প্রাথমিক শিক্ষায় এগিয়েছে বাংলাদেশ -এডুকেশন ওয়াচ প্রতিবেদন
প্রাথমিক
স্তরে শিশু ভর্তির ৯৪.৫ শতাংশ বলে একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণা
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে নিট ভর্তির হার শতভাগে
পৌঁছাতে আরও অন্তত ৬ বছর অপেক্ষা করতে হবে। একইভাবে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী সব
শিশুকে স্কুলে ভর্তি করাতে আরও ৩৭ বছর সময় গুনতে হবে সরকারকে। উন্নতির
বর্তমান অবস্থা বজায় থাকলে বাংলাদেশ প্রথম লক্ষ্যটি অর্জন করবে ২০১৯ সালে
আর দ্বিতীয়টি ২০৫০ সালে অর্জন করতে সক্ষম হবে। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে করা
বেসরকারি সংস্থা ‘গণসাক্ষরতা অভিযান’-এর গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা
হয়েছে। এডুকেশন ওয়াচ-২০১৫ নামের ওই প্রতিবেদনটি গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা
হয়। গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের গবেষক সমীর
রঞ্জন নাথ।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন থেকে টেকসই ভবিষ্যৎ: ‘প্রয়োজন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতির গতি বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ কিংবা এর বেশি বয়সীদের স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে আর অন্তত ২০৩৭ সালের আগে এগারো কিংবা তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করা সম্ভব হবে না। এর বাইরে সংস্থাটি প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশ গত দেড় যুগের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি হয়েছে বলে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এই সময়ে বিদ্যালয়ে গমন-উপযোগী শিশুদের ভর্তির হার যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার হারও। শুধু ভর্তি আর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার হার যে বেড়েছে তা কিন্তু নয়, শিক্ষার্থীদের শেখার যোগ্যতা, ঝরে পড়ার হার ও লৈঙ্গিক সমতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে প্রাথমিকের শিক্ষকদের যোগ্যতাও বেড়েছে। প্রতিবেদনে ১৯৯৮ থেকে করা প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে গণসাক্ষরতা অভিযানের বর্তমান প্রতিবেদনের একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণও তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। তারপরও আরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেগুলো ‘ইমপ্লিমেন্ট’ করতে পারলে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষায় বিশ্বের মধ্যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। শিক্ষকদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বছরের বাকি সময় বাদই দিলাম, মাত্র ৯০ দিন চারজন শিক্ষক আমার বাচ্চাদের পাঠদান করলে তারা ইংরেজি না শিখে পারবে না বলে উপস্থিত লোকদের প্রশ্ন রাখেন তিনি। কত ভাগ শিক্ষক দায়িত্বে অবহেলা করছেন, তার গবেষণা হওয়া উচিত বলে মনে করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ও হোসেন জিল্লুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ডিএফআইডির বাংলাদেশের প্রতিনিধি ক্যারোলাইন সানারস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের চেয়ারপারসন কাজী রফিকুল আলম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে ৭৪.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সার্বিকভাবে যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার চিত্রও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতায় শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে ভালো করেছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, গণিতে ২০০০ সালে ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১৪ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৬৯.২ শতাংশে। একইভাবে অন্য বিষয়গুলোতে যেমন- বিজ্ঞানে অর্জন করছে ৮৩.৩ শতাংশ, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে ৭৮.৭ শতাংশ, বাংলায় ৭৩.৭ শতাংশ এবং ইংরেজিতে ৬২ শতাংশ যোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে বাংলায় মাতৃভাষা হলেও যোগ্যতা অর্জন সবচেয়ে কম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এক শ্রেণি থেকে আরেক শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার হার বেড়েছে। ১৯৯৮ সালে এই হার ছিল ৮৬.৫ শতাংশ। ২০১৪ সালে এসে তা হয়েছে ৯২ শতাংশ। বর্তমানে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার প্রায় ২০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে বলে দেখানো হয়। নিট ভর্তির হার ১৯৯৮ সালে ছিল ৭৭ শতাংশ, ২০১৩ সালে এসে দাঁড়ায় ৯৪.৫ শতাংশ। প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষকদের যোগ্যতা উন্নতির চিত্রও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, সব ধরনের বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেড়েছে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে এমন শিক্ষকদের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেশি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে যেখানে ৪৮.৩ শতাংশ শিক্ষকের ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি ছিল, ২০১৪ সালে তা ৫৭.২ শতাংশ হয়েছে। তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এই হার সবচেয়ে বেশি (৬৬.৯ শতাংশ)। তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলো (২৬.১ শতাংশ)। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে ৬৩.৪ শতাংশ নারী শিক্ষক রয়েছেন। গত দেড়যুগ আগে এই হার ছিল ৩২ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) সবার জন্য শিক্ষার লক্ষ্য ২০১৫ সালের মধ্যে অর্জিত হয়নি। এসব অসমাপ্ত কাজসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের (এসডিজি) অংশ হিসেবে নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করতে হবে। এ জন্য সংস্থাটি নীতিসংক্রান্ত সুপারিশ করেছে।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন থেকে টেকসই ভবিষ্যৎ: ‘প্রয়োজন মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার উন্নতির গতি বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬ কিংবা এর বেশি বয়সীদের স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে আর অন্তত ২০৩৭ সালের আগে এগারো কিংবা তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করা সম্ভব হবে না। এর বাইরে সংস্থাটি প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশ গত দেড় যুগের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি হয়েছে বলে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এই সময়ে বিদ্যালয়ে গমন-উপযোগী শিশুদের ভর্তির হার যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার হারও। শুধু ভর্তি আর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার হার যে বেড়েছে তা কিন্তু নয়, শিক্ষার্থীদের শেখার যোগ্যতা, ঝরে পড়ার হার ও লৈঙ্গিক সমতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে প্রাথমিকের শিক্ষকদের যোগ্যতাও বেড়েছে। প্রতিবেদনে ১৯৯৮ থেকে করা প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে গণসাক্ষরতা অভিযানের বর্তমান প্রতিবেদনের একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণও তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। তারপরও আরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সেগুলো ‘ইমপ্লিমেন্ট’ করতে পারলে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষায় বিশ্বের মধ্যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। শিক্ষকদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বছরের বাকি সময় বাদই দিলাম, মাত্র ৯০ দিন চারজন শিক্ষক আমার বাচ্চাদের পাঠদান করলে তারা ইংরেজি না শিখে পারবে না বলে উপস্থিত লোকদের প্রশ্ন রাখেন তিনি। কত ভাগ শিক্ষক দায়িত্বে অবহেলা করছেন, তার গবেষণা হওয়া উচিত বলে মনে করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ও হোসেন জিল্লুর রহমান, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ডিএফআইডির বাংলাদেশের প্রতিনিধি ক্যারোলাইন সানারস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের চেয়ারপারসন কাজী রফিকুল আলম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে ৭৪.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সার্বিকভাবে যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার চিত্রও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতায় শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে ভালো করেছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, গণিতে ২০০০ সালে ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০১৪ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৬৯.২ শতাংশে। একইভাবে অন্য বিষয়গুলোতে যেমন- বিজ্ঞানে অর্জন করছে ৮৩.৩ শতাংশ, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে ৭৮.৭ শতাংশ, বাংলায় ৭৩.৭ শতাংশ এবং ইংরেজিতে ৬২ শতাংশ যোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে বাংলায় মাতৃভাষা হলেও যোগ্যতা অর্জন সবচেয়ে কম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এক শ্রেণি থেকে আরেক শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার হার বেড়েছে। ১৯৯৮ সালে এই হার ছিল ৮৬.৫ শতাংশ। ২০১৪ সালে এসে তা হয়েছে ৯২ শতাংশ। বর্তমানে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার প্রায় ২০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে বলে দেখানো হয়। নিট ভর্তির হার ১৯৯৮ সালে ছিল ৭৭ শতাংশ, ২০১৩ সালে এসে দাঁড়ায় ৯৪.৫ শতাংশ। প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষকদের যোগ্যতা উন্নতির চিত্রও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, সব ধরনের বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বেড়েছে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে এমন শিক্ষকদের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেশি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৮ সালে যেখানে ৪৮.৩ শতাংশ শিক্ষকের ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি ছিল, ২০১৪ সালে তা ৫৭.২ শতাংশ হয়েছে। তবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এই হার সবচেয়ে বেশি (৬৬.৯ শতাংশ)। তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলো (২৬.১ শতাংশ)। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে ৬৩.৪ শতাংশ নারী শিক্ষক রয়েছেন। গত দেড়যুগ আগে এই হার ছিল ৩২ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) সবার জন্য শিক্ষার লক্ষ্য ২০১৫ সালের মধ্যে অর্জিত হয়নি। এসব অসমাপ্ত কাজসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের (এসডিজি) অংশ হিসেবে নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করতে হবে। এ জন্য সংস্থাটি নীতিসংক্রান্ত সুপারিশ করেছে।
No comments