প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের প্রত্যাশা নগরবাসীর-চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার মহাসমাবেশ আজ

সরকার গঠনের সোয়া তিন বছরের মাথায় বন্দরনগর চট্টগ্রামে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ বুধবার বিকেলে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে ১৪ দল আয়োজিত মহাসমাবেশে ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের প্রত্যাশাও বেড়েছে নগরবাসীর।


নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি।’ তিনি বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাজ শুরু করা, সীতাকুণ্ড থেকে পটিয়া পর্যন্ত শাটল ট্রেন সার্ভিস চালু, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ও একটি গার্মেন্টস ভিলেজ প্রতিষ্ঠা এই মুহূর্তে জরুরি দাবি।’
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনের আগে লালদীঘি ময়দানের নির্বাচনী জনসভায় হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, সরকার গঠন করলে চট্টগ্রামকে মূল্যায়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেবেন। তিনি নগরের অবকাঠানো উন্নয়ন, কর্ণফুলী নদীতে ঝুলন্ত সেতু ও টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপর তাঁর সরকারের গত সোয়া তিন বছরে প্রতিশ্রুতির কিছু অংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।
এই সরকারের আমলে ৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় নির্মিত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালসড়ক আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী খায়রুল মোস্তফা বলেন, বন্দরের ইয়ার্ড থেকে কনটেইনারবাহী ট্রাক ও লরি উড়াল সড়ক হয়ে টোল সড়ক দিয়ে চট্টগ্রামের বাইরে যাতায়াত করবে। এতে বিমানবন্দর ও সমুদ্রসৈকত সড়কের ওপর চাপ কমবে এবং পণ্য পরিবহনে গতিশীলতা আসবে।
এ ছাড়া বন্দর এলাকায় কর্মজীবী নারীদের জন্য ডরমেটরি, ফটিকছড়ির হালদা নদীর রাবার ড্যাম ও মুরাদপুরের এলজিইডি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং পলোগ্রাউন্ডের মহাসমাবেশে তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র (প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ১০০ মেগাওয়াট)—সাঙ্গু পিকিং প্ল্যান্ট, হাটহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট ও জুলদা রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নগরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। আরও প্রায় এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন।
এ ছাড়া বহদ্দারহাট থেকে কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু এবং চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের অক্সিজেন থেকে হাটহাজারী পর্যন্ত সড়ক চওড়া করার কাজ চলছে। অর্থাভাবে নির্দিষ্ট মেয়াদে শেষ করা যায়নি অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের উন্নয়নকাজ। পরে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় এই সড়কে চলাচলকারী মানুষের ভোগান্তি বেড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া দাবি করেন, রাস্তা প্রশস্তকরণকাজের গতি বেড়েছে। এই সরকারের মেয়াদেই অক্সিজেন থেকে হাটহাজারী ও বহদ্দারহাট থেকে তৃতীয় সেতু পর্যন্ত সড়ক চওড়া করার কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

No comments

Powered by Blogger.