সাঈদীর আপিলঃ আঁটঘাট বাঁধছেন জামায়াতি আইনজীবীরা by জাকিয়া আহমেদ ও জেসমিন পাঁপড়ি
জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর
ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করার লক্ষ্যে আঁটঘাট বেঁধে নামছেন
জামায়াতের আইনজীবীরা। আপিল আবেদন তৈরিতে দিনরাত কাজ করছেন দুই প্রধান
আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
দুই জনই বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ১২০ পৃষ্ঠার রায়ের প্রতিটি লাইন ধরে তারা এগোচ্ছেন।
বাংলানিউজের
সঙ্গে আলাপকালে তাজুল ইসলাম বলেছেন এটি একটি ‘স্টুপিড রায়’। এই রায়ের
প্রতিটি লাইনেই ফাঁক রয়েছে। এমন রায় পৃথিবীর আর কোনো আদালতে হয়েছে বলে আমার
জানা নেই। আর ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেছেন, এই রায় আইনে কোনোভাবেই টিকবে
না।
সবকিছু গুছিয়ে মার্চের শেষ নাগাদ আপিল বিভাগে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান তারা।
সাঈদীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির দণ্ড বাতিল ও খালাসের আর্জি জানিয়ে এ আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণের মতো আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার ভিত্তিতে এর মধ্যে দুটি অপরাধে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন আদালত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই রায় অবশ্য ওই দিনই প্রত্যাখ্যান করেন জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সকল নেতার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাজ্জাক। রায় ঘোষণা কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান।
শনিবার সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে আলোচনাকালে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, “সাঈদী সাহেবের সাজা বাতিল এবং তাকে খালাস চেয়ে আবেদন করা হবে। কারণ, যে সকল অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ড দেওয়া হয়েছে আইনে তা কোনোভাবেই টেকে না।”
রায়ের কোন দিকগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আপিল আবেদন তৈরি হচ্ছে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার রাজ্জাক ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার প্রসঙ্গটি টেনে বলেন, এই ঘটনায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, ১৯৭২ সালে এই হত্যার বিচার চেয়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী যে মামলা করেছিলেন তাতে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছিলো। এদের মধ্যে সাঈদী সাহেবের নাম ছিল না। ট্রাইব্যুনালে সে মামলার কাগজও আমরা জমা দিয়েছিলাম। রায়ে সে বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।”
আপিল বিভাগের কাছে আমরা বিষয়টি আবার তুলবো, আশাকরি বিজ্ঞ বিচারপতিরা সেটা গ্রাহ্য করবেন, বলেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক।
অন্য যে অভিযোগে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে বিসা বালী হত্যাকাণ্ড।
এই প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, “বিসা বালীর যে ভাই সাক্ষ্য দিয়েছেন, এর আগে তিনি নিজেই টেলিভিশনে বলেছেন সাঈদী সাহেব বিসা বালীকে হত্যা করেননি। আমরা ওই বিষয়টিও আপিল বিভাগে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, “এসকল যুক্তিতেই আমরা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর খালাস চেয়ে আপিল করব।”
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি লাইনের বিরোধিতা করা যায়। আমরা সেভাবেই আপিল করবো”
তিনিও জানান দণ্ডপ্রাপ্ত সাঈদীর খালাস চেয়ে আপলি করা হবে।
অন্যদিকে আপিল বিভাগে সাঈদীর মামলা গেলে ধোপে টিকবে না জামায়াতি আইনজীবীদের এই বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন প্রসিকিউশনের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সাঈদীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং আশাকরি আপিল বিভাগের রায়ে তার মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকবে।
দুটি অপরাধের জন্য দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে সেদুটিতে খালাস হলেই সাঈদীর ফাঁসির রায় বাতিল হবে জামায়াতের আইনজীবীদের এমন প্রত্যাশার কথাও উড়িয়ে দেন প্রবীণ এই আইনজীবী। তিনি বলেন, আপিল বিভাগে সাঈদীর বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত সবগুলো অপরাধেরই বিচার হবে। বিজ্ঞ বিচারপতিরা মনে করলে অপর যে কোনো অপরাধের জন্যও দণ্ড ঘোষণা করতে পারবেন। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকবে বলেও মনে করছেন তিনি।
সাঈদীর পক্ষে ওই আপিলের মধ্য দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় মামলা। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২’র দেওয়া রায়ে সাজাপ্রাপ্ত আরেক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। ৩১ মার্চ ওই মামলায় শুনানির দিন ধার্য করেছেন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ। ওই শুনানির মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারে সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ থেকে এ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। এর মধ্যে জামায়াতের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা এবং দলটির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এর মধ্যে বাচ্চু রাজাকার ও সাঈদীর মামলায় ফাঁসির ও কাদের মোল্লার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সবকিছু গুছিয়ে মার্চের শেষ নাগাদ আপিল বিভাগে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান তারা।
সাঈদীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির দণ্ড বাতিল ও খালাসের আর্জি জানিয়ে এ আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণের মতো আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার ভিত্তিতে এর মধ্যে দুটি অপরাধে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন আদালত।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই রায় অবশ্য ওই দিনই প্রত্যাখ্যান করেন জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সকল নেতার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাজ্জাক। রায় ঘোষণা কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান।
শনিবার সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে আলোচনাকালে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, “সাঈদী সাহেবের সাজা বাতিল এবং তাকে খালাস চেয়ে আবেদন করা হবে। কারণ, যে সকল অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ড দেওয়া হয়েছে আইনে তা কোনোভাবেই টেকে না।”
রায়ের কোন দিকগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আপিল আবেদন তৈরি হচ্ছে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার রাজ্জাক ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার প্রসঙ্গটি টেনে বলেন, এই ঘটনায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, ১৯৭২ সালে এই হত্যার বিচার চেয়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী যে মামলা করেছিলেন তাতে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছিলো। এদের মধ্যে সাঈদী সাহেবের নাম ছিল না। ট্রাইব্যুনালে সে মামলার কাগজও আমরা জমা দিয়েছিলাম। রায়ে সে বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।”
আপিল বিভাগের কাছে আমরা বিষয়টি আবার তুলবো, আশাকরি বিজ্ঞ বিচারপতিরা সেটা গ্রাহ্য করবেন, বলেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক।
অন্য যে অভিযোগে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে বিসা বালী হত্যাকাণ্ড।
এই প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, “বিসা বালীর যে ভাই সাক্ষ্য দিয়েছেন, এর আগে তিনি নিজেই টেলিভিশনে বলেছেন সাঈদী সাহেব বিসা বালীকে হত্যা করেননি। আমরা ওই বিষয়টিও আপিল বিভাগে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, “এসকল যুক্তিতেই আমরা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর খালাস চেয়ে আপিল করব।”
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি লাইনের বিরোধিতা করা যায়। আমরা সেভাবেই আপিল করবো”
তিনিও জানান দণ্ডপ্রাপ্ত সাঈদীর খালাস চেয়ে আপলি করা হবে।
অন্যদিকে আপিল বিভাগে সাঈদীর মামলা গেলে ধোপে টিকবে না জামায়াতি আইনজীবীদের এই বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন প্রসিকিউশনের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সাঈদীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং আশাকরি আপিল বিভাগের রায়ে তার মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকবে।
দুটি অপরাধের জন্য দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে সেদুটিতে খালাস হলেই সাঈদীর ফাঁসির রায় বাতিল হবে জামায়াতের আইনজীবীদের এমন প্রত্যাশার কথাও উড়িয়ে দেন প্রবীণ এই আইনজীবী। তিনি বলেন, আপিল বিভাগে সাঈদীর বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত সবগুলো অপরাধেরই বিচার হবে। বিজ্ঞ বিচারপতিরা মনে করলে অপর যে কোনো অপরাধের জন্যও দণ্ড ঘোষণা করতে পারবেন। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডই বহাল থাকবে বলেও মনে করছেন তিনি।
সাঈদীর পক্ষে ওই আপিলের মধ্য দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবে ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় মামলা। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২’র দেওয়া রায়ে সাজাপ্রাপ্ত আরেক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। ৩১ মার্চ ওই মামলায় শুনানির দিন ধার্য করেছেন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ। ওই শুনানির মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারে সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ থেকে এ ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। এর মধ্যে জামায়াতের সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা এবং দলটির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এর মধ্যে বাচ্চু রাজাকার ও সাঈদীর মামলায় ফাঁসির ও কাদের মোল্লার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
No comments