বাংলাদেশ ফান্ড বাজারকে আবার অতিমূল্যায়িত করে তুলতে পারে
পুঁজিবাজারে প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়াই নতুনভাবে অর্থ সঞ্চালন করা হলে তা বাজারকে আবারও অতিমূল্যায়িত করতে পারে।
শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ‘বাংলাদেশ ফান্ড’ নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি ‘ওপেন এন্ড’ বা মেয়াদহীন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের পদক্ষেপকে সমালোচনা করে এ মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বড় তহবিল বাজারে চাহিদা-জোগানের ভারসাম্যহীনতা আরও বাড়িয়ে দেবে।
প্রথম আলো আয়োজিত ‘শেয়ারবাজার: প্রতিবেদনের পর কী’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচকেরা এসব মতামত দেন।
গোলটেবিল বৈঠকে প্রসঙ্গটি তুলে আনেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফান্ড নৈতিক ঝুঁকি বা মোরাল হ্যাজার্ড তৈরি করবে। বড় ধরনের বিপর্যয়ের পর পুঁজিবাজারের ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার ছাড়াই নতুনভাবে অর্থ সঞ্চালন বাজারকে আবার অতিমূল্যায়িত করতে পারে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে সমর্থন দিয়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ওপেন এন্ড ফান্ড হওয়ায় এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। কিন্তু ফান্ডটি বাজার থেকে শেয়ার কিনবে। সাম্প্রতিক বাজার বিপর্যয় বা ধসের যে কারণ বলা হয়, তা হলো শেয়ারের অতিমূল্যায়ন, যা হয়েছে সরবরাহ না বাড়িয়ে চাহিদা বাড়ার কারণে। এখন এই তহবিলের কারণে নতুনভাবে চাহিদা বাড়বে। এতে বাজার অতিমূল্যায়িত হবে।
দেশের প্রথম বেসরকারি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এইমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াওয়ার সাঈদ বলেন, এটি একটি কারসাজিমূলক (ম্যানিপ্যুলেটিভ) পদক্ষেপ হবে, যা বাজারে কৃত্রিম অর্থপ্রবাহ দিয়ে (পাম্পআপ) বাড়িয়ে দেবে।
ইয়াওয়ার সাঈদ বলেন, এই ফান্ডের উদ্যোক্তা, ট্রাস্টি, ইস্যু ম্যানেজার একটিই প্রতিষ্ঠান। আর শেয়ারবাজারের তদন্ত কমিটির কাছে এই প্রতিষ্ঠানেরই একজন কর্মকর্তা এসে সাক্ষী দিয়ে গেছেন যে প্রতিষ্ঠানটির শতভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সুবিধাভোগী লেনদেন (ইনসাইডার ট্রেডিং) করেন। এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে এসইসি কীভাবে এই ফান্ড পরিচালনার অনুমোদন দিল সেটাই প্রশ্ন।
আলোচনায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, মূলত রাষ্ট্রীয় খাতের ব্যাংকগুলোর টাকা দিয়ে এই ফান্ড গঠন করা হচ্ছে। আর ব্যাংকের এই অর্থ আসছে আমানতকারীর সঞ্চয় থেকে। তিনি বলেন, এই আমানত তথা জনগণের অর্থ যাতে ব্যক্তির মুনাফা অর্জনে ব্যবহূত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দেবপ্রিয় বলেন, একদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের আইনি বিনিয়োগসীমা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। আবার একই সময়ে এই ফান্ড গঠনই করা হচ্ছে ব্যাংকের টাকায়।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, স্বল্প মেয়াদের জন্যও এ ধরনের ফান্ড ভালো নয়।
প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পর সরকার পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ‘বাংলাদেশ ফান্ড’ নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি ‘ওপেন এন্ড’ বা মেয়াদহীন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। দেশের ইতিহাসে এটিই হবে এককভাবে সবচেয়ে বড় মিউচুয়াল ফান্ড।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংক (সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা), জীবন বীমা করপোরেশন, সাধারণ বীমা করপোরেশন ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) যৌথ উদ্যোগে এই তহবিল গঠিত।
গতকাল এই তহবিলের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। সকালে আইসিবির সম্মেলনকক্ষে ফান্ডটির উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের উপস্থিতিতে এই নিবন্ধন সম্পন্ন হয়।
আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফায়েকুজ্জামান জানান, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে কর্মকর্তারা এসে কমিশন করে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন।
এর আগে আইসিবির পর্ষদ সভার মাধ্যমে তহবিলটির ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান ফি কমানো এবং এসইসির কয়েকটি সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার অনুরোধ জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আইসিবির মিউচুয়াল ফান্ডের অতীত অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। সুতরাং বাংলাদেশ ফান্ড বিনিয়োগকারীদের আশাব্যঞ্জক মুনাফা দিতে পারবে।’
এসইসির বিধি অনুযায়ী মোট তহবিলের ১০ শতাংশ জমা থাকতে হয়। এ জন্য গতকালই ৫০০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা কর্তৃক তহবিলে জমা পড়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একটি রোড শো করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই তহবিলটির ইউনিট ওটিসিতে কেনাবেচা হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগকারীরা এই ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ‘বাংলাদেশ ফান্ড’ নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি ‘ওপেন এন্ড’ বা মেয়াদহীন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের পদক্ষেপকে সমালোচনা করে এ মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বড় তহবিল বাজারে চাহিদা-জোগানের ভারসাম্যহীনতা আরও বাড়িয়ে দেবে।
প্রথম আলো আয়োজিত ‘শেয়ারবাজার: প্রতিবেদনের পর কী’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচকেরা এসব মতামত দেন।
গোলটেবিল বৈঠকে প্রসঙ্গটি তুলে আনেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফান্ড নৈতিক ঝুঁকি বা মোরাল হ্যাজার্ড তৈরি করবে। বড় ধরনের বিপর্যয়ের পর পুঁজিবাজারের ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার ছাড়াই নতুনভাবে অর্থ সঞ্চালন বাজারকে আবার অতিমূল্যায়িত করতে পারে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে সমর্থন দিয়ে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ওপেন এন্ড ফান্ড হওয়ায় এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে না। কিন্তু ফান্ডটি বাজার থেকে শেয়ার কিনবে। সাম্প্রতিক বাজার বিপর্যয় বা ধসের যে কারণ বলা হয়, তা হলো শেয়ারের অতিমূল্যায়ন, যা হয়েছে সরবরাহ না বাড়িয়ে চাহিদা বাড়ার কারণে। এখন এই তহবিলের কারণে নতুনভাবে চাহিদা বাড়বে। এতে বাজার অতিমূল্যায়িত হবে।
দেশের প্রথম বেসরকারি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এইমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াওয়ার সাঈদ বলেন, এটি একটি কারসাজিমূলক (ম্যানিপ্যুলেটিভ) পদক্ষেপ হবে, যা বাজারে কৃত্রিম অর্থপ্রবাহ দিয়ে (পাম্পআপ) বাড়িয়ে দেবে।
ইয়াওয়ার সাঈদ বলেন, এই ফান্ডের উদ্যোক্তা, ট্রাস্টি, ইস্যু ম্যানেজার একটিই প্রতিষ্ঠান। আর শেয়ারবাজারের তদন্ত কমিটির কাছে এই প্রতিষ্ঠানেরই একজন কর্মকর্তা এসে সাক্ষী দিয়ে গেছেন যে প্রতিষ্ঠানটির শতভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সুবিধাভোগী লেনদেন (ইনসাইডার ট্রেডিং) করেন। এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে এসইসি কীভাবে এই ফান্ড পরিচালনার অনুমোদন দিল সেটাই প্রশ্ন।
আলোচনায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, মূলত রাষ্ট্রীয় খাতের ব্যাংকগুলোর টাকা দিয়ে এই ফান্ড গঠন করা হচ্ছে। আর ব্যাংকের এই অর্থ আসছে আমানতকারীর সঞ্চয় থেকে। তিনি বলেন, এই আমানত তথা জনগণের অর্থ যাতে ব্যক্তির মুনাফা অর্জনে ব্যবহূত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দেবপ্রিয় বলেন, একদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের আইনি বিনিয়োগসীমা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। আবার একই সময়ে এই ফান্ড গঠনই করা হচ্ছে ব্যাংকের টাকায়।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, স্বল্প মেয়াদের জন্যও এ ধরনের ফান্ড ভালো নয়।
প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পর সরকার পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ‘বাংলাদেশ ফান্ড’ নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি ‘ওপেন এন্ড’ বা মেয়াদহীন মিউচুয়াল ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। দেশের ইতিহাসে এটিই হবে এককভাবে সবচেয়ে বড় মিউচুয়াল ফান্ড।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার ব্যাংক (সোনালী, রূপালী, অগ্রণী ও জনতা), জীবন বীমা করপোরেশন, সাধারণ বীমা করপোরেশন ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) যৌথ উদ্যোগে এই তহবিল গঠিত।
গতকাল এই তহবিলের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। সকালে আইসিবির সম্মেলনকক্ষে ফান্ডটির উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের উপস্থিতিতে এই নিবন্ধন সম্পন্ন হয়।
আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফায়েকুজ্জামান জানান, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে কর্মকর্তারা এসে কমিশন করে নিবন্ধন সম্পন্ন করেন।
এর আগে আইসিবির পর্ষদ সভার মাধ্যমে তহবিলটির ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান ফি কমানো এবং এসইসির কয়েকটি সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার অনুরোধ জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আইসিবির মিউচুয়াল ফান্ডের অতীত অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। সুতরাং বাংলাদেশ ফান্ড বিনিয়োগকারীদের আশাব্যঞ্জক মুনাফা দিতে পারবে।’
এসইসির বিধি অনুযায়ী মোট তহবিলের ১০ শতাংশ জমা থাকতে হয়। এ জন্য গতকালই ৫০০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা কর্তৃক তহবিলে জমা পড়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একটি রোড শো করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই তহবিলটির ইউনিট ওটিসিতে কেনাবেচা হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগকারীরা এই ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
No comments