বেলুচিস্তান কি আরেক বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে -পাকিস্তান by কুলদীপ নায়ার
পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময় সেখানে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল, বেলুচিস্তান প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তানকে এখন বাস্তবে একই রকম অবস্থার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রদেশটি ক্রমেই পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও যেমন ঘটেছিল। তখনকার মতো এখনো সেনাবাহিনী প্রচণ্ড প্রতাপশালী। পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো তখন বাংলাদেশে সেনা অভিযানের পক্ষে ছিলেন, আজও বেলুচিস্তানে একই পথ অনুসরণ করা হচ্ছে।
পাকিস্তান ভেঙে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে। বেলুচিস্তানও একই পথ অনুসরণ করতে পারে, যদি পাকিস্তান সেখানে তার সামরিক অভিযান বিষয়ে সতর্ক না হয়। মুক্ত হাওয়ায় বাঁচার জন্যে একটুখানি জায়গা দাবি করায় নিজ দেশের মানুষকে যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে তা জনমনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। এ ক্ষত সহজে ঘোচানো যাবে না। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে পাকিস্তানের শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল।
বছরখানেক আগে সার্কভুক্ত এক দেশে একটি সম্মেলনে বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্টের এক প্রতিনিধির সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যদি বেলুচিস্তানের সীমান্ত থাকত, তাহলে প্রদেশটি পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইতিমধ্যে ভারতে যোগ দিত। নয়াদিল্লির প্রতি ইসলামাবাদের সন্দেহের দৃষ্টি এ সব কারণে। বেলুচদের ওপর নিষ্ঠুরতার যে বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এমন ঘটনার কথা আমি শুনেছিলাম। আমি জেনেছিলাম, ঢাকায় সমাজের মাথাগুলোকে কীভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি বেলুচদের কাছে ক্ষমা চেয়ে এবং নতুন অধ্যায়ের সূচনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠিক কাজটি করেছিলেন বলে আমি মনে করি। বেলুচ লিবারেশন আর্মি, বেলুচ রিপাবলিকান আর্মি ও বেলুচ লিবারেশন ফ্রন্ট—তিনটি সশস্ত্র সংগঠনই যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু আসিফ আলী জারদারি সেনা প্রত্যাহার, নিখোঁজদের উদ্ধার তত্পরতা, রাজবন্দীদের মুক্তি ও বেলুচিস্তানে সেনানিবাস স্থাপন বন্ধ করার মতো বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলেন। জারদারি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বোঝাতে সমর্থ হননি যে সেনা প্রত্যাহার করা দরকার। নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে শক্তি প্রদর্শন নয়, দরকার সহমর্মিতা।
অবস্থা সাম্প্রতিক সময়ে আবারও খারাপ হয়েছে। বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার অনেক ভবনে উড়ছে স্বাধীনতার পতাকা। স্কুলে পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত গাওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক নবাব আকবর বাগতির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পণ্ড করতে গেলে সম্প্রতি সেখানে সংঘর্ষ বাধে। এটা খুবই স্পষ্ট যে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ সেনা অভিযানের মাধ্যমে বাগতিকে হত্যা করেন। কিন্তু জারদারির শাসনকালে খুনিদের শাস্তি দেওয়া হয়নি। এমনকি তিনি বাগতি ‘হত্যা’র দায়ে মোশাররফের বিরুদ্ধে একটা মামলা পর্যন্ত করতে পারেননি। মোশাররফের বিরুদ্ধে তাদের যে ক্ষোভ ছিল, তা এখন গিয়ে পড়ছে পিপিপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর। ক্ষোভ প্রশমনে পিপিপি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
যদি বেলুচদের আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বেলুচিস্তানকে এখনো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব। সাড়ে তিন দশকেরও বেশি আগের কথা। আকবর বাগতি তখন বেলুচিস্তানের গভর্নর। তাঁর সঙ্গে আমার দীর্ঘ আলাপ হয়েছিল। তিনি বারবার আমাকে বলেছিলেন, জুলফিকার আলী ভুট্টোকে অবশ্যই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এটাই ছিল সত্যিকারের দাবি। আমরা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কথা বলেছিলাম এবং আন্দাজ করতে পেরেছিলাম, বাগতির চাওয়া ছিল প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ ছাড়া সবকিছু ইসলামাবাদ থেকে কোয়েটার হাতে ন্যস্ত করতে হবে। পরের দিন আমি ভুট্টোকে এ বিষয়ে অবগত করলে তিনি জানান, আমাদের পাঁচ ঘণ্টা দীর্ঘ আলোচনার টেপ তিনি ইতিমধ্যে হাতে পেয়ে গেছেন। এমনই ছিল ভুট্টোর কাজের ধরন। ফলস্বরূপ তিনি বাগতিকে গভর্নর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং দেশ শাসনের জন্য একনায়কতান্ত্রিক পথ বেছে নেন।
ইসলামাবাদ সরকার বেলুচদের নির্মমভাবে দমন করতে লাগল। নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্টের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ বেলুচসহ আরও তিনজন জনপ্রিয় নেতাকে হত্যা করল। বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের প্রতি দমন-পীড়ন অব্যাহত থাকল। এসবই পুরনো পদ্ধতি, যার জন্য পাকিস্তানকে মূল্য দিতে হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। তবে এটা সত্য যে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ক্যারিশম্যাটিক নেতা সেখানে নেই। তবে প্রয়াত আকবর বাগতির নাতি ২৮ বছরের উদ্যমী তরুণ ব্রামদাগ বাগতি তাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের মধ্যমণিতে পরিণত হতে যাচ্ছেন। জারদারি যদি বিষয়গুলো নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন, তাহলে হয়তো বা বেলুচিস্তানের সমস্যার সমাধানে সফল হতেন। সেনাবাহিনীর চোখ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি যা দেখছেন, তাতে পূর্ব পাকিস্তানের পরিণতিই উঁকি দিচ্ছে।
পাকিস্তানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দেশটিতে প্রদেশভিত্তিক শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান। কিন্তু পাকিস্তানের ট্র্যাজেডি হচ্ছে, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের বিষয়ে পাঞ্জাব সব সময়ই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থেকেছে। এটা বলা খুবই কঠিন, কীভাবে ভবিষ্যতে বেলুচিস্তানের পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট যে ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপানো হবে, অথবা যুদ্ধ প্রতিরোধে বেলুচিস্তানে বিপুল থেকে বিপুলতর সেনা মোতায়েন করা হবে।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: ফিরোজ জামান চৌধুরী
* কুলদীপ নায়ার: ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক।
পাকিস্তান ভেঙে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে। বেলুচিস্তানও একই পথ অনুসরণ করতে পারে, যদি পাকিস্তান সেখানে তার সামরিক অভিযান বিষয়ে সতর্ক না হয়। মুক্ত হাওয়ায় বাঁচার জন্যে একটুখানি জায়গা দাবি করায় নিজ দেশের মানুষকে যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে তা জনমনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। এ ক্ষত সহজে ঘোচানো যাবে না। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে পাকিস্তানের শিক্ষা নেওয়া উচিত ছিল।
বছরখানেক আগে সার্কভুক্ত এক দেশে একটি সম্মেলনে বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্টের এক প্রতিনিধির সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যদি বেলুচিস্তানের সীমান্ত থাকত, তাহলে প্রদেশটি পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইতিমধ্যে ভারতে যোগ দিত। নয়াদিল্লির প্রতি ইসলামাবাদের সন্দেহের দৃষ্টি এ সব কারণে। বেলুচদের ওপর নিষ্ঠুরতার যে বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এমন ঘটনার কথা আমি শুনেছিলাম। আমি জেনেছিলাম, ঢাকায় সমাজের মাথাগুলোকে কীভাবে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি বেলুচদের কাছে ক্ষমা চেয়ে এবং নতুন অধ্যায়ের সূচনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঠিক কাজটি করেছিলেন বলে আমি মনে করি। বেলুচ লিবারেশন আর্মি, বেলুচ রিপাবলিকান আর্মি ও বেলুচ লিবারেশন ফ্রন্ট—তিনটি সশস্ত্র সংগঠনই যুদ্ধ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু আসিফ আলী জারদারি সেনা প্রত্যাহার, নিখোঁজদের উদ্ধার তত্পরতা, রাজবন্দীদের মুক্তি ও বেলুচিস্তানে সেনানিবাস স্থাপন বন্ধ করার মতো বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলেন। জারদারি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বোঝাতে সমর্থ হননি যে সেনা প্রত্যাহার করা দরকার। নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে শক্তি প্রদর্শন নয়, দরকার সহমর্মিতা।
অবস্থা সাম্প্রতিক সময়ে আবারও খারাপ হয়েছে। বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার অনেক ভবনে উড়ছে স্বাধীনতার পতাকা। স্কুলে পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত গাওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক নবাব আকবর বাগতির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পণ্ড করতে গেলে সম্প্রতি সেখানে সংঘর্ষ বাধে। এটা খুবই স্পষ্ট যে জেনারেল পারভেজ মোশাররফ সেনা অভিযানের মাধ্যমে বাগতিকে হত্যা করেন। কিন্তু জারদারির শাসনকালে খুনিদের শাস্তি দেওয়া হয়নি। এমনকি তিনি বাগতি ‘হত্যা’র দায়ে মোশাররফের বিরুদ্ধে একটা মামলা পর্যন্ত করতে পারেননি। মোশাররফের বিরুদ্ধে তাদের যে ক্ষোভ ছিল, তা এখন গিয়ে পড়ছে পিপিপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর। ক্ষোভ প্রশমনে পিপিপি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
যদি বেলুচদের আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বেলুচিস্তানকে এখনো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব। সাড়ে তিন দশকেরও বেশি আগের কথা। আকবর বাগতি তখন বেলুচিস্তানের গভর্নর। তাঁর সঙ্গে আমার দীর্ঘ আলাপ হয়েছিল। তিনি বারবার আমাকে বলেছিলেন, জুলফিকার আলী ভুট্টোকে অবশ্যই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এটাই ছিল সত্যিকারের দাবি। আমরা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কথা বলেছিলাম এবং আন্দাজ করতে পেরেছিলাম, বাগতির চাওয়া ছিল প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগ ছাড়া সবকিছু ইসলামাবাদ থেকে কোয়েটার হাতে ন্যস্ত করতে হবে। পরের দিন আমি ভুট্টোকে এ বিষয়ে অবগত করলে তিনি জানান, আমাদের পাঁচ ঘণ্টা দীর্ঘ আলোচনার টেপ তিনি ইতিমধ্যে হাতে পেয়ে গেছেন। এমনই ছিল ভুট্টোর কাজের ধরন। ফলস্বরূপ তিনি বাগতিকে গভর্নর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং দেশ শাসনের জন্য একনায়কতান্ত্রিক পথ বেছে নেন।
ইসলামাবাদ সরকার বেলুচদের নির্মমভাবে দমন করতে লাগল। নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বেলুচ ন্যাশনাল মুভমেন্টের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ বেলুচসহ আরও তিনজন জনপ্রিয় নেতাকে হত্যা করল। বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের প্রতি দমন-পীড়ন অব্যাহত থাকল। এসবই পুরনো পদ্ধতি, যার জন্য পাকিস্তানকে মূল্য দিতে হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। তবে এটা সত্য যে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ক্যারিশম্যাটিক নেতা সেখানে নেই। তবে প্রয়াত আকবর বাগতির নাতি ২৮ বছরের উদ্যমী তরুণ ব্রামদাগ বাগতি তাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের মধ্যমণিতে পরিণত হতে যাচ্ছেন। জারদারি যদি বিষয়গুলো নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন, তাহলে হয়তো বা বেলুচিস্তানের সমস্যার সমাধানে সফল হতেন। সেনাবাহিনীর চোখ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি যা দেখছেন, তাতে পূর্ব পাকিস্তানের পরিণতিই উঁকি দিচ্ছে।
পাকিস্তানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দেশটিতে প্রদেশভিত্তিক শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান। কিন্তু পাকিস্তানের ট্র্যাজেডি হচ্ছে, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের বিষয়ে পাঞ্জাব সব সময়ই নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থেকেছে। এটা বলা খুবই কঠিন, কীভাবে ভবিষ্যতে বেলুচিস্তানের পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট যে ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপানো হবে, অথবা যুদ্ধ প্রতিরোধে বেলুচিস্তানে বিপুল থেকে বিপুলতর সেনা মোতায়েন করা হবে।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: ফিরোজ জামান চৌধুরী
* কুলদীপ নায়ার: ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক।
No comments