জুলহাস-তনয় হত্যা: কিলিংমিশনে অংশ নেয়া আসাদুল্লাহ গ্রেপ্তার
ইউএসএইড
কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও নাট্যকর্মী মাহবুব তনয় কিলিংমিশনে
অংশগ্রহণকারী আরেক জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃত আসাদুল্লাহ (২৫) জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম (এবিটি)’র
সামরিক শাখার সদস্য। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারের সংখ্যা
দাঁড়ালো চারজনে। তারা সবাই সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছে
পুলিশ। আসাদুল্লাহকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে তিনদিনের
রিমান্ড মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ। গতকাল ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র অতিরিক্ত
পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে গোপন
তথ্যের ভিত্তিতে টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসাদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা
হয়। তার সাংগঠনিক নাম ফখরুল ওরফে ফয়সাল ওরফে জাকির ওরফে সাদিক।
মনিরুল ইসলাম বলেন, জুলহাস-তনয় হত্যা মামলার অন্যতম হোতা আসাদুল্লাহ।
দীর্ঘ তদন্ত ও গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়েছি হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে ছিল সাতজন। এর মধ্যে পাঁচজন ছিলো মূল কিলিং মিশনে। তারা এবিটি’র কিলার গ্রুপের সদস্য। বাকি দুইজন ইন্টেলিজেন্ট গ্রুপের সদস্য। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত চারজনের মধ্যে কিলার গ্রুপের দু’জন হচ্ছে আসাদুল্লাহ ও ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত আরাফাত ওরফে শামস ওরফে সিয়াম। গ্রেপ্তার বাকি দু’জন ইন্টেলিজেন্ট গ্রুপের জুবায়ের ওরফে আবু ওমায়ের ও সায়মন ওরফে শাহরিয়ার। তারা সবাই আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার দাওরা প্রশিক্ষক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, জুলহাস মান্নান ও তনয়কে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করার পর কলাবাগানের লেকসার্কাসের বাসাটি রেকি করেছিল জঙ্গিরা। ২০১৬ সালের ২৫শে এপ্রিল বিকালে ভুয়া পার্সেল সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় যায় সাতজন। তারমধ্যে জুলহাস মান্নানের লেক সার্কাসের ওই বাড়িতে ঢুকে পাঁচজন। তখন বাইরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল দু’জন। পাঁচজনের মধ্যে তিনজন ভুয়া পার্সেল হাতে ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় জুলহাসদের ফ্ল্যাটে যায়। বাকি দু’জন বাড়ির নিচ তলায় ছিলো। হত্যাকাণ্ডের সময় বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লা উপরে যেতে চাইলে তাকে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে এই দু’জন। ওই দু’জনের দলে ছিলো আসাদুল্লাহ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আসাদুল্লাহর বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরের মদনপুরে। তার বাবা এমদাদুল হক। তিনি চুয়াডাঙ্গার মাধবপুর ইসলামিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। গত কিছুদিন ধরে টঙ্গীর মরকুন কবরস্থান গেইট এলাকায় থাকতো আসাদুল্লাহ। এবিটিতে যোগদানের আগে যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সাথী ছিলো সে। তার পরিবার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসাদুল্লাহ ওই এলাকার মদনপুর দাখিল মাদরাসা এবং যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে লেখাপড়া করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম জানান, লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন শরীফুল ওরফে মুকুল রানার মাধ্যমে ২০১৫ সালের শেষ দিকে এবিটিতে যোগ দেয় আসাদুল্লাহ। শুরুতে তার সাংগঠনিক নাম ছিলো ফয়সাল। এবিটিতে যোগ দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সে। প্রশিক্ষণের বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, বাসা ভাড়া নেয়ার পদ্ধতি, নিজেদের নিরাপত্তা, ডে-অ্যাম্বুশ, সম্মানজনক মৃত্যু, চাপাতি চালানো, পিস্তল চালানো, টার্গেট ব্যক্তিকে হত্যা করার আগে রেকি করা এবং হত্যার সময় ও স্থান নির্ধারণ করার পদ্ধতি। এগুলো তাদের সামরিক শাখার প্রশিক্ষণ বলে জানান মনিরুল ইসলাম। আসাদুল্লাহ রাজধানীর বাড্ডা, আশকোনা, গাজীপুরের বিভিন্ন আস্তানায় ও মারকাজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুলে পুলিশের ওপর হামলা করে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছিল আসাদুল্লাহ।
২০১৬ সালের ২৫শে এপ্রিল ইউএসএআইডি কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে কুপিয়ে হত্যার পর দ্রুত পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে রাখেন কলাবাগান এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসআই মমতাজ। ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। ঘটনার রাতেই জুলহাসের ভাই মিনহাজ মান্নান বাদী হয়ে অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। এএসআই মমতাজের ওপর হামলা এবং অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অপর মামলাটি করেন কলাবাগান থানার এসআই শামীম আহমেদ।
হত্যাকাণ্ডের পর দ্বায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় আনসার আল ইসলাম। চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তদন্তে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হতে থাকে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির খালাতো ভাই জুলহাস মান্নান (৩৫)। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদ্রুত ড্যান মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। পরে যোগ দেন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডে। জুলহাস মান্নান সমকামীদের অধিকার নিয়েও কাজ করতেন। সমকামীদের নিয়ে প্রকাশিত সাময়িকী ‘রূপবান’র সম্পাদক ছিলেন। আর মাহবুব রাব্বী তনয় ছিলেন লোকনাট্য দলের কর্মী। পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে শিশুদের নাট্য প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, জুলহাস-তনয় হত্যা মামলার অন্যতম হোতা আসাদুল্লাহ।
দীর্ঘ তদন্ত ও গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়েছি হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে ছিল সাতজন। এর মধ্যে পাঁচজন ছিলো মূল কিলিং মিশনে। তারা এবিটি’র কিলার গ্রুপের সদস্য। বাকি দুইজন ইন্টেলিজেন্ট গ্রুপের সদস্য। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত চারজনের মধ্যে কিলার গ্রুপের দু’জন হচ্ছে আসাদুল্লাহ ও ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত আরাফাত ওরফে শামস ওরফে সিয়াম। গ্রেপ্তার বাকি দু’জন ইন্টেলিজেন্ট গ্রুপের জুবায়ের ওরফে আবু ওমায়ের ও সায়মন ওরফে শাহরিয়ার। তারা সবাই আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার দাওরা প্রশিক্ষক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, জুলহাস মান্নান ও তনয়কে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করার পর কলাবাগানের লেকসার্কাসের বাসাটি রেকি করেছিল জঙ্গিরা। ২০১৬ সালের ২৫শে এপ্রিল বিকালে ভুয়া পার্সেল সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় যায় সাতজন। তারমধ্যে জুলহাস মান্নানের লেক সার্কাসের ওই বাড়িতে ঢুকে পাঁচজন। তখন বাইরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল দু’জন। পাঁচজনের মধ্যে তিনজন ভুয়া পার্সেল হাতে ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় জুলহাসদের ফ্ল্যাটে যায়। বাকি দু’জন বাড়ির নিচ তলায় ছিলো। হত্যাকাণ্ডের সময় বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লা উপরে যেতে চাইলে তাকে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে এই দু’জন। ওই দু’জনের দলে ছিলো আসাদুল্লাহ।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আসাদুল্লাহর বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরের মদনপুরে। তার বাবা এমদাদুল হক। তিনি চুয়াডাঙ্গার মাধবপুর ইসলামিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। গত কিছুদিন ধরে টঙ্গীর মরকুন কবরস্থান গেইট এলাকায় থাকতো আসাদুল্লাহ। এবিটিতে যোগদানের আগে যশোরের নওয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সাথী ছিলো সে। তার পরিবার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসাদুল্লাহ ওই এলাকার মদনপুর দাখিল মাদরাসা এবং যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে লেখাপড়া করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম জানান, লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন শরীফুল ওরফে মুকুল রানার মাধ্যমে ২০১৫ সালের শেষ দিকে এবিটিতে যোগ দেয় আসাদুল্লাহ। শুরুতে তার সাংগঠনিক নাম ছিলো ফয়সাল। এবিটিতে যোগ দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সে। প্রশিক্ষণের বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, বাসা ভাড়া নেয়ার পদ্ধতি, নিজেদের নিরাপত্তা, ডে-অ্যাম্বুশ, সম্মানজনক মৃত্যু, চাপাতি চালানো, পিস্তল চালানো, টার্গেট ব্যক্তিকে হত্যা করার আগে রেকি করা এবং হত্যার সময় ও স্থান নির্ধারণ করার পদ্ধতি। এগুলো তাদের সামরিক শাখার প্রশিক্ষণ বলে জানান মনিরুল ইসলাম। আসাদুল্লাহ রাজধানীর বাড্ডা, আশকোনা, গাজীপুরের বিভিন্ন আস্তানায় ও মারকাজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুলে পুলিশের ওপর হামলা করে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছিল আসাদুল্লাহ।
২০১৬ সালের ২৫শে এপ্রিল ইউএসএআইডি কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে কুপিয়ে হত্যার পর দ্রুত পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে রাখেন কলাবাগান এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসআই মমতাজ। ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। ঘটনার রাতেই জুলহাসের ভাই মিনহাজ মান্নান বাদী হয়ে অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। এএসআই মমতাজের ওপর হামলা এবং অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অপর মামলাটি করেন কলাবাগান থানার এসআই শামীম আহমেদ।
হত্যাকাণ্ডের পর দ্বায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় আনসার আল ইসলাম। চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তদন্তে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হতে থাকে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির খালাতো ভাই জুলহাস মান্নান (৩৫)। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদ্রুত ড্যান মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। পরে যোগ দেন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডে। জুলহাস মান্নান সমকামীদের অধিকার নিয়েও কাজ করতেন। সমকামীদের নিয়ে প্রকাশিত সাময়িকী ‘রূপবান’র সম্পাদক ছিলেন। আর মাহবুব রাব্বী তনয় ছিলেন লোকনাট্য দলের কর্মী। পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে শিশুদের নাট্য প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন।
No comments