মিরপুরে যুবক হত্যা-পুলিশ যখন অপরাধ করে...

দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুদায়িত্ব যাদের কাছে অর্পিত তারাই যখন নাটক সাজিয়ে মানুষ হত্যা করে তখন নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনে ভয় ও শঙ্কার কালো মেঘ ছায়া ফেলতে পারে। রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সিভিল ড্রেসে এক সাজানো নাটকের মাধ্যমে যুবক মোঃ মাসুদকে যেভাবে হত্যা করেছে তা প্রচলিত ক্রসফায়ার


কাহিনীকেও হার মানায়। অথচ হতভাগ্যের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে থানায় জিডি পর্যন্ত নেই। বরং ওই যুবকের পক্ষ থেকেই থানায় হুমকির কথা উল্লেখ করে জিডি করা হয়েছিল। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার জন্য অন্তত দু'জন সদস্যকে আহত দেখিয়ে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত করায়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীরা সমকালের প্রতিনিধিদের কাছে বর্ণনা করেছেন, কীভাবে মাসুদকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কের রাইনখোলা মোড়ের ট্রপিক্যাল হোমস নামে একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে গাড়ি থেকে নামিয়ে গুলি করা হয়। এভাবেই এক তরতাজা যুবকের প্রাণ কেড়ে নেয় পুলিশের গুলি। অথচ পুলিশ গল্প ফাঁদে যে, মাসুদ ও তার বন্ধুরা গুলিবিনিময়ের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি ঘটে। সমকালে মঙ্গলবার এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, পুলিশ অন্য কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এবং লোভের বশবর্তী হয়ে হত্যাকাণ্ডের মতো গুরুতর অপরাধটি সংঘটিত করেছে। এটা নিশ্চয়ই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সম্পর্কে মানুষের আস্থাহীনতা আরও বৃদ্ধি করবে।
প্রশাসনের উচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে আড়াল করার চেষ্টা না করে কারা কী জন্য এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনে পুলিশকে প্ররোচিত করেছে তা খুঁজে বের করা। পুলিশের যেসব সদস্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের তাৎক্ষণিকভাবে ক্লোজ করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আর ঘটাতে সাহস না পায় সে জন্য প্রয়োজন অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। পুলিশ প্রশাসনের উচিত তাদের বাহিনীকে ক্রসফায়ারের সর্বনাশা খুনে সংস্কৃতি থেকে মুক্ত করার উপায় সন্ধান করা।

No comments

Powered by Blogger.