৩ সন্তান নিয়ে জীবনযুদ্ধে সাইফুলের স্ত্রী by রুদ্র মিজান
জন্মের
পর বাবার মুখ দেখা হয়নি। অবাক দৃষ্টিতে দেয়ালে টাঙানো ছবির দিকে তাকিয়ে
থাকে ২১ মাসের ছেলে শিশু হাসান। ছবির দিকে চেয়ে ‘আব্বু. আব্বু’ বলে ডাকে।
ছবির মানুষটির কোনো সাড়া-শব্দ নেই। পুত্রের ডাকে সাড়া দেয়ার ক্ষমতা নেই
ছবির এই মানুষটির। এই দৃশ্য দেখে আড়ালে চোখের জল ফেলেন সাইফুলের স্ত্রী
সোনিয়া।
শিশুটি জন্মের তিন মাস আগেই তার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌকিদার নিহত হয়েছেন। আলোচিত হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ঘটনায় মারা যান তিনি। সাইফুল ছিলেন হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের পাচক।
সাইফুলের তিন সন্তান। তার মৃত্যুর তিন মাস পরে জন্ম হয় একমাত্র ছেলে হাসানের। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়া জানান, বড় মেয়ে সামিয়া পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে ইমলি। সাইফুল বাড়ির বাইরে থাকলে প্রতিদিন অন্তত একবার ইমলির সঙ্গে কথা বলতেন। স্ত্রীর সঙ্গে কথা না হলেও মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে ভুল হতো না তার। হলি আর্টিজানে কাজ নেয়ার পর ব্যস্ততার মধ্যেও ফোনে কথা বলতেন। শিশু সন্তানের সঙ্গে নানা গল্প করতেন। ফোনের রিংটোন বেজে উঠলে এখনো দৌড়ে কাছে যায় ইমলি। তারপর হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়। হয়তো তখনই মনে পড়ে যায় তার বাবা সাইফুল আর নেই। কখনো কখনো অভিমান করে। কারও সঙ্গে কথা বলে না ছোট্ট মেয়েটি। মায়ের কাছে জানতে চায়, সবার আব্বু ছুটিতে বাড়ি আসে, আমার আব্বু আসে না কেন? আর কখনো আসবে না।
সোনিয়া বলেন, সন্তানদের কথা শুনে চুপ করে থাকি। জবাব দিতে পারি না। কান্না পেলে সন্তানদের চোখের আড়ালে গিয়ে কাঁদি। একইভাবে সাইফুলের স্মৃতিচারণ করে কান্নাকাটি করেন তার মা সমেরা বেগম।
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন সাইফুল। সোনিয়া বলেন, সাইফুল মারা যাওয়ার পর সন্তানদের নিয়ে অসহায়ভাবে দিনাতিপাত করছেন। তার মৃত্যুর পর এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতি মাসে সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়ার বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছেন তারা। সোনিয়ার রয়েছে একটি সেলাই মেশিন। সেলাই মেশিনে কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন তিনি। এভাবেই চলছে নিহত সাইফুলের সংসার।
দুই বছর আগে ১লা জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের সঙ্গে লাশ মেলায় সাইফুল জঙ্গি কিনা এমন প্রশ্ন দেখা দেয়। হলি আর্টিজানে হামলাকারী হিসেবে পাঁচজনের লাশের ছবি সাংবাদিকদের পাঠায় পুলিশ। তার আগেই জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বরাতে পাঁচ হামলাকারীর ছবি আসে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের মাধ্যমে। পুলিশের পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে চারটির সঙ্গে আইএসের দেয়া চারজনের ছবির মিল পাওয়া গেলেও মিলছিল না পাঁচকের পোশাক পরা একজনের চেহারায়। পরে সাদা অ্যাপ্রণ পরা ওই ব্যক্তিকে হলি আর্টিজানে পাচক সাইফুল ইসলাম চৌকিদার বলে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। পাচক বা শেফ হিসেবে সাইফুল ১০ বছর ছিলেন জার্মানিতে। সেখান থেকে ফিরে কাজ নেন হলি আর্টিজানে। টেলিভিশনে হলি আর্টিজানে হামলার খবর দেখে বারবার সাইফুলের ফোনে কল দিচ্ছিলেন স্বজনরা। এর মধ্যেই নিহতদের ছবি প্রকাশ করে টেলিভিশন। শুরু হয় আহাজারি। ঢাকায় এসে সাইফুলের লাশ শনাক্ত করেন। এমনকি লাশ শনাক্তের জন্য সাইফুলের মা সমেরা বেগমকে ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকায় আনা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাইফুল জঙ্গি কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত সাইফুল ইসলাম চৌকিদার শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রামের মৃত আবুল হাসেম চৌকিদারের ছেলে।
শিশুটি জন্মের তিন মাস আগেই তার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌকিদার নিহত হয়েছেন। আলোচিত হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ঘটনায় মারা যান তিনি। সাইফুল ছিলেন হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টের পাচক।
সাইফুলের তিন সন্তান। তার মৃত্যুর তিন মাস পরে জন্ম হয় একমাত্র ছেলে হাসানের। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়া জানান, বড় মেয়ে সামিয়া পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে ইমলি। সাইফুল বাড়ির বাইরে থাকলে প্রতিদিন অন্তত একবার ইমলির সঙ্গে কথা বলতেন। স্ত্রীর সঙ্গে কথা না হলেও মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে ভুল হতো না তার। হলি আর্টিজানে কাজ নেয়ার পর ব্যস্ততার মধ্যেও ফোনে কথা বলতেন। শিশু সন্তানের সঙ্গে নানা গল্প করতেন। ফোনের রিংটোন বেজে উঠলে এখনো দৌড়ে কাছে যায় ইমলি। তারপর হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়। হয়তো তখনই মনে পড়ে যায় তার বাবা সাইফুল আর নেই। কখনো কখনো অভিমান করে। কারও সঙ্গে কথা বলে না ছোট্ট মেয়েটি। মায়ের কাছে জানতে চায়, সবার আব্বু ছুটিতে বাড়ি আসে, আমার আব্বু আসে না কেন? আর কখনো আসবে না।
সোনিয়া বলেন, সন্তানদের কথা শুনে চুপ করে থাকি। জবাব দিতে পারি না। কান্না পেলে সন্তানদের চোখের আড়ালে গিয়ে কাঁদি। একইভাবে সাইফুলের স্মৃতিচারণ করে কান্নাকাটি করেন তার মা সমেরা বেগম।
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন সাইফুল। সোনিয়া বলেন, সাইফুল মারা যাওয়ার পর সন্তানদের নিয়ে অসহায়ভাবে দিনাতিপাত করছেন। তার মৃত্যুর পর এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতি মাসে সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়ার বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছেন তারা। সোনিয়ার রয়েছে একটি সেলাই মেশিন। সেলাই মেশিনে কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন তিনি। এভাবেই চলছে নিহত সাইফুলের সংসার।
দুই বছর আগে ১লা জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের সঙ্গে লাশ মেলায় সাইফুল জঙ্গি কিনা এমন প্রশ্ন দেখা দেয়। হলি আর্টিজানে হামলাকারী হিসেবে পাঁচজনের লাশের ছবি সাংবাদিকদের পাঠায় পুলিশ। তার আগেই জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বরাতে পাঁচ হামলাকারীর ছবি আসে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের মাধ্যমে। পুলিশের পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে চারটির সঙ্গে আইএসের দেয়া চারজনের ছবির মিল পাওয়া গেলেও মিলছিল না পাঁচকের পোশাক পরা একজনের চেহারায়। পরে সাদা অ্যাপ্রণ পরা ওই ব্যক্তিকে হলি আর্টিজানে পাচক সাইফুল ইসলাম চৌকিদার বলে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। পাচক বা শেফ হিসেবে সাইফুল ১০ বছর ছিলেন জার্মানিতে। সেখান থেকে ফিরে কাজ নেন হলি আর্টিজানে। টেলিভিশনে হলি আর্টিজানে হামলার খবর দেখে বারবার সাইফুলের ফোনে কল দিচ্ছিলেন স্বজনরা। এর মধ্যেই নিহতদের ছবি প্রকাশ করে টেলিভিশন। শুরু হয় আহাজারি। ঢাকায় এসে সাইফুলের লাশ শনাক্ত করেন। এমনকি লাশ শনাক্তের জন্য সাইফুলের মা সমেরা বেগমকে ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকায় আনা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাইফুল জঙ্গি কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত সাইফুল ইসলাম চৌকিদার শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রামের মৃত আবুল হাসেম চৌকিদারের ছেলে।
No comments