বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-ক্রিকেট শেখার পাঠশালা by ইমাম হাসান
সম্মান, পেশা আর বিশ্বপরিচিতি। কোনটা চাই তোমার। সম্মান, এটা তো সবাই চাইবে। পেশা, সেটা না হলে কি আর বেঁচে থাকা যাবে! আর বিশ্বপরিচিতি কে না চায়; এটা পেলে তো সোনায় সোহাগা। তিনটাই একসঙ্গে পাওয়ার মূলমন্ত্র এখন ক্রিকেট। এই তিনকে একসঙ্গে ধরতে শুধু ব্যাটে-বলে ঝড় তুলতে হবে।
এ জন্য হওয়া চাই ক্রিকেট খেলোয়াড়, যেখানে বল আর ব্যাটের নৈপুণ্যে রাতারাতি ‘টাইগার’ বনে যাওয়া সম্ভব।
বিশ্বমানের ক্রিকেটার হতে চাইলে দরকার প্রশিক্ষণের। বাংলাদেশে ক্রিকেট শেখার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়সহ অনেক খ্যাতিমান ক্রিকেটার উঠে এসেছেন বিকেএসপি থেকে। সাম্প্রতিক সময়ের পরিচিত মুখগুলোর কথাই ধরা যাক। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, আবদুর রাজ্জাক, নাজমুল হোসেন, শাহাদাত হোসেন, নাসির হোসেন, সোহরাওয়ার্দী শুভ, রাকিবুল হাসান, নাঈম ইসলামসহ জাতীয় দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই বিকেএসপিতে লেখাপড়া করেছেন।
বিকেএসপির জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) আশরাফুজ্জামান জানান, ‘এটি দেশের একমাত্র খেলাধুলাবিষয়ক শিক্ষার সরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে এখানকার শিক্ষার্থীদের পছন্দের খেলার পাশাপাশি একাডেমিক পড়াশোনাও করতে হয়।’
‘পড়াশোনার পর সবাই চায় এমন পেশা যেখানে অর্থ-সম্মান মেলে। আর এগুলোর সুযোগ রয়েছে ক্রিকেটে। জাতীয় দলে খেলা ছাড়াও এখন বিপিএল, ঘরোয়া নানা ধরনের লিগ খেলে একজন খেলোয়াড় সম্মানজনক টাকা আয় করার সুযোগ পাচ্ছে। তাই ক্রিকেট হতে পারে আর্থিক নিরাপত্তাসহ আনন্দময় এক পেশা।’ বলছিলেন বিকেএসপির প্রধান কোচ মাসুদ হাসান।
শিখতে চাইলে
ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে চাইলে সবার আগে এর প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। এরপর যোগাযোগ করতে হবে আশপাশের একাডেমি বা ক্লাবে, যেখানে ক্রিকেট শেখা যায়। তবে এদিক থেকে বিকেএসপি এগিয়ে। সম্পূর্ণ আবাসিক এই সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা ও খেলা—দুটোই চলে। বছরের শুরুতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নানা খেলার সঙ্গে ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ভর্তি করা হয়। বিকেএসপির অনেকগুলো উপকেন্দ্র থাকলেও ক্রিকেট প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সাভারের প্রধান কেন্দ্র ও দিনাজপুরে বিকেএসপির আঞ্চলিক কেন্দ্রে। বর্তমানে সাভারে ১২০ জন ও দিনাজপুরে ৪১ জন ক্রিকেট বিষয়ে পড়াশোনা করছে।
ট্যালেন্ট হান্ট
যাদের বিকেএসপির নিয়মিত ক্রিকেট কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয় না, তাদের জন্য রয়েছে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ কার্যক্রম। প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের খুঁজে বের করতে বড় বড় শহরে বিভিন্ন সময় ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখানে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নিয়ে এক মাসের বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ক্যাম্পে ভালো করলে পরবর্তী সময় দীর্ঘমেয়াদি বিশেষ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ এবং বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
ভর্তি যেভাবে
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হয়। জীবনবৃত্তান্ত, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং চার কপি ছবিসহ আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদেরই কেবল ডাকা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের বয়স পরীক্ষার জন্য ফিজিক্যাল ফিটনেস দেখা হয়। স্পোর্টস সায়েন্টিস্ট এ সময় পরীক্ষা করে নেন শিক্ষার্থীটি খেলতে পারবে কি না। সেখানে উতরে গেলে সোজা খেলার মাঠে হবে আসল পরীক্ষা। ব্যাটিং, বোলিং দুটোই দেখা হয়। মাঠে নির্বাচকদের পছন্দ হলে পরবর্তী সময়ে তাকে ডাকা হয় বিশেষ ক্যাম্পে। এক সপ্তাহের এই ক্যাম্পে নানা দিক পরীক্ষা করা হয়। প্রতিটি মুহূর্তই পরীক্ষা। তাই সজাগ থাকাটা জরুরি। এরপর প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত পরীক্ষার্থীকে অংশ নিতে হয় ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায়। বিষয় হিসেবে থাকে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ও সাধারণ জ্ঞান। খালি আসনের বিপরীতে নতুন শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ।
আবেদনের যোগ্যতা
ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ বছর। ভর্তি করা হয় সাধারণত সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে।
নিয়মিত অনুশীলন
বিকেএসপিতে ভর্তির পর শুরু হবে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ। সকাল-বিকেল নিয়ম করে অনুশীলন চলে এখানে। সকালে দেড় ঘণ্টা এবং বিকেলে দুই ঘণ্টা করে চলে প্রশিক্ষণ। শুক্রবার বন্ধ। শনিবার বিকেল থেকে আবার অনুশীলন। বিসিবির ক্যালেন্ডার দেখে অনুশীলনের সময়ে ভিন্নতা আসে। প্রিপারেশন, প্রি-কম্পিটিশন ও কম্পিটিশনের মধ্য দিয়ে চলে অনুশীলন। এভাবেই সপ্তাহ কাটে এখানকার শিক্ষার্থীদের। তবে নিয়মিত একাডেমিক পড়াশোনাও করতে হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ক্লাস করতে হয়।
দেশের বাইরেও খেলতে যাচ্ছে বিকেএসপির শিক্ষার্থীরা। নিয়ে আসছে সাফল্য। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত লিগগুলোতে শিক্ষার্থীরা খেলতে পারে। এখানকার শিক্ষার্থীরা খেলছে অনূর্ধ্ব ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ বা ১৯ দলে। আর এখানে ভালো করেই একেকজন হয়ে উঠছে সাকিব, মুশফিক কিংবা নাসির।
বিশ্বমানের ক্রিকেটার হতে চাইলে দরকার প্রশিক্ষণের। বাংলাদেশে ক্রিকেট শেখার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়সহ অনেক খ্যাতিমান ক্রিকেটার উঠে এসেছেন বিকেএসপি থেকে। সাম্প্রতিক সময়ের পরিচিত মুখগুলোর কথাই ধরা যাক। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, আবদুর রাজ্জাক, নাজমুল হোসেন, শাহাদাত হোসেন, নাসির হোসেন, সোহরাওয়ার্দী শুভ, রাকিবুল হাসান, নাঈম ইসলামসহ জাতীয় দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই বিকেএসপিতে লেখাপড়া করেছেন।
বিকেএসপির জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) আশরাফুজ্জামান জানান, ‘এটি দেশের একমাত্র খেলাধুলাবিষয়ক শিক্ষার সরকারি প্রতিষ্ঠান। তবে এখানকার শিক্ষার্থীদের পছন্দের খেলার পাশাপাশি একাডেমিক পড়াশোনাও করতে হয়।’
‘পড়াশোনার পর সবাই চায় এমন পেশা যেখানে অর্থ-সম্মান মেলে। আর এগুলোর সুযোগ রয়েছে ক্রিকেটে। জাতীয় দলে খেলা ছাড়াও এখন বিপিএল, ঘরোয়া নানা ধরনের লিগ খেলে একজন খেলোয়াড় সম্মানজনক টাকা আয় করার সুযোগ পাচ্ছে। তাই ক্রিকেট হতে পারে আর্থিক নিরাপত্তাসহ আনন্দময় এক পেশা।’ বলছিলেন বিকেএসপির প্রধান কোচ মাসুদ হাসান।
শিখতে চাইলে
ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে চাইলে সবার আগে এর প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে। এরপর যোগাযোগ করতে হবে আশপাশের একাডেমি বা ক্লাবে, যেখানে ক্রিকেট শেখা যায়। তবে এদিক থেকে বিকেএসপি এগিয়ে। সম্পূর্ণ আবাসিক এই সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা ও খেলা—দুটোই চলে। বছরের শুরুতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নানা খেলার সঙ্গে ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ভর্তি করা হয়। বিকেএসপির অনেকগুলো উপকেন্দ্র থাকলেও ক্রিকেট প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সাভারের প্রধান কেন্দ্র ও দিনাজপুরে বিকেএসপির আঞ্চলিক কেন্দ্রে। বর্তমানে সাভারে ১২০ জন ও দিনাজপুরে ৪১ জন ক্রিকেট বিষয়ে পড়াশোনা করছে।
ট্যালেন্ট হান্ট
যাদের বিকেএসপির নিয়মিত ক্রিকেট কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয় না, তাদের জন্য রয়েছে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ কার্যক্রম। প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের খুঁজে বের করতে বড় বড় শহরে বিভিন্ন সময় ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখানে নির্বাচিত খেলোয়াড়দের নিয়ে এক মাসের বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ক্যাম্পে ভালো করলে পরবর্তী সময় দীর্ঘমেয়াদি বিশেষ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ এবং বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
ভর্তি যেভাবে
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হয়। জীবনবৃত্তান্ত, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং চার কপি ছবিসহ আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদেরই কেবল ডাকা হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের বয়স পরীক্ষার জন্য ফিজিক্যাল ফিটনেস দেখা হয়। স্পোর্টস সায়েন্টিস্ট এ সময় পরীক্ষা করে নেন শিক্ষার্থীটি খেলতে পারবে কি না। সেখানে উতরে গেলে সোজা খেলার মাঠে হবে আসল পরীক্ষা। ব্যাটিং, বোলিং দুটোই দেখা হয়। মাঠে নির্বাচকদের পছন্দ হলে পরবর্তী সময়ে তাকে ডাকা হয় বিশেষ ক্যাম্পে। এক সপ্তাহের এই ক্যাম্পে নানা দিক পরীক্ষা করা হয়। প্রতিটি মুহূর্তই পরীক্ষা। তাই সজাগ থাকাটা জরুরি। এরপর প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত পরীক্ষার্থীকে অংশ নিতে হয় ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায়। বিষয় হিসেবে থাকে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ও সাধারণ জ্ঞান। খালি আসনের বিপরীতে নতুন শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ।
আবেদনের যোগ্যতা
ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর বয়স হতে হবে ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ বছর। ভর্তি করা হয় সাধারণত সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে।
নিয়মিত অনুশীলন
বিকেএসপিতে ভর্তির পর শুরু হবে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ। সকাল-বিকেল নিয়ম করে অনুশীলন চলে এখানে। সকালে দেড় ঘণ্টা এবং বিকেলে দুই ঘণ্টা করে চলে প্রশিক্ষণ। শুক্রবার বন্ধ। শনিবার বিকেল থেকে আবার অনুশীলন। বিসিবির ক্যালেন্ডার দেখে অনুশীলনের সময়ে ভিন্নতা আসে। প্রিপারেশন, প্রি-কম্পিটিশন ও কম্পিটিশনের মধ্য দিয়ে চলে অনুশীলন। এভাবেই সপ্তাহ কাটে এখানকার শিক্ষার্থীদের। তবে নিয়মিত একাডেমিক পড়াশোনাও করতে হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ক্লাস করতে হয়।
দেশের বাইরেও খেলতে যাচ্ছে বিকেএসপির শিক্ষার্থীরা। নিয়ে আসছে সাফল্য। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত লিগগুলোতে শিক্ষার্থীরা খেলতে পারে। এখানকার শিক্ষার্থীরা খেলছে অনূর্ধ্ব ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ বা ১৯ দলে। আর এখানে ভালো করেই একেকজন হয়ে উঠছে সাকিব, মুশফিক কিংবা নাসির।
No comments