মাদকবিরোধী অভিযান: মূল হোতারা আত্মগোপনে by রুদ্র মিজান
একের
পর এক মাদকবিরোধী অভিযানে গা-ঢাকা দিয়েছে মাদক ব্যবসার মূল হোতারা। এই
কয়েকদিনে বিপুল মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার হলেও মূল ব্যবসায়ীরা রয়ে গেছে
ধরাছোঁয়ার আড়ালে। অভিযানের কারণে রাজধানীতে মাদক সেবন ও যত্রতত্র বিক্রি
কমেছে। তবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সাবধানতার সঙ্গে মাদক
বিক্রি করছে নারী মাদক বিক্রেতারা। বিক্রির কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে
শিশু-কিশোরদের। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, পল্লবী, গুলিস্তান, কাওরানবাজার এলাকা
ঘুরে দেখা গেছে এসব দৃশ্য। ৪ঠা মে থেকে ২৪শে মে পর্যন্ত ৬৩৮টি অভিযান
চালিয়েছে র্যাব। অভিযানে ৭৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই কয়েকদিনের
অভিযানে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা মূল্যের মাদক জব্দ করা হয়েছে । মাদকদ্রব্য
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে মাদকের অন্তত ৬শ’ বড় মাপের ব্যবসায়ী
বা ডিলার রয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, ঢাকায় অন্তত ১শ’ ডিলার
রয়েছে। তারা আত্মগোপনে থেকেই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।
মোহাম্মদপুরে একাধিক বাড়ি ভাড়া করে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে জয়নাল আবেদিন পাচু ও তার স্ত্রী পাপিয়া। আজিজ মহল্লার জয়েন্ট কোয়ার্টারের ৭/৪/এ নম্বর বাড়িটি তাদের হলেও র্যাবের অভিযানের পর থেকে ওই বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছে এই মাদক ব্যবসায়ী দম্পতি। এক সময়ে আদাবরের ছয় নম্বর সড়কের ১০৯ নম্বর জাপানি বাড়িতে থেকে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতো তারা। এই দম্পতির অধীনে রয়েছে অর্ধশত খুচরা বিক্রেতা। বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর এলাকায় মাদক ব্যবসার মূল হোতা ইসতিয়াক। ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে সে। মাঝে-মধ্যে বিলাসবহুল গাড়িতে করে মোহাম্মদপুরে এলেও অভিযান শুরু পর থেকে দেখা মিলছে না তার। স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার প্রশ্রয়ে থাকার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা পরিচালনা করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। আদনান তানভীর নামে ইসতিয়াকের এক পার্সোনাল সেক্রেটারি রয়েছে। তানভীর থাকে হেমায়েতপুরে। সে মূলত ইসতিয়াকের মাদক ব্যবসার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা।
জানা গেছে, এই অভিযানের মধ্যেও থেমে নেই মিরপুরের আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী কাল্লু, এডিসি ক্যাম্পের ফারদিন বাবরের মাদক ব্যবসা। তাদের লোকজন নীরবে মাদক বিক্রি করছে। বাবরকে এলাকায় বাবর হিজড়া হিসেবে চেনেন। মিরপুর-১১ ও ১২ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তাদের অর্ধশত খুচরা মাদক বিক্রেতা সক্রিয় রয়েছে ওই এলাকায়। বাবরের সহযোগীরা এডিসি ক্যাম্প সংলগ্ন সিটি করপোরেশনের পরিত্যক্ত মার্কেটের আশপাশে অবস্থান নিয়ে ইয়াবা বিক্রি করে। বাবরের খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে রুবেল, আবুলসহ অন্তত ১০-১২ জন কিশোর রয়েছে। যাদের দিয়ে ইয়াবা বিক্রি করায় বাবর। অভিযান শুরুর পর বাবরকে ওই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তবে, তার অধীনে মাদক ব্যবসায় জড়িত খুচরা বিক্রেতাদের দেখা গেছে ওই এলাকায়।
পল্লবীর সি ব্লকের ১২ নম্বর সড়কের ২২ নম্বর বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে প্রতিনিয়ত ১০-১২ জন কিশোরকে অবস্থান করতে দেখেছেন আশপাশের লোকজন। কিশোরদের সম্পর্কে ওই ফ্ল্যাটের মালিক সেলিনা প্রতিবেশীদের জানান, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের লালন-পালন করেন তিনি। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর তথ্য, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বাসায় রেখে লালন-পালন করার নামে তাদের দিয়ে ইয়াবা বিক্রি করেন এই নারী। সারাদিন বাসায় ইয়াবার নেশায় বুঁদ করে রাখা হয় কিশোরদের। সন্ধ্যার পরপর ইয়াবা দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। টাকা নেয়া হয় বিকাশে-রকেটে। গত মার্চে সেলিনার বাসা থেকে আল-আমিন নামে এক কিশোরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আল-আমিনের মা-বাবার অভিযোগ তাকে নেশায় বুঁদ করে রাখা হয়েছিল। আল-আমিনকে দিয়ে মাদক বিক্রি করাতো সেলিনা। কিছুদিন আগে তার বাসায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে বাসায় তালা দিয়ে সেলিনাসহ বাসার সবাই পালিয়ে যায়। ডিবির উপ-কমিশনার মোখলেছুর রহমান জানিয়েছেন, এসব মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
সূত্রমতে, কালশি মোড়ের লালমাট এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করছে মোসাম্মৎ পাপিয়া। ওই এলাকার একাধিক বাড়ির মালিক পাপিয়া। তার অধীনে ১০-১২ জন নারী ইয়াবা বিক্রি করে। অভিযান শুরুর পর থেকে সাবধানতা অবলম্বন করছে এই চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থেকে রক্ষা পেতে সার্বক্ষণিক বাসার সামনে রয়েছে পাহারা। বাসার আশপাশে অচেনা কাউকে অবস্থান করতে দেখলেই খবর পৌঁছে যায় পাপিয়ার কাছে। পাহারার দায়িত্বে রয়েছে এক চা দোকানি। ওই দোকান থেকেই স্থানীয় থানার কয়েক অসাধু মাসোহারা নিয়ে থাকে বলে এলাকার লোকজন জানান।
একইভাবে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় নাজমা, পারভিন, রহিমাসহ বেশ কয়েক নারী সক্রিয়ভাবে মাদক বিক্রি করছে। তাদের প্রত্যেকের রয়েছে ১০-১২ জন করে নারী ও শিশু মাদক বিক্রেতা। এসব বিষয়ে র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম বলেন, কৌশলে বিভিন্নস্থানে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যেসব স্থানে এখনো মাদক বিক্রি হচ্ছে তার তথ্যও আমাদের কাছে রয়েছে। একে-একে সব স্থানেই অভিযান হবে। কোনোভাবেই মাদকের সঙ্গে যুক্তদের ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদপুরে একাধিক বাড়ি ভাড়া করে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে জয়নাল আবেদিন পাচু ও তার স্ত্রী পাপিয়া। আজিজ মহল্লার জয়েন্ট কোয়ার্টারের ৭/৪/এ নম্বর বাড়িটি তাদের হলেও র্যাবের অভিযানের পর থেকে ওই বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছে এই মাদক ব্যবসায়ী দম্পতি। এক সময়ে আদাবরের ছয় নম্বর সড়কের ১০৯ নম্বর জাপানি বাড়িতে থেকে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতো তারা। এই দম্পতির অধীনে রয়েছে অর্ধশত খুচরা বিক্রেতা। বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর এলাকায় মাদক ব্যবসার মূল হোতা ইসতিয়াক। ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে সে। মাঝে-মধ্যে বিলাসবহুল গাড়িতে করে মোহাম্মদপুরে এলেও অভিযান শুরু পর থেকে দেখা মিলছে না তার। স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার প্রশ্রয়ে থাকার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা পরিচালনা করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। আদনান তানভীর নামে ইসতিয়াকের এক পার্সোনাল সেক্রেটারি রয়েছে। তানভীর থাকে হেমায়েতপুরে। সে মূলত ইসতিয়াকের মাদক ব্যবসার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা।
জানা গেছে, এই অভিযানের মধ্যেও থেমে নেই মিরপুরের আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী কাল্লু, এডিসি ক্যাম্পের ফারদিন বাবরের মাদক ব্যবসা। তাদের লোকজন নীরবে মাদক বিক্রি করছে। বাবরকে এলাকায় বাবর হিজড়া হিসেবে চেনেন। মিরপুর-১১ ও ১২ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তাদের অর্ধশত খুচরা মাদক বিক্রেতা সক্রিয় রয়েছে ওই এলাকায়। বাবরের সহযোগীরা এডিসি ক্যাম্প সংলগ্ন সিটি করপোরেশনের পরিত্যক্ত মার্কেটের আশপাশে অবস্থান নিয়ে ইয়াবা বিক্রি করে। বাবরের খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে রুবেল, আবুলসহ অন্তত ১০-১২ জন কিশোর রয়েছে। যাদের দিয়ে ইয়াবা বিক্রি করায় বাবর। অভিযান শুরুর পর বাবরকে ওই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তবে, তার অধীনে মাদক ব্যবসায় জড়িত খুচরা বিক্রেতাদের দেখা গেছে ওই এলাকায়।
পল্লবীর সি ব্লকের ১২ নম্বর সড়কের ২২ নম্বর বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে প্রতিনিয়ত ১০-১২ জন কিশোরকে অবস্থান করতে দেখেছেন আশপাশের লোকজন। কিশোরদের সম্পর্কে ওই ফ্ল্যাটের মালিক সেলিনা প্রতিবেশীদের জানান, সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের লালন-পালন করেন তিনি। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর তথ্য, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বাসায় রেখে লালন-পালন করার নামে তাদের দিয়ে ইয়াবা বিক্রি করেন এই নারী। সারাদিন বাসায় ইয়াবার নেশায় বুঁদ করে রাখা হয় কিশোরদের। সন্ধ্যার পরপর ইয়াবা দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। টাকা নেয়া হয় বিকাশে-রকেটে। গত মার্চে সেলিনার বাসা থেকে আল-আমিন নামে এক কিশোরকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আল-আমিনের মা-বাবার অভিযোগ তাকে নেশায় বুঁদ করে রাখা হয়েছিল। আল-আমিনকে দিয়ে মাদক বিক্রি করাতো সেলিনা। কিছুদিন আগে তার বাসায় অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে বাসায় তালা দিয়ে সেলিনাসহ বাসার সবাই পালিয়ে যায়। ডিবির উপ-কমিশনার মোখলেছুর রহমান জানিয়েছেন, এসব মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
সূত্রমতে, কালশি মোড়ের লালমাট এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করছে মোসাম্মৎ পাপিয়া। ওই এলাকার একাধিক বাড়ির মালিক পাপিয়া। তার অধীনে ১০-১২ জন নারী ইয়াবা বিক্রি করে। অভিযান শুরুর পর থেকে সাবধানতা অবলম্বন করছে এই চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থেকে রক্ষা পেতে সার্বক্ষণিক বাসার সামনে রয়েছে পাহারা। বাসার আশপাশে অচেনা কাউকে অবস্থান করতে দেখলেই খবর পৌঁছে যায় পাপিয়ার কাছে। পাহারার দায়িত্বে রয়েছে এক চা দোকানি। ওই দোকান থেকেই স্থানীয় থানার কয়েক অসাধু মাসোহারা নিয়ে থাকে বলে এলাকার লোকজন জানান।
একইভাবে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় নাজমা, পারভিন, রহিমাসহ বেশ কয়েক নারী সক্রিয়ভাবে মাদক বিক্রি করছে। তাদের প্রত্যেকের রয়েছে ১০-১২ জন করে নারী ও শিশু মাদক বিক্রেতা। এসব বিষয়ে র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম বলেন, কৌশলে বিভিন্নস্থানে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যেসব স্থানে এখনো মাদক বিক্রি হচ্ছে তার তথ্যও আমাদের কাছে রয়েছে। একে-একে সব স্থানেই অভিযান হবে। কোনোভাবেই মাদকের সঙ্গে যুক্তদের ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
No comments