শীর্ষ ঋণখেলাপিরা অসহযোগিতা করলে ব্যাংক দেউলিয়া হবে
বিআইবিএম সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী -যুগান্তর |
যাচাই-বাছাই না করে ঋণ বিতরণ করলে সে ঋণ খেলাপি হবে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, ব্যাংকগুলোর শীর্ষ ১০ ঋণগ্রহীতা যদি কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে তবে বেশিরভাগ ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। সে কারণে খেলাপি ঋণের ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তারা। মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের ঋণ ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি, চাহিদা, সরবরাহ ও নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান’ শীর্ষক একটি জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি, এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শামীম আহমেদ চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ কামাল খান চৌধুরী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান। এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শামীম আহমেদ চৌধুরী বলেন, গ্রাহকের কাছ থেকে পাওয়া ঋণের চাহিদাপত্র যথাযথ মূল্যায়ন না করে ব্যাংক যদি নিজেই এগিয়ে গিয়ে ঋণ প্রদান করে তাহলে সে ঋণ অবশ্যই খেলাপি হবে। খেলাপি হওয়া ঋণ উদ্ধারের প্রক্রিয়াটি অনেক দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল। অনেক সময়ই প্রাথমিক পর্যায়ে আদালত কোনো আদেশ দিলে উচ্চ আদালত তার ওপর স্টে অর্ডার দেন। সে অর্ডারের সুযোগ নিয়ে বছরের পর বছর ঋণখেলাপিরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
ব্যাংকারদের মনে রাখা দরকার, সঞ্চয়কারীদের আমানত দিয়ে আপনি ঋণ দিচ্ছেন। সে ঋণ লাভসহ ব্যাংকে অবশ্যই ফিরে আসার সম্ভাব্যতা যাচাই করে ঋণ দিতে হবে। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সোনালী ব্যাংকের কেলেংকারির জন্য আমাদের প্রত্যেকটি ব্যাংকের মাথা নতজানু হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের দৈন্যতা আছে। সবাই সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। অবলোপন করা ঋণসহ খেলাপির পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি। বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে গিয়ে অনেক ব্যাংকই হিমশিম খাচ্ছে। ব্যাংকগুলোর শীর্ষ ১০ ঋণগ্রহীতার সম্পদ একত্র করলে ঋণের সমপরিমাণ হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের সম্পদ অনুসন্ধান করে প্রকৃত মূল্য বের করার জন্য তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহবান জানান।
No comments