জঙ্গি দমনে সামর্থ্য বৃদ্ধি
জঙ্গি দমনে সক্ষমতা বাড়ানোর যুক্তি দেখিয়ে দেশে আরও একটি বিশেষ বাহিনী গঠনের আগে মুক্ত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সাতপাঁচ ভেবে নেওয়াই উত্তম। প্রস্তাবিত ‘কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম’ গঠনের আগেই তার আইনি কাঠামো ও জবাবদিহির ব্যবস্থা কী থাকবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে সেসব বিষয় স্পষ্ট করা। এ রকম একটি সংস্থার যদি এতই দরকার থাকবে, তাহলে প্রায় ছয় বছর আগেকার প্রস্তাবিত পুলিশ ব্যুরো অব কাউন্টার টেররিজম (পিবিসিটি) ঝুলিয়ে রাখা সমীচীন হয়নি। এটা যুক্তির কথা যে যাঁরা জঙ্গি দমনের কাজে নিয়োজিত, তাঁদের পুলিশের সাধারণ সার্ভিস থেকে আলাদা করা দরকার। বিদেশ থেকে জঙ্গি দমনের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে আসার পরে যেনতেন পদে বদলি কাঙ্ক্ষিত নয়। এটাও সত্য যে সাধারণ অপরাধ দমনে যে ধরনের লোকবল, প্রস্তুতি ও সরঞ্জাম দরকার, তার থেকে জঙ্গি দমন বা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় নিজেদের সামর্থ্য বাড়ানোর প্রকৃতি ও ধরন ভিন্ন। প্রধানত এ রকম যুক্তির জাল বিস্তার করেই এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব গঠন করা হয়েছিল,
এবং জঙ্গি গ্রেপ্তারে অতীতে তারা উল্লেখযোগ্য সাফল্যও অর্জন করেছে। আবার সাম্প্রতিক কালে জঙ্গিবাদ যে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল, তা প্রমাণ করল যে বিশেষায়িত বাহিনী গঠন করাই শেষ কথা নয়। কেউ যুক্তি দিতে পারেন যে পুলিশ ও ডিবিতে যাঁরা বিশেষজ্ঞ জ্ঞান অর্জন করেছেন বা করবেন, তাঁদের র্যাবে একীভূত করে নিলে যত্রতত্র বদলির সম্ভাবনা থাকে না। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পুলিশের এমন সংস্থা আছে বলে আমাদেরও থাকতে হবে, সেটা দুর্বল যুক্তি। সমালোচকদের অনেকে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে পুলিশ যখন কোনো বিষয় মোকাবিলায় ব্যর্থতার পরিচয় দেয়, তখন তারা এ ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্যহীনতার বিষয় সামনে এনে থাকে। তবে নীতিগতভাবে আমরা একমত যে ছোট পরিসরে পুলিশের নিজস্ব একটি বিশেষায়িত ইউনিট থাকা স্বাভাবিক, যারা জঙ্গি নিয়েই লেগে থাকবে, প্রতিনিয়ত নজরদারি ও গবেষণা করবে।
No comments