সবুজের রাজ্যে হাতছানি by ইমাদ উদ দীন
চারদিকেই
সবুজ প্রকৃতির হাতছানি। এ যেন এক অন্যরকম আবেশ। পর্যটকদের মুগ্ধ করতে
সর্বদাই প্রস্তুত সবুজ প্রকৃতির ‘মানসকন্যা’ মৌলভীবাজার। ২৭৯৯ বর্গ
কিলোমিটার বিস্তৃত সবুজের এ রাজ্য মনকাড়া অপরূপ নৈসর্গিক প্রাকৃতিক
সৌন্দর্য। চা বাগানগুলোর মনোহর দৃশ্য, হাকালুকি হাওরের বিস্তীর্ণ সফেদ
জলরাশি, লাউয়াছড়ার দুর্লভ জীববৈচিত্র্য, দেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড ও
দুর্গম পাহাড়ের জলকন্যা হামহাম আর নয়নাভিরাম শতাধিক চা বাগান, রাবার
বাগান, আগর বাগান, মাধবপুর লেইকসহ এ জনপদের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
থাকা এ সকল সৌন্দর্যের ডালি প্রকৃতিপ্রেমীদের আনন্দ ভ্রমণের আহ্বান জানায়।
চা বাগান: ছোট ছোট চা গাছ। আর বিশাল বিশাল ছায়াবৃক্ষ। খোলা চোখ যতদূর যায় শুধু চা আর ছায়াবৃক্ষ। এ যেন সবুজ দুনিয়া। চা শ্রমিকদের দুটি পাতা একটি কুঁড়ি সংগ্রহের দৃশ্য এ এক অন্যরকম অনুভূতি। সিলেট বিভাগের ১৯৩টি বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯২টি চা বাগান।
হাকালুকি হাওর: স্থানীয়ভাবে প্রবাদ আছে হাওর মানে হাকালুকি আর সব কুয়া (কুপ), ব্যাটা (পুরুষ) মানে মান মনসুর আর সব পুয়া (ছেলে)। প্রকৃতির এই বিশাল দুনিয়ায় কি নেই। নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ, পাখি, শাপলা-শালুক, ঝিনুক, কচ্ছপ শত শত প্রজাতির জলজ ও উভয়চর প্রাণী আর হিজল, করচ, বরুন, আড়ং, মূর্তা, কলুমসহ সবুজের ঢেউ জাগানিয়া মনকাড়া পরিবেশ। বর্ষা মওসুমে থৈ থৈ পানি আর শীত মওসুমে ধু-ধু সবুজের মাঠ। শীতের সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন সোনামাখা রোদে দেশী ও পরিযায়ী পাখিদের উড়াউড়ি, ডুবসাঁতার আর তাদের খাবার সংগ্রহের ব্যস্ত বিমোহিত রূপ মাধূর্যে কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমীদের। ৫টি উপজেলা জুড়ে ২৩৬টি বিল নিয়ে এ হাওরের আয়তন ২০ হাজার ৪ শত হেক্টর।
জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়া: দেশের ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। বিনোদনের অন্যতম এ স্পটটি দেশের বনাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম নান্দনিক ও আকর্ষণীয়। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়ায় দেখা মেলে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির প্রাণীর। জানা যায়, ১৯২৫ সালে ১২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে তৈরি করা প্লান্টেশনই এখনকার ঘন অরণ্যের রূপ নিয়েছে। ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ১০টি জাতীয় উদ্যানের একটি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশে অবশিষ্ট চিরহরিৎ বনের একটি হিসেবে টিকে আছে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে এই বনকে ‘জাতীয় উদ্যান’ হিসেবে ঘোষণা করে। ওখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ এবং উদ্ভিদ। নিরক্ষীয় অঞ্চলের চিরহরিৎ বর্ষাবন বা রেইন ফরেস্টের মতো এখানেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেজ’ ছবিটির একটি দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল ওই বনে।
মাধবকুন্ড জলপ্রপাত: দেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড। বড়লেখা উপজেলার কাঠালতলী বাজার থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে এগোলেই কানে আসবে ক্রমাগত জল গড়ানোর ঝুম ঝুম শব্দ। সেই সঙ্গে থাকবে সবুজ চা পাতার তাজা গন্ধ। প্রায় ২০০ ফুট পাথারিয়া পাহাড়ের উপর থেকে ছোট-বড় পাথরের বুক চিরে আছড়ে পড়া সফেদ জলরাশির ঝর্ণাধারার দৃশ্যে মন নাচে আনন্দ আবেগে।
দুর্গম হামহাম: গহীন অরণ্যের দুর্গম হামহাম জলপ্রপাত। ১৫০ ফুট পাহাড়ের উপর হতে স্ফটিকের মত স্বচ্ছ পানি আছড়ে পড়ছে বড় বড় পাথরের গায়ে। হামহাম জলপ্রপাত কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বনবিটের গহীন অরণ্যে। কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্ব-দক্ষিণে আয়তন ৭ হাজার ৯৭০ একর। এলাকার পশ্চিমদিকে চাম্পারায় চা বাগান, পূর্ব-দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত। প্রায় ১০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে হয় এই ‘ঝর্ণা সুন্দরী’র আঙ্গিনায়।
পাথারীয়া ফুল ঝেরঝরী ও ফুলবাগিচা: অতি সম্প্রতি লোকচক্ষুর সামনে আসা পাথারিয়ার ফুল ঝেরঝেরী ও ফুলবাগিচা জলপ্রপাত। এই দুই জল সুন্দরীর কাছে পৌঁছাতে দুর্গম পাহাড়ি পথে মিলে পাহাড়ি টিলার পাদদেশে বয়ে চলা ছড়ার স্বচ্ছ শীতল পানি, সবুজ প্রকৃতি, বনফুল, চাষনী লেবুর সুবাস, পাখি ও ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ডিমাই বাজার হয়ে বড়লেখা সদর বন বিটের আওতাধীন পাথারিয়া পাহাড়ের নির্জন পল্লী ডিমাই পুঞ্জির পাশ দিয়ে দুর্গম পাহাড়ি ও ছড়া পথে হাটলেই চোখে পড়ে দৃষ্টি নন্দন অনেক ছোট ঝর্ণা। প্রায় ৬ কিলোমটিার পিচ্ছিল পাথুরে ছড়া দিয়ে হাঁটার পর এই ছোট ঝর্ণাগুলো বেয়ে ওপরে ওঠলে দুটি টিলার ভিতরেই অবস্থান অনিন্দ্য সুন্দর ঝেরঝেরী জলপ্রপাত। আর ফুলবাগিচা জলপ্রপাতে পৌঁছাতে প্রায় ৬০-৭০ ফুট উঁচু দুটি পাহাড়ের পিচ্ছিল পথ এগুলেই দেখা মিলে এই জল সুন্দরীর।
মাধবপুর লেক: মাধবপুর লেক। নয়ন জুড়ানো এই লেক জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানের পাদদেশে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পাহাড়ি ও সমতল পথ পেরিয়ে চা বাগানের ভেতরে দেখা মিলে আকর্ষণীয় এই লেকের। ন্যাশনালটি কোম্পানির মালিকানাধীন চা বাগানের ভেতরে মাধবপুর লেক নিজের রূপ দিয়েই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নয়ন কাড়ে।
পাখি বাড়ি: কুলাউড়ার ব্রাহ্মণ বাজারের মনোহর পুর গ্রামের ‘বকপাখি বাড়ি’, বড়লেখার হাকালুকি হাওর তীরের হাল্লা গ্রামের মনোহর মাস্টারের দেশি ও অতিথি পাখির মিলনস্থল‘পাখি বাড়ি’ ও রাজনগরের হরিপাশা গ্রামের ‘পাখি বাড়ি’ ওইসকল স্থানে একসঙ্গে কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি পাখির নিরাপদ নিবাস, দরদ জাগায় প্রকৃতি প্রেমে।
অন্যান্য আর্কষণীয় স্থান: এছাড়া অর্ধশতাধীক রাবার বাগান,শতাধীক আগর বাগান, কমলাবাগানসহ আছে কুলাউড়া উপজেলার টাটুরার বান্ধ (বাঁধ) লেক, শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কা বিল, শ্রীমঙ্গলের লেবু ও আনারসের বাগান, কুলাউড়ার লালমাটি টিলা, গগন টিলা (ওপেন ওয়াচ টাওয়ার), হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি বিজড়িত সিআরপি রেস্ট হাউস ও জুড়ী উপজেলার কমলা, আনারস ও কাঠালের বাগান। কমলগঞ্জের নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ, গারোটিলা, রাজনগরের নানা স্মৃতিকথার কমলা রাণীর দিঘি, কুলাউড়ার পৃথিম পাশা নবাব বাড়ির চারশত বছরের প্রাচীতম নানা কারুকাজের দৃষ্টিনন্দন মসজিদ ও মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ের ইমামবাড়া, কাদিপুরের শৈল্পিক কারুকাজের শিববাড়ি মন্দির ও পুষাইনগর সিটিএস মন্দির, খাসিয়া পুঞ্জি আর পুঞ্জিতে খাসিয়াদের চাষকৃত পানের বরজ। আর পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার জন্য আছে পাঁচতারকা মানের দুটি হোটেলসহ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও কটেজ। জেলা প্রসাশন সূত্রে জানা যায় পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।
চা বাগান: ছোট ছোট চা গাছ। আর বিশাল বিশাল ছায়াবৃক্ষ। খোলা চোখ যতদূর যায় শুধু চা আর ছায়াবৃক্ষ। এ যেন সবুজ দুনিয়া। চা শ্রমিকদের দুটি পাতা একটি কুঁড়ি সংগ্রহের দৃশ্য এ এক অন্যরকম অনুভূতি। সিলেট বিভাগের ১৯৩টি বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯২টি চা বাগান।
হাকালুকি হাওর: স্থানীয়ভাবে প্রবাদ আছে হাওর মানে হাকালুকি আর সব কুয়া (কুপ), ব্যাটা (পুরুষ) মানে মান মনসুর আর সব পুয়া (ছেলে)। প্রকৃতির এই বিশাল দুনিয়ায় কি নেই। নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ, পাখি, শাপলা-শালুক, ঝিনুক, কচ্ছপ শত শত প্রজাতির জলজ ও উভয়চর প্রাণী আর হিজল, করচ, বরুন, আড়ং, মূর্তা, কলুমসহ সবুজের ঢেউ জাগানিয়া মনকাড়া পরিবেশ। বর্ষা মওসুমে থৈ থৈ পানি আর শীত মওসুমে ধু-ধু সবুজের মাঠ। শীতের সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন সোনামাখা রোদে দেশী ও পরিযায়ী পাখিদের উড়াউড়ি, ডুবসাঁতার আর তাদের খাবার সংগ্রহের ব্যস্ত বিমোহিত রূপ মাধূর্যে কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমীদের। ৫টি উপজেলা জুড়ে ২৩৬টি বিল নিয়ে এ হাওরের আয়তন ২০ হাজার ৪ শত হেক্টর।
জাতীয় উদ্যান লাউয়াছড়া: দেশের ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। বিনোদনের অন্যতম এ স্পটটি দেশের বনাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম নান্দনিক ও আকর্ষণীয়। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়ায় দেখা মেলে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির প্রাণীর। জানা যায়, ১৯২৫ সালে ১২৫০ হেক্টর জায়গাজুড়ে তৈরি করা প্লান্টেশনই এখনকার ঘন অরণ্যের রূপ নিয়েছে। ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ১০টি জাতীয় উদ্যানের একটি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশে অবশিষ্ট চিরহরিৎ বনের একটি হিসেবে টিকে আছে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে এই বনকে ‘জাতীয় উদ্যান’ হিসেবে ঘোষণা করে। ওখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ এবং উদ্ভিদ। নিরক্ষীয় অঞ্চলের চিরহরিৎ বর্ষাবন বা রেইন ফরেস্টের মতো এখানেও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেজ’ ছবিটির একটি দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল ওই বনে।
মাধবকুন্ড জলপ্রপাত: দেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড। বড়লেখা উপজেলার কাঠালতলী বাজার থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্ব দিকে এগোলেই কানে আসবে ক্রমাগত জল গড়ানোর ঝুম ঝুম শব্দ। সেই সঙ্গে থাকবে সবুজ চা পাতার তাজা গন্ধ। প্রায় ২০০ ফুট পাথারিয়া পাহাড়ের উপর থেকে ছোট-বড় পাথরের বুক চিরে আছড়ে পড়া সফেদ জলরাশির ঝর্ণাধারার দৃশ্যে মন নাচে আনন্দ আবেগে।
দুর্গম হামহাম: গহীন অরণ্যের দুর্গম হামহাম জলপ্রপাত। ১৫০ ফুট পাহাড়ের উপর হতে স্ফটিকের মত স্বচ্ছ পানি আছড়ে পড়ছে বড় বড় পাথরের গায়ে। হামহাম জলপ্রপাত কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের কুরমা বনবিটের গহীন অরণ্যে। কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কি.মি. পূর্ব-দক্ষিণে আয়তন ৭ হাজার ৯৭০ একর। এলাকার পশ্চিমদিকে চাম্পারায় চা বাগান, পূর্ব-দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত। প্রায় ১০ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে পৌঁছাতে হয় এই ‘ঝর্ণা সুন্দরী’র আঙ্গিনায়।
পাথারীয়া ফুল ঝেরঝরী ও ফুলবাগিচা: অতি সম্প্রতি লোকচক্ষুর সামনে আসা পাথারিয়ার ফুল ঝেরঝেরী ও ফুলবাগিচা জলপ্রপাত। এই দুই জল সুন্দরীর কাছে পৌঁছাতে দুর্গম পাহাড়ি পথে মিলে পাহাড়ি টিলার পাদদেশে বয়ে চলা ছড়ার স্বচ্ছ শীতল পানি, সবুজ প্রকৃতি, বনফুল, চাষনী লেবুর সুবাস, পাখি ও ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ডিমাই বাজার হয়ে বড়লেখা সদর বন বিটের আওতাধীন পাথারিয়া পাহাড়ের নির্জন পল্লী ডিমাই পুঞ্জির পাশ দিয়ে দুর্গম পাহাড়ি ও ছড়া পথে হাটলেই চোখে পড়ে দৃষ্টি নন্দন অনেক ছোট ঝর্ণা। প্রায় ৬ কিলোমটিার পিচ্ছিল পাথুরে ছড়া দিয়ে হাঁটার পর এই ছোট ঝর্ণাগুলো বেয়ে ওপরে ওঠলে দুটি টিলার ভিতরেই অবস্থান অনিন্দ্য সুন্দর ঝেরঝেরী জলপ্রপাত। আর ফুলবাগিচা জলপ্রপাতে পৌঁছাতে প্রায় ৬০-৭০ ফুট উঁচু দুটি পাহাড়ের পিচ্ছিল পথ এগুলেই দেখা মিলে এই জল সুন্দরীর।
মাধবপুর লেক: মাধবপুর লেক। নয়ন জুড়ানো এই লেক জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানের পাদদেশে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পাহাড়ি ও সমতল পথ পেরিয়ে চা বাগানের ভেতরে দেখা মিলে আকর্ষণীয় এই লেকের। ন্যাশনালটি কোম্পানির মালিকানাধীন চা বাগানের ভেতরে মাধবপুর লেক নিজের রূপ দিয়েই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নয়ন কাড়ে।
পাখি বাড়ি: কুলাউড়ার ব্রাহ্মণ বাজারের মনোহর পুর গ্রামের ‘বকপাখি বাড়ি’, বড়লেখার হাকালুকি হাওর তীরের হাল্লা গ্রামের মনোহর মাস্টারের দেশি ও অতিথি পাখির মিলনস্থল‘পাখি বাড়ি’ ও রাজনগরের হরিপাশা গ্রামের ‘পাখি বাড়ি’ ওইসকল স্থানে একসঙ্গে কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি পাখির নিরাপদ নিবাস, দরদ জাগায় প্রকৃতি প্রেমে।
অন্যান্য আর্কষণীয় স্থান: এছাড়া অর্ধশতাধীক রাবার বাগান,শতাধীক আগর বাগান, কমলাবাগানসহ আছে কুলাউড়া উপজেলার টাটুরার বান্ধ (বাঁধ) লেক, শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কা বিল, শ্রীমঙ্গলের লেবু ও আনারসের বাগান, কুলাউড়ার লালমাটি টিলা, গগন টিলা (ওপেন ওয়াচ টাওয়ার), হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি বিজড়িত সিআরপি রেস্ট হাউস ও জুড়ী উপজেলার কমলা, আনারস ও কাঠালের বাগান। কমলগঞ্জের নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ, গারোটিলা, রাজনগরের নানা স্মৃতিকথার কমলা রাণীর দিঘি, কুলাউড়ার পৃথিম পাশা নবাব বাড়ির চারশত বছরের প্রাচীতম নানা কারুকাজের দৃষ্টিনন্দন মসজিদ ও মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ের ইমামবাড়া, কাদিপুরের শৈল্পিক কারুকাজের শিববাড়ি মন্দির ও পুষাইনগর সিটিএস মন্দির, খাসিয়া পুঞ্জি আর পুঞ্জিতে খাসিয়াদের চাষকৃত পানের বরজ। আর পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার জন্য আছে পাঁচতারকা মানের দুটি হোটেলসহ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও কটেজ। জেলা প্রসাশন সূত্রে জানা যায় পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।
No comments