রাঙ্গামাটিতে পাচার হচ্ছে বনের চারাগাছ by আলমগীর মানিক
রাঙ্গামাটিতে
প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কাঠ পাচারের অন্যতম স্থান রাঙ্গামাটির
মানিকছড়িতে চলতি মৌসুমেও থেমে নেই কাঠ পাচার। জ্বালানি কাঠের নাম করে ৫
জনের অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও কতিপয় কর্মকর্তার মাধ্যমে কোটি টাকার
চারাগাছ পাচার হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সকলের চোখের সামনে দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে।
এই সিন্ডিকেটটির এবারের টার্গেট কুতুকছড়ি রেঞ্জের বিক্রয় ও কর্তন নিষিদ্ধ
প্রাকৃতিক বনজ গাছ। ইতিমধ্যেই এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কুতুকছড়ি রেঞ্জের
আওতাধীন অনেকগুলো এলাকার প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে রাঙ্গুনিয়া-রাউজানের
ইটভাটাগুলোতে অবাধে পাচার করা হয়েছে হাজার হাজার চারাগাছ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের এই সময়টাতে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় মানিকছড়িতে নৌ-যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে কয়েকমাস পর্যন্ত উক্ত এলাকা থেকে জ্বালানি কাঠভর্তি কোনো গাড়ি যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও মানিকছড়ি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪৫টি পর্যন্ত জ্বালানি কাঠভর্তি গাড়ি রাঙ্গুনিয়া-রাউজানের ইটের ভাটাগুলোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিষয়টির খোঁজ নিতে গিয়ে কেঁচু খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার অবস্থা। এলাকাবাসীরে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাঙ্গামাটির বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে মানিকছড়ির ৫ থেকে সাতজনের প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে জুম নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অধীনস্থ কুতুকছড়ি-ঘিলাছড়ির বনাঞ্চলের চারা গাছগুলো কেটে জ্বালানি কাঠের নাম করে পাচার করা হচ্ছে অবাধে।
সরজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র পরিলক্ষিত করা গেছে। বেলা ১২টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সময়ে কুতুকছড়ির নিকটস্থ খামার পাড়া, বোধিপুর ও কেসিং এই তিন এলাকা থেকে কাঠ ভর্তি করে একের একের জিপ গাড়ি মানিকছড়ির মুখে অবস্থান করে। পরে সেখান থেকে টিপি প্রদর্শন করে অন্তত দুইশো ফুট জ্বালানি কাঠভর্তি প্রতিটি জিপ গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে ইটভাটার গন্তব্যে। এই ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, আমরা বনবিভাগ থেকে বৈধভাবে টিপি সংগ্রহ করে সেটির মাধ্যমেই ব্যবসা করছি। বৈধ ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন, সদর রেঞ্জের অথরিটিতে এই রুট থেকে জ্বালানি কাঠ ভর্তি জিপ গাড়ি ছাড়ার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ চারাগাছ কর্তন করে জ্বালানি কাঠ হিসেবে পাচার করা হচ্ছে বৈধ দেখিয়ে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বনবিভাগের সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানান, আমরা বিসিক শিল্পনগরী মাঠ থেকে জ্বালানি কাঠ পরিবহনের জন্য টিপি বরাদ্দ দিয়েছি। তিনি জানান, আমরা প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫টি টিপি দিয়েছি। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি টিপির বিপরীতে জ্বালানি কাঠ নেয়ার নিয়ম রয়েছে ৮০ সিএফটি। কিন্তু মানিকছড়ি চেকপোস্ট দিয়ে অতিক্রম করা জিপগুলোতে ১৭০ থেকে ২শ’ ফুট পর্যন্ত জ্বালানি কাঠ ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির অন্যতম প্রবেশ মুখ মানিকছড়ি হচ্ছে কয়েকটি রুটের অন্তস্থল। এই রুটটি দিয়ে পাচার হওয়া জ্বালানি কাঠবাহী জিপ গাড়িগুলো থেকে প্রতিরাতে আদায় করা হয় অন্তত ৪ হাজার ৬ শত টাকা করে। সংশ্লিষ্টদের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে চলা ৭ জনের সিন্ডিকেট চক্র এসব ক্ষুদ্র জ্বালানি কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গাড়ি প্রতি এই টাকাটি আদায় করে। তাদের হিসাবমতে আদায়কৃত এই টাকার একটি বড় অংশই (১৮০০/১০০০) আঞ্চলিক প্রধান দুটি দলকে দিতে হয়। এ ছাড়াও আরো অন্তত সাতটি খাতে যথাক্রমে, ৫০০, ১০০, ৩০০, ৫০০, ১০০, ১০০, ২০০ টাকা মিলে সর্বমোট ১৮শ টাকা। এই বিষয়ে জানতে সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রিটন বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই। অপরদিকে মানিকছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ইউছুপ বলেন, আমাদের পুলিশের কেউ এই ধরনের টাকা-পয়সার ব্যাপারে জড়িত নয়। এই বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কোনো তথ্যও নেই। এদিকে, স্থানীয় একাধিক সূত্র
জানিয়েছে, কুতুকছড়ির কেসিং, খামার পাড়া, বোধিপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকায় ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মণ চারাগাছ মজুদ করে রেখেছে সেই একই সিন্ডিকেট চক্র। জানাগেছে, স্থানীয় সিন্ডিকেট চক্র কর্তৃক অবৈধভাবে জ্বালানি কাঠ মজুদ করে রাখলে সেখানে বনবিভাগ কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে সেসব কাঠ পরবর্তীতে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বনবিভাগ বিশেষ কাগজ টিপি ইস্যু করে। এই টিপির মাধ্যমেই প্রতিটি জিপ বা চাঁদের গাড়িতে করে সর্বোচ্চ ৮০ সিএফটি জ্বালানি কাঠ পরিবহন করতে পারে সংশ্লিষ্ট টিপি বহনকারী ব্যবসায়ী। কিন্তু বর্তমানে মানিকছড়ির বিসিক এলাকাকে দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টিপির বিপরীতে উক্ত এলাকায় সরজমিনে গিয়ে কোনো কাঠের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। দেখা গেছে সেই খামার পাড়া, বোধিপুর ও কেসিং এলাকা থেকে এই ১৭০ থেকে ২২০ সিএফটি কাঠ ভর্তি জিপ গাড়িগুলো তথাকথিত টিপি প্রদর্শন করে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে খুব শিগগিরই অত্রাঞ্চলের পাহাড়গুলো ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের এই সময়টাতে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় মানিকছড়িতে নৌ-যান চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে কয়েকমাস পর্যন্ত উক্ত এলাকা থেকে জ্বালানি কাঠভর্তি কোনো গাড়ি যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও মানিকছড়ি থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪৫টি পর্যন্ত জ্বালানি কাঠভর্তি গাড়ি রাঙ্গুনিয়া-রাউজানের ইটের ভাটাগুলোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিষয়টির খোঁজ নিতে গিয়ে কেঁচু খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার অবস্থা। এলাকাবাসীরে সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাঙ্গামাটির বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে মানিকছড়ির ৫ থেকে সাতজনের প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে জুম নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অধীনস্থ কুতুকছড়ি-ঘিলাছড়ির বনাঞ্চলের চারা গাছগুলো কেটে জ্বালানি কাঠের নাম করে পাচার করা হচ্ছে অবাধে।
সরজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র পরিলক্ষিত করা গেছে। বেলা ১২টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সময়ে কুতুকছড়ির নিকটস্থ খামার পাড়া, বোধিপুর ও কেসিং এই তিন এলাকা থেকে কাঠ ভর্তি করে একের একের জিপ গাড়ি মানিকছড়ির মুখে অবস্থান করে। পরে সেখান থেকে টিপি প্রদর্শন করে অন্তত দুইশো ফুট জ্বালানি কাঠভর্তি প্রতিটি জিপ গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে ইটভাটার গন্তব্যে। এই ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, আমরা বনবিভাগ থেকে বৈধভাবে টিপি সংগ্রহ করে সেটির মাধ্যমেই ব্যবসা করছি। বৈধ ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন, সদর রেঞ্জের অথরিটিতে এই রুট থেকে জ্বালানি কাঠ ভর্তি জিপ গাড়ি ছাড়ার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ চারাগাছ কর্তন করে জ্বালানি কাঠ হিসেবে পাচার করা হচ্ছে বৈধ দেখিয়ে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বনবিভাগের সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানান, আমরা বিসিক শিল্পনগরী মাঠ থেকে জ্বালানি কাঠ পরিবহনের জন্য টিপি বরাদ্দ দিয়েছি। তিনি জানান, আমরা প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫টি টিপি দিয়েছি। বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি টিপির বিপরীতে জ্বালানি কাঠ নেয়ার নিয়ম রয়েছে ৮০ সিএফটি। কিন্তু মানিকছড়ি চেকপোস্ট দিয়ে অতিক্রম করা জিপগুলোতে ১৭০ থেকে ২শ’ ফুট পর্যন্ত জ্বালানি কাঠ ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির অন্যতম প্রবেশ মুখ মানিকছড়ি হচ্ছে কয়েকটি রুটের অন্তস্থল। এই রুটটি দিয়ে পাচার হওয়া জ্বালানি কাঠবাহী জিপ গাড়িগুলো থেকে প্রতিরাতে আদায় করা হয় অন্তত ৪ হাজার ৬ শত টাকা করে। সংশ্লিষ্টদের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে চলা ৭ জনের সিন্ডিকেট চক্র এসব ক্ষুদ্র জ্বালানি কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গাড়ি প্রতি এই টাকাটি আদায় করে। তাদের হিসাবমতে আদায়কৃত এই টাকার একটি বড় অংশই (১৮০০/১০০০) আঞ্চলিক প্রধান দুটি দলকে দিতে হয়। এ ছাড়াও আরো অন্তত সাতটি খাতে যথাক্রমে, ৫০০, ১০০, ৩০০, ৫০০, ১০০, ১০০, ২০০ টাকা মিলে সর্বমোট ১৮শ টাকা। এই বিষয়ে জানতে সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রিটন বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই। অপরদিকে মানিকছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ইউছুপ বলেন, আমাদের পুলিশের কেউ এই ধরনের টাকা-পয়সার ব্যাপারে জড়িত নয়। এই বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কোনো তথ্যও নেই। এদিকে, স্থানীয় একাধিক সূত্র
জানিয়েছে, কুতুকছড়ির কেসিং, খামার পাড়া, বোধিপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকায় ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মণ চারাগাছ মজুদ করে রেখেছে সেই একই সিন্ডিকেট চক্র। জানাগেছে, স্থানীয় সিন্ডিকেট চক্র কর্তৃক অবৈধভাবে জ্বালানি কাঠ মজুদ করে রাখলে সেখানে বনবিভাগ কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে সেসব কাঠ পরবর্তীতে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বনবিভাগ বিশেষ কাগজ টিপি ইস্যু করে। এই টিপির মাধ্যমেই প্রতিটি জিপ বা চাঁদের গাড়িতে করে সর্বোচ্চ ৮০ সিএফটি জ্বালানি কাঠ পরিবহন করতে পারে সংশ্লিষ্ট টিপি বহনকারী ব্যবসায়ী। কিন্তু বর্তমানে মানিকছড়ির বিসিক এলাকাকে দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টিপির বিপরীতে উক্ত এলাকায় সরজমিনে গিয়ে কোনো কাঠের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। দেখা গেছে সেই খামার পাড়া, বোধিপুর ও কেসিং এলাকা থেকে এই ১৭০ থেকে ২২০ সিএফটি কাঠ ভর্তি জিপ গাড়িগুলো তথাকথিত টিপি প্রদর্শন করে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে খুব শিগগিরই অত্রাঞ্চলের পাহাড়গুলো ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হবে।
No comments