ঢালাও মন্তব্য সমীচীন নয় by আবদুল মান্নান
বছর দুয়েক আগে কানাডাপ্রবাসী এক বাঙালি সাংবাদিকের সঙ্গে ইন্টারনেট ব্লগে আমার বেশ কিছুদিন বাহাস হয়েছিল বাংলাদেশের পেশাজীবী মানুষের গড় সততা নিয়ে। তাঁর মতে, এ দেশের প্রায় সব সরকারি চাকরিজীবীই অসৎ এবং চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। এমন উপলব্ধির কারণ হচ্ছে, তিনি কানাডার যে শহরে থাকেন, সে শহরে অনেক সরকারি আমলা, যাঁদের অনেকের পদবি উপসচিবের ওপরে নয়, তাঁদের সন্তানেরা কীভাবে বিরাট অঙ্কের টাকা খরচ করে পড়ালেখা করছে। তাঁকে বলি, কিছু দুর্নীতিপরায়ণের সন্তান নিশ্চয় আছে, তবে সবার মা-বাবা বা অভিভাবককে দুর্নীতিপরায়ণ ভাবা সমীচীন হবে না। তিনি তা মানতে নারাজ। তারপর তাঁকে বলি, এই বাংলাদেশে আমি এমন দু-একজন সাংবাদিককে জানি, যাঁরা নিজ কর্মক্ষেত্রে ঠিকমতো বেতন পান না, কিন্তু ঢাকা শহরে তাঁদের গোটা তিনেক অ্যাপার্টমেন্ট আছে। তাঁদের পেশার সবাই জানেন, তাঁরা কেউই সৎ উপার্জনের অর্থ দিয়ে সেই অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হননি। তাই বলে কি সব সাংবাদিককে আমি ঢালাওভাবে দুর্নীতিপরায়ণ বলতে পারি?
দুজনের মধ্যে বাহাস চলতে থাকে। প্রবাসী সাংবাদিক তাঁর বিশ্বাসে অটল, আমি আমারটাতে। কেউ কাউকে টলাতে পারি না। একদিন দুজনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করি। তারপর অনেক দিন ধরে তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কদিন আগে কিছুটা হঠাৎ করেই তিনি আবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবার তাঁর বাহাসের বিষয় দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। বিশেষ করে, বলতে হলে বেসরকারি খাতে উচ্চশিক্ষা। তবে এবার তিনি প্রথমেই স্বীকার করে নেন, কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে আমাকে তিনি মেইল পাঠিয়েছেন। কারণ তিনি জানেন, আমি বেশ কয়েক বছর ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। তাঁর বক্তব্য, ইন্টারনেটে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা খুললেই শুধু চোখে পড়ে, বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বিক্রির খবর। অনেক পত্রিকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে এমন সব খবর পরিবেশন করা হয়, যা পড়লে মনে হবে, সকালে বাজারের থলে নিয়ে আপনি বাড়ি থেকে বের হলেন, হাতিরপুল বাজার থেকে মাছ-তরকারি কিনলেন, আসার সময় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজায় থামলেন এবং বাজারের থলেটা গেটে জমা রেখে ভেতরে ঢুকে একটা স্নাতক ডিগ্রি খরিদ করে বাড়ি ফিরলেন।
তাঁর মন্তব্যের বিষয়টা যদি এমনই হয়, তাহলে কীভাবে ইদানীং বাংলাদেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা ভালো ভালো বৃত্তি নিয়ে এ দেশে (কানাডা) আসছে? এ কারণেই তিনি অনেকটা বিভ্রান্ত হয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁকে বলি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু কানাডা নয়, ভালো ভালো বৃত্তি নিয়ে অন্যান্য দেশেও যাচ্ছে এবং তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিই, আজ থেকে বছর দুই আগে যে বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে আমার একটা অমীমাংসিত বাহাস ছিল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সম্প্রতি একশ্রেণীর গণমাধ্যমের ব্যাপক একতরফা অপপ্রচারের বিষয়টাও অনেকটা একই রকম। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও বাংলাদেশে বর্তমানে একরকম ঢালাও মন্তব্যের শিকার। সাংবাদিক বন্ধুকে আরও বলি, বাংলাদেশে বর্তমানে যে ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, তার মধ্যে সব কটি যে সরকারি আইনকানুন মেনে চলছে তা নয়। এদের বেশ কিছু আছে সত্যি সত্যি সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান, তবে এগুলোকে সামনে রেখে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে এককাতারে নিয়ে আসা অন্যায় হবে। যদিও ইদানীং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা হচ্ছে। তাঁকে আরও স্মরণ করিয়ে দিই, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১৮ বছর এবং সর্বশেষটির বয়স সর্বসাকল্যে চার। এই অল্প সময়ে গড়ে ওঠা ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা ছাড়া (সরকার শুধু একটি আইন প্রণয়ন করেছে) সব বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়ার মধ্যে (জাতীয় ও উন্মুক্ত ছাড়া) ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। এরা যে সবাই সঠিক শিক্ষা পাচ্ছে, তা নয়। তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিই, একই চিত্র কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও। যেহেতু আমি নিজে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশক শিক্ষকতা করেছি, সে সম্পর্কে আমার মোটামুটি একধরনের স্বচ্ছ ধারণা আছে। বন্ধুকে বলি, উচ্চশিক্ষার সার্বিক সমস্যাটা শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক নয়। সবাইকে এই সমস্যার দায়দায়িত্ব নিতে হবে। তবে প্রসঙ্গটা যেহেতু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে, তাই ডিজিটাল সংলাপটা তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে সচেষ্ট হই।
কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তাদের ২০০৯ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার পর তা সংসদেও উত্থাপিত হয়েছে। এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে, তবে তা অনেকটা খণ্ডিতভাবে। কেউ কেউ রিপোর্টের বরাত দিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে একহাত নিচ্ছে, আবার অন্যরা একেবারে রাখঢাক না করেই বলছে, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান খুলে দেশের উচ্চশিক্ষার বারোটা বাজাচ্ছে। একটি পত্রিকা লিখেছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গবেষণা হয় না। তারা আবার হিসাব করে দেখিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮৯ বছরে কয়টি গবেষণা হয়েছে বা কয়টি পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। তারা চেষ্টা করেছে এটি দেখাতে, গবেষণা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের কী করুণ হাল! তারা অবশ্য এটি উল্লেখ করেনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রথিতযশা শিক্ষক ও গবেষকের গবেষণাকর্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের প্রকাশক প্রকাশ করেছেন অথবা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। একই বিষয়ের ওপর আরেকটি পত্রিকা লিখছে, বাংলাদেশের কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না এবং তার জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দও নেই। সেখানে আবার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কোনো উল্লেখ নেই; যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বয়স ১৮ থেকে চার, তাদের কাছে সরকার আবার পাঁচ বছরের মধ্যে এক একর অখণ্ড জমির ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাসও চায় এবং করতে না পারলে সেগুলোকে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সরকারকে ১৫ শতাংশ হারে আয়করও দিতে হয় এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্য বাণিজ্যিক হারে পারিশোধ করতে হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৬ শতাংশ ছাত্রকে বৃত্তি দিয়ে পড়াতে হয়, এর পরও সেখান থেকে কোনো গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হচ্ছে না বলে পত্রিকার শিরোনাম করা হবে—এ কেমন কথা? বন্ধুকে বলি, আসলে ওই যে আমাদের একটা অভ্যাস আছে, সবকিছু নিয়ে জেনে হোক আর না জেনে হোক, ঢালাও মন্তব্য করার, তা থেকে উচ্চশিক্ষাও মুক্ত নয়। তাঁকে আরও বলি, সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে হয়তো বলা যাবে না, কিন্তু বাস্তবে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণাকর্ম স্বীকৃত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। অনেক শিক্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার, কনফারেন্সে উন্নতমানের গবেষণাপ্রবন্ধ উপস্থাপন করছে এবং অনেকে রেফারেন্স ও পাঠ্যবই লিখে ইতিমধ্যে সুনামও কুড়িয়েছেন। প্রবাসী বন্ধুকে আরও একটি সদ্য প্রকাশিত সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করি। বলি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে একটি পত্রিকা লিখেছে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ভর্তি হওয়ার জন্য হাহাকার, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আসন খালি থাকে। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি আসন খালি পড়ে আছে, তারও একটি হিসাব প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। এই একটি বিষয়ের ওপর আরেকটি সহযোগী পত্রিকা লিখছে, ‘পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ হাজার আসন শূন্য’। বিস্তারিত সংবাদে লিখেছে, ‘এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য আসনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।’ সেই সংবাদেও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি আসন শূন্য, তারও একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। বলা বাহুল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিষয়ে আসন খালি থাকে, দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, সেগুলোর বেশির ভাগই বিজ্ঞান অনুষদে। এখন আমরা যেগুলোকে মৌলিক বিজ্ঞান বলি, সে বিষয়গুলোতে বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রভর্তি ক্রমেই হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক মৌলিক বিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রাভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এই সংবাদটি কোনো কোনো পত্রিকা ছেপেছে এই বলে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু বাজারমুখী বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে মৌলিক বিজ্ঞানের ওপর তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
হ্যাঁ, কথাটি সত্য। কারণ, বাজারমুখী বিষয়গুলো পড়তে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে বাণিজ্য অনুষদের ৯০০ আসনের (আটটি বিভাগ) জন্য ৩০-৩৫ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়, তা থেকে সহজে বোঝা যায়, কোন বিভাগগুলোয় ভর্তি হতে ছাত্রদের আগ্রহ বেশি। আমরা পছন্দ করি আর না-ই করি, একজন অভিভাবক তো চাইবেন, তাঁর সন্তানটি এমন একটি বিভাগে পড়ুক, যেখান থেকে পাস করে বের হলে অন্তত তার একটা চাকরি মিলবে। সুতরাং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাজারমুখী বিভাগ খোলার মধ্যে দোষের তো কিছু দেখি না, বিশেষ করে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সব খরচ যখন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই জোগান দিতে হয়। তবে যাঁরা এই সংবাদগুলো তৈরি করেন, তাঁরা প্রায়ই পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত হাতে নিয়ে এসব তৈরি করেন না। যেমন—একটি পত্রিকায় লিখেছে, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ানো হয় না। এটাও ঠিক নয়। বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বাংলা পড়ানো হয়, আর অনেকটিতে ব্যবহারিক বিজ্ঞানের পাশাপাশি ছোট আকারে হলেও কিছু কিছু মৌলিক বিজ্ঞানের বিভাগ খোলা হয়েছে। এটি তো ভুললে চলবে না, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বয়স এত কম যে তাদের কাছ থেকে রাতারাতি সবকিছু প্রত্যাশা করা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। তাদের পর্যাপ্ত সময় তো দিতে হবে! প্রবাসী বন্ধুকে বলি, আসলে সব বিভ্রান্তির মূল কারণ হচ্ছে, কোনো বিষয় নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে হোমওয়ার্ক না করে আমাদের ঢালাও মন্তব্য করার অভ্যাস। এতে শুধু যে দেশের পাঠকেরা বিভ্রান্ত হন তা-ই নয়, ডিজিটাল যুগে বিদেশের পাঠকেরাও বিভ্রান্ত হন।
সবশেষে তাঁকে বলি, এটা অনস্বীকার্য যে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে তাদের কাজকর্ম চালু রেখেছে এবং ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত প্রতারণা করছে। একই নামে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে এবং সবাই নিজেদের আসল বলে দাবি করে। এখন তো মঞ্জুরি কমিশনের সময় হয়েছে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা (মাঝেমধ্যে অবশ্য তারা বিজ্ঞাপন দিয়ে সতর্ক করে), ‘নকল হইতে সাবধান’।
বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়ছে। সরকার নতুন একটি আইন প্রণয়ন করেছে। তাতে বেশ কিছু অসংগতি আছে। উচিত হবে, সেসব অসংগতি দূর করে ‘দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন’ নীতি প্রয়োগ করে এই খাতকে সহায়তা করা। সেটি সহজ হয়, যদি গণমাধ্যম কোনো ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় একটু সতর্ক হয়ে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি করে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এ কাজটি করা মোটেও কঠিন নয়। প্রবাসী বন্ধু আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আসলে প্রবাসে থাকেন বলে সব সময় সবকিছু সম্পর্কে চটজলদি তথ্য পাওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
উপসংহারে বলি, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার সমস্যা শুধু সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমষ্টিগত সমস্যা। তার সমাধান সমষ্টিগতভাবে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়ে করতে হবে। এটি করতে না পারলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা দাঁড়াতেই পারবে না।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১১
আবদুল মান্নান: সবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে শিক্ষক, ইউল্যাব, ঢাকা।
দুজনের মধ্যে বাহাস চলতে থাকে। প্রবাসী সাংবাদিক তাঁর বিশ্বাসে অটল, আমি আমারটাতে। কেউ কাউকে টলাতে পারি না। একদিন দুজনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করি। তারপর অনেক দিন ধরে তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কদিন আগে কিছুটা হঠাৎ করেই তিনি আবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবার তাঁর বাহাসের বিষয় দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। বিশেষ করে, বলতে হলে বেসরকারি খাতে উচ্চশিক্ষা। তবে এবার তিনি প্রথমেই স্বীকার করে নেন, কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে আমাকে তিনি মেইল পাঠিয়েছেন। কারণ তিনি জানেন, আমি বেশ কয়েক বছর ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। তাঁর বক্তব্য, ইন্টারনেটে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা খুললেই শুধু চোখে পড়ে, বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বিক্রির খবর। অনেক পত্রিকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে এমন সব খবর পরিবেশন করা হয়, যা পড়লে মনে হবে, সকালে বাজারের থলে নিয়ে আপনি বাড়ি থেকে বের হলেন, হাতিরপুল বাজার থেকে মাছ-তরকারি কিনলেন, আসার সময় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজায় থামলেন এবং বাজারের থলেটা গেটে জমা রেখে ভেতরে ঢুকে একটা স্নাতক ডিগ্রি খরিদ করে বাড়ি ফিরলেন।
তাঁর মন্তব্যের বিষয়টা যদি এমনই হয়, তাহলে কীভাবে ইদানীং বাংলাদেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা ভালো ভালো বৃত্তি নিয়ে এ দেশে (কানাডা) আসছে? এ কারণেই তিনি অনেকটা বিভ্রান্ত হয়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁকে বলি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু কানাডা নয়, ভালো ভালো বৃত্তি নিয়ে অন্যান্য দেশেও যাচ্ছে এবং তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিই, আজ থেকে বছর দুই আগে যে বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে আমার একটা অমীমাংসিত বাহাস ছিল, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সম্প্রতি একশ্রেণীর গণমাধ্যমের ব্যাপক একতরফা অপপ্রচারের বিষয়টাও অনেকটা একই রকম। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও বাংলাদেশে বর্তমানে একরকম ঢালাও মন্তব্যের শিকার। সাংবাদিক বন্ধুকে আরও বলি, বাংলাদেশে বর্তমানে যে ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, তার মধ্যে সব কটি যে সরকারি আইনকানুন মেনে চলছে তা নয়। এদের বেশ কিছু আছে সত্যি সত্যি সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান, তবে এগুলোকে সামনে রেখে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে এককাতারে নিয়ে আসা অন্যায় হবে। যদিও ইদানীং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা হচ্ছে। তাঁকে আরও স্মরণ করিয়ে দিই, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ১৮ বছর এবং সর্বশেষটির বয়স সর্বসাকল্যে চার। এই অল্প সময়ে গড়ে ওঠা ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা ছাড়া (সরকার শুধু একটি আইন প্রণয়ন করেছে) সব বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়ার মধ্যে (জাতীয় ও উন্মুক্ত ছাড়া) ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। এরা যে সবাই সঠিক শিক্ষা পাচ্ছে, তা নয়। তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিই, একই চিত্র কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও। যেহেতু আমি নিজে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশক শিক্ষকতা করেছি, সে সম্পর্কে আমার মোটামুটি একধরনের স্বচ্ছ ধারণা আছে। বন্ধুকে বলি, উচ্চশিক্ষার সার্বিক সমস্যাটা শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক নয়। সবাইকে এই সমস্যার দায়দায়িত্ব নিতে হবে। তবে প্রসঙ্গটা যেহেতু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে, তাই ডিজিটাল সংলাপটা তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে সচেষ্ট হই।
কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তাদের ২০০৯ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার পর তা সংসদেও উত্থাপিত হয়েছে। এ নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে, তবে তা অনেকটা খণ্ডিতভাবে। কেউ কেউ রিপোর্টের বরাত দিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে একহাত নিচ্ছে, আবার অন্যরা একেবারে রাখঢাক না করেই বলছে, বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান খুলে দেশের উচ্চশিক্ষার বারোটা বাজাচ্ছে। একটি পত্রিকা লিখেছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গবেষণা হয় না। তারা আবার হিসাব করে দেখিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮৯ বছরে কয়টি গবেষণা হয়েছে বা কয়টি পুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। তারা চেষ্টা করেছে এটি দেখাতে, গবেষণা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের কী করুণ হাল! তারা অবশ্য এটি উল্লেখ করেনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রথিতযশা শিক্ষক ও গবেষকের গবেষণাকর্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের প্রকাশক প্রকাশ করেছেন অথবা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। একই বিষয়ের ওপর আরেকটি পত্রিকা লিখছে, বাংলাদেশের কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না এবং তার জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দও নেই। সেখানে আবার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কোনো উল্লেখ নেই; যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বয়স ১৮ থেকে চার, তাদের কাছে সরকার আবার পাঁচ বছরের মধ্যে এক একর অখণ্ড জমির ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাসও চায় এবং করতে না পারলে সেগুলোকে বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সরকারকে ১৫ শতাংশ হারে আয়করও দিতে হয় এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্য বাণিজ্যিক হারে পারিশোধ করতে হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৬ শতাংশ ছাত্রকে বৃত্তি দিয়ে পড়াতে হয়, এর পরও সেখান থেকে কোনো গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হচ্ছে না বলে পত্রিকার শিরোনাম করা হবে—এ কেমন কথা? বন্ধুকে বলি, আসলে ওই যে আমাদের একটা অভ্যাস আছে, সবকিছু নিয়ে জেনে হোক আর না জেনে হোক, ঢালাও মন্তব্য করার, তা থেকে উচ্চশিক্ষাও মুক্ত নয়। তাঁকে আরও বলি, সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে হয়তো বলা যাবে না, কিন্তু বাস্তবে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণাকর্ম স্বীকৃত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। অনেক শিক্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার, কনফারেন্সে উন্নতমানের গবেষণাপ্রবন্ধ উপস্থাপন করছে এবং অনেকে রেফারেন্স ও পাঠ্যবই লিখে ইতিমধ্যে সুনামও কুড়িয়েছেন। প্রবাসী বন্ধুকে আরও একটি সদ্য প্রকাশিত সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করি। বলি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের রিপোর্টের বরাত দিয়ে একটি পত্রিকা লিখেছে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ভর্তি হওয়ার জন্য হাহাকার, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আসন খালি থাকে। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি আসন খালি পড়ে আছে, তারও একটি হিসাব প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। এই একটি বিষয়ের ওপর আরেকটি সহযোগী পত্রিকা লিখছে, ‘পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ হাজার আসন শূন্য’। বিস্তারিত সংবাদে লিখেছে, ‘এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্য আসনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।’ সেই সংবাদেও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি আসন শূন্য, তারও একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। বলা বাহুল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিষয়ে আসন খালি থাকে, দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, সেগুলোর বেশির ভাগই বিজ্ঞান অনুষদে। এখন আমরা যেগুলোকে মৌলিক বিজ্ঞান বলি, সে বিষয়গুলোতে বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রভর্তি ক্রমেই হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক মৌলিক বিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রাভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এই সংবাদটি কোনো কোনো পত্রিকা ছেপেছে এই বলে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু বাজারমুখী বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে মৌলিক বিজ্ঞানের ওপর তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
হ্যাঁ, কথাটি সত্য। কারণ, বাজারমুখী বিষয়গুলো পড়তে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে বাণিজ্য অনুষদের ৯০০ আসনের (আটটি বিভাগ) জন্য ৩০-৩৫ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়, তা থেকে সহজে বোঝা যায়, কোন বিভাগগুলোয় ভর্তি হতে ছাত্রদের আগ্রহ বেশি। আমরা পছন্দ করি আর না-ই করি, একজন অভিভাবক তো চাইবেন, তাঁর সন্তানটি এমন একটি বিভাগে পড়ুক, যেখান থেকে পাস করে বের হলে অন্তত তার একটা চাকরি মিলবে। সুতরাং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাজারমুখী বিভাগ খোলার মধ্যে দোষের তো কিছু দেখি না, বিশেষ করে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সব খরচ যখন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই জোগান দিতে হয়। তবে যাঁরা এই সংবাদগুলো তৈরি করেন, তাঁরা প্রায়ই পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত হাতে নিয়ে এসব তৈরি করেন না। যেমন—একটি পত্রিকায় লিখেছে, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা পড়ানো হয় না। এটাও ঠিক নয়। বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে বাংলা পড়ানো হয়, আর অনেকটিতে ব্যবহারিক বিজ্ঞানের পাশাপাশি ছোট আকারে হলেও কিছু কিছু মৌলিক বিজ্ঞানের বিভাগ খোলা হয়েছে। এটি তো ভুললে চলবে না, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বয়স এত কম যে তাদের কাছ থেকে রাতারাতি সবকিছু প্রত্যাশা করা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। তাদের পর্যাপ্ত সময় তো দিতে হবে! প্রবাসী বন্ধুকে বলি, আসলে সব বিভ্রান্তির মূল কারণ হচ্ছে, কোনো বিষয় নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে হোমওয়ার্ক না করে আমাদের ঢালাও মন্তব্য করার অভ্যাস। এতে শুধু যে দেশের পাঠকেরা বিভ্রান্ত হন তা-ই নয়, ডিজিটাল যুগে বিদেশের পাঠকেরাও বিভ্রান্ত হন।
সবশেষে তাঁকে বলি, এটা অনস্বীকার্য যে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে তাদের কাজকর্ম চালু রেখেছে এবং ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত প্রতারণা করছে। একই নামে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে এবং সবাই নিজেদের আসল বলে দাবি করে। এখন তো মঞ্জুরি কমিশনের সময় হয়েছে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা (মাঝেমধ্যে অবশ্য তারা বিজ্ঞাপন দিয়ে সতর্ক করে), ‘নকল হইতে সাবধান’।
বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়ছে। সরকার নতুন একটি আইন প্রণয়ন করেছে। তাতে বেশ কিছু অসংগতি আছে। উচিত হবে, সেসব অসংগতি দূর করে ‘দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন’ নীতি প্রয়োগ করে এই খাতকে সহায়তা করা। সেটি সহজ হয়, যদি গণমাধ্যম কোনো ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় একটু সতর্ক হয়ে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি করে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এ কাজটি করা মোটেও কঠিন নয়। প্রবাসী বন্ধু আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আসলে প্রবাসে থাকেন বলে সব সময় সবকিছু সম্পর্কে চটজলদি তথ্য পাওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
উপসংহারে বলি, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার সমস্যা শুধু সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমষ্টিগত সমস্যা। তার সমাধান সমষ্টিগতভাবে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়ে করতে হবে। এটি করতে না পারলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা দাঁড়াতেই পারবে না।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১১
আবদুল মান্নান: সবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে শিক্ষক, ইউল্যাব, ঢাকা।
No comments