মূল্যবৃদ্ধির শঙ্কায় স্বল্প-আয়ের মানুষ by জি এম রুমি
সরকারি
চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ার পরে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে; এ শঙ্কা সীমিত
আয়ের মানুষের। এতে চাপের মুখে পড়বে স্বল্প আয়ের বেসরকারি চাকরিজীবী ও
শ্রমজীবীদের জীবনযাত্রা। গত ১৫ই ডিসেম্বর প্রকাশ হয় সরকারি
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত অষ্টম বেতন স্কেলের গেজেট। গত ৭ই
সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা মূল ধরে এ
বেতন কাঠামো মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়; যাতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন
দ্বিগুণ হয়। আগামী জানুয়ারি থেকে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ২১ লাখ
চাকরিজীবীর জন্য নতুন এ বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এমন খবরে
ইতিমধ্যেই শাকসবজি, মাছ, মাংসসহ অন্যান্য সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম বাড়তে
শুরু করেছে। এমনকি রাজধানীতে বাসাভাড়া বাড়ানোরও ঘোষণা দিয়েছেন বাড়ির
মালিকরা।
রাজধানীর বংশালে ভাড়া বাসায় থাকেন আশরাফ। চাকরি করেন একটি ক্লিনিকে। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে টেনেটুনে কোনো রকম মাস পার করেন। আশরাফ বলেন, দিন দিন বাজারমূল্য বেড়ে চলছে; কিন্তু আয়-ইনকাম একই রয়েছে তিন বছর ধরে। তার ওপর আবার সরকারি চাকরিওয়ালাদের বেতন বাড়বে; এত বাজারের ওপর প্রভাব পড়বে। সংসার আর টেনেটুনেও চালাতে পারবো না। বরিশালের ছেলে মাইনুল হোসেন ঢাকার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। বাড়ি থেকে পাঠানো কিছু টাকা আর টিউশনির আয় দিয়ে খরচ চালান। মাস শেষে চলে ধার-দেনায়। এখনও চাকরি মেলেনি। তার ভাষ্য, পাঁচ বছর ধরে ঢাকায় আছি। দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। অথচ আমরা যারা ঢাকা শহরে বেঁচে থাকার লড়াই করি, তাদের সে হারে কোনো আয়-ইনকাম বাড়েনি। একপ্রকার আমরা যারা বেকার, মূল্যবৃদ্ধি পেলে আমাদের কষ্টটা আরও একটু বাড়বে বৈকি। বেতন বাড়বে শুনেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে চলছে। তাদের (সরকারি চাকরিজীবী) না হয় বেতন দিগুণ হবে, কিন্তু আমরা যারা দিন আনি দিন খাই তাদের কী হবে? প্রশ্ন রাখেন সিএনজিচালক মোশারফ হোসেন। বেতন বাড়ায় অস্বাভাবিক হারে যাতে দ্রব্যমূল্য না বাড়ে সে জন্য সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বানও জানান মোশারফ।
টাকা গুনে গুনে বাজার করতে হয় গৃহিণী রোমানা শারমিনের। স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। রোমানা বলেন, বাড়িওয়ালা নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছেন; জানুয়ারিতে বাড়তি ভাড়া দিতে হবে। স্বামীর সীমিত আয়ে বাসাভাড়া দিয়ে বাকি টাকায় হিসাব করে করে পুরও মাস চলতে হয়। এ অবস্থায় কিছুদিন পর পর দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে ম্যানেজ করাটা কঠিন হবে। তবে বেতন বাড়ার পরে মূল্যস্ফীতি হবে না জানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বিগত পে-স্কেল বিবেচনায় দেখা গেছে। বেতন বাড়লে খুব একটা মূল্যস্ফীতি হয় না। ফলে এতে বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। আর বেসরকারি চাকরিজীবীদের ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা আছে, এর বাইরে তাদের জন্য সরকারের আর কী করতে পারে? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তার পরও যদি বাজার বাড়ে তাহলে সরকার তা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণমাধ্যম, শিল্প-কারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদেরও আনুপাতিক হারে বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কার্যকর ভূমিকা নেয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহম্মদ। তিনি বলেন, বেতন বাড়লে দ্রব্যমূল্য তো বৃদ্ধি পাবেই; এর প্রভাবও পড়বে জনজীবনে। মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারকে বাজার মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেয়ার কথাও বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক।
রাজধানীর বংশালে ভাড়া বাসায় থাকেন আশরাফ। চাকরি করেন একটি ক্লিনিকে। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে টেনেটুনে কোনো রকম মাস পার করেন। আশরাফ বলেন, দিন দিন বাজারমূল্য বেড়ে চলছে; কিন্তু আয়-ইনকাম একই রয়েছে তিন বছর ধরে। তার ওপর আবার সরকারি চাকরিওয়ালাদের বেতন বাড়বে; এত বাজারের ওপর প্রভাব পড়বে। সংসার আর টেনেটুনেও চালাতে পারবো না। বরিশালের ছেলে মাইনুল হোসেন ঢাকার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করেছেন। বাড়ি থেকে পাঠানো কিছু টাকা আর টিউশনির আয় দিয়ে খরচ চালান। মাস শেষে চলে ধার-দেনায়। এখনও চাকরি মেলেনি। তার ভাষ্য, পাঁচ বছর ধরে ঢাকায় আছি। দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। অথচ আমরা যারা ঢাকা শহরে বেঁচে থাকার লড়াই করি, তাদের সে হারে কোনো আয়-ইনকাম বাড়েনি। একপ্রকার আমরা যারা বেকার, মূল্যবৃদ্ধি পেলে আমাদের কষ্টটা আরও একটু বাড়বে বৈকি। বেতন বাড়বে শুনেই বাজারে জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে চলছে। তাদের (সরকারি চাকরিজীবী) না হয় বেতন দিগুণ হবে, কিন্তু আমরা যারা দিন আনি দিন খাই তাদের কী হবে? প্রশ্ন রাখেন সিএনজিচালক মোশারফ হোসেন। বেতন বাড়ায় অস্বাভাবিক হারে যাতে দ্রব্যমূল্য না বাড়ে সে জন্য সরকারকে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বানও জানান মোশারফ।
টাকা গুনে গুনে বাজার করতে হয় গৃহিণী রোমানা শারমিনের। স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। রোমানা বলেন, বাড়িওয়ালা নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছেন; জানুয়ারিতে বাড়তি ভাড়া দিতে হবে। স্বামীর সীমিত আয়ে বাসাভাড়া দিয়ে বাকি টাকায় হিসাব করে করে পুরও মাস চলতে হয়। এ অবস্থায় কিছুদিন পর পর দ্রব্যমূল্য বাড়তে থাকলে ম্যানেজ করাটা কঠিন হবে। তবে বেতন বাড়ার পরে মূল্যস্ফীতি হবে না জানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বিগত পে-স্কেল বিবেচনায় দেখা গেছে। বেতন বাড়লে খুব একটা মূল্যস্ফীতি হয় না। ফলে এতে বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। আর বেসরকারি চাকরিজীবীদের ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা আছে, এর বাইরে তাদের জন্য সরকারের আর কী করতে পারে? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তার পরও যদি বাজার বাড়ে তাহলে সরকার তা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণমাধ্যম, শিল্প-কারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবীদেরও আনুপাতিক হারে বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কার্যকর ভূমিকা নেয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহম্মদ। তিনি বলেন, বেতন বাড়লে দ্রব্যমূল্য তো বৃদ্ধি পাবেই; এর প্রভাবও পড়বে জনজীবনে। মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারকে বাজার মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেয়ার কথাও বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক।
No comments