‘কোরবানির মাংসই তো সব নয়, তাই বিক্রি করছি’ by মহিউদ্দিন মাহমুদ
ত্যাগের সুমহান আর্দশ নিয়ে শনিবার সারা দেশে পালিত হল মুসলমাদের দ্বিতীয়
বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল আজহা। এ উপলক্ষে দরিদ্র অসহায় অনেক মানুষই
কোরবানির মাংস সংগ্রহ করেন। কিন্তু এখানেই গল্পের শেষ নয়, বরং শুরু।
রাজধানীর
তেজকুনিপাড়া বস্তির বাসিন্দা রোজি আক্তার। তিনি এখানে তিন সন্তান আর
স্বামী তৌহিদুরের সঙ্গে থাকেন। তিনি নিজে অন্যের বাসা-বাড়িতে কাজ করেন। আর
তার স্বামী দিনমজুর।
অন্যান্য অনেক অসহায় মানুষের মতো তাদের পরিবারও
কোরবানির মাংস সংগ্রহ করেছে। কিন্তু বিকেলে বিক্রির জন্য মাংসগুলো বিজয়
স্মরণীর ওভারপাসের নিচে নিয়ে আসেন তারা। হাড়-হাড্ডিসহ আনুমানিক ৩ কেজির মতো
মাংস হবে। রোজি ও তৌহিদুর এ মাংসগুলো ৩৫০ টাকায় বিক্রি করে দিলেন।
পাশে তাদের সন্তানরা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল এ সময়।
রোজি আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘সব মাংস বিক্রি করি নাই। কিছু রেখে দিয়েছি রান্না করার জন্য। সঙ্গে পোলাও রান্না করবো।’’
মাংস বিক্রির কারণ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘‘কোরবানির মাংসই তো সব নয়। আরো অনেক কিছুর প্রয়োজন। বিক্রি করলে কিছু টাকা পাবো। তা দিয়ে পোলাওয়ের চাল, মসলা-পাতি কিনবো। এরপর কিছু টাকা বাড়তি থাকলে তা দিয়ে অন্য কিছু করবো।’’
কতো দিন পোলাও মাংস খেতে পারেনি রোজির ৮ বছরের ছেলে রাকিবের কাছে জানতে চাইলে সে বাংলানিউজকে জানায়, ঘরে রান্না করা পোলাও মাংস শেষ কবে খেয়েছে জানে না। তবে হোটেল এবং বড় লোকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উচ্ছিষ্ট মাঝে মধ্যেই খেতে পায়।
শনিবার বিকেলে ওই ওভারপাসের নিচে রোজি-তৌহিদ দম্পতির মতো আরো অনেকেই কোরবানির মাংস বিক্রি করেছেন। মাংসগুলোর মান ততোটা ভালো নয়। তবে এসব মাংস কেনার ক্রেতা অনেক। চলে দর কষাকষি।
এ বাজারে ১ কেজি মাংসের দাম গড়ে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। মাংসের ধরন বুঝে কখনো কখনো তা ১৮০-১৯০ টাকাও হয়।
এখানে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংগ্রহ করা মাংসের পাশাপাশি অনেক শ্রমিকও মাংস বিক্রি করতে এসেছিলেন। যারা বিভিন্ন কোরবানির গরু জবাই এবং মাংস ছাড়ানোর কাজ করেছেন।
এ রকমই একজন হাবিবুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, তিনি দু’টি পরিবারের গরু জবাই এবং মাংস ছাড়ানোর কাজ করে ১০/১১ কেজি মাংস পেয়েছেন। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক।
তিনি বলেন, ‘‘এতো মাংস ঘরে প্রয়োজন নাই, তাই বিক্রি করে দিচ্ছি। ঘরের জন্য আলাদা মাংস রাখা আছে।’’
এসব ক্রেতাদের মধ্যে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অনেকে রয়েছেন। তবে বেশির ভাগই নিম্নবিত্ত ও অসহায় শ্রেণীর মানুষ। যারা আত্ম সম্মানবোধসহ বিভিন্ন কারণে অন্যের বাড়ি বাড়ি মাংস সংগ্রহ করতে যান না।
বাজারে কিনতে আসা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতারা চুপ করে থাকেন। সঙ্গে লুকানো চটের ব্যাগ থাকে। খুব একটা দরদাম করেন না তারা । কারণ, এ বাজারের ক্রেতা হিসেবে পরিচিত হতে চান না তারা। দর-দাম মিললে চট করে কিনে নিয়ে বাড়ি চলে যান সবার অলক্ষ্যে।
এ রকম একজন মোহাম্মদ হাফিজউদ্দিন। গল্প করতে করতে তার কাছে মাংস কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। অথচ কিছুক্ষণ আগেও তিনি রোজি আক্তারের কাছ থেকে মাংস কিনতে চেয়েছিলেন। দরে মিলে নাই বলেন কেনেননি তিনি।
তবে আমেনা বেগমের মতো অনেক নিম্নবিত্ত মানুষ সস্তায় মাংস কিনতে পেরে বেশ খুশি। তেজকুনিপাড়া বস্তির বাসিন্দা আমেনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘বাজারে গোসতের যেই দাম। এতো টাকা যোগাড় করতে পারি না। এখন সস্তায় কোরবানির গোসত পাইছি, তাই কিনলাম।’’
নিজে মাংস সংগ্রহ করতে যাননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘মাইনসের দ্বারে দ্বারে ঘুইরা মাংস সংগ্রহ করতে বালা লাগে না। তাই সস্তায় কিনতে পারছি, এতেই খুশি।’’
এসব ক্রেতাদের বাইরে এ বাজারে আরেক শ্রেণীর ক্রেতা রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা হলেন, কিছু অসাধু হোটেল ব্যবসায়ী, হালিম ব্যবসায়ী। যারা এক সঙ্গে অনেক মাংস কেনেন এ বাজার থেকে। যা ফ্রিজে সংরক্ষণ করে পরে বাজারে হালিম কিংবা হোটেলে মাংস হিসেবে বিক্রি করবেন। এরা একেকজন ২০-৩০ কেজি পর্যন্ত মাংস কেনেন। কখনো কখনো তারও বেশি।
পাশে তাদের সন্তানরা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল এ সময়।
রোজি আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘সব মাংস বিক্রি করি নাই। কিছু রেখে দিয়েছি রান্না করার জন্য। সঙ্গে পোলাও রান্না করবো।’’
মাংস বিক্রির কারণ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘‘কোরবানির মাংসই তো সব নয়। আরো অনেক কিছুর প্রয়োজন। বিক্রি করলে কিছু টাকা পাবো। তা দিয়ে পোলাওয়ের চাল, মসলা-পাতি কিনবো। এরপর কিছু টাকা বাড়তি থাকলে তা দিয়ে অন্য কিছু করবো।’’
কতো দিন পোলাও মাংস খেতে পারেনি রোজির ৮ বছরের ছেলে রাকিবের কাছে জানতে চাইলে সে বাংলানিউজকে জানায়, ঘরে রান্না করা পোলাও মাংস শেষ কবে খেয়েছে জানে না। তবে হোটেল এবং বড় লোকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উচ্ছিষ্ট মাঝে মধ্যেই খেতে পায়।
শনিবার বিকেলে ওই ওভারপাসের নিচে রোজি-তৌহিদ দম্পতির মতো আরো অনেকেই কোরবানির মাংস বিক্রি করেছেন। মাংসগুলোর মান ততোটা ভালো নয়। তবে এসব মাংস কেনার ক্রেতা অনেক। চলে দর কষাকষি।
এ বাজারে ১ কেজি মাংসের দাম গড়ে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। মাংসের ধরন বুঝে কখনো কখনো তা ১৮০-১৯০ টাকাও হয়।
এখানে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংগ্রহ করা মাংসের পাশাপাশি অনেক শ্রমিকও মাংস বিক্রি করতে এসেছিলেন। যারা বিভিন্ন কোরবানির গরু জবাই এবং মাংস ছাড়ানোর কাজ করেছেন।
এ রকমই একজন হাবিবুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, তিনি দু’টি পরিবারের গরু জবাই এবং মাংস ছাড়ানোর কাজ করে ১০/১১ কেজি মাংস পেয়েছেন। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক।
তিনি বলেন, ‘‘এতো মাংস ঘরে প্রয়োজন নাই, তাই বিক্রি করে দিচ্ছি। ঘরের জন্য আলাদা মাংস রাখা আছে।’’
এসব ক্রেতাদের মধ্যে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অনেকে রয়েছেন। তবে বেশির ভাগই নিম্নবিত্ত ও অসহায় শ্রেণীর মানুষ। যারা আত্ম সম্মানবোধসহ বিভিন্ন কারণে অন্যের বাড়ি বাড়ি মাংস সংগ্রহ করতে যান না।
বাজারে কিনতে আসা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতারা চুপ করে থাকেন। সঙ্গে লুকানো চটের ব্যাগ থাকে। খুব একটা দরদাম করেন না তারা । কারণ, এ বাজারের ক্রেতা হিসেবে পরিচিত হতে চান না তারা। দর-দাম মিললে চট করে কিনে নিয়ে বাড়ি চলে যান সবার অলক্ষ্যে।
এ রকম একজন মোহাম্মদ হাফিজউদ্দিন। গল্প করতে করতে তার কাছে মাংস কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। অথচ কিছুক্ষণ আগেও তিনি রোজি আক্তারের কাছ থেকে মাংস কিনতে চেয়েছিলেন। দরে মিলে নাই বলেন কেনেননি তিনি।
তবে আমেনা বেগমের মতো অনেক নিম্নবিত্ত মানুষ সস্তায় মাংস কিনতে পেরে বেশ খুশি। তেজকুনিপাড়া বস্তির বাসিন্দা আমেনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘বাজারে গোসতের যেই দাম। এতো টাকা যোগাড় করতে পারি না। এখন সস্তায় কোরবানির গোসত পাইছি, তাই কিনলাম।’’
নিজে মাংস সংগ্রহ করতে যাননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘মাইনসের দ্বারে দ্বারে ঘুইরা মাংস সংগ্রহ করতে বালা লাগে না। তাই সস্তায় কিনতে পারছি, এতেই খুশি।’’
এসব ক্রেতাদের বাইরে এ বাজারে আরেক শ্রেণীর ক্রেতা রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা হলেন, কিছু অসাধু হোটেল ব্যবসায়ী, হালিম ব্যবসায়ী। যারা এক সঙ্গে অনেক মাংস কেনেন এ বাজার থেকে। যা ফ্রিজে সংরক্ষণ করে পরে বাজারে হালিম কিংবা হোটেলে মাংস হিসেবে বিক্রি করবেন। এরা একেকজন ২০-৩০ কেজি পর্যন্ত মাংস কেনেন। কখনো কখনো তারও বেশি।
No comments