ইউরোপের কান্ডারি মেরকেল by তপতী বর্মন
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। ছবি: এএফপি |
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপীয়রা ধরেই নিয়েছিল, ইউরোপ ও এর আশপাশের নিরাপত্তায়
নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এখন সে ভাবনায় পরিবর্তন আসছে। এই পরিবর্তনে
সহায়তা করছে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব।
নানা প্রতিকূলতায় ইউরোপকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এ বছর আলোচনায় ছিলেন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। গ্রিসের ঋণ-সংকট, জঙ্গি সংগঠন আইএসবিরোধী অবস্থান, ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বন্ধ ও শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলায় তাঁর নেতৃত্ব ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০১৫ সালে তিনিই শক্ত হাতে গোটা ইউরোপের নেতৃত্ব দিয়েছেন। বছরের শেষ দিকে এসে পেয়েছেন তার স্বীকৃতিও, হয়েছেন টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব। আর ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি (প্রথম স্থানে ভ্লাদিমির পুতিন)।
ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে গত বছর দেশটির যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আগ্রাসনের দায়ে অভিযুক্ত করে। যদিও ১৭৮৩ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার অংশ থাকা ক্রিমিয়াকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট নিকিতা খ্রুশচভ ইউক্রেনের কাছে ছেড়ে দিয়েছিলেন ‘উপহার’ হিসেবে। ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরই ক্রিমিয়া দখলে নেন রুশ সেনারা। গণভোটে ক্রিমিয়াবাসী ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার সঙ্গে থাকার পক্ষে রায় দেন। জয়ী হয় পুতিনের কৌশল। কিন্তু এ জয়কে মেনে নিতে পারেনি পশ্চিমা বিশ্ব। ফলে ইউক্রেন ইস্যুতে সংকট থেকেই যায়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মেরকেল ও পুতিনকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। তখন ইউক্রেন নিয়ে একটি শান্তি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি হয়। এটি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা চলে। এখন অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। বলা হয়ে থাকে, এ ব্যাপারে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা মেরকেলের। ইউক্রেনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে আর রাশিয়া আরেক দিকে অবস্থান নিয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকে সমঝোতায় আনতে যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা প্রয়োজন ছিল, মেরকেলই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তা করেছেন।
বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে উন্নত বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে ঋণখেলাপি হয়ে যায় গ্রিস। দেশটি জুলাই মাসের নির্ধারিত সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ১৬০ কোটি ইউরো পরিশোধে ব্যর্থ হয়। শেষ সময়ে এসে গ্রিস সরকার আর্থিক পুনরুদ্ধারে (বেলআউট) নতুন চুক্তির অনুরোধ জানায়, যাতে দেশটি নতুন করে দুই বছরের জন্য প্রায় তিন হাজার কোটি ইউরো পেতে পারে। তবে ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা গ্রিসের প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন। এরপর গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। গণভোট ডাকেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস। গণভোটে দেশবাসী জানিয়ে দেন, তাঁরা ইইউতে থাকতে চান; তবে এ জন্য দাতাদের দেওয়া কোনো শর্ত মেনে নিতে চান না। এ সংকট কাটাতেও এগিয়ে আসেন মেরকেল। দফায় দফায় ইইউর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউ থেকে গ্রিসের বেরিয়ে যাওয়া ঠেকান তিনি।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের ফলে সৃষ্ট শরণার্থী-সংকটে আবার ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন মেরকেল। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুদ্ধরত বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বাশারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া। এই দ্বন্দ্বে বাস্তুচ্যুত হয়ে লাখ লাখ মানুষকে শরণার্থীর জীবন বেছে নিতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন তুরস্ক-গ্রিস পার হয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে ঠাঁই পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে হাজার হাজার মানুষ। এভাবে শরণার্থী হিসেবে ইউরোপে যাওয়ার পথে সাগরে ডুবে মারা যায় শিশু আয়লান কুর্দি। সৈকতে পড়ে থাকা আয়লানের নিথর দেহ বিশ্ব বিবেকে নাড়া দেয় প্রচণ্ডভাবে। ইউরোপের অনেক দেশ শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়। আবার শরণার্থীদের ঠাঁই না দেওয়ার পক্ষেও অনেকে অবস্থান নেয়। মেরকেল এই মানবিক সংকটে তাঁর দেশে শরণার্থীদের স্বাগত জানান। পাশে দাঁড়ান বিপন্ন মানুষগুলোর, যারা যুদ্ধের কারণে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব ও রিক্ত। সিরিয়া ইস্যুতে সবাই যখন কড়া অবস্থানে, তখন মেরকেল বলেন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসানে যেকোনো শান্তি আলোচনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশারেরও অংশগ্রহণ করা উচিত। শুধু যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া নয়; আঞ্চলিক সহযোগী যেমন ইরান, সৌদি আরব সবাইকে এই আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বছরের শেষ দিকে নভেম্বরে প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে পড়ে। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করলে ফ্রান্সের পাশে থাকার কথা জানায় ইইউভুক্ত দেশগুলো। পরম বন্ধুর মতো ফ্রান্সের পাশে এসে দাঁড়ান মেরকেল। ঘোষণা দেন, আইএস দমনে ফ্রান্সের পাশে থাকবে জার্মানি।
এ কারণেই হয়তো অ্যাঙ্গেলা মেরকেলকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতি দিয়ে টাইম ম্যাগাজিনের সম্পাদক ন্যান্সি গিবস লিখেছেন, বেশির ভাগ রাজনীতিবিদ দেশের জন্য যে কাজগুলো করতে সাহস করেন না; তিনি তা করেছেন। জুলুমবাজ ও সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দৃঢ় নৈতিক নেতৃত্ব দেখিয়েছেন। এ গুণগুলো বর্তমান বিশ্বে বিরল। প্রতিটি গভীর সংকটে তিনি সাহসী ভূমিকা দেখিয়েছেন।
মেরকেলের এমন নেতৃত্ব গুণাবলির পেছনে তাঁর ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের কয়েকটি প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছিল টাইম ম্যাগাজিন। ভিন্ন মতাবলম্বী এক যাজকের সন্তান তিনি। জন্মের পর বাবা তাঁকে নিয়ে পশ্চিম জার্মানি থেকে তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সোভিয়েতপন্থী পূর্ব জার্মানিতে চলে আসেন। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। ইস্ট জার্মান একাডেমি অব সায়েন্সেসের তিনিই একমাত্র নারী বিজ্ঞানী, যিনি তত্ত্বীয় রসায়ন নিয়ে কাজ করেন। যদিও তাঁর পড়াশোনা ছিল পদার্থবিজ্ঞানে, আর পিএইচডি ডিগ্রিটা অর্জন করেছেন কোয়ান্টাম রসায়নে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী এই নারী ক্ষমতায় থাকার দশক পার করেছেন। ৬১ বছর বয়সী মেরকেল সমর্থকদের কাছে পরিচিত ‘মা’ হিসেবে।
নানা প্রতিকূলতায় ইউরোপকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এ বছর আলোচনায় ছিলেন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। গ্রিসের ঋণ-সংকট, জঙ্গি সংগঠন আইএসবিরোধী অবস্থান, ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বন্ধ ও শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলায় তাঁর নেতৃত্ব ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০১৫ সালে তিনিই শক্ত হাতে গোটা ইউরোপের নেতৃত্ব দিয়েছেন। বছরের শেষ দিকে এসে পেয়েছেন তার স্বীকৃতিও, হয়েছেন টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব। আর ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপে তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি (প্রথম স্থানে ভ্লাদিমির পুতিন)।
ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে গত বছর দেশটির যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আগ্রাসনের দায়ে অভিযুক্ত করে। যদিও ১৭৮৩ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার অংশ থাকা ক্রিমিয়াকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট নিকিতা খ্রুশচভ ইউক্রেনের কাছে ছেড়ে দিয়েছিলেন ‘উপহার’ হিসেবে। ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরই ক্রিমিয়া দখলে নেন রুশ সেনারা। গণভোটে ক্রিমিয়াবাসী ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার সঙ্গে থাকার পক্ষে রায় দেন। জয়ী হয় পুতিনের কৌশল। কিন্তু এ জয়কে মেনে নিতে পারেনি পশ্চিমা বিশ্ব। ফলে ইউক্রেন ইস্যুতে সংকট থেকেই যায়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মেরকেল ও পুতিনকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। তখন ইউক্রেন নিয়ে একটি শান্তি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি হয়। এটি নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা চলে। এখন অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। বলা হয়ে থাকে, এ ব্যাপারে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা মেরকেলের। ইউক্রেনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে আর রাশিয়া আরেক দিকে অবস্থান নিয়েছিল। এ পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকে সমঝোতায় আনতে যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা প্রয়োজন ছিল, মেরকেলই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তা করেছেন।
বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে উন্নত বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে ঋণখেলাপি হয়ে যায় গ্রিস। দেশটি জুলাই মাসের নির্ধারিত সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ১৬০ কোটি ইউরো পরিশোধে ব্যর্থ হয়। শেষ সময়ে এসে গ্রিস সরকার আর্থিক পুনরুদ্ধারে (বেলআউট) নতুন চুক্তির অনুরোধ জানায়, যাতে দেশটি নতুন করে দুই বছরের জন্য প্রায় তিন হাজার কোটি ইউরো পেতে পারে। তবে ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা গ্রিসের প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন। এরপর গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। গণভোট ডাকেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস। গণভোটে দেশবাসী জানিয়ে দেন, তাঁরা ইইউতে থাকতে চান; তবে এ জন্য দাতাদের দেওয়া কোনো শর্ত মেনে নিতে চান না। এ সংকট কাটাতেও এগিয়ে আসেন মেরকেল। দফায় দফায় ইইউর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইইউ থেকে গ্রিসের বেরিয়ে যাওয়া ঠেকান তিনি।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের ফলে সৃষ্ট শরণার্থী-সংকটে আবার ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন মেরকেল। দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুদ্ধরত বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বাশারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া। এই দ্বন্দ্বে বাস্তুচ্যুত হয়ে লাখ লাখ মানুষকে শরণার্থীর জীবন বেছে নিতে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন তুরস্ক-গ্রিস পার হয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে ঠাঁই পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে হাজার হাজার মানুষ। এভাবে শরণার্থী হিসেবে ইউরোপে যাওয়ার পথে সাগরে ডুবে মারা যায় শিশু আয়লান কুর্দি। সৈকতে পড়ে থাকা আয়লানের নিথর দেহ বিশ্ব বিবেকে নাড়া দেয় প্রচণ্ডভাবে। ইউরোপের অনেক দেশ শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়। আবার শরণার্থীদের ঠাঁই না দেওয়ার পক্ষেও অনেকে অবস্থান নেয়। মেরকেল এই মানবিক সংকটে তাঁর দেশে শরণার্থীদের স্বাগত জানান। পাশে দাঁড়ান বিপন্ন মানুষগুলোর, যারা যুদ্ধের কারণে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব ও রিক্ত। সিরিয়া ইস্যুতে সবাই যখন কড়া অবস্থানে, তখন মেরকেল বলেন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসানে যেকোনো শান্তি আলোচনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশারেরও অংশগ্রহণ করা উচিত। শুধু যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া নয়; আঞ্চলিক সহযোগী যেমন ইরান, সৌদি আরব সবাইকে এই আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বছরের শেষ দিকে নভেম্বরে প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে পড়ে। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করলে ফ্রান্সের পাশে থাকার কথা জানায় ইইউভুক্ত দেশগুলো। পরম বন্ধুর মতো ফ্রান্সের পাশে এসে দাঁড়ান মেরকেল। ঘোষণা দেন, আইএস দমনে ফ্রান্সের পাশে থাকবে জার্মানি।
এ কারণেই হয়তো অ্যাঙ্গেলা মেরকেলকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতি দিয়ে টাইম ম্যাগাজিনের সম্পাদক ন্যান্সি গিবস লিখেছেন, বেশির ভাগ রাজনীতিবিদ দেশের জন্য যে কাজগুলো করতে সাহস করেন না; তিনি তা করেছেন। জুলুমবাজ ও সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে দৃঢ় নৈতিক নেতৃত্ব দেখিয়েছেন। এ গুণগুলো বর্তমান বিশ্বে বিরল। প্রতিটি গভীর সংকটে তিনি সাহসী ভূমিকা দেখিয়েছেন।
মেরকেলের এমন নেতৃত্ব গুণাবলির পেছনে তাঁর ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনের কয়েকটি প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছিল টাইম ম্যাগাজিন। ভিন্ন মতাবলম্বী এক যাজকের সন্তান তিনি। জন্মের পর বাবা তাঁকে নিয়ে পশ্চিম জার্মানি থেকে তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সোভিয়েতপন্থী পূর্ব জার্মানিতে চলে আসেন। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। ইস্ট জার্মান একাডেমি অব সায়েন্সেসের তিনিই একমাত্র নারী বিজ্ঞানী, যিনি তত্ত্বীয় রসায়ন নিয়ে কাজ করেন। যদিও তাঁর পড়াশোনা ছিল পদার্থবিজ্ঞানে, আর পিএইচডি ডিগ্রিটা অর্জন করেছেন কোয়ান্টাম রসায়নে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী এই নারী ক্ষমতায় থাকার দশক পার করেছেন। ৬১ বছর বয়সী মেরকেল সমর্থকদের কাছে পরিচিত ‘মা’ হিসেবে।
No comments