জেনে শুনে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে আগামী প্রজন্মকে by ইবনুল সাঈদ রানা
জাতীয়
ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন এখন প্রশ্নবিদ্ধ! এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ১
থেকে ৫ বছর বয়সী প্রায় ২ কোটি ১০ লাখের অধিক শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস
ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল। ময়মনসিংহ ও নাটোরে ২দুই শিশু মৃত্যু তথ্য
পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
এছাড়াও হাজার হাজার শিশু অসুস্থ
হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু কেন? জাতির আগামী
প্রজন্মকে কেনই বা জেনে শুনে আমরা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিলাম? এই প্রশ্নের
জবাব দেবে কে?
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছাড়া কেনইবা এই ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হলো?
পত্র-পত্রিকায় লেখা লেখির কারণে এই ক্যপসুলের মান পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। ভারতের বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা এসব ক্যাপসুল ‘ক্ষতিকর নয়’ প্রমাণ করতে তিনবার তারিখ পরিবর্তন করা হয়।
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আপত্তি জানানোর পর ভারতীয় অপর এক প্রতিষ্ঠান এসজিএস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এসব ক্যাপসুল পরীক্ষা করে কিন্তু এসব ক্যাপসুল সম্পর্কে পুরোপুরি আশ্বস্ত করতে পারেনি। তারা মান আপত্তি না জানালেও তাদের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তখন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রথম দফায় ক্যাপসুল খাওয়ানোর তারিখ পরিবর্তন করা হয়।
এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হকের নির্দেশে পরীক্ষার জন্য দ্বিতীয় দফায় সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয় এসব ক্যাপসুল। সিঙ্গাপুরের পরীক্ষার ফলাফল জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি মন্ত্রণালয়।
অলিভের ক্যাপসুল পরীক্ষার প্রতিবেদনও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকের নির্দেশে বেশ কয়েকবার ক্যাপসুলের মান পূনঃপরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
এদিকে ১১ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ.ফ.ম রুহুল হক জানান ভিটামিন এ ক্যাপসুল সিঙ্গাপুরে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান বজায় আছে। তবে পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে করা মান পরীক্ষায় ক্যাপসুলগুলো পুরোপুরি জীবানুমুক্ত নয়।
কিন্তু তবুও সবশেষে সিঙ্গাপুরের রিপোর্টের ভিত্তিতে জীবানুযুক্ত এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।
এদিকে, ‘ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন’ এর আওতায় বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ অলিভ হেলথ কেয়ারের কাছ থেকে ১০ কোটি পিস ক্যাপসুল কিনেছে সরকার।
অভিযোগ রয়েছে, মেসার্স অলিভ হেলথ কেয়ার একটি ভারতীয় কোম্পানি এবং ভিটামিন জাতীয় ক্যাপসুল সরবরাহের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায়ও এর নাম নেই।
তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ইতিপূর্বে অন্য কোনো দেশে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল সরবরাহও করেনি। এমনকি নিজ দেশ ভারতেও নয়। যদিও অলিভ হেলথ টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটিকে জানিয়েছিল তারা নাইজেরিয়াতে ২০ কোটি ক্যাপসুল সরবরাহ করে। কিন্তু টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটি অলিভের পেশকৃত তথ্য যাচাই-বাছাই না করে কেবল সর্বনিম্ন দরদাতা বিবেচনা করেই তাদের এ কাজের জন্য মনোনীত করে।
অলিভ হেলথ কেয়ারের পক্ষে বাংলাদেশে কাজ করে মেসার্স জনতা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, এ কাজের জন্য যেসব যোগ্যতার প্রমাণপত্র জমা দেওয়া দরকার তার সবগুলো অলিভ হেলথ কেয়ারের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হয়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও ভিটামিন ‘এ’ ক্যাস্পসুল কেনার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিস থেকে গত বছর (২০১২) ৩১মে সিএমএসডির পরিচালকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দরপত্র প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের আপত্তিমূলক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। এর আগে অলিভ হেলথ কেয়ারের পক্ষ থেকে গত বছরের ২ এপ্রিল এক চিঠিতে তাদের প্রাক-যোগ্যতার কাগজপত্র নাইজেরিয়া থেকে নিয়ে আসার জন্য আট সপ্তাহের সময় চেয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে তারা তা জমা দিতে পারেনি।
ফলে ৫ জুন সিএমএসডি তাদেরকে একটি চিঠি দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য সর্বশেষ সুযোগ দেয়। কিন্তু তা না করে অলিভ হেলথ কেয়ার ৮ জুন সিএমএসডির পরিচালক বরাবরে এক চিঠি পাঠিয়ে আরো দুই-তিন সপ্তাহ সময় বাড়ানোর আবেদন জানায়।
কোম্পানির পক্ষ থেকে এতোসব বিফলতার পরেও কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার কর্তৃপক্ষ গত অর্থবছরের শেষ কার্যদিবস ২৮ জুন তড়িঘড়ি করে কার্যাদেশ দেয়। কমিটির কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে এসএস সাইন্টিফিক করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও দরপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র না থাকার পরও অলিভ হেলথ কেয়ার নামে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
এরপর ২০১২ সালের ১১ জুলাই অভিজ্ঞতা নেই এমন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেন ভিটামিন-এ কেনার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দায়ের করা হলে হাইকোর্টে দুই সপ্তাহের মধ্যে জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সহকারি সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করে।
এ ব্যাপারে কোন নিষ্পত্তি ছাড়াই এ বছর (২০১৩) ৭ ফেব্রুয়ারি দরপত্র জমা দেয় তিনটি প্রতিষ্ঠান। দরপত্র জমা দেওয়ার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুড মেনুফেকচারিং প্রাকটিস (জিএমপি) সার্টিফিকেট এবং সার্টিফিকেট অব ফার্মাসিউটিক্যালস প্রোডাক্ট (সিওপিপি) এর কপি বাধ্যতামুলক করা হলেও অলিভ হেলথ কেয়ার তা জমা দেয়নি।
পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে এই প্রয়োজনীয কাগজপত্র চাইলে দরপত্র জমা দেওয়ার কয়েক মাস পরে জুন মাসে তা জমা দেয়। ডব্লিউএইচও এর জিএমপি তালিকায় এই প্রতিষ্ঠানের নামে নেই বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। অলিভ ফার্মাকে প্রায় ১৫ কোটি টাকায় ভিটামিন ‘এ’ সরবরাহের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিন বছর আগে কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান ব্যানার ফার্মা থেকে কেনা ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মধ্যে ২ লাখ ইউনিটের প্রায় ১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার পিস ও ১ লাখ ইউনিটের প্রায় ১২ লাখ পিস ক্যাপসুল এখনও রয়ে গেছে। চলতি বছরের এপ্রিলে এসবের মেয়াদ শেষ হবে। সারাদেশে ২ লাখ ইউনিটের ক্যাপসুলের চাহিদা রয়েছে ২ কোটি পিস এবং ১ লাখ ইউনিটের ক্যাপসুলের চাহিদা ৩০ লাখ পিস। এই হিসেবে অবশিষ্ট ক্যাপসুলের সঙ্গে চাহিদার পার্থক্য যথাক্রমে ৪২ লাখ ও ১৮ লাখ পিস।
সূত্রগুলো জানায়, অলিভের ক্যাপসুলের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর নির্ধারিত ২ মার্চ এবং পরবর্তীতে ৬ মার্চ ক্যাপসুল খাওয়ানোর তারিখ পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু ১২ মার্চ ওই ক্যাপসুলই খাওয়ানো হয়।
শিশু মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস, অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধে সরকারিভাবে দেশের ২ কোটি ৫০ লাখ শিশুকে বছরে দু’বার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। যার অর্থ যোগানদাতা বিশ্বব্যাংক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিদেশ থেকে এই ক্যাপসুল সংগ্রহের ব্যবস্থা করে। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি ইনস্টিটিউট সারাদেশে শুধুমাত্র ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে।
যদি ওষুদের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকে তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টিকাদান কর্মসূচিও প্রশ্নের সম্মুখিন হবে। তাই অবিলম্বে এই বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে।
পরবর্তী ধাপে খাওয়াবার আগে এই ওষুধের মান এবং দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক তথ্য জনগণকে জানাতে হবে।
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপ্স্যুল খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে অসংখ্য শিশু দেশের বিভিন্ন স্থানে হাসপাতালে ভর্তির খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০ জন এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালে দুই শতাধিক শিশু ভর্তির খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
অভিভাবকরা দাবি করেন, এই শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপ্সুল খাওয়ানো হয়েছে। সারাদেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাাতাল থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাাতালে ৫০ জন, গজারিয়া উপজেলা হাসপাতালে ৩০ জন, লক্ষিপুরে ৩০জন, বগুড়া ৫০০ শিশু, ভোলায় ৮০ জন, বান্দরবানের লামা উপজেলায় ২০০ জন, নোয়াখালীতে ২০০ শিশু, চোদ্দগ্রামে শতাধিক শিশু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসে। এদের মধ্যে অনেক শিশুকে ভর্তি করা হয়, কাউকে ছেড়েও দেয়া হয়।
এদিকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকির সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ‘এটা নিতান্তই গুজব। একটি মহল সারাদেশে এই গুজব ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’ ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই প্রতিষেধক জীবাণুমুক্ত, নিরাপদ এবং আন্তর্জাতিক মানের।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো নির্ভরযোগ্য কোন বক্তব্য জনগণকে দেয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি দেশের বিভিন্ন জেলায় কতো সংখ্যক রোগী আসছে। এই শিশুদের স্বাস্থ্য সমস্যা কি? তার প্রতিকারের ব্যবস্থা কি নেয়া হয়েছে।
এখন প্রশ্ন, যদি বিষয়টি নিতান্তই গুজবই হয় তবে একদিনে এতো গুলো শিশু কেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিল। সে বিষয়ে কি সরকারের কাছে কোন তথ্য আছে? উল্টো যারা বিষয়টি প্রচার কারছে তাদের বিরুদ্ধে কমিটি করে হুমকি দিচ্ছেন? বিষয়টি সত্যি অপরাধের। বরং স্বাস্থ্যমন্ত্রী শুক্রবার এক সাক্ষাতকারে দৈনিক ইত্তেফাক-কে বলেন নকল ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল কিভাবে এই ক্যাম্পেইনে ঢুকলো তা তদন্ত করে দেখা হবে। একই দিন ও পরের দিন জাতীয় দৈনিকে এই ক্যাপসুলে গুণগত মান নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত বা অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য বিজ্ঞাপন প্রচার করে চলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার এই অপচেষ্টা কেন?
ওষুধের মান ঠিক থাকলেও ওষুধ খাওয়ানোর সময় এবং পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। যেমন ১২ মার্চ তারিখে যে তাপমাত্রা ছিল তা কৃমিনাশক খাওয়ানো জন্যে উপযুক্ত ছিল কিনা। যারা ওষুধ প্রয়োগ করেছেন তাদের ওষুধ সম্পর্কে যথেষ্ট জানা ছিল কিনা।
শুধু তাই নয়, সরকার পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়ন না করেই ঘোষণা দিয়েছে যে ‘অপপ্রচার এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশের বাদ পড়া শিশুদের আবারও ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর এর পাশপাশি খাওয়ানো হবে কৃশিনাশক ওষুধ অ্যালবেনডাজল। তবে এ ওষুধ খাওয়াতে হবে ভরা পেটে। খালি পেটে খাওয়ালে সমস্যা দেখা দিতে পারে।’
মূলত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে বলবো কাকে বাঁচানোর জন্য মূল ঘটনাটি আড়াল করতে চাইছেন? জেনে শুণে কেনই বা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছেন আমাদের উজ্জ্বল আগামী প্রজন্মকে?
[লেখক: চেয়ারম্যান, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউণ্ডেশন।]
No comments