যেভাবে ঢাকার মেরামত সম্ভব
আইনের
সঠিক প্রয়োগ, নীতি ও বিশ্বাসযোগ্যতার মাধ্যমে ঢাকাকে বাঁচানো সম্ভব বলে
মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন। শুধু তাই নয়, এভাবে
সবচেয়ে কম সময়ে ঢাকাকে পৃথিবীর সেরা শহরগুলোর একটিতে পরিণত করা সম্ভব বলেও
মনে করেন তিনি। মোবাশ্বের আহমেদ বলেছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নামা
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের শিখিয়েছে যে চাইলে তিন দিনেই ঢাকাকে
বাসযোগ্য করা যায়। ঢাকার বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা
রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এর জন্য একটি প্রতিষ্ঠান এবং একজন মানুষ
দরকার যাকে ছাতা হিসেবে ধরে তার নির্দেশে কাজ করা যাবে। মানবজমিনের সঙ্গে
আলাপাকালে এসব কথা বলেন তিনি।
লন্ডনভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইইইউ)’র বার্ষিক জরিপে বিশ্বে বসবাসের অযোগ্য শহরগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে ঢাকা। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন এবং ঢাকাকে বাসযোগ্য করার উপায়ই বা কি- এমন প্রশ্নে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘যে মাপকাঠিতে ঢাকা শহরকে বসবাসের অযোগ্য বলা হয়, সেই মাপকাঠি হলো উন্নত শহরের মাপকাঠি। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ যে কত ভালো এবং কত অল্প সময়ের ভিতর আইন মানতে জানে সেটি পৃথিবীর কম দেশেই আছে।’ উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাত্র তিনদিনে ঢাকার মানুষ আইন মানা শুরু করলো। শিক্ষার্থীরা পুলিশও না, এ বিষয়ে তাদের কোনো ক্ষমতাও নেই। কিন্তু তাদের কথামতো মানুষ আইন মানলো কেন? পৃথিবীর কেউ দেখাতে পারবে যে তিনদিনে মানুষ আইন মানা শুরু করতে শিখেছে! এর মানে আইনের সঠিক প্রয়োগ, নীতি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হলো বড় বিষয়। এই জিনিসগুলো অর্জন করতে পারলে ঢাকাকে শুধু রক্ষা করাই নয়, পৃথিবীর সেরা শহরগুলোর একটি বানানো সম্ভব এবং পৃথিবীর ভিতরে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যেই তা বানানো সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘দেশে প্রতি বছর বন্যা হয়। বন্যা প্লাবিত এলাকায় ডাকাতি হওয়ার কথা শোনা যায় না। মানুষ রিলিফ নিয়ে বন্যা প্লাবিত এলাকায় যায়। কিন্তু আমেরিকাতে বন্যায় বাঁধ ভেঙে যাওয়াতে সেনাবাহিনী নামাতে হয়েছে যাতে লুটপাট না হয় সেজন্য। কিন্তু এই পার্থক্যগুলো কেউ বিবেচনা করে না। আমরা বলি, নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলাম, সেখানে সবাই আইন মানে। কিন্তু সেখানে পাঁচ মিনিট আইনের দৃষ্টি বন্ধ করুক তারপর দেখা যাবে পরিস্থিতি কি হয়।’
ঢাকার বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতার ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তার মনের মতো কাজ করে। ঢাকা শহরের দুইজন মেয়রের একজন মশা তাড়ালেন, আরেকজন মশা তাড়ালেন না। তাহলে মশা মারার যে সুবিধা, সেটি কি পাওয়া যাবে? এই যে সমন্বয়হীনতা এর জন্য একটি প্রতিষ্ঠান এবং একজন মানুষ দরকার যাকে আমরা বলি আমব্রেলা অর্থাৎ ছাতা। এই ছাতার নির্দেশে সকলেই কাজ করবে।’ ঢাকাকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন উল্লেখ করে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘কেউ যখন অসুস্থ হয় তখন তার সব ট্রিটমেন্ট একসঙ্গে করতে হয়। বাদ দিয়ে করা যায় না। ভেঙ্গে ভেঙ্গে করা যাবে না। এইখানেই আমাদের ব্যত্যয়। একটি দেশ, রাষ্ট্র ও শহর একটি মানুষের শরীরের মতো। এখানেও সমন্বিতভাবে সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে।’
ঢাকার সিটি করপোরেশনের মেয়রদের ক্ষমতা আরো বাড়ানো প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একজন বাস ড্রাইভার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে মেয়র কি তাকে কিছু করতে পারে? পারে না। একজন পুলিশ যদি ঘুষ খায় তাহলে মেয়র তাকে বরখাস্ত করতে পারে না বা ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই এসব বিষয়ে আগে অর্জন থাকতে হবে। তাহলেই বিদেশের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে।’
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘মানুষ ট্রাফিক আইন মানে না। যখন মন্ত্রী, এমপিরা ট্রাফিক আইন মানে না তখন কেউ তা মানে না। কিন্তু এই দেশের গ্রামের মানুষগুলো যখন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যে যায় তারা তো কেউ গাড়িচাপা পড়ে না, ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে না। কারণ, সেখানে তারা আইন মানে। ঢাকা শহরের কিছু শিক্ষিত লোক অন্য দেশের বিমানবন্দরে পৌঁছে নিয়ম মানা শুরু করে। কিন্তু আমাদের বিমানবন্দরে এসেই তারা মারামারি শুরু করে দেন। এটি হয় আইনের সঠিক ও সর্বক্ষেত্রে প্রয়োগ না থাকার কারণে।’ তিনি বলেন, ‘মাত্র তিনদিনে বাচ্চারা বাংলাদেশে এমন কোনো উচ্চপর্যায়ের লোক নেই যে যাকে তারা আটকায়নি। এমনকি একজন পুলিশ কনস্টেবলকে লাইসেন্স না থাকার কারণে ওই পুলিশকে দিয়েই নিজের নামে মামলা করিয়েছে। এরকম নজির বিগত ৪৭ বছরের ইতিহাসে নেই। মানুষ যখন দেখেছে যে ছেলে মেয়েগুলো প্রত্যেককে সমানভাবে দেখছে এবং তাদের বাবার গাড়িকেও চার্জ করেছে তাই চাইলেই এই সমস্যা তিনদিনে সমাধান করা সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যারা এসব নিয়ে কাজ করি তারা বলি ৬/৭ মাস লাগবে। কিন্তু তারা তো তিনদিনেই এটি করে দেখিয়েছে। তাই এটি দ্রুতই সম্ভব বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘বেশিদূর যাওয়ার দরকার নেই, পাশেই কলকাতা। সেখানে সবাই আইন মানছে। কলকাতায় মাত্র ৪/৫ বছরে পরিবর্তন হলো কিভাবে? অথচ আমাদের চেয়ে তাদের অবস্থা খারাপ ছিল। সেখানে একটি গাড়ি জেব্রা ক্রসের লাইনের ওপরে দাড়ানোর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোবাইলে এসএমএস চলে আসে যে এত টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার বিষয়টি পুলিশও জানে না। আমাদের দেশের গাড়িতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের নম্বর প্লেট লাগানো হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই শেষ। এটি ব্যবহারের জন্য বাকি যে কাজ সেটি আর ব্যবহার করা হয়নি।’ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘দেশে আইনের প্রয়োগ হয়। কিন্তু রহিমের বেলায় হয়, করিমের বেলায় হয় না। আমাদের এ মানসিকতা পরিহার করতে হবে। যে মুহূর্তে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না তখনি রাতারাতি সবকিছু এমনিতেই বদলে যাবে।’
লন্ডনভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইইইউ)’র বার্ষিক জরিপে বিশ্বে বসবাসের অযোগ্য শহরগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে ঢাকা। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন এবং ঢাকাকে বাসযোগ্য করার উপায়ই বা কি- এমন প্রশ্নে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘যে মাপকাঠিতে ঢাকা শহরকে বসবাসের অযোগ্য বলা হয়, সেই মাপকাঠি হলো উন্নত শহরের মাপকাঠি। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ যে কত ভালো এবং কত অল্প সময়ের ভিতর আইন মানতে জানে সেটি পৃথিবীর কম দেশেই আছে।’ উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাত্র তিনদিনে ঢাকার মানুষ আইন মানা শুরু করলো। শিক্ষার্থীরা পুলিশও না, এ বিষয়ে তাদের কোনো ক্ষমতাও নেই। কিন্তু তাদের কথামতো মানুষ আইন মানলো কেন? পৃথিবীর কেউ দেখাতে পারবে যে তিনদিনে মানুষ আইন মানা শুরু করতে শিখেছে! এর মানে আইনের সঠিক প্রয়োগ, নীতি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা হলো বড় বিষয়। এই জিনিসগুলো অর্জন করতে পারলে ঢাকাকে শুধু রক্ষা করাই নয়, পৃথিবীর সেরা শহরগুলোর একটি বানানো সম্ভব এবং পৃথিবীর ভিতরে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যেই তা বানানো সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘দেশে প্রতি বছর বন্যা হয়। বন্যা প্লাবিত এলাকায় ডাকাতি হওয়ার কথা শোনা যায় না। মানুষ রিলিফ নিয়ে বন্যা প্লাবিত এলাকায় যায়। কিন্তু আমেরিকাতে বন্যায় বাঁধ ভেঙে যাওয়াতে সেনাবাহিনী নামাতে হয়েছে যাতে লুটপাট না হয় সেজন্য। কিন্তু এই পার্থক্যগুলো কেউ বিবেচনা করে না। আমরা বলি, নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলাম, সেখানে সবাই আইন মানে। কিন্তু সেখানে পাঁচ মিনিট আইনের দৃষ্টি বন্ধ করুক তারপর দেখা যাবে পরিস্থিতি কি হয়।’
ঢাকার বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতার ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তার মনের মতো কাজ করে। ঢাকা শহরের দুইজন মেয়রের একজন মশা তাড়ালেন, আরেকজন মশা তাড়ালেন না। তাহলে মশা মারার যে সুবিধা, সেটি কি পাওয়া যাবে? এই যে সমন্বয়হীনতা এর জন্য একটি প্রতিষ্ঠান এবং একজন মানুষ দরকার যাকে আমরা বলি আমব্রেলা অর্থাৎ ছাতা। এই ছাতার নির্দেশে সকলেই কাজ করবে।’ ঢাকাকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন উল্লেখ করে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘কেউ যখন অসুস্থ হয় তখন তার সব ট্রিটমেন্ট একসঙ্গে করতে হয়। বাদ দিয়ে করা যায় না। ভেঙ্গে ভেঙ্গে করা যাবে না। এইখানেই আমাদের ব্যত্যয়। একটি দেশ, রাষ্ট্র ও শহর একটি মানুষের শরীরের মতো। এখানেও সমন্বিতভাবে সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে।’
ঢাকার সিটি করপোরেশনের মেয়রদের ক্ষমতা আরো বাড়ানো প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একজন বাস ড্রাইভার ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে মেয়র কি তাকে কিছু করতে পারে? পারে না। একজন পুলিশ যদি ঘুষ খায় তাহলে মেয়র তাকে বরখাস্ত করতে পারে না বা ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই এসব বিষয়ে আগে অর্জন থাকতে হবে। তাহলেই বিদেশের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে।’
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘মানুষ ট্রাফিক আইন মানে না। যখন মন্ত্রী, এমপিরা ট্রাফিক আইন মানে না তখন কেউ তা মানে না। কিন্তু এই দেশের গ্রামের মানুষগুলো যখন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যে যায় তারা তো কেউ গাড়িচাপা পড়ে না, ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে না। কারণ, সেখানে তারা আইন মানে। ঢাকা শহরের কিছু শিক্ষিত লোক অন্য দেশের বিমানবন্দরে পৌঁছে নিয়ম মানা শুরু করে। কিন্তু আমাদের বিমানবন্দরে এসেই তারা মারামারি শুরু করে দেন। এটি হয় আইনের সঠিক ও সর্বক্ষেত্রে প্রয়োগ না থাকার কারণে।’ তিনি বলেন, ‘মাত্র তিনদিনে বাচ্চারা বাংলাদেশে এমন কোনো উচ্চপর্যায়ের লোক নেই যে যাকে তারা আটকায়নি। এমনকি একজন পুলিশ কনস্টেবলকে লাইসেন্স না থাকার কারণে ওই পুলিশকে দিয়েই নিজের নামে মামলা করিয়েছে। এরকম নজির বিগত ৪৭ বছরের ইতিহাসে নেই। মানুষ যখন দেখেছে যে ছেলে মেয়েগুলো প্রত্যেককে সমানভাবে দেখছে এবং তাদের বাবার গাড়িকেও চার্জ করেছে তাই চাইলেই এই সমস্যা তিনদিনে সমাধান করা সম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যারা এসব নিয়ে কাজ করি তারা বলি ৬/৭ মাস লাগবে। কিন্তু তারা তো তিনদিনেই এটি করে দেখিয়েছে। তাই এটি দ্রুতই সম্ভব বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘বেশিদূর যাওয়ার দরকার নেই, পাশেই কলকাতা। সেখানে সবাই আইন মানছে। কলকাতায় মাত্র ৪/৫ বছরে পরিবর্তন হলো কিভাবে? অথচ আমাদের চেয়ে তাদের অবস্থা খারাপ ছিল। সেখানে একটি গাড়ি জেব্রা ক্রসের লাইনের ওপরে দাড়ানোর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মোবাইলে এসএমএস চলে আসে যে এত টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার বিষয়টি পুলিশও জানে না। আমাদের দেশের গাড়িতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের নম্বর প্লেট লাগানো হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই শেষ। এটি ব্যবহারের জন্য বাকি যে কাজ সেটি আর ব্যবহার করা হয়নি।’ মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘দেশে আইনের প্রয়োগ হয়। কিন্তু রহিমের বেলায় হয়, করিমের বেলায় হয় না। আমাদের এ মানসিকতা পরিহার করতে হবে। যে মুহূর্তে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না তখনি রাতারাতি সবকিছু এমনিতেই বদলে যাবে।’
No comments