান রাখা হয় নি চুক্তিতে। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো অং সান সুচি ও তার লোকজন দাবি করেন যে, রোহিঙ্গারা নিজেরাই তাদের নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। এমন কি এডলফ হিটলারও কিন্তু এমন দাবি করেন নি যে, নিজেদের উপাসনালয়ে জার্মান ইহুদিরা নিজেরাই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, জানালা ভাঙচুর করেছে এবং তাদের নিজেদের দোকানপাট নিজেরাই লুট করেছে।
খুবই বিস্ময়কর বিষয় হলো, বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের মধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হতাশাজনক। তারা গাদাগাদি করে আশ্রয়শিবিরগুলোতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বসবাস করতে চান। কারণ, এখানে ন্যূনতম নিরাপত্তা আছে এবং তারা এখানে মুক্ত। এখন আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে। অনাহারে থাকা ও ভীতসন্ত্রন্ত এসব শরণার্থীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য বড় প্রচেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ ও বিদেশী আত্মপ্রণোদিত মেডিকেল টিমগুলো বর্তমানে সেখানে ডিপথেরিয়া ছড়িয়ে পড়া মোকাবিলা করছে।
একবার দেশে ফিরে গেলে এসব সেবা রোহিঙ্গারা আর পাবেন না। বর্তমান অবস্থার অধীনে তারা যদি ফিরে যেতে রাজি হন তাহলেও হয়তো তারা এ সুবিধা পাবেন না। তাই তারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের ওপর আরো নির্যাতন হতে পারে।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে অত্যন্ত জটিল এক পরিস্থিতিতে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ সরকার। তারা চায়, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে রাখাইন রাজ্যে ফিরে যান। এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে অং সান সুচি। এই চুক্তির শর্তগুলো সমস্যার মূল ইস্যুগুলোকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে কিছুই করে নি। এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বের বিষয়। অবাধে প্রার্থনা করার অধিকার সহ শান্তিতে বসবাসের অধিকার। পূর্ণাঙ্গ অধিকার। এসব বিষয় চুক্তিতে না থাকায় বর্তমান আশ্রয়শিবিরে তারা যে নিরাপত্তায় আছে তা ঠাসাঠাসি হলেও এই শিবির ছেড়ে যেতে গণহারে প্রত্যাখ্যান করবেন বলেই বেশি মনে হয়।
সম্পাদকীয়তে আরো বলা হয়, যদি এমনটা হয় তাহলে এ পরিস্থিতিতে অং সান সুচি ও তার সহযোগীরা এটা বলার সক্ষমতা অর্জন করবেন যে, রোহিঙ্গাদের ওই দেশেই (বাংলাদেশে) থাকা উচিত। কারণ, তার সরকার মিথ্যা দাবি করে যে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী। তাই এভাবেই নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে হেরে যাবে বাংলাদেশ সরকার। অন্য দিকে অং সান সুচি ও বৌদ্ধরা লজ্জাজনকভাবে জাতি নিধন চর্চার ফল ভোগ করবে। তাই এই ভয়াবহ চুক্তি বাতিল করতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মহলকে চাপ দিতেই হবে।
No comments