দুদক টিমের ওপর হামলায় আহত ৪
ঘুষের টাকাসহ সরকারি কর্মচারীকে আটক করার সময় সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তুলকালাম ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার হয়েছে দুদকের অভিযান পরিচালনাকারী টিম। হামলায় টিমের কনস্টেবল মিসবাহ উদ্দিন আহমদসহ চারজন জখম হয়েছেন। মিসবাহর অবস্থা গুরুতর। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যরা হলেন : দুদক সিলেট অফিসের ডিএডি রঞ্জিত কুমার কর্মকার, ওয়াহিদ মুরাদ সোহাগ ও গাড়িচালক বিপ্লব। বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয় দুদকের পরিচালক শিরীন পারভিনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনাকারী টিমকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন জেলা প্রশাসক অফিসের কর্মচারীরা। পরে রাত সোয়া ৭টায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রুকন উদ্দিন এবং কোতোয়ালি থানার ওসি সুহেল আহমদ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। জানা যায়, নগরীর বাগবাড়ির বাসিন্দা অকিল চন্দ্র সূত্রধর পায়েল এন্টারপ্রাইজ পেট্রুল পাম্প স্থানান্তরের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য শাখায় আবেদন করেন। অনুমতির জন্য তিনি ধরনা দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে অফিসের কর্মচারী আজিজুল ইসলামের সঙ্গে তার ২০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। ফাইল ছাড়িয়ে নিতে বৃহস্পতিবার বিকালে টাকা লেনদেনের সময় ডিসির কার্যালয়ে দুদক অভিযান চালিয়ে আজিজুলকে গ্রেফতার করে হাতকড়া পরিয়ে নিচে নেমে আসে। ফের সাক্ষ্য-প্রমাণের জন্য আটক কর্মচারীকে নিয়ে ওপরে গেলে ডিসির কার্যালয়ের কর্মচারীরা নিচের গেট তালাবদ্ধ করে দেন। এরপর দুদকের টিমের ওপর হামলা চলে। কর্মচারীরা লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে মিজবাহর মাথা ফাটিয়ে দেন। দুদক পরিচালক শিরীন পারভিন অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘুষের ১০ হাজার টাকা ও জব্দকৃত কাগজ ন্যক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়ে আজিজের সহযোগীরা নিয়ে গেছে। আত্মরক্ষার্থে আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আশ্রয় নেই। হাতেনাতে অপরাধী ধরার পরও প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ রকম হামলার ঘটনা নজিরবিহীন।’ অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রুকন উদ্দিন আহমদ জানান, একটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে এভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি। ঘটনার পর জেলা প্রশাসন দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা বাহিনীর স্থানীয় প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠক চলাকালে আজিজুল ইসলাম থরথর করে কাঁপতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে ঢলে পড়ে যান। এ সময় জেলা প্রশাসক দুদক পরিচালক শিরীন পারভিনের অনুমতি নিয়ে আজিজুল ইসলামকে দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে পাঠান। রাত পৌনে ৮টায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। তিনি হৃদরোগের রোগী বলে জানা গেছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন জানান, গত ৪ জানুয়ারি আবেদনটি সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট জনৈক আবেদনকারীকে ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি নিয়ে আবেদন করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
No comments